ঢাকা ০৮:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
ঘাটাইলে জমে উঠেছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পাকুন্দিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাজী মো: মকবুল হোসেনের মটর সাইকেলে পথসভা নাগরিক টিভির পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি শাহাদাত হোসেন বাবুর উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন দিনাজপুরে কমেছে তাপমাত্রা, ভোরে লাগে শীত। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেলের কবরের বেড়া দিতে গিয়ে মারা গেলেন বাবা বিশ্ব মুক্ত সাংবাদিক দিবস জামালপুরে আমের ফলন কমার আশংকা আজমিরীগঞ্জে জনৈক এক নারীকে ইভটিজিং, মোবাইল কোর্টের জেল ও জরিমানা ইবিতে ‘বি’ ইউনিটের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন: মুরাদ কবির

গোবরা ইউপি নির্বাচন সাড়ে ১১ কোটি টাকা ঋণ খেলাপির মনোনয়ন বৈধ!

চেয়ারম্যান প্রার্থী ফয়সাল কবির কদর

গোপালগঞ্জের গোবরা ইউপি নির্বাচনে সাড়ে ১১ কোটি টাকা ঋণখেলাপি (বিএল) চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) প্রতিবেদন দেখার আগেই মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় নানান আলোচনা তৈরি হয়েছে। মনোনয়ন বাতিলের আর সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তা ও প্রার্থী।

সিআইবির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গোবরা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ফয়সাল কবির কদর ১১ কোটি ৫৫ লাখ ৮৬ হাজার ৩১৪ টাকার ঋণখেলাপি। পাঁচটি ব্যাংকে ঋণখেলাপি তিনি।

এর মধ্যে ২০১৮ সালে সিআইবি সাবজেক্ট কোড এ-০০০২৭৩০৭৬ নম্বরে ৪ কোটি ৬০ লাখ ২০ হাজার, এক্স-০০০০৮৪৪০৬২ নম্বরে ৩৮ লাখ, ১০ লাখ ৮৭ হাজার ও ২৮ লাখ ৮৯ হাজার ৫৮২ টাকা খেলাপি হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে জি-০০০০২১৩৫৭৬ নম্বরে ৬ কোটি ১৭ লাখ ৮৮ হাজার ৩৮৩ টাকার ঋণ খেলাপি হয়েছেন ফয়সাল কবির।

নির্বাচনের আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী সফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, নির্দেশনা মেতাবেক রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রার্থীর সিআইবি প্রতিবেদন দেখে মনোনয়নপত্র বৈধ বা অবৈধ ঘোষণা করবেন। এক প্রার্থী ঋণের তথ্য গোপন করে ১৯ ফেব্রুয়ারি মানোনয়নপত্র দাখিল করেন। কিন্তু ২০ ফেব্রুয়ারি রিটার্নিং কর্মকর্তা সিআইবি প্রতিবেদন না দেখেই মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, ফয়সাল কবিরের ঢাকায় কার ম্যাক্স, গান ম্যাক্স, মুনভিউসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গাড়ি আমদানির জন্য তিনি সোনালী, বেসিক ও এবি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। পরে ঋণের দায়ে ব্যাংক কার ম্যাক্স সিলগালা করে দেয়। মুনভিউয়ের নামে ঋণ নিয়ে প্রপার্টিজ, প্রমোটর ও ডেভেলপারের ব্যবসা করছেন। এনআইডি কার্ড ও টিন নম্বরে কারসাজিরও অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে।

ফলো করুন-
ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন সমকাল ইউটিউব
সংশ্নিষ্টরা বলছেন, এর আগে তিনি গোবরা ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন। তখনকার মনোনয়নপত্রে তাঁর আগের এনআইডি ও টিন নম্বর পাওয়া যাবে। সেগুলো ব্যবহার করে তিনি ব্যাংক ঋণ নিয়েছিলেন। সে ঋণের সাড়ে ১১ কোটি টাকা খেলাপি তিনি। এবার মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় তিনি কারসাজি করা এনআইডি ও টিন নম্বর জমা দিয়েছেন।

চেয়ারম্যান প্রার্থী ফয়সাল কবির কদর দাবি করেন, তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় এনআইডি ও টিন নম্বরসহ প্রয়োজনীয় সব কিছু দাখিল করেছেন। রিটার্নিং অফিসার সিআইবি প্রতিবেদন কোনো প্রার্থীর কাছে চাননি। তিনি বলেন, ‘আমি ঋণখেলাপি হলে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ব্যাংক রিটার্নিং অফিসারের কাছে আবেদন করত। সে সময় পার হয়েছে। এখন মনোনয়ন বাতিলের ক্ষমতা কারও নেই। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।’ এ সংবাদ পরিবেশন না করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও গোবরা ইউপি নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার শেখ বদরুদ্দিন বলেন, ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রার্থীরা মানোনয়নপত্র দাখিল করলে সন্ধ্যায় সিআইবি প্রতিবেদনের জন্য তালিকা পাঠানো হয়। পরদিন সকাল ১০টার দিকে যাচাই-বাছাই শেষ হলে দুপুর ২টার দিকে প্রতিবেদন পান। এর পরও তিন কার্যদিবসের মধ্যে ঋণখোলাপির বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ ছিল। কিন্তু কেউ না করায় এখন আর মানোনয়নপত্র বাতিলের সুযোগ নেই।

আইনজীবী বিজন বিশ্বাস বলেন, আইনগতভাবে ঋণখেলাপিরা প্রার্থী হতে পারবেন না। এর পরও কেউ প্রার্থী হলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি ঋণখেলাপির তথ্য সংগ্রহ করে অভিযোগ আকারে নির্বাচন কমিশনে পাঠাতে পারেন। ইসি আমলে না নিলে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন।

আরো খবর.......

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ঘাটাইলে জমে উঠেছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

গোবরা ইউপি নির্বাচন সাড়ে ১১ কোটি টাকা ঋণ খেলাপির মনোনয়ন বৈধ!

আপডেট টাইম : ১২:৩৩:২১ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১ মার্চ ২০২৩

চেয়ারম্যান প্রার্থী ফয়সাল কবির কদর

গোপালগঞ্জের গোবরা ইউপি নির্বাচনে সাড়ে ১১ কোটি টাকা ঋণখেলাপি (বিএল) চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) প্রতিবেদন দেখার আগেই মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় নানান আলোচনা তৈরি হয়েছে। মনোনয়ন বাতিলের আর সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তা ও প্রার্থী।

সিআইবির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গোবরা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ফয়সাল কবির কদর ১১ কোটি ৫৫ লাখ ৮৬ হাজার ৩১৪ টাকার ঋণখেলাপি। পাঁচটি ব্যাংকে ঋণখেলাপি তিনি।

এর মধ্যে ২০১৮ সালে সিআইবি সাবজেক্ট কোড এ-০০০২৭৩০৭৬ নম্বরে ৪ কোটি ৬০ লাখ ২০ হাজার, এক্স-০০০০৮৪৪০৬২ নম্বরে ৩৮ লাখ, ১০ লাখ ৮৭ হাজার ও ২৮ লাখ ৮৯ হাজার ৫৮২ টাকা খেলাপি হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে জি-০০০০২১৩৫৭৬ নম্বরে ৬ কোটি ১৭ লাখ ৮৮ হাজার ৩৮৩ টাকার ঋণ খেলাপি হয়েছেন ফয়সাল কবির।

নির্বাচনের আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী সফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, নির্দেশনা মেতাবেক রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রার্থীর সিআইবি প্রতিবেদন দেখে মনোনয়নপত্র বৈধ বা অবৈধ ঘোষণা করবেন। এক প্রার্থী ঋণের তথ্য গোপন করে ১৯ ফেব্রুয়ারি মানোনয়নপত্র দাখিল করেন। কিন্তু ২০ ফেব্রুয়ারি রিটার্নিং কর্মকর্তা সিআইবি প্রতিবেদন না দেখেই মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, ফয়সাল কবিরের ঢাকায় কার ম্যাক্স, গান ম্যাক্স, মুনভিউসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গাড়ি আমদানির জন্য তিনি সোনালী, বেসিক ও এবি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। পরে ঋণের দায়ে ব্যাংক কার ম্যাক্স সিলগালা করে দেয়। মুনভিউয়ের নামে ঋণ নিয়ে প্রপার্টিজ, প্রমোটর ও ডেভেলপারের ব্যবসা করছেন। এনআইডি কার্ড ও টিন নম্বরে কারসাজিরও অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে।

ফলো করুন-
ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন সমকাল ইউটিউব
সংশ্নিষ্টরা বলছেন, এর আগে তিনি গোবরা ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন। তখনকার মনোনয়নপত্রে তাঁর আগের এনআইডি ও টিন নম্বর পাওয়া যাবে। সেগুলো ব্যবহার করে তিনি ব্যাংক ঋণ নিয়েছিলেন। সে ঋণের সাড়ে ১১ কোটি টাকা খেলাপি তিনি। এবার মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় তিনি কারসাজি করা এনআইডি ও টিন নম্বর জমা দিয়েছেন।

চেয়ারম্যান প্রার্থী ফয়সাল কবির কদর দাবি করেন, তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় এনআইডি ও টিন নম্বরসহ প্রয়োজনীয় সব কিছু দাখিল করেছেন। রিটার্নিং অফিসার সিআইবি প্রতিবেদন কোনো প্রার্থীর কাছে চাননি। তিনি বলেন, ‘আমি ঋণখেলাপি হলে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ব্যাংক রিটার্নিং অফিসারের কাছে আবেদন করত। সে সময় পার হয়েছে। এখন মনোনয়ন বাতিলের ক্ষমতা কারও নেই। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।’ এ সংবাদ পরিবেশন না করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও গোবরা ইউপি নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার শেখ বদরুদ্দিন বলেন, ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রার্থীরা মানোনয়নপত্র দাখিল করলে সন্ধ্যায় সিআইবি প্রতিবেদনের জন্য তালিকা পাঠানো হয়। পরদিন সকাল ১০টার দিকে যাচাই-বাছাই শেষ হলে দুপুর ২টার দিকে প্রতিবেদন পান। এর পরও তিন কার্যদিবসের মধ্যে ঋণখোলাপির বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ ছিল। কিন্তু কেউ না করায় এখন আর মানোনয়নপত্র বাতিলের সুযোগ নেই।

আইনজীবী বিজন বিশ্বাস বলেন, আইনগতভাবে ঋণখেলাপিরা প্রার্থী হতে পারবেন না। এর পরও কেউ প্রার্থী হলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি ঋণখেলাপির তথ্য সংগ্রহ করে অভিযোগ আকারে নির্বাচন কমিশনে পাঠাতে পারেন। ইসি আমলে না নিলে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন।