ফুলবাড়ির পল্লীতে এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়ে অন্তঃসত্তা

- আপডেট টাইম : ০৬:১২:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২
- / ১৫১ ৫০০০.০ বার পাঠক
দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার কুশলপুর গ্রামের এক প্রতিবন্ধী মেয়ে চার মাসের অন্তঃসত্তা হয়েছে। জানা যায়, ঐগ্রামের প্রতিবন্ধী মেয়েটি বাবা মা বেঁচে না থাকায় তার নিজ বড় ভাই এর পরিবারে বাসকরে। তার ভাইয়ের সাংসারিক অবস্থা খুব শোচনিয় হওয়ায় সে গ্রামের বিভিন্ন জনের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করে দিনাতিপাত করে। বর্তমানে সে বিগত এক দেড় বছর ধরে নিজ গ্রামের জনৈক মিজানুর রহমান মাস্টারের বাড়িতে গৃহ পরিচারিকার কাজ করতো। গত ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২ ইং তারিখে তার বড় ভাইয়ের স্ত্রীকে সে জানায় তার এই সমস্যার কথা। তার বড় ভাই বউ জানামাত্র তার ভাই কে বিসয়টি জানায় এবং তাকে বিরামপুর রাজু ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে গিয়ে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করায়, টেস্টের ফলাফল আসে সে চার মাসের অন্তঃসত্তা। অন্তঃসত্ত্বা প্রতিবন্ধী মেয়েটি কে বাড়িতে নিয়ে এসে এই অন্তঃসত্ত্বার পেছনে কে দায়ী বা কার দ্বারা এটি ঘটেছে তা জিজ্ঞেস করলে সে যানায় তার নিজ গ্রামের শহিদুল ইসলাম নামের এক ছেলের কথা। এবং কবে ও কতদিন আগে এই অনৈতিক কুকর্ম সংগঠিত হয়েছে এবিসয়ে যানতে চাইলে সে বলে সাত আট মাস আগে যেখানে কাজ করি ঐ বাড়িতে শহিদুলও কাজ করতো। তখন সেখানেই তার সঙ্গে একদিন আমার এই শারিরীক সম্পর্ক হয়। তার কথামত যানাযায় ২০২২ইং সালের অক্টোবর মাসের ২০ তারিখে উক্ত মিজানুর রহমান মাস্টারের ছেলের বিয়ের পর বৌভাত অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৌভাত অনুষ্ঠানের পরের দিন শহিদুল ইসলামের সঙ্গে আমার এই অনৈতিক সম্পর্ক হয়। কিন্তু এখানে প্রশ্ন ? যদি একবছর আগে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক হয়ে থাকে তবে একবৎসর পর তার অন্তঃসত্ত্বা বয়স চার মাস হয় কিভাবে? এ বিসয় নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ হিসেব মিলাতে পারছেন না। এদিকে অভিযুক্ত শহিদুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই বিসয়ে জানতে চাইলে শহিদুল বলে আমি এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত নয়, আমাকে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া শহিদুল আরো বলেন, আমার দাবি ঐ মেয়ের গর্ভের বাচ্চাটি ভুমিস্ট হবার পর ডি,এন,এ পরীক্ষা করা হোক পরীক্ষায় যদি আমার ডিএনএ-র সঙ্গে মিলে যায় তবে আমি গ্রহন করবো প্রতিজ্ঞা করলাম। অপর দিকে গত ২৫শে সেপ্টেম্বর সংবাদ কর্মীরা মেয়েটির নিকট ঘটনার বিবরন যানতে গেলে দেখা যায় অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটিকে তার ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী আড়াল করে রেখেছে, খোজ নিয়ে যানা যায় প্রতিবন্ধী অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটিকে গ্রামের বাহিরে অন্য কোথাও রেখে এসেছে। বিসয়টি নিয়ে অত্র দৌলতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ বিসয় সম্পর্কে কিছু জানিনা,আর এ বিসয়ের কোনো বিচার করার এখতিয়ার আমার নেই। চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম আরো বলেন,সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে এমন অনৈতিক কর্মকান্ডের বিচার হোক আমিও চাই।
আবার অপরদিকে যানা যাচ্ছে একই দিনে সন্ধায় কুশলপুর গ্রামের কোনো এক বাসায় গ্রামের দু একজন লোক সহ দু পক্ষ মিলে বসে মিমাংসা করেন। কি মিমাংসা করেন তা এখনো সুস্পষ্ট যানা যায়নি। পরে প্রতিবন্ধী অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটির গর্ভপাত করার প্রক্রিয়া চলছে বলে লোক মুখে শোনা যায় । সঠিক বিচার না করে এতবড় একটি ঘটনাকে তড়িঘড়ি করে আড়াল করা বা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করার কারন কি?এর মাঝে কি অন্য বা আর কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে নাকি ? এদিকে ফুলবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আশ্রাফ আলীর সঙ্গে সাক্ষাতে কথা বলে এই বিসয়ে মামলা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাদি না থাকলে কোনো মামলা হবেনা। আবার দু একদিন পর অন্তঃসত্ত্বা প্রতিবন্ধী মেয়েটির এক ভাই বাদি হয়ে থানায় গেলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আশ্রাফ আলী বলেন, ভিক্টিম কে না পাইলে মামলা করা যাবেনা। অপর দিকে গত সেপ্টেম্বর মাসের ২৫ তারিখ হতে অন্তঃসত্ত্বা প্রতিবন্ধী মেয়েটি ও তার বড় ভাই ও ভাবি এলাকা হতে নিরুদ্দেশ। এর মাঝে ফুলবাড়ি থানার পুলিশ দু একদিন ভিক্টিমের বাড়িতে সন্ধান করার জন্য এসে তাদেরকে কাউকে না পেয়ে ফিরে যায়। সর্বশেষ গত ১১অক্টোবর ফুলবাড়ি থানা নিরুদ্দেশ অন্তঃসত্ত্বা প্রতিবন্ধী মেয়ের একভাইয়ের নিকট হতে একটি অভিযোগ গ্রহণ করেন।
একজন অসহায় প্রতিবন্ধী মেয়ের সঙ্গে এমন অন্যায়ের সঠিক বিচার না হওয়ায় এলাকার সাধারণ সচেতন লোকজনের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এবং স্থানীয় ভাবে এতবড় একটি অন্যায়ের সমাধান করার এখতিয়ার কতটুকু আছে গ্রামের মহতদের, এটাই জনমনে প্রশ্ন।