ঢাকা ০২:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::

ভারতে আটকে পড়া জেলেদের ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান পরিবার

গভীর সমুদ্রে নিম্নচাপের কারণে গত ১৮ থেকে ২১ আগস্ট ট্রলার ডুবে ৩৬ ঘণ্টা ভাসতে ভাসতে জলসীমা অতিক্রম করে ভারতে ঢুকে পরা জেলেদের ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে বরগুনার পাথরঘাটায় উপজেলার ১৭ জেলে পরিবার।

শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার সময় পাথরঘাটা উপজেলা প্রেসক্লাবে ওই সব জেলে পরিবারগুলো উপস্থিত হয়ে মানববন্ধনের মাধ্যমে এই হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এতে ভারতে আটক থাকা জেলেদের স্ত্রী, সন্তান এবং বাবা মা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

নিখোঁজ জেলেদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ আগস্ট হঠাৎ করে বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ শুরু হয়। এর কয়েকদিন আগে এই উপকূলের জেলেরা তাদের ট্রলারে রসদ নিয়ে মাছ ধরার জন্য গভীর সমুদ্রে যায়। নিম্নচাপ শুরু হলে সাগর উত্তাল হয়ে পড়ায় কয়েকটি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। তখন ডুবে যাওয়া ট্রলারগুলোর অধিকাংশ জেলেরা সমুদ্রে ভাসতে থাকে। ৩৬ ঘণ্টা ভাসার পরে বাংলাদেশি জলসীমা থেকে ভারতীয় কোস্টগার্ডের একটি জাহাজ তাদেরকে উদ্ধার করে ভারতের কাকদ্বীপের বুদ্ধপুর এলাকার কৃষ্ণ আশ্রয়ণকেন্দ্রে নিয়ে যায়। বর্তমানে তারা সেখানে অবস্থান করছেন। এর মধ্যে পাথরঘাটার ফারুক খানের মালিকানাধীন একটি ট্রলারের ১৭ জন জেলে রয়েছে। সেখানে উদ্ধার হওয়া জেলেদের তিন বেলা খাবার চিকিৎসা ঠিকমতো না দেওয়ায় তারা আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের সরকারের মাধ্যমে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য অনুরোধ করেন।

জেলে ফিরোজ ও হাসানের মা ফিরোজা বেগম, রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হাফিজা বেগম জানান, তাদের পরিবারগুলোর উপার্জন করা ব্যক্তিরা সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে ফিরে আসেননি, প্রচণ্ড ঝড়ে তাদের ট্রলার ডুবে যায়। প্রথমে মনে করছিলাম তারা আর বেঁচে নেই, অনেকদিন পরে জানতে পেরেছি তারা ভারতে আছে। প্রধানমন্ত্রী আপনি তো একজন মা, সেই মা হিসেবে আপনি আপনার ছেলেদের ফিরিয়ে এনে দিন। আমাদের সন্তানদের নিয়ে আমরা খুব কষ্টে দিন পার করছি। বর্তমানে আমরা নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি তারপরেও ট্রলার মালিককে টাকা দিয়েছি তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য। ট্রলার মালিকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তেমন কোন কথা বলা যায় না। শুনেছি তারা নাকি ভারতের দূতাবাসে কাগজ জমা দিয়েছে। এখন আপনি চাইলেই তারা দেশে আসতে পারে। আপনি আপনার ছেলেদের এনে দিন। ভারতে থাকা জেলেদের ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে সংসার চলছে। টাকার অভাবে তাদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

ভারতে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি মো. নাসির উদ্দিন মোবাইল ফোনে জানান, হঠাৎ ঝড়ের কবলে পরে তাদের ট্রলারটি ডুবে যায়। এর পরে তারা ৩৬ ঘণ্টা সাগরে ভাসমান থাকার পরে বাংলাদেশি জলসীমার মধ্যে থেকে ভারতীয় কোস্টগার্ডের একটি জাহাজ তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বর্তমানে যেখানে তাদের রাখা হয়েছে সেখানে তিন বেলা খাবার ঠিকমতো দেওয়া হয় না এবং ভালো করে চিকিৎসাও দেওয়া হয় না। এরকম যদি হয় তবে তারা সবাই অসুস্থ হয়ে যাবে। তিনি বাংলাদেশ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন যাতে তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, এসব জেলেদের ফিরিয়ে আনতে জেলে এবং ট্রলার মালিকদের পক্ষ থেকে সব রকমের খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে এবং জেলেদের কাগজপত্র ভারতীয় দূতাবাসে জমা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ভারতে গিয়ে জেলেদের খোঁজ খবর নিয়েছি। আমরাও সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি যাতে ভারতে অশ্রয় নেওয়া জেলেরা দ্রুত দেশে ফিরে আসতে পারে।

আরো খবর.......

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রচন্ড খড়া রোদে ডিএমপি কমিশনারের স্বস্থির উদ্যোগ

ভারতে আটকে পড়া জেলেদের ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান পরিবার

আপডেট টাইম : ০৪:৫১:০৬ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২

গভীর সমুদ্রে নিম্নচাপের কারণে গত ১৮ থেকে ২১ আগস্ট ট্রলার ডুবে ৩৬ ঘণ্টা ভাসতে ভাসতে জলসীমা অতিক্রম করে ভারতে ঢুকে পরা জেলেদের ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে বরগুনার পাথরঘাটায় উপজেলার ১৭ জেলে পরিবার।

শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার সময় পাথরঘাটা উপজেলা প্রেসক্লাবে ওই সব জেলে পরিবারগুলো উপস্থিত হয়ে মানববন্ধনের মাধ্যমে এই হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এতে ভারতে আটক থাকা জেলেদের স্ত্রী, সন্তান এবং বাবা মা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

নিখোঁজ জেলেদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ আগস্ট হঠাৎ করে বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ শুরু হয়। এর কয়েকদিন আগে এই উপকূলের জেলেরা তাদের ট্রলারে রসদ নিয়ে মাছ ধরার জন্য গভীর সমুদ্রে যায়। নিম্নচাপ শুরু হলে সাগর উত্তাল হয়ে পড়ায় কয়েকটি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। তখন ডুবে যাওয়া ট্রলারগুলোর অধিকাংশ জেলেরা সমুদ্রে ভাসতে থাকে। ৩৬ ঘণ্টা ভাসার পরে বাংলাদেশি জলসীমা থেকে ভারতীয় কোস্টগার্ডের একটি জাহাজ তাদেরকে উদ্ধার করে ভারতের কাকদ্বীপের বুদ্ধপুর এলাকার কৃষ্ণ আশ্রয়ণকেন্দ্রে নিয়ে যায়। বর্তমানে তারা সেখানে অবস্থান করছেন। এর মধ্যে পাথরঘাটার ফারুক খানের মালিকানাধীন একটি ট্রলারের ১৭ জন জেলে রয়েছে। সেখানে উদ্ধার হওয়া জেলেদের তিন বেলা খাবার চিকিৎসা ঠিকমতো না দেওয়ায় তারা আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের সরকারের মাধ্যমে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য অনুরোধ করেন।

জেলে ফিরোজ ও হাসানের মা ফিরোজা বেগম, রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হাফিজা বেগম জানান, তাদের পরিবারগুলোর উপার্জন করা ব্যক্তিরা সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে ফিরে আসেননি, প্রচণ্ড ঝড়ে তাদের ট্রলার ডুবে যায়। প্রথমে মনে করছিলাম তারা আর বেঁচে নেই, অনেকদিন পরে জানতে পেরেছি তারা ভারতে আছে। প্রধানমন্ত্রী আপনি তো একজন মা, সেই মা হিসেবে আপনি আপনার ছেলেদের ফিরিয়ে এনে দিন। আমাদের সন্তানদের নিয়ে আমরা খুব কষ্টে দিন পার করছি। বর্তমানে আমরা নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি তারপরেও ট্রলার মালিককে টাকা দিয়েছি তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য। ট্রলার মালিকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তেমন কোন কথা বলা যায় না। শুনেছি তারা নাকি ভারতের দূতাবাসে কাগজ জমা দিয়েছে। এখন আপনি চাইলেই তারা দেশে আসতে পারে। আপনি আপনার ছেলেদের এনে দিন। ভারতে থাকা জেলেদের ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে সংসার চলছে। টাকার অভাবে তাদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

ভারতে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি মো. নাসির উদ্দিন মোবাইল ফোনে জানান, হঠাৎ ঝড়ের কবলে পরে তাদের ট্রলারটি ডুবে যায়। এর পরে তারা ৩৬ ঘণ্টা সাগরে ভাসমান থাকার পরে বাংলাদেশি জলসীমার মধ্যে থেকে ভারতীয় কোস্টগার্ডের একটি জাহাজ তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বর্তমানে যেখানে তাদের রাখা হয়েছে সেখানে তিন বেলা খাবার ঠিকমতো দেওয়া হয় না এবং ভালো করে চিকিৎসাও দেওয়া হয় না। এরকম যদি হয় তবে তারা সবাই অসুস্থ হয়ে যাবে। তিনি বাংলাদেশ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন যাতে তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, এসব জেলেদের ফিরিয়ে আনতে জেলে এবং ট্রলার মালিকদের পক্ষ থেকে সব রকমের খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে এবং জেলেদের কাগজপত্র ভারতীয় দূতাবাসে জমা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ভারতে গিয়ে জেলেদের খোঁজ খবর নিয়েছি। আমরাও সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি যাতে ভারতে অশ্রয় নেওয়া জেলেরা দ্রুত দেশে ফিরে আসতে পারে।