দেবাহাটার খলিশাখালিতে সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীরা কি ভূমিহীন
- আপডেট টাইম : ০৮:৫৭:৫২ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
- / ২৯০ ৫০০০.০ বার পাঠক
সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলার খলিশাখালিতে ২০২১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে ১৩’শ ২০ বিঘা (৪৩৯.২০ একর) জমি ও মৎস্য ঘের ভুমিহীন নামধারী ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী কর্তৃক অবৈধভাবে জবর দখল করে সেখান চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। যার কারণে অতিষ্ট ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই এলাকার আব্দুজ জলিল, মামুন বিল্লাহ, রাজ্জাক, শরিফা, আলোয়সহ নাম না প্রকাশে একাধীক ব্যক্তি জানান, দেশী ও বিদেশী অস্ত্রে শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তারা ফিল্মি ষ্টাইলে এই সম্পত্তি দখল করেছে। এরপর থেকে ওই জমিতে থাকা শত কোটি টাকার মৎস সম্পদ লুট-পাট করে নেয় সন্ত্রাসী বাহিনী।
এই সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদেরও সংবাদ সংগ্রহে দেয়া হয় বাঁধা। সাংবাদিকরা সরজমিনে ঘটনা স্থল পরিদর্শনে গেলে সেখানে রাস্তার উপর বাঁশ ফেলে ও বাঁশ টানিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয় নামধারী এসব ভুমিহীনরা। খলিশাখালী সড়কের উপর নির্মিত একটি ব্রিজের উপর শতাধিক মহিলারা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। সেখানকার নামধারী ওই সব ভুমিহীন নেতাদের সাথে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে তাদের পক্ষে রিপোর্ট করার আশ্বাস দিলে তারা সাংবাদিকদের সেখানে মাইক্রোবাসটি রেখে পায়ে হেটে যাওয়ার অনুমতি দেন। নিজেদের রক্ষা করতে এসব নামধারী ধূর্ত ভমিহীনরা ইতিমধ্যে ওই স্থানকে “শেখ মুজিবনগর খলিশাখালী আবাসন কেন্দ্র” নাম ঘোষনা করে সেখানে লাল পতাকা তুলে দিয়েছেন।ভূমিহীন সংগঠনের নামে যারা মালিকানাধীন জমি দখল করতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা প্রায় অধিকাংশই মার্ডার ও একাধিক মাদক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তাহলে সন্ত্রাসী ও মাদক মামলার আসামিরা কি ভূমিহীন? এমনটাই প্রশ্ন খলিশাখালির স্থানীয় বাসিন্দাদের।
খলিশাখালিতে যেসকল সন্ত্রাসীরা ভূমিহীন সেজে মালিকানাদীন ১৪ শত বিঘা জমি দখল করে সেখানে মাদকব্যবসা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছেন তারা হলেন, নোড়ারচক গ্রামের ইছাদ আলির পুত্র সন্ত্রাসী আনারুল ইসলাম, শাহাজান আলির পুত্র রবিউল ইসলাম, মফেজ ঢালীর পুত্র গোলাপ ঢালী, ইয়াদ আলি মোড়লের পুত্র ইউনুস আলি, মৃত বাহার আলির পুত্র লুৎফর গাজী, মৃত আকরাম গাজীর পুত্র মোজাহিদ ও মারুফ, কালু গাজীর পুত্র আব্দুল গফুর, খলিশাখালীর চরপাটা এলাকার আবু বক্কর গাজির পুত্র সাইফুল ইসলাম, মৃত ফেরাজতুল্লাহ মোড়লের পুত্র বাবুল মোড়ল, ঢেপুখালি গ্রামের রুহুল আমিনের পুত্র আকরাম হোসেন ওরফে আকরাম ডাকাত, চাঁদপুর গ্রামের মৃত হরিপদ স্বর্ণকারের ছেলে শ্রী সুনীল স্বর্ণকার, আবুল গাজীর পুত্র ফেনসিডিল ও ইয়াবা সহ সদ্য আটক হয় রিপন হোসেন ও আল আমিন, চরপাটা এলাকার গহর গাজীর পুত্র মাদকসহ একাধীকবার আটক হওয়া আরিজুল ইসলাম, কালিগঞ্জের নলতার উত্তরকাজলা গ্রামের লিয়াকাত সরদারের পুত্র সদ্য দেবহাটার পারুলিয়া থেকে র্যাবের হাতে অস্ত্রসহ আটক হওয়া আহছানউল্লা, মোসলেম গাজীর পুত্র অস্ত্র মামলার আসামি ফরজ গাজী, চেন্টু গাজীর পুত্র অস্ত্র মামলার আসামি আক্কাজ আলী গাজি, আইয়ুব আলি গাজির পুত্র শরিফুল গাজি (কালু ডাকাত), মইনুদ্দি ঢালির পুত্র বাবর ঢালি ও ওমর গাজির পুত্র শরিফুল গাজি।খলিশাখালির স্থানীয় বাসিন্দা ওমর আলি, সাদ্দাম, শরিফুল, গফুর পাড়সহ অনেকেই জানান, ভূমিদস্যুরা মালিকানাধীন জমি দখল করে আবার সেই জমি ১৫ থেকে১৭ শতাংশ জায়গা বিক্রি করছে মাত্র ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায়।
উপরোক্ত সকলেই মাদক অস্ত্র ও মার্ডার মামলায় একাধীকবার পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। এসব সন্ত্রাসীরা একত্রে বাস করছে খলিশাখালিতে। যার কারণে মাদকের রমরমা ব্যবসায়ের প্রভাব পড়ছে খলিশাখালি সহ আশে পাশের এলাকায়। তাই এসকল সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের উৎখাত ও আইনের আওতায় এনে এলাকায় বিশৃঙ্খল পরিবেশ শান্ত করার দাবি জানিয়েছেন খলিশাখালিবাসী।