মায়ের দাবিকৃত ৫০ হাজার টাকা না দেওয়া মেয়ের নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মামলা দিলেন মা ?
- আপডেট টাইম : ০৮:০৩:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ অগাস্ট ২০২২
- / ২২৫ ৫০০০.০ বার পাঠক
৫-৬ বছর বয়স কালে মেয়েকে বাবার কাছে রেখে অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে চলে যান মা। সে সংসার দিব্যি চলছিল মায়ের কিন্তু ৫-৬ বছরের সেই শিশু কন্যার খোঁজ রাখেনি মা। বাবা ও আত্মীয়স্বজনের কাছে শিশু কন্যাটির বেড়ে ওঠা। এরপর পরিবারের অভাব-অনটন লাঘবের জন্য চাকরির খোঁজে গাজীপুরের গাছা থানাধীন কুনিয়া তারগাছ এলাকায় আসে সেই শিশু কন্যা। ১যুগ পরে হঠাৎই মায়ের আবির্ভাব। মেয়ের কাছে চেয়ে বসেন মোটা অংকের টাকা,টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মেয়ের বাড়িওয়ালার বিরুদ্ধেও দায়ের করেন মেয়েকে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা । বলছিলাম গাজীপুর মেট্রোপলিটন গাছা থানায় দায়ে করা এক ধর্ষন মামলার গল্প। মায়ের দায়ের করা মামলার বিরোধীতা করে মেয়ে আদালতে গিয়ে জবানবন্দি দিলো আসামির পক্ষে। এমনকি মায়ের দায়ের করা মামলার বিরোধিতা করে গাজীপুর দায়রা জজ আদালতে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে অঙ্গীকারনামা ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর মায়ের মিথ্যা মামলা দায়ের করার কারন জানিয়ে অভিযোগ করেন ওই তরুণী। ধর্ষণ মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২১ আগষ্ট ওই তরুণী মা মোসাঃ শাহনাজ বেগম (৪০) গাছা থানাধীন কুনিয়া তারগাছ এলাকার মৃত আসকার আলীর ছেলে শহিদুজ্জামান সুমন (৪০) ও তার স্ত্রী সালমা বেগম(৩০)কে আসামি করে একটি অপহরণ ও অপহরণের পর ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ভুক্তভোগী ওই তরুণী এক বছর পূর্ব অভিযুক্ত সুমনের মালিকানাধীন ভবনের দরাজ গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরি নেন। এমনকি সুমনের বাড়ির একটি রুম ভাড়া নিয়ে বসবাস করত তিনি। অভিযুক্ত সুমনের বিল্ডিং এর চাকরি ও তার বাসায় ভাড়া থাকার সুবাদে ওই তরুণীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় । বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় সুমন ওই তরুণীকে নানারকম হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করতো। গত ৩ই অগাষ্ট সকালে ভাড়াবাড়ি থেকে চাকরির উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয় ওই তরুণী । এরপর প্রতিদিনের ছুটির সময় হয়ে পেরিয়ে গেলেও ওই তরুণী বাসায় না ফিরলে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তরুণীকে খুঁজতে কারখানায় যায় মা শাহানাজ বেগম। সেখানে থেকে মেয়েকে আগেই অভিযুক্ত সুমন তুলে নিয়েগেছে সুনে সুমনের স্ত্রী সালমার কাছে অভিযোগ করেন শাহনাজ বেগম। অভিযোগ সুনে সুমনের স্ত্রী উল্টো ওই তরুণীর মাকেই হুমকি ধামকি ও মেয়ে কে না খোঁজার পরামর্শ দিয়ে বলেন সুমন আপনার মেয়েকে বিয়ে করবে এবং সময় মতো তারা বাসায় ফিরে আসবে বলে জানান। তিনি আশঙ্কা করছেন তার মেয়েকে কর্মস্থল থেকে অপহরণ করে অভিযুক্ত সুমনের স্ত্রীর সহযোগিতা অভিযুক্ত সুমন বিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করেছে বলে থানায় অভিযোগ দেন।
থানায় অভিযোগ দেওয়া একদিন পরে ২২আগস্ট অপহৃত ও ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী গাজীপুর দায়রাজজ আদালত নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে অঙ্গীকারনামা দায়ে করেন।এবং মায়ের বিরুদ্ধে গুজব রটিয়ে মিথ্যা মামলা দায়েরের জন্য গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম বরাবর অভিযোগ দেন,অভিযোগে ওই তরুণী উল্লেখ করেন,আমার বয়স যখন আনুমানিক ৫/৬ বৎসর। তখন আমার মা আমাকে রেখে একটি পুরুষ বিয়ে করে চলে যায়। তার পর থেকে আমি আমার পিতার কাছে বড় হই। পরবর্তীতে আমার বয়স যখন ১৮ বৎসর তখন আমি চাকুরী সুবাদে গাজীপুর আসি। কোথাও কাজ না পাওয়া কুনিয়া তারগাছ এলাকায় আসলে হাজী শহীদুজ্জামন সুমন একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে চাকুরীর ব্যবস্থা করে দেয়। চাকরি পাওয়া পর তার বাসাতেই রুম ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকি। কিছুদিন আগে আমার মা শাহানাজ বেগম আমার ভাল বেতনের চাকুরীর খবর পেয়ে সে আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবী করে। আমি দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমার মা বলে তুই যদি আমাকে টাকার ব্যবস্থা না করে দিস তাহলে যে লোক তোকে চাকরি ব্যবস্থা করে দিয়াছে তার সাথে তোর অবৈধ সম্পর্ক আছে বলে মিথ্যা অপবাদ দিবো এমনকি থানায় মামলা দায়ের করবো। আমার মা তার দাবিকৃত টাকা না পাওয়া আমার চাকরির ব্যবস্থাকারী ও আশ্রয়দাতা শহিদুজ্জামান সুমনের বিরুদ্ধে আমাকে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছেন।প্রকৃত পক্ষে আমার মা গাছা থানায় যে বর্ণনা দিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রকৃত পক্ষে হাজী শহিদুজ্জামান সুমন আমাকে গুম বা ধর্ষণের মতো কোন ঘটনা ঘটায়নি।
এবিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গাছা থানার উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন , ভুক্তভোগী ওই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে মেডিকেল পরিক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে ২২ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।
গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) নন্দনলাল চৌধুরী বলেন,ভুক্তভুগী ওই তরুনীর মায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা পরদিন (২২ আগষ্ট) সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করতে স্বকর্ম হই। ভুক্তভোগী আদালত তার জবানবন্দি দিয়েছে। আদালত তাকে পরিক্ষা নিরীক্ষা জন্য আদেশ দিয়েছে আমরা তার মেডিকেল পরিক্ষা নিরীক্ষা সম্পুর্ণ করেছি। মেডিকেল রিপোর্ট আসলে পুরো বিষয়টি খোলাসা হয়ে যাবে । আসামি এখনো পলাতক আছে।