ঢাকা ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ নোয়াগড় গ্রামে কোটি টাকার হিসাব নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ওসিসহ অর্ধশতাধিক আহত।। সেনাবাহিনীর হাতে ১১ জন আটক ভৈরবে রেলওয়ে থানা পুলিশের হাতে মাদক দ্রব্য গাঁজাসহ হিজরা গ্রেফতার পীরগঞ্জে জুলাই-আগষ্টে ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা ধুলাউড়ি বাজারে শুরু হয়েছে পাঁচটি সেলুন পাঠাগার সুন্দরবনের খালে কাঁকড়া ধরায় চাঁদা দাবি। চাঁদা না দেওয়ায় মারধরের অভিযোগ ডাকাত তরিকুলের বিরুদ্ধে আইনজীবী হত্যার নিউজে পুলিশের বক্তব্য নেয়নি রয়টার্স আজমিরীগঞ্জে মোবাইল কোর্টের অভিযানে একটি মাটি ভর্তি ট্রাকটর আটক আজমিরীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সরকারি জায়গা দখল মুক্ত করে উপজেলা প্রশাসন ইসকন নিষিদ্ধের দাবি জানালো হেফাজতে ইসলাম পৃথক মামলায় সাবেক মন্ত্রী আনিসুল-কামরুল রিমান্ডে

হাতীবান্ধায় সার্কাসের নামে অশ্লীল নৃত্য, নিরব প্রশাসন

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৫:১৭:৫৩ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৬ জুন ২০২২
  • / ২৭০ ৫০০০.০ বার পাঠক

লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি।।

লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার ডাকালীবান্ধায় দি সাধনা লায়ন্স সার্কাসের নামে অশ্লীল নৃত্য পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে সার্কাস পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে।

জানা যায়, গত ২৮ মে হাতীবান্ধার ডাকালীবান্ধা বাজার সংলগ্ন মাঠে দি সাধনা লায়ন্স সার্কাস চালানোর অনুমতি দেয় লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়।

অনুমতি দেওয়ার আগে ধরাবাধা ১৭টি শর্তবলী প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হলেও তার কিছুই মানছে না সার্কাস কমিটি। আসন্ন ১৯ জুন এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হাওয়ার কথা। এই মুহূর্তে সার্কাসের কার্যক্রম প্রদর্শনের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি গ্রহনে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে বলে জানান অভিভাবক ও সুশীল সমাজ।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ‘সার্কাস পরিচালনা করার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় ১৭টি শর্ত। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- বিকেলে ৩টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সার্কাসের শো পরিচালনা করা, সার্কাস চলাকালীন প্যান্ডেল ও প্যান্ডেলের বাহিরে নিজস্ব নিরাপত্তা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে মুভমেন্ট মনিটরিং করা, কোন প্রকার র‌্যাফেল ড্র, লটারী ও জুয়া খেলা না চালানো ও বাহিরের কোনো তৃতীয় পক্ষ যেন জুয়া বসাতে না পারে সে জন্য সজাগ দৃষ্টি রাখা, কোন প্রকার অশ্লীল নৃত্য, গানের আয়োজন না করা। সার্কাসে আগত নারী শিল্পীর থাকার ব্যবস্থা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। ভিতর ও বাহিরে পর্যাপ্ত সংখ্যক অগ্নি নির্বাপক সরঞ্জাম মজুদ রাখা। সার্কাসে স্থাপিত সকল প্রকার ইলেকট্রিক সংযোগ নিরাপদে নেওয়া। স্থানীয় মসজিদে নামাজ পড়ানোর সময়, পূজা অর্চনার সময় ও ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশোনা যেন ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয় উচ্চস্বরে মাইক না বাজানো ইত্যাদি।’
কিন্ত সরেজমিনে উল্লেখীত শর্তের অধিকাংশই লক্ষ্য করা যায় নি। সার্কাস কার্যক্রম রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত থাকার কথা থাকলে তা চলছে রাত ২-৩টা পর্যন্ত। এতে করে রাত যতই বাড়তে থাকে সার্কাসে শুরু হতে থাকে অশ্লিল নৃত্য। এছাড়া দেখা পাওয়া যায় নি তেমন কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মুভমেন্ট মনিটরিং করার জন্য বসানো হয় নি কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা। সার্কাসে দেখা পাওয়া যায় নি তেমন কোনো অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র। এছাড়া বৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার কথা থাকলেও অবৈধভাবে স্থানীয়ভাবে নেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। উচ্চ স্বরে মাইক না বাজানোর শর্ত উল্লেখ করা থাকলেও উচ্চস্বরের বাজানো হচ্ছে মাইক। এতে করে শিক্ষার্থীদের এস.এস.সি পরিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি ব্যাঘাত ঘটছে এবং স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যহত হচ্ছে। এছাড়া সার্কাসে আসা অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিল্পিদেরও নিরাপত্তা নিশ্চিতেও করা হয় নি কোনো জীবন বীমা।
খয়বর মেম্বারের নেতৃত্বে দি সাধনা লায়ন্স সার্কাস চালু হয়। শুরু থেকে সার্কাসটি খেলা দেখানোর কথা থাকলেও তারা দিনে তিনটি শোতে দেখাচ্ছেন অশ্লীল নৃত্য। রাত যত গভীর হয় সার্কাসে অশ্লীলতা তত বেড়ে যায়। এতে উঠতি বয়সি কমলমতি শিশুদের মনে পড়ছে বিরুপ প্রভাব।

দি সাধনা লায়ন সার্কাস অনুমতির সময় লোকালয় থেকে দুরে চালানোর কথা থাকলেও ডাকালীবান্ধা বাজারের পাশেই স্টেজ করে চলছে সার্কাস। পাশেই রয়েছে মসজিদ আজানের সময়েও তারা চালাচ্ছে সার্কাস। এতে স্থানীয় ধর্মপ্রান মুসলিমদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।

ডাকালীবান্ধা এলাকার এসএসসি পরিক্ষার্থী আওলাদ হোসেন জানান, আগামী ১৯ জুন আমার এসএসসি পরীক্ষা। আমার মত প্রায় ২০ জন পরিক্ষার্থী আছে এই এলাকায়। আমরা সার্কাসের কারনে পড়াশুনা করতে পারছি না। রাতে যখনি পড়তে বসি তখনি শুরু হয় সার্কাসের গান বাজনা। তাই আমরা প্রশাসনের কাছে সার্কাস বন্ধের আবেদন জানাই।

একই এলাকার ডাঃ এনামুল বলেন, আমরা নামাজ পড়তে পারি না, বিকট শব্দে নামাজ পড়তে সমস্যা হয়, আবার আজানের সময়ও তারা গানবাজনা বন্ধ করে না। এখানে রাতে পতিতাদের আসর বসে। জেলার বিভন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে নর্তকীদের নাচায়। এখানে দুইবার মারামারিও হয়েছে। এখনি যদি সার্কাস বন্ধ না করা হয় তাহলে যে কোন মূহুর্তে বড় ধরনের ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

সার্কাস পরিচালনা কমিটির সদস্য খয়বর মেম্বার বলেন, ডিসি সাহেব ও আমাদের এলাকার এমপি সার্কাস চালানোর অনুমতি দিয়েছে। হাতিবন্ধা থানার ওসি সকাল বিকাল খবর নেন। তাই সার্কাস চলছে। সার্কাসতো রাত দশটা পর্যন্ত চলার কথা তাহলে রাত ১২টা পর্যন্ত কেন চালান? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর তিনি দিতে পারেননি।

হাতীবান্ধা থানার ওসি এরশাদুল আলম বলেন, কোন ধরনের অশ্লীলতা মেনে নেওয়া হবে না। প্রয়োজনে সার্কাস বন্ধ করে দেয়া হবে।

জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, অশ্লীল কোন গান বাজনার অনুমতি দেয়া হয়নি।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

হাতীবান্ধায় সার্কাসের নামে অশ্লীল নৃত্য, নিরব প্রশাসন

আপডেট টাইম : ০৫:১৭:৫৩ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৬ জুন ২০২২

লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি।।

লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার ডাকালীবান্ধায় দি সাধনা লায়ন্স সার্কাসের নামে অশ্লীল নৃত্য পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে সার্কাস পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে।

জানা যায়, গত ২৮ মে হাতীবান্ধার ডাকালীবান্ধা বাজার সংলগ্ন মাঠে দি সাধনা লায়ন্স সার্কাস চালানোর অনুমতি দেয় লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়।

অনুমতি দেওয়ার আগে ধরাবাধা ১৭টি শর্তবলী প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হলেও তার কিছুই মানছে না সার্কাস কমিটি। আসন্ন ১৯ জুন এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হাওয়ার কথা। এই মুহূর্তে সার্কাসের কার্যক্রম প্রদর্শনের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি গ্রহনে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে বলে জানান অভিভাবক ও সুশীল সমাজ।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ‘সার্কাস পরিচালনা করার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় ১৭টি শর্ত। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- বিকেলে ৩টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সার্কাসের শো পরিচালনা করা, সার্কাস চলাকালীন প্যান্ডেল ও প্যান্ডেলের বাহিরে নিজস্ব নিরাপত্তা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে মুভমেন্ট মনিটরিং করা, কোন প্রকার র‌্যাফেল ড্র, লটারী ও জুয়া খেলা না চালানো ও বাহিরের কোনো তৃতীয় পক্ষ যেন জুয়া বসাতে না পারে সে জন্য সজাগ দৃষ্টি রাখা, কোন প্রকার অশ্লীল নৃত্য, গানের আয়োজন না করা। সার্কাসে আগত নারী শিল্পীর থাকার ব্যবস্থা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। ভিতর ও বাহিরে পর্যাপ্ত সংখ্যক অগ্নি নির্বাপক সরঞ্জাম মজুদ রাখা। সার্কাসে স্থাপিত সকল প্রকার ইলেকট্রিক সংযোগ নিরাপদে নেওয়া। স্থানীয় মসজিদে নামাজ পড়ানোর সময়, পূজা অর্চনার সময় ও ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশোনা যেন ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয় উচ্চস্বরে মাইক না বাজানো ইত্যাদি।’
কিন্ত সরেজমিনে উল্লেখীত শর্তের অধিকাংশই লক্ষ্য করা যায় নি। সার্কাস কার্যক্রম রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত থাকার কথা থাকলে তা চলছে রাত ২-৩টা পর্যন্ত। এতে করে রাত যতই বাড়তে থাকে সার্কাসে শুরু হতে থাকে অশ্লিল নৃত্য। এছাড়া দেখা পাওয়া যায় নি তেমন কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মুভমেন্ট মনিটরিং করার জন্য বসানো হয় নি কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা। সার্কাসে দেখা পাওয়া যায় নি তেমন কোনো অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র। এছাড়া বৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার কথা থাকলেও অবৈধভাবে স্থানীয়ভাবে নেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। উচ্চ স্বরে মাইক না বাজানোর শর্ত উল্লেখ করা থাকলেও উচ্চস্বরের বাজানো হচ্ছে মাইক। এতে করে শিক্ষার্থীদের এস.এস.সি পরিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি ব্যাঘাত ঘটছে এবং স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যহত হচ্ছে। এছাড়া সার্কাসে আসা অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিল্পিদেরও নিরাপত্তা নিশ্চিতেও করা হয় নি কোনো জীবন বীমা।
খয়বর মেম্বারের নেতৃত্বে দি সাধনা লায়ন্স সার্কাস চালু হয়। শুরু থেকে সার্কাসটি খেলা দেখানোর কথা থাকলেও তারা দিনে তিনটি শোতে দেখাচ্ছেন অশ্লীল নৃত্য। রাত যত গভীর হয় সার্কাসে অশ্লীলতা তত বেড়ে যায়। এতে উঠতি বয়সি কমলমতি শিশুদের মনে পড়ছে বিরুপ প্রভাব।

দি সাধনা লায়ন সার্কাস অনুমতির সময় লোকালয় থেকে দুরে চালানোর কথা থাকলেও ডাকালীবান্ধা বাজারের পাশেই স্টেজ করে চলছে সার্কাস। পাশেই রয়েছে মসজিদ আজানের সময়েও তারা চালাচ্ছে সার্কাস। এতে স্থানীয় ধর্মপ্রান মুসলিমদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।

ডাকালীবান্ধা এলাকার এসএসসি পরিক্ষার্থী আওলাদ হোসেন জানান, আগামী ১৯ জুন আমার এসএসসি পরীক্ষা। আমার মত প্রায় ২০ জন পরিক্ষার্থী আছে এই এলাকায়। আমরা সার্কাসের কারনে পড়াশুনা করতে পারছি না। রাতে যখনি পড়তে বসি তখনি শুরু হয় সার্কাসের গান বাজনা। তাই আমরা প্রশাসনের কাছে সার্কাস বন্ধের আবেদন জানাই।

একই এলাকার ডাঃ এনামুল বলেন, আমরা নামাজ পড়তে পারি না, বিকট শব্দে নামাজ পড়তে সমস্যা হয়, আবার আজানের সময়ও তারা গানবাজনা বন্ধ করে না। এখানে রাতে পতিতাদের আসর বসে। জেলার বিভন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে নর্তকীদের নাচায়। এখানে দুইবার মারামারিও হয়েছে। এখনি যদি সার্কাস বন্ধ না করা হয় তাহলে যে কোন মূহুর্তে বড় ধরনের ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

সার্কাস পরিচালনা কমিটির সদস্য খয়বর মেম্বার বলেন, ডিসি সাহেব ও আমাদের এলাকার এমপি সার্কাস চালানোর অনুমতি দিয়েছে। হাতিবন্ধা থানার ওসি সকাল বিকাল খবর নেন। তাই সার্কাস চলছে। সার্কাসতো রাত দশটা পর্যন্ত চলার কথা তাহলে রাত ১২টা পর্যন্ত কেন চালান? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর তিনি দিতে পারেননি।

হাতীবান্ধা থানার ওসি এরশাদুল আলম বলেন, কোন ধরনের অশ্লীলতা মেনে নেওয়া হবে না। প্রয়োজনে সার্কাস বন্ধ করে দেয়া হবে।

জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, অশ্লীল কোন গান বাজনার অনুমতি দেয়া হয়নি।