তালায় ঘাতকের বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের আঘাতে পা হারাতে বসেছে দিনমজুর
- আপডেট টাইম : ১২:৫০:১১ অপরাহ্ণ, বুধবার, ৬ এপ্রিল ২০২২
- / ২৬৩ ৫০০০.০ বার পাঠক
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি।। তালার মুড়াগাছায় ঘাতক বিপ্লবের বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের আঘাতে পা হারাতে বসেছে আব্দুল করিম নামের এক হতদরিদ্র দিনমজুর। মোটরসাইকেলের ধাক্কায় গুরুতর আহত আব্দুল করিম(৩৬) মুড়াগাছা গ্রামের মৃত দিলবার আলী গাজীর পুত্র। গত (৩ এপ্রিল) আনুমানিক দুপুর ১টা ২০ মিনিটের সময় পার্শ্ববর্তী এলাকার বালিয়া ঋষিপাড়া বটতলা নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। সরেজমিন তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, মুড়াগাছা গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর আব্দুল করিম তার মেয়ের জন্ম নিবন্ধন করানোর জন্য বাড়ি থেকে খেশরা ইউনিয়ন পরিষদের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ভ্যানযোগে বালিয়া ঋষিপাড়া বটতলা মোড়ে পৌঁছে রাস্তার পশ্চিম পাশে ভ্যান থেকে নেমে ভ্যানের ভাড়া মিটিয়ে বটতলা হতে ইটের সলিং রাস্তা দিয়ে পায়ে হেঁটে পরিষদের যাওয়ার জন্য পিচের রাস্তা পার হচ্ছিল। রাস্তা পার হওয়ার সময় দক্ষিণ দিক হতে উত্তর দিক গামী মোটরসাইকেল চালক মুড়াগাছা গ্রামের মৃত কাদের সরদারের ছেলে বিপ্লব হোসেন প্রচন্ড গতিতে আব্দুল করিমকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। মারাত্মক আঘাতে আব্দুল করিমের পা প্রাই ছিন্ন হয়ে যায় এবং পায়ের ভাঙ্গা হাড়ের অংশ রাস্তায় ছড়িয়ে ছড়িয়ে থাকে। পায়ের হাড়ের বড় একটি অংশ স্থানীয় লোকজন রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পলিথিনে ভরে আব্দুল করিমের চাচাতো ভাই মোঃ আবুল হোসেনের কাছে দেয়। তাৎক্ষণিক আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে গুরুতর আহত অবস্থায় আব্দুল করিমকে উদ্ধার করে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা অবস্থা সংকটাপন্ন দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আহত আব্দুল করিমকে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। চিকিৎসকের পরামর্শমতো আব্দুল করিমকে তার আত্মীয়-স্বজনরা অ্যাম্বুলেন্স যোগে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়। হত দরিদ্র আব্দুল করিম তিনদিন যাবৎ খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও অর্থের অভাবে সঠিক চিকিৎসা করাতে পারছেন না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন এই মুহূর্তে আব্দুল করিমের পায়ে একটি বড় ধরনের অপারেশন প্রয়োজন। অপারেশনের মাধ্যমে চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত পা রাখা সম্ভব হবে, নাকি কেটে ফেলতে হবে। এই মুহূর্তে অপারেশন সহ চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন কয়েক লক্ষ টাকা। এছাড়া দীর্ঘদিন চিকিৎসার ব্যয় চালিয়ে যেতে হবে, যা হতদরিদ্র আব্দুল করিমের পক্ষে সম্ভব নয়। গুরুতর আহত আব্দুল করিমের সংসারে দুই মেয়ে এবং বর্তমানে তার স্ত্রী গর্ভবতী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি পঙ্গু হতে বসেছে, কিভাবে চলবে চিকিৎসা, কিভাবে চলবে সংসার, কিভাবে চলবে সন্তানদের লেখাপড়া এসব দুশ্চিন্তায় পরিবারটির নাওয়া-খাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে মুমূর্ষ আবদুল করিমকে নিয়ে পরিবারের বাকি সবাই ব্যস্ত থাকায় এবং আব্দুল করিমের স্ত্রী গর্ভবতী থাকায় এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।