ঢাকা ০৮:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪

শত বছরের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিল সি আর বি

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৪:৩৪ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২২
  • / ২৩৬ ৫০০০.০ বার পাঠক

কামরুল ইসলাম।।

নাগরিক সমাজ চট্টগ্রাম সাংস্কৃতিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর আন্দোলন সত্ত্বেও চট্টগ্রাম মহানগরীর সি আর বি এলাকায় হাসপাতাল নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরুর আগেই প্রকল্প এলাকার পাশ দিয়ে সি আর বি ঐতিহাসিক সাত রাস্তার মোড় থেকে এনায়েত বাজারমুখী দেড় কিলোমিটারের গোয়ালপাড়া সড়কটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।১৫ জানুয়ারী শনিবার সি আর বি সাতরাস্তার মোড় এলাকায় পরিদর্শনে দেখা যায়,প্রকল্প এলাকার পাশের সড়কে একটি সাইনবোর্ড এ গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে সড়কটি স্থায়ীভাবে বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।উক্ত সড়কটি বন্ধ করলে সি আর বি মূল কাঠামোর পরিবর্তন হতে পারে বলে দাবি করছেন এলাকার আন্দোলনকারীরা।সড়কসহ মোট সাতটি সড়ক সি আর বিতে একত্রিত হওয়ায় দির্ঘদিন ধরে এলাকাটি সাতরাস্তার মোড় হিসেবে পরিচিত।শত বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসা সড়কটি বন্ধ হলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হবে বলেও দাবি করছেন স্থানীয়রা।স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন,‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন রক্ষায় সরকার তৎপর,সেখানে রেল কর্তৃপক্ষ এই চিহ্ন মুছে দিয়ে হাসপাতাল নির্মাণ করতে চাইছে,এটা বড়ই দুঃজনক,
স্থানীয় বাসিন্দা নমিতা রানী দাশ বলেন,এ দেশ স্বাধীন করতে মুক্তিযুদ্ধে আমাদের দেশের ত্রিশ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছেন এবং দুই লক্ষ মা বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন,আমাদের বাপ-দাদারা প্রাণ দিয়েছেন।এবার ঐতিহাসিক গোয়ালপাড়া বাঁচাতে আমরাও প্রাণ দেব। তবুও এখানে হাসপাতাল হতে দেব না।সি আর বি শতবর্ষী গাছ, পাহাড় ও প্রাকৃতিক সবুজ বেষ্টনী আমরা রক্ষা করবই।এনায়েত বাজার এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ‘সাধারণ মানুষের চলাচলের রাস্তা একটি সংস্থা কীভাবে হঠাৎ বন্ধ করে দেয়া হয়,পরিবেশবাদী সংগঠন বেলার পক্ষ থেকে আলীউর রহমান বলেন,রেলওয়ের মতো সংরক্ষিত স্থানে হাসপাতাল নির্মাণের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন ও আইনি লড়াইয়ের কোনো বিকল্প নেই।তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছেন,প্রকল্পের স্বার্থেই বন্ধ করা হয়েছে সড়ক। প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আহসান জাবির দৈনিক আমার সময়কে বলেন,ভূমিটির পুরোটাই হাসপাতালের জন্য প্রস্তাবিত। রাস্তাটি পার্মানেন্টলি বন্ধ করা হয়েছে।পাহাড় কেটে,শতবর্ষী অর্ধশত গাছ ও প্রাকৃতিক সবুজ বেষ্টনী ধ্বংস করে হাসপাতাল নির্মাণের বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করছেন,তাদের মধ্যে নগর আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীও রয়েছেন।নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দরা বলেন, সি আর বি বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন,মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক স্থান এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল।শতবর্ষী বৃক্ষরাজি আর জীব বৈচিত্র্য এই এলাকাটি চট্টগ্রামের ফুসফুস হিসেবে চিহ্নিত।চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সি আর বি কে গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে হেরিটেজ জোন ঘোষণা করেছে।পরিবেশ অধিদপ্তর,চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সহ স্থাপনা অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ সমূহ সি আর বি তে কোনো স্থাপনা করা যাবে না।দেশের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাননীয় সরকার মহোদয় কে ভুল তথ্য দিয়ে হাসপাতাল প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে।সি আর বি নগরবাসীর দির্ঘ নিঃশ্বাস ফেলার জায়গা বহু জনমের শৈশবের খেলা ঘর ও কৈশোরের তীর্থভূমি বহু জনমের স্মৃতিবিজড়িত চিহ্ন।উক্ত স্থানে আমরা হাসপাতাল চাই না,তাছাড়া সড়ক বন্ধ করা মানেই তো সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ। নাগরিক সুবিধায় থেকে বঞ্চিত করা,উক্ত বিষয়টি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে নিরশন করতে,আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন এলাকাবাসী।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

শত বছরের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিল সি আর বি

আপডেট টাইম : ১১:৩৪:৩৪ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২২

কামরুল ইসলাম।।

নাগরিক সমাজ চট্টগ্রাম সাংস্কৃতিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর আন্দোলন সত্ত্বেও চট্টগ্রাম মহানগরীর সি আর বি এলাকায় হাসপাতাল নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরুর আগেই প্রকল্প এলাকার পাশ দিয়ে সি আর বি ঐতিহাসিক সাত রাস্তার মোড় থেকে এনায়েত বাজারমুখী দেড় কিলোমিটারের গোয়ালপাড়া সড়কটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।১৫ জানুয়ারী শনিবার সি আর বি সাতরাস্তার মোড় এলাকায় পরিদর্শনে দেখা যায়,প্রকল্প এলাকার পাশের সড়কে একটি সাইনবোর্ড এ গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে সড়কটি স্থায়ীভাবে বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।উক্ত সড়কটি বন্ধ করলে সি আর বি মূল কাঠামোর পরিবর্তন হতে পারে বলে দাবি করছেন এলাকার আন্দোলনকারীরা।সড়কসহ মোট সাতটি সড়ক সি আর বিতে একত্রিত হওয়ায় দির্ঘদিন ধরে এলাকাটি সাতরাস্তার মোড় হিসেবে পরিচিত।শত বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসা সড়কটি বন্ধ হলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হবে বলেও দাবি করছেন স্থানীয়রা।স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন,‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন রক্ষায় সরকার তৎপর,সেখানে রেল কর্তৃপক্ষ এই চিহ্ন মুছে দিয়ে হাসপাতাল নির্মাণ করতে চাইছে,এটা বড়ই দুঃজনক,
স্থানীয় বাসিন্দা নমিতা রানী দাশ বলেন,এ দেশ স্বাধীন করতে মুক্তিযুদ্ধে আমাদের দেশের ত্রিশ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছেন এবং দুই লক্ষ মা বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন,আমাদের বাপ-দাদারা প্রাণ দিয়েছেন।এবার ঐতিহাসিক গোয়ালপাড়া বাঁচাতে আমরাও প্রাণ দেব। তবুও এখানে হাসপাতাল হতে দেব না।সি আর বি শতবর্ষী গাছ, পাহাড় ও প্রাকৃতিক সবুজ বেষ্টনী আমরা রক্ষা করবই।এনায়েত বাজার এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ‘সাধারণ মানুষের চলাচলের রাস্তা একটি সংস্থা কীভাবে হঠাৎ বন্ধ করে দেয়া হয়,পরিবেশবাদী সংগঠন বেলার পক্ষ থেকে আলীউর রহমান বলেন,রেলওয়ের মতো সংরক্ষিত স্থানে হাসপাতাল নির্মাণের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন ও আইনি লড়াইয়ের কোনো বিকল্প নেই।তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছেন,প্রকল্পের স্বার্থেই বন্ধ করা হয়েছে সড়ক। প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আহসান জাবির দৈনিক আমার সময়কে বলেন,ভূমিটির পুরোটাই হাসপাতালের জন্য প্রস্তাবিত। রাস্তাটি পার্মানেন্টলি বন্ধ করা হয়েছে।পাহাড় কেটে,শতবর্ষী অর্ধশত গাছ ও প্রাকৃতিক সবুজ বেষ্টনী ধ্বংস করে হাসপাতাল নির্মাণের বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করছেন,তাদের মধ্যে নগর আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীও রয়েছেন।নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দরা বলেন, সি আর বি বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন,মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক স্থান এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল।শতবর্ষী বৃক্ষরাজি আর জীব বৈচিত্র্য এই এলাকাটি চট্টগ্রামের ফুসফুস হিসেবে চিহ্নিত।চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সি আর বি কে গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে হেরিটেজ জোন ঘোষণা করেছে।পরিবেশ অধিদপ্তর,চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সহ স্থাপনা অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ সমূহ সি আর বি তে কোনো স্থাপনা করা যাবে না।দেশের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাননীয় সরকার মহোদয় কে ভুল তথ্য দিয়ে হাসপাতাল প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে।সি আর বি নগরবাসীর দির্ঘ নিঃশ্বাস ফেলার জায়গা বহু জনমের শৈশবের খেলা ঘর ও কৈশোরের তীর্থভূমি বহু জনমের স্মৃতিবিজড়িত চিহ্ন।উক্ত স্থানে আমরা হাসপাতাল চাই না,তাছাড়া সড়ক বন্ধ করা মানেই তো সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ। নাগরিক সুবিধায় থেকে বঞ্চিত করা,উক্ত বিষয়টি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে নিরশন করতে,আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন এলাকাবাসী।