যাত্রাবাড়ীতে বাড়িওয়ালা ও স্বামীর হেনস্তার শিকার অসহায় ২ সন্তানের মা
- আপডেট টাইম : ০৩:৩০:৫৭ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২১
- / ২০৩ ৫০০০.০ বার পাঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কারও কাছে কোনও হেল্প পেলাম না! গতকাল (২৯ ডিসেম্বর) বাড়িওয়ালি হঠাৎ করে আমাকে কল দিয়ে বলে আমার মালপত্র সবকিছু নিয়ে গিয়ে বাসা খালি করার জন্য। তখন সন্ধ্যা, শীতের মধ্যে আমি বাসায় গিয়ে বাড়িওয়ালাকে বললাম যে, আমার তো কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই, কোথায় যাব, কোই রাখব এতসব জিনিসপত্র? আমাকে ১ তারিখ পর্যন্ত সময় দেন। কিন্তু তাঁরা কোনও কথাই শুনতে রাজি নয়, আমার সব জিনিসপত্র বাসার বাইরে ফেলে দিল।
বাড়ি ওয়ালা আমাকে ধাক্কা দিয়ে সিঁড়ি থেকে ফেলে দিল। আমি পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলেম। পরে যখন জ্ঞান ফিরল তখন আমি হাসপাতালে। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় অভিযোগ দিলাম। কিন্তু তাঁরা দেখবে বলে কিছুই করল না। এমনকি আমার মেডিকেল রিপোর্টটাও ছিনিয়ে নিল বাড়িওয়ালার ভাগিনা শাহিন।
এমন অবস্থায় আমি তখন নিরুপায় হয়ে সব মালামাল নিয়ে কোনওরকমে বাইরে রেখে দিলাম আর এই শীতের রাতে দুই বাচ্চাকে নিয়ে রাতটা প্রতিবেশি এক বোনের বাসায় কাটালাম। হাসব্যান্ডের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো না থাকায় তাঁরা সবাই আমার হাসব্যান্ডের সঙ্গে মিলে আমার সাথে এমন বৈরী আচরণ করে চলেছে। আমি কি এর বিচার পাব না?’
এমনই অভিযোগ জানান রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর জেলে পাড়াস্থ মন্দিরের গলিতে ৩৬/ডি বাড়ির দুই তলা তিন বছরের জন্য মর্ডগেজ নিয়ে বসবাস করা রুমা রানী নামে দুই সন্তানের এক জননী। মানিকগঞ্জের শাটুরীয়া থানার ধানকুড়া গ্রামের মৃত পরিতোষ সরকার ও পুষ্প রানী দম্পতির কন্যা এখন একা সহায় এক নারী।
যাত্রাবাড়ীর জেলে পাড়ায় একটি ছোটখাট দোকান ভাড়া নিয়ে টেইলার্সের কাজ করে কোনওরকমে জীবিকা নির্বাহ করা রুমা রানী এখন ন্যায্য বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু এক প্রতিবেশি ছাড়া কেউ তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসছেন না বলেই অভিযোগ তাঁর। তিনি বলেন, থানা-পুলিশ ও স্থানীয় গণ্যমান্য সবাই তাঁর স্বামীর টাকা খেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
এদিকে, এ বিষয়ে জানতে রুমা রানীর স্বামী রাজধানী সুপার মার্কেটে সেলসম্যানের কাজ করা উত্তম কুমার রায়ের (+৮৮০১৮৬৯১১৪৩৯১) ব্যক্তিগত নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর এই নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রুমার আশ্রয়দাতা জানান, তাঁর বাড়িওয়ালা তাঁর ঘরে তালা দিয়ে রাখছে। বাড়ি ওয়ালার কাছে শীতের কাপড় নেয়ার জন্য কাকুতি-মিনতি করলে এবং ঘরের চাবি চাইতে যাওয়ায় বাড়িওয়ালা তাঁকে বাজে প্রস্তাব করে। আর তাতে রাজি না থাকায় ভাড়াটিয়াকে গলা টিপে ধাক্কা দিয়ে সিঁড়ি থেকে নিচে ফেলে দেয়। পরে তাঁকে এলাকার মেডিবাংলা হাসপাতালে নিয়ে যায় এলাকার মানুষ। কিন্তু এরও কোনো বিচার পাচ্ছে না ভুক্তভোগী মেয়েটি।
তিনি আরও বলেন, দয়া করে আপনারা বিষয়টির প্রতি একটু নজর দিন। বাড়িওয়ালা যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষকের হাসব্যান্ড বলে তাঁর অনেক ক্ষমতা। আর দিন দিন ভাড়াটিয়া দের সাথে এমন বাজে আচরণ ও জুলুম করে থাকে।
তাই দয়া করে যোগাযোগ ভুক্তভোগীকে বিচার পেতে সাহায্য করুন। মেয়েটা এখনও কোনো বিচার পাচ্ছে না। ২টা বাচ্চাসহ সে এই অসুস্থ অবস্থায় বিচারের জন্য আর নিজ ঘরে ফেরার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে এই শীতের মধ্যে।