ঢাকা ১২:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
মঠবাড়ীয়া তীব্র তাপদাহের হাত থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য বিশেষ। প্রার্থনা ময়মনসিংহে আন্তর্জাতিক শব্দদূষণ দিবস উদযাপিত উজিরপুরে সাব রেজিষ্টার মোঃ ইমরান খান এর বিদায় উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত রায়পুরে আলোচনায় চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ জামালপুরে বিনা খেসারি-১ এর চাষের উজ্জল সম্ভাবনা ব্যাংককের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী মনোহরদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হলেন এড.মো. মাসউদ তারাকান্দা উপজেলায় ছেঁড়া ১০টাকা নিয়ে সংঘর্ষে ছেলে নিহত-বাবা সংকটাপন্ন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী তিনজন পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান একজন মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানা পুলিশের অভিযানে ৪১ পিছ ইয়াবা ট্যাবলেট সহ ১আসামী গ্রেফতার

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সচিবের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

রাজশাহী ব‍্যুরোঃ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহী’র  সচিবের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
বিভিন্ন সময়ে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতায় জড়িত থাকায় বোর্ডের বিভিন্ন জনের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন তিনি। সম্প্রতি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে নয়জন কর্মকর্তার বেতন স্কেল নির্ধারণ বিবরণী ও গোপনীয় কাগজপত্র ফটোকপি করার প্রতিবাদ করায় দুই কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার পাশাপাশি তাদের গতিপথে বাঁধাপ্রদান ও বেআইনি পন্থায় উভয় কর্মকর্তাকে সচিবের কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখায় এসব অভিযোগ উঠে আসে সচিব ড. মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে।
গত ১২ সেপ্টেম্বর বিকেলে বোর্ডের সচিবের কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বোর্ডের উপ-পরিচালক (হিসাব ও নিরীক্ষা) বাদশা হোসেন,সহ বেশ কিছু কর্মকর্তার বেতন সমন্বয় সংক্রান্ত নথি ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি অফিসের বাইরে প্রেরণের উদ্দেশ্যে ফটোকপি করেন তিনি। ইতোপূর্বেও ঐ দপ্তর থেকে বিভিন্ন বেতন শিট বিকৃত করে এবং নোট শিটের কপি বাইরে সরবরাহ করার অভিযোগ ছিল। বিষয়টি জানতে উপ-সচিব (প্রশাসন) ওয়ালিদ হোসেন ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মানিকচন্দ্র সেন দুজনে মিলে সচিব ড. মোয়াজ্জেম হোসেনের কক্ষে যান। এসময় উপ-সচিব (প্রশাসন) ওয়ালিদ হোসেন জানতে চান, সংস্থাপন শাখায় রক্ষিত গোপনীয় কাগজপত্র ফটোকপি করার বিষয়ে চেয়ারম্যান স্যারকে জানানো হয়েছে কিনা কিংবা তাঁর অনুমতি নেয়া হয়েছে কিনা। এতে সচিব ও ডিডি ক্ষিপ্ত হয়ে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন ওয়ালিদের সাথে। এক পর্যায়ে উপ-সচিব (প্রশাসন) ওয়ালিদ হোসেন ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মানিকচন্দ্র সেনকে তার রুমে প্রায় একঘন্টা আটকে রাখেন এবং সচিব নিজেসহ দায়িত্বরত আনসারকে ডেকে ওয়ালিদ হোসেনকে শারীরিক ভাবে হেনস্থা করেন।
শিক্ষা বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা এবিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, সচিব কর্তৃক দু’জন কর্মকর্তাকে ঘর থেকে বের হতে বাঁধা দেয়া ও জোড়পূর্বক নিজের কক্ষে অবরুদ্ধ বা আটকে রাখার বিষয়টি প্রত্যক্ষভাবে বেআইনী কাজের সমতুল্য। কারণ হিসেবে তাঁরা বলেন, ‘আইনি বিষয়কে প্রাধান্য দিলে দন্ডবিধির ৩৩৯ ও ৩৪০ ধারায় সচিবের উক্ত আচরণটি বেআইনি। সচিবের এমন ক্ষিপ্ত আচরণ ও ভিডিও ফুটেজে উঁনার ঐসময়ের কর্মকান্ড দেখে অতিসহসায় অনুধাবন করা যায় যে, তিনি পূর্বপরিকল্পিত ভাবে এমন অবরুদ্ধ ও হেনস্তার ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।
এনিয়ে গত ১৩ সেপ্টম্বর শিক্ষাবোর্ডের কর্মচারী ইউনিয়নের বিশেষ সভায় ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
ভুক্তভোগী উপ-সচিব (প্রশাসন) ওয়ালিদ হোসেনসহ ভিডিও ফুটেজের বরাদ দিয়ে সেখানে কর্মকর্তারা আরো বলেন, তিনি ঐ সময় আনসারের সহোযোগিতায় দুজন কর্মকর্তাকে নিজের রুমে জোরপূর্বক আটকে রেখে নিজের মোবাইল থেকে অপরপ্রান্তের কাউকে বলছেন ‘বাহিনী পাঠাও, আবার কখনোবা বা ফোন করে বলছেন থানার ওসিকে পাঠাও’। তবে, অবরুদ্ধের পঁয়তাল্লিশ মিনিট অতিবাহিত হয়ে যাবার পরে বহিরাগত একাধিক বহিরাগত ব্যক্তি সচিবের রুমে প্রবেশ করে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ আছে।
ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষন করে দেখাগেছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর বিকেলে বোর্ডের সচিবের কক্ষে দাপ্তরিক একটি বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা চলার এক পর্যায়ে ওয়ালিদ হোসেন সচিবের কক্ষ থেকে বাইরে চলে যেতে চাইলে সচিব দৌড়ে গিয়ে রুমের দড়জা লক করে দিয়ে বাইরে থাকা আনসারকে ভেতরে ডাকেন। ঐ কক্ষে আসা ওয়ালিদ ও মানিকচন্দ্রকে সচিব ও আনসার কোন ক্রমেই বাইরে বের হতে দিচ্ছিলনা। বিষয়টি প্রত্যক্ষভাবেই উপরোক্ত ধারার লঙ্ঘনের অপচেষ্টা বলে মন্তব্য অনেকের।
অন্যদিকে, একাধিকবার চেষ্টা করেও ঐ দুই কর্মকর্তা যখন বের হতে পারছিলনা তখন তাঁরা তাদের সহকর্মীদের কাছে মোবাইল করে সহোযোগিতা চান। অন্যদিকে, ঐ দুই কর্মকর্তাকে বাইরে যেতে দেওয়া তো দূরের কথা, সচিব ও আনসার শারিরীক শক্তি প্রয়োগ করে নিজের কক্ষে প্রায় ঘন্টাখানেক অবরুদ্ধ বা আটকিয়ে রাখেন। দরজার অপরপ্রান্তে ততক্ষণে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারির আগমন ঘটলেও ভেতর থেকে সচিব দরজা খোলেননি। তিনি বারবার নানাধরনের বিভ্রান্তিকর কথা বলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছেন আটকে থাকা উভয় কর্মকর্তাকে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা জানান, কখনো সচিব বলছেন, তোমরা আমাকে মেরে ফেলতে এসেছো ! কখনোবা বলেছেন, তোমরা আমাকে তুলে নিতে এসেছো।
আমি পুলিশ ডেকে তোমাদেরতে ধরিয়ে দেবো। লাঞ্চিত হওয়া কর্মকর্তারা একাধিকবার সচিব সাহেবকে বলেছেন, চলেন চেয়ারম্যান স্যারের কাছে চলেন। কিন্তু, সচিব তাঁদের কোন কথাই কর্ণপাত না করে, উভয় কর্মকর্তাকে বেআইনিভাবে জোরপূর্বক আটকে রাখেন নিজের কামরায়।
উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে বিভাগীয়ভাবে হিসাব ও নিরীক্ষা শাখার ডিডি বাদশা হোসেন, উপ-সচিব (প্রশাসন) ওয়ালিদ হোসেন ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মানিকচন্দ্র সেনকে উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছেন বোর্ড চেয়ারম্যান বলে জানাগেছে।
বিষয়টি নিয়ে উপ-সচিব (প্রশাসন) ওয়ালিদ হোসেন জানান, অফিসের গোপন কাগজপত্র অসৎ উদ্দেশ্যে ফটোকপি করা হয়েছে। বিষয়টি জানতে চাওয়ায় আমাকেসহ আরও এক কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার পাশাপাশি প্রায় ঘন্টাখানেক অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল সচিবের কক্ষে। বিষয়টি লিখিতভাবে শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে।
এদিকে, বোর্ড সূত্র জানায়, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ড. মোয়াজ্জেম হোসেন সচিব হিসেবে যোগদান করার পর থেকেই নানারকম অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটেই চলেছে শিক্ষা বোর্ডজুড়ে। যার কারণে তিনি ১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বরও একবার শোকজ পেয়েছেন। তিনি বিভিন্ন ধরনের মামলার ফাইল ছাড়াও অন্যান্য শৃঙ্খলাজনিত নথি অযাচিত কারণেই প্রায়শই আটকে রাখেন। এছাড়াও বোর্ড চেয়ারম্যান কর্তৃক ঢাকাস্থ হাইকোর্টে আইনি সহায়তা পাবার জন্য আরো একজন উকিল নিয়োগের সিদ্ধান্ত দাপ্তরিকভাবে গৃহীত হলেও বোর্ড সচিব সেই ফাইলটিও আটকে দেন নিজের ক্ষমতা বলে।
এদিকে শিক্ষা বোর্ডের রুলস এন্ড রেগুলেশনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, ‘শিক্ষা বোর্ডের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা চেয়ারম্যানের দিক নির্দেশনা মোতাবেক সচিবসহ  অন্যান্য অধঃস্তন কর্মকর্তাকে সকল কাজ করতে হবে’। কিন্তু বোর্ডের সচিব অধিকাংশ সময়ই সেই নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজের মন মতো কাজ করেন বলে অভিযোগ আছে।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে সচিব ড. মোয়াজ্জেম হোসেন’কে মুঠোফোনে না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
আরো খবর.......

জনপ্রিয় সংবাদ

মঠবাড়ীয়া তীব্র তাপদাহের হাত থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য বিশেষ। প্রার্থনা

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড সচিবের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

আপডেট টাইম : ১১:৫৪:৫৬ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ৩ অক্টোবর ২০২১
রাজশাহী ব‍্যুরোঃ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহী’র  সচিবের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
বিভিন্ন সময়ে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতায় জড়িত থাকায় বোর্ডের বিভিন্ন জনের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন তিনি। সম্প্রতি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে নয়জন কর্মকর্তার বেতন স্কেল নির্ধারণ বিবরণী ও গোপনীয় কাগজপত্র ফটোকপি করার প্রতিবাদ করায় দুই কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার পাশাপাশি তাদের গতিপথে বাঁধাপ্রদান ও বেআইনি পন্থায় উভয় কর্মকর্তাকে সচিবের কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখায় এসব অভিযোগ উঠে আসে সচিব ড. মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে।
গত ১২ সেপ্টেম্বর বিকেলে বোর্ডের সচিবের কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বোর্ডের উপ-পরিচালক (হিসাব ও নিরীক্ষা) বাদশা হোসেন,সহ বেশ কিছু কর্মকর্তার বেতন সমন্বয় সংক্রান্ত নথি ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি অফিসের বাইরে প্রেরণের উদ্দেশ্যে ফটোকপি করেন তিনি। ইতোপূর্বেও ঐ দপ্তর থেকে বিভিন্ন বেতন শিট বিকৃত করে এবং নোট শিটের কপি বাইরে সরবরাহ করার অভিযোগ ছিল। বিষয়টি জানতে উপ-সচিব (প্রশাসন) ওয়ালিদ হোসেন ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মানিকচন্দ্র সেন দুজনে মিলে সচিব ড. মোয়াজ্জেম হোসেনের কক্ষে যান। এসময় উপ-সচিব (প্রশাসন) ওয়ালিদ হোসেন জানতে চান, সংস্থাপন শাখায় রক্ষিত গোপনীয় কাগজপত্র ফটোকপি করার বিষয়ে চেয়ারম্যান স্যারকে জানানো হয়েছে কিনা কিংবা তাঁর অনুমতি নেয়া হয়েছে কিনা। এতে সচিব ও ডিডি ক্ষিপ্ত হয়ে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন ওয়ালিদের সাথে। এক পর্যায়ে উপ-সচিব (প্রশাসন) ওয়ালিদ হোসেন ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মানিকচন্দ্র সেনকে তার রুমে প্রায় একঘন্টা আটকে রাখেন এবং সচিব নিজেসহ দায়িত্বরত আনসারকে ডেকে ওয়ালিদ হোসেনকে শারীরিক ভাবে হেনস্থা করেন।
শিক্ষা বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা এবিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, সচিব কর্তৃক দু’জন কর্মকর্তাকে ঘর থেকে বের হতে বাঁধা দেয়া ও জোড়পূর্বক নিজের কক্ষে অবরুদ্ধ বা আটকে রাখার বিষয়টি প্রত্যক্ষভাবে বেআইনী কাজের সমতুল্য। কারণ হিসেবে তাঁরা বলেন, ‘আইনি বিষয়কে প্রাধান্য দিলে দন্ডবিধির ৩৩৯ ও ৩৪০ ধারায় সচিবের উক্ত আচরণটি বেআইনি। সচিবের এমন ক্ষিপ্ত আচরণ ও ভিডিও ফুটেজে উঁনার ঐসময়ের কর্মকান্ড দেখে অতিসহসায় অনুধাবন করা যায় যে, তিনি পূর্বপরিকল্পিত ভাবে এমন অবরুদ্ধ ও হেনস্তার ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।
এনিয়ে গত ১৩ সেপ্টম্বর শিক্ষাবোর্ডের কর্মচারী ইউনিয়নের বিশেষ সভায় ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
ভুক্তভোগী উপ-সচিব (প্রশাসন) ওয়ালিদ হোসেনসহ ভিডিও ফুটেজের বরাদ দিয়ে সেখানে কর্মকর্তারা আরো বলেন, তিনি ঐ সময় আনসারের সহোযোগিতায় দুজন কর্মকর্তাকে নিজের রুমে জোরপূর্বক আটকে রেখে নিজের মোবাইল থেকে অপরপ্রান্তের কাউকে বলছেন ‘বাহিনী পাঠাও, আবার কখনোবা বা ফোন করে বলছেন থানার ওসিকে পাঠাও’। তবে, অবরুদ্ধের পঁয়তাল্লিশ মিনিট অতিবাহিত হয়ে যাবার পরে বহিরাগত একাধিক বহিরাগত ব্যক্তি সচিবের রুমে প্রবেশ করে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ আছে।
ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষন করে দেখাগেছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর বিকেলে বোর্ডের সচিবের কক্ষে দাপ্তরিক একটি বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা চলার এক পর্যায়ে ওয়ালিদ হোসেন সচিবের কক্ষ থেকে বাইরে চলে যেতে চাইলে সচিব দৌড়ে গিয়ে রুমের দড়জা লক করে দিয়ে বাইরে থাকা আনসারকে ভেতরে ডাকেন। ঐ কক্ষে আসা ওয়ালিদ ও মানিকচন্দ্রকে সচিব ও আনসার কোন ক্রমেই বাইরে বের হতে দিচ্ছিলনা। বিষয়টি প্রত্যক্ষভাবেই উপরোক্ত ধারার লঙ্ঘনের অপচেষ্টা বলে মন্তব্য অনেকের।
অন্যদিকে, একাধিকবার চেষ্টা করেও ঐ দুই কর্মকর্তা যখন বের হতে পারছিলনা তখন তাঁরা তাদের সহকর্মীদের কাছে মোবাইল করে সহোযোগিতা চান। অন্যদিকে, ঐ দুই কর্মকর্তাকে বাইরে যেতে দেওয়া তো দূরের কথা, সচিব ও আনসার শারিরীক শক্তি প্রয়োগ করে নিজের কক্ষে প্রায় ঘন্টাখানেক অবরুদ্ধ বা আটকিয়ে রাখেন। দরজার অপরপ্রান্তে ততক্ষণে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারির আগমন ঘটলেও ভেতর থেকে সচিব দরজা খোলেননি। তিনি বারবার নানাধরনের বিভ্রান্তিকর কথা বলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছেন আটকে থাকা উভয় কর্মকর্তাকে। ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা জানান, কখনো সচিব বলছেন, তোমরা আমাকে মেরে ফেলতে এসেছো ! কখনোবা বলেছেন, তোমরা আমাকে তুলে নিতে এসেছো।
আমি পুলিশ ডেকে তোমাদেরতে ধরিয়ে দেবো। লাঞ্চিত হওয়া কর্মকর্তারা একাধিকবার সচিব সাহেবকে বলেছেন, চলেন চেয়ারম্যান স্যারের কাছে চলেন। কিন্তু, সচিব তাঁদের কোন কথাই কর্ণপাত না করে, উভয় কর্মকর্তাকে বেআইনিভাবে জোরপূর্বক আটকে রাখেন নিজের কামরায়।
উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে বিভাগীয়ভাবে হিসাব ও নিরীক্ষা শাখার ডিডি বাদশা হোসেন, উপ-সচিব (প্রশাসন) ওয়ালিদ হোসেন ও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মানিকচন্দ্র সেনকে উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছেন বোর্ড চেয়ারম্যান বলে জানাগেছে।
বিষয়টি নিয়ে উপ-সচিব (প্রশাসন) ওয়ালিদ হোসেন জানান, অফিসের গোপন কাগজপত্র অসৎ উদ্দেশ্যে ফটোকপি করা হয়েছে। বিষয়টি জানতে চাওয়ায় আমাকেসহ আরও এক কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার পাশাপাশি প্রায় ঘন্টাখানেক অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল সচিবের কক্ষে। বিষয়টি লিখিতভাবে শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে।
এদিকে, বোর্ড সূত্র জানায়, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ড. মোয়াজ্জেম হোসেন সচিব হিসেবে যোগদান করার পর থেকেই নানারকম অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটেই চলেছে শিক্ষা বোর্ডজুড়ে। যার কারণে তিনি ১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বরও একবার শোকজ পেয়েছেন। তিনি বিভিন্ন ধরনের মামলার ফাইল ছাড়াও অন্যান্য শৃঙ্খলাজনিত নথি অযাচিত কারণেই প্রায়শই আটকে রাখেন। এছাড়াও বোর্ড চেয়ারম্যান কর্তৃক ঢাকাস্থ হাইকোর্টে আইনি সহায়তা পাবার জন্য আরো একজন উকিল নিয়োগের সিদ্ধান্ত দাপ্তরিকভাবে গৃহীত হলেও বোর্ড সচিব সেই ফাইলটিও আটকে দেন নিজের ক্ষমতা বলে।
এদিকে শিক্ষা বোর্ডের রুলস এন্ড রেগুলেশনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, ‘শিক্ষা বোর্ডের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা চেয়ারম্যানের দিক নির্দেশনা মোতাবেক সচিবসহ  অন্যান্য অধঃস্তন কর্মকর্তাকে সকল কাজ করতে হবে’। কিন্তু বোর্ডের সচিব অধিকাংশ সময়ই সেই নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজের মন মতো কাজ করেন বলে অভিযোগ আছে।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে সচিব ড. মোয়াজ্জেম হোসেন’কে মুঠোফোনে না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।