আলোকিত মানুষ গড়ার বাতিঘর সান্দিয়াড়া টিচার্স ক্লাব ও পাঠাগার
- আপডেট টাইম : ০২:৫৭:০০ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৪ জানুয়ারি ২০২১
- / ৩০৬ ৫০০০.০ বার পাঠক
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি।।
সমাজ হতে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, মাদক, নেশা, ইভটিজিং ও ধর্ষণের মতো ঘৃণিত অপরাধমূলক কাজ থেকে জাতিকে মুক্ত করতে ও একটি আদর্শ কল্যাণময় সমাজ গঠনের অনন্য বাতিঘর হিসেবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের সান্দিয়াড়া টিচার্স ক্লাব ও পাঠাগার। শিক্ষক, সাংবাদিক ও সমাজকর্মী এম এ মনিম তুহিন ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘সান্দিয়াড়া টিচার্স ক্লাব ও পাঠাগার’।
মনোরম পরিবেশে অবস্থিত এ পাঠাগারে প্রতিদিন বিভিন্ন পর্যায়ের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষিত যুব সমাজ, কর্মজীবী নারী-পুরুষ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত হয়ে পত্রপত্রিকা, সাময়িকী, গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই পাঠ করে থাকেন। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা এম এ মনিম তুহিন বলেন, আলোকিত মানুষ তৈরি করতে পাঠাগারের বিকল্প নেই। সমাজে আলোকিত ও গুণী মানুষ তৈরিতে পাঠাগারের ভূমিকা অপরিসীম। গ্রন্থাগারকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা যায় দেশীয় সংস্কৃতির স্তম্ভ। আর এ জন্য দেশের প্রতিটি এলাকায় একটি করে গণগ্রন্থাগার প্রয়োজন। সে আলোকেই সান্দিয়াড়া টিচার্স ক্লাব ও পাঠাগার স্বেচ্ছা প্রণোদিত হয়ে কাজ করে চলেছে।
অন্যদিকে যাঁরা শিক্ষাকতা পেশায় নিয়োজিত তাঁদের একটি বড় সমস্যা রয়েছে যে, তাঁদের অবসর সময় কাটানো বা আড্ডা দেয়ার যায়গা নেই। সেদিক থেকে সান্দিয়াড়া টিচার্স ক্লাব ও পাঠাগার একটি উত্তম স্থান। এখানকার নিয়মিত পাঠক কলেজ ছাত্র তানজির বলেন, আমি একজন নবীন কবি আমার কবিতা লেখার রসদ এ প্রতিষ্ঠান থেকেই পেয়ে থাকি। আরেকজন নিয়মিত পাঠক সদ্য স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ রোকসানা লিপি বলেন, আমার লেখাপড়া শেষ, বিভিন্ন স্টাডি মূলক পাঠ ও সাধারণ জ্ঞান চর্চার জন্য হাতের কাছে এ পাঠাগার আছে বলেই তা সম্ভব হচ্ছে। বিশিষ্ট কবি ও কথাসাহিত্যিক সোহেল আমিন বাবু বলেন, নান্দনিক পরিবেশে সান্দিয়াড়াতে স্কুল ও মাদ্রাসার বুকের মধ্যে গড়ে উঠেছে পাঠাগারটি। এলাকার শিক্ষার্থীর মানস গঠনে এবং বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ বিনির্মাণে পাঠাগারটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। পাঠাগারের পরিচালক এম এ মনিম তুহিন একজন সাংস্কৃতিক কর্মী এবং কবিতা কর্মী হওয়ায় বই সংগ্রহে মুনশিয়ানা আছে। জয়তু সান্দিয়াড়া টিচার্স ক্লাব ও পাঠাগার।
এ পাঠাগারে গল্প-উপন্যাসসহ, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রায় হাজার খানেক বই সংগ্রহে রয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় আসবাব পত্রের অভাব রয়েছে এবং অবকাঠামোর উন্নয়ন অতীব জরুরী। কিন্তু অর্থাভাবে তা পূরণ সম্ভব হয়ে উঠছে না। কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পান্টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল সান্দিয়াড়া বাজারে নানাবিধ প্রতিকূল অবস্থার মধ্যদিয়ে গড়ে উঠেছে সান্দিয়াড়া টিচার্স ক্লাব ও পাঠাগার। এটি সংরক্ষণ ও সার্বিক উন্নয়ে প্রয়োজন সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা ও সমাজের বিত্তশালীদের সহযোগিতা। ‘মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, গ্রামে গ্রামে পাঠাগার’ এ স্লোগানের বাস্তবায়নের আশা এর সাথে সংশ্লিষ্টদের।
২০১২ সালের ৬ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয় সান্দিয়াড়া টিচার্স ক্লাব ও পাঠাগার। ২০১৩ সালে কুষ্টিয়া জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার কর্তৃক রেজিষ্ট্রেশন লাভ করে। এ ক্লাব ও পাঠাগারের উদ্যোগে প্রতিবছর জাতীয় দিবস উদযাপনসহ বই পাঠ প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, মাসিক সাহিত্য আড্ডা, সুধী মহলের মতবিনিময় সভা, গুণীজন সম্মাননা, বিভিন্ন সামাজিক সাংকৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণসহ শীতবস্ত্র বিতরণ এবং চোখের চিকিৎসায় চক্ষু ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে এ প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে।