৮০ লাখ টাকাসহ গ্রেফতার পার্থ গোপাল বণিককে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
- আপডেট টাইম : ০৯:০৭:১৮ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২১
- / ২৬৯ ৫০০০.০ বার পাঠক
সময়ের কন্ঠ রিপোর্টার।।
বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি প্রিজনস পার্থ গোপাল বণিককে ৮০ লাখ টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার হওয়ার পর নিম্নআদালতের দেওয়া জামিন বাতিল করে আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে ডিআইজি প্রিজনস পার্থ গোপাল বণিককে অস্বাভাবিকভাবে জামিন দেওয়ার ঘটনায় হাইকোর্টের জারি করা রুলের শুনানি শেষ হয়। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
গত ১৯ আগস্ট পার্থ গোপাল বণিককে অস্বাভাবিকভাবে জামিন দেওয়ার ঘটনায় হাইকোর্টে ক্ষমা প্রার্থনা করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৫-এর বিচারক ইকবাল হোসেন।
হাইকোর্টে দাখিল করা ব্যাখ্যায় তিনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিচার শেষ না করে বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি প্রিজনস পার্থ গোপাল বণিককে জামিন দেওয়ায় ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে তাকে (বিচারক) অব্যাহতি দিতেও আবেদন করা হয়েছে।
গত ১৯ জুন জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজনস) পার্থ গোপাল বণিক জামিন পান।
২০১৯ সালের ২৮ জুলাই সিলেট কারা কর্তৃপক্ষের ডিআইজি পার্থ গোপাল বণিকের ফ্ল্যাট থেকে ঘুস-দুর্নীতির ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ফ্ল্যাটের বিভিন্ন কক্ষে তোশক, বালিশের কভার এবং আলমিরায় লুকানো অবস্থায় এ টাকা পাওয়া যায়। ওই দিনই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিআইজি পার্থ গোপাল বণিক ২০০২ সালের ২০ জুন জেল সুপার হিসেবে যোগদান করেন। প্রথমে তার পোস্টিং হয় রংপুর। ২০১৪ সালে ডিআইজি (প্রিজন) হিসেবে পদোন্নতি পান। পরে তাকে চট্টগ্রামে বদলি করা হয়। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর তাকে সিলেট বদলি করা হয়।
২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার সোহেল রানা ঘুসের টাকাসহ গ্রেফতারের পর আলোচনায় আসেন ডিআইজি পার্থ গোপাল বণিক। ময়মনসিংহগামী ট্রেন থেকে ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার এফডিআর (স্থায়ী আমানত), ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার নগদ চেক এবং ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ রেলওয়ে পুলিশ সোহেল রানাকে গ্রেফতার করে। তিনি চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন।
চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলার সোহেল রানা গ্রেফতারের পর ‘ঘুসের ভাগ পার্থ বণিককে দিয়েছেন’- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ডিআইজি (প্রিজন) পার্থ গোপাল বণিককে সিলেটে বদলি করা হয়। সোহেল রানার ঘুসের অর্থের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ঘাটে ঘাটে দুর্নীতির খোঁজ পায় সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটি। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে কয়েক কর্মকর্তা একাধিকবার দুর্নীতির দায়ে বিভাগীয় শাস্তি ভোগ করেছেন— এ ধরনের তথ্যও বেরিয়ে আসে।
তবে বরখাস্ত ডিআইজি পার্থ দাবি করেছেন, ৮০ লাখ টাকা তার বৈধ আয় থেকে অর্জিত। এর মধ্যে ৩০ লাখ টাকা শাশুড়ি দিয়েছেন। বাকি ৫০ লাখ টাকা সারাজীবনের জমানো।