ঢাকা ০১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
ইরান-ইয়েমেনের কাছাকাছি পারমাণবিক বোমারু বিমান মোতায়েন করছে যুক্তরাষ্ট্র ঈদের তৃতীয় দিনে কেউ ঢাকায় ফিরছেন, আবার কেউ ছাড়ছেন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর অস্ত্রপচারের জন্য ছুটি নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অটোরিকশার ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে ভৈরবে রেলওয়ে জংশনের সামনে সিগন্যালের তার সহ ২জন চোর গ্রেফতার মোংলায় সহকারি অ্যাটর্ণি জেনারেল মনিরুজ্জামান: গণঅভ্যুত্থানের গণআকাংখা হলো সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সুশাসন নিশ্চিত করা সংস্কার সংস্কারের মত চলবে, নির্বাচন নির্বাচনের মত// প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর আমাদের জন্য ইতিবাচক ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নাড়ির টানে গ্রামে সবাই, রাজধানী ‘ফাঁকা’ ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে প্রাণচাঞ্চল্য,পর্যটকদের বরণে প্রস্তুত হোটেল-রিসোর্ট রাফা খালি করে দিতে বলল ইসরাইলি বাহিনী আজমিরীগঞ্জে বাড়ির সীমানা নিয়ে সংঘর্ষে আহত শিশু সহ আহত ৯

দেশে পানিতে ডুবে প্রাণহানির ৮২ শতাংশই শিশু

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৬:৩০:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ জানুয়ারী ২০২১
  • / ২৮৪ ৫০০০.০ বার পাঠক

সময়ের কন্ঠ রিপোর্টার।

পানিতে ডুবে মারা যাওয়াদের মধ্যে ৮২ শতাংশই শিশু। যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে। এদের ৮০ শতাংশের বয়স ৯ বছরের কম। পরিবারের সদস্যদের অসতর্কতার কারণে সিংহভাগ মৃত্যু ঘটছে। পানিতে ডুবে মোট মৃতদের ৮১ শতাংশ পরিবারের সদস্যদের অগোচরে পানির সংস্পর্শে যায় এবং ডুবে মারা যায় বলে জানিয়েছে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় গণমাধ্যম ও যোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘সমষ্টি’।

২০২০ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে দেখা যায়, এ সময় ৪২৫টি পৃথক ঘটনায় সারা দেশে ৭৬৯ জন পানিতে ডুবে মারা যায়। মৃতদের ৮২ শতাংশই শিশু। চার বছর বা কম বয়সি ২৪৮ জন শিশু, ৫ থেকে ৯ বছর বয়সি ২৫৮ জন, ৯-১৪ বছরের ৯৯ জন এবং ১৫-১৮ বছরের ২৮ জন।

এক জরিপে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে গড়ে দিনে ৪০টি শিশু মারা যাচ্ছে পানিতে ডুবে। জনসংখ্যার অনুপাতে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায় বাংলাদেশে। এমনকি রোগে ভুগে মৃত্যুর চেয়ে দেশটিতে পানিতে ডুবে মৃত্যুর হারই বেশি বলে মনে করেন গবেষকরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, পানিতে ডুবে বেশি শিশুর মৃত্যু ঘটে এশিয়াতেই, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায়। ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস, জন হপকিন্স ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্চ ইউনিট, দি সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বা সিআইপিআরবি এবং আইসিডিডিআরবির এক গবেষণা থেকে এ তথ্য জানা যায়।ইন্টারন্যাশনাল ড্রাউনিং রিসার্চ সেন্টার (আইডিআরসি) বাংলাদেশের ডিরেক্টর ড.আমিনুর রহমান বলছেন, প্রতিবেশী ভারতে পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যা বাংলাদেশের তুলনায় বেশি হলেও জনসংখ্যার অনুপাতে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার বাংলাদেশেই বেশি। সবাই বলে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়ায় বেশি মারা যায়; কিন্তু আসলে বেশি শিশু মারা যায় পানিতে ডুবে। কিন্তু এটা রিপোর্ট হয় না। পুলিশের খাতায়ও এদের সংখ্যা থাকে না, বলছিলেন তিনি।

২০২০ সালে পানিতে ডুবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ঢাকা বিভাগে, ১৮৪ জন। এছাড়া চট্টগ্রামে ১৪৫ জন, রংপুরে ১১৩, রাজশাহীতে ১০০, ময়মনসিংহে ৮৮, বরিশালে ৫১ ও খুলনা বিভাগে ৪৭ জন মারা যায়। এ সময়ে সবচেয়ে কম মৃত্যু ছিল সিলেট বিভাগে, ৪১ জন। নেত্রকোনা জেলায় ২০২০ সালে সবচেয়ে বেশি মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়, ৪৮ জন। পরবর্তী স্থানগুলোতে রয়েছে ঢাকা, নোয়াখালী, দিনাজপুর, গাজীপুর ও কুড়িগ্রাম জেলা। এসব জেলায় যথাক্রমে ৪৩, ৩১, ৩০, ২৭ ও ২৫ জন মারা যায়। বান্দরবান, শরীয়তপুর, খুলনা ও নড়াইলে চারটি জেলায় কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।

জুন থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৫৪১ জন মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে আগস্ট মাসে, ১৬৬ জন। জুন মাসে ৯০ জন, জুলাই মাসে ১৩৪ জন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে যথাক্রমে ৭৩ ও ৭৮ জন মারা যায়। সবচেয়ে কম সংখ্যক মৃত্যু ছিল ফেব্রুয়ারি মাসে, ১০ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৪ সালের বৈশ্বিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে ৫ বছরের কম বয়সি শিশুমৃত্যুর ৪৩ শতাংশের কারণ পানিতে ডুবে মারা যাওয়া।

বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশের (সিআইপিআরবি) পরিচালক ড. আমিনুর রহমান বলেন, এত শিশুর মৃত্যু সত্ত্বেও বিষয়টি পরিকল্পনা ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অগ্রাধিকারের তালিকায় জায়গা করে নিতে পারেনি। ফলে এ নিয়ে সরকারি পর্যায়ে বা জাতীয়ভাবে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই। তিনি বলেন, পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু প্রতিরোধে একটি জাতীয় কৌশল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তিন বছর আগে একটি খসড়া করেছে, কিন্তু সেটি চূড়ান্ত হয়নি।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দেশে পানিতে ডুবে প্রাণহানির ৮২ শতাংশই শিশু

আপডেট টাইম : ০৬:৩০:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ জানুয়ারী ২০২১

সময়ের কন্ঠ রিপোর্টার।

পানিতে ডুবে মারা যাওয়াদের মধ্যে ৮২ শতাংশই শিশু। যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে। এদের ৮০ শতাংশের বয়স ৯ বছরের কম। পরিবারের সদস্যদের অসতর্কতার কারণে সিংহভাগ মৃত্যু ঘটছে। পানিতে ডুবে মোট মৃতদের ৮১ শতাংশ পরিবারের সদস্যদের অগোচরে পানির সংস্পর্শে যায় এবং ডুবে মারা যায় বলে জানিয়েছে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় গণমাধ্যম ও যোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘সমষ্টি’।

২০২০ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে দেখা যায়, এ সময় ৪২৫টি পৃথক ঘটনায় সারা দেশে ৭৬৯ জন পানিতে ডুবে মারা যায়। মৃতদের ৮২ শতাংশই শিশু। চার বছর বা কম বয়সি ২৪৮ জন শিশু, ৫ থেকে ৯ বছর বয়সি ২৫৮ জন, ৯-১৪ বছরের ৯৯ জন এবং ১৫-১৮ বছরের ২৮ জন।

এক জরিপে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে গড়ে দিনে ৪০টি শিশু মারা যাচ্ছে পানিতে ডুবে। জনসংখ্যার অনুপাতে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায় বাংলাদেশে। এমনকি রোগে ভুগে মৃত্যুর চেয়ে দেশটিতে পানিতে ডুবে মৃত্যুর হারই বেশি বলে মনে করেন গবেষকরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, পানিতে ডুবে বেশি শিশুর মৃত্যু ঘটে এশিয়াতেই, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায়। ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস, জন হপকিন্স ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্চ ইউনিট, দি সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বা সিআইপিআরবি এবং আইসিডিডিআরবির এক গবেষণা থেকে এ তথ্য জানা যায়।ইন্টারন্যাশনাল ড্রাউনিং রিসার্চ সেন্টার (আইডিআরসি) বাংলাদেশের ডিরেক্টর ড.আমিনুর রহমান বলছেন, প্রতিবেশী ভারতে পানিতে ডুবে মৃত্যুর সংখ্যা বাংলাদেশের তুলনায় বেশি হলেও জনসংখ্যার অনুপাতে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার বাংলাদেশেই বেশি। সবাই বলে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়ায় বেশি মারা যায়; কিন্তু আসলে বেশি শিশু মারা যায় পানিতে ডুবে। কিন্তু এটা রিপোর্ট হয় না। পুলিশের খাতায়ও এদের সংখ্যা থাকে না, বলছিলেন তিনি।

২০২০ সালে পানিতে ডুবে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ঢাকা বিভাগে, ১৮৪ জন। এছাড়া চট্টগ্রামে ১৪৫ জন, রংপুরে ১১৩, রাজশাহীতে ১০০, ময়মনসিংহে ৮৮, বরিশালে ৫১ ও খুলনা বিভাগে ৪৭ জন মারা যায়। এ সময়ে সবচেয়ে কম মৃত্যু ছিল সিলেট বিভাগে, ৪১ জন। নেত্রকোনা জেলায় ২০২০ সালে সবচেয়ে বেশি মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়, ৪৮ জন। পরবর্তী স্থানগুলোতে রয়েছে ঢাকা, নোয়াখালী, দিনাজপুর, গাজীপুর ও কুড়িগ্রাম জেলা। এসব জেলায় যথাক্রমে ৪৩, ৩১, ৩০, ২৭ ও ২৫ জন মারা যায়। বান্দরবান, শরীয়তপুর, খুলনা ও নড়াইলে চারটি জেলায় কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।

জুন থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৫৪১ জন মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে আগস্ট মাসে, ১৬৬ জন। জুন মাসে ৯০ জন, জুলাই মাসে ১৩৪ জন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে যথাক্রমে ৭৩ ও ৭৮ জন মারা যায়। সবচেয়ে কম সংখ্যক মৃত্যু ছিল ফেব্রুয়ারি মাসে, ১০ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৪ সালের বৈশ্বিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে ৫ বছরের কম বয়সি শিশুমৃত্যুর ৪৩ শতাংশের কারণ পানিতে ডুবে মারা যাওয়া।

বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশের (সিআইপিআরবি) পরিচালক ড. আমিনুর রহমান বলেন, এত শিশুর মৃত্যু সত্ত্বেও বিষয়টি পরিকল্পনা ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অগ্রাধিকারের তালিকায় জায়গা করে নিতে পারেনি। ফলে এ নিয়ে সরকারি পর্যায়ে বা জাতীয়ভাবে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই। তিনি বলেন, পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু প্রতিরোধে একটি জাতীয় কৌশল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তিন বছর আগে একটি খসড়া করেছে, কিন্তু সেটি চূড়ান্ত হয়নি।