ঢাকা ০২:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
টাঙ্গাইল সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকের হস্তক্ষেপে মামলা প্রত্যাহার হওয়া টাঙ্গাইলবাসী খুশি! সভাপতি/সম্পাদকের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ অনিয়মের বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান সিইসির পুলিশ, র‌্যাব, আনসারের নতুন পোশাক চুড়ান্ত নাইজেরিয়ায় ট্যাংকার ট্রাক বিস্ফোরণে নিহত অন্তত ৮৬ অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করা প্রতিবেদন প্রত্যাহার ব্রিটিশ এমপিদের যুবদল নেতাকে পিটিয়ে আহত করেছে স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা বরগুনার, পাথরঘাটায় সাবেক ইউপি সদস্যকে হুমকি ও মারধর চার প্রদেশে দেশ ভাগ করার কথা ভাবছে সংস্কার কমিশন যুদ্ধবিরতি এখনই কার্যকর হচ্ছে না, জানালেন নেতানিয়াহু সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

সালিশে বিয়ে করা ইউপি চেয়ারম্যান শাহীনের বরখাস্তের আদেশ স্থগিতই থাকছে

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৯:৪৫:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ অগাস্ট ২০২১
  • / ২৬৫ ৫০০০.০ বার পাঠক

সময়ের কন্ঠ রিপোর্টার।।

সালিশে গিয়ে কিশোরীকে বিয়ের ঘটনায় পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারের বরখাস্তের আদেশ স্থগিত থাকছে। সেই সঙ্গে তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশের বৈধতা নিয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রবিবার রুলসহ এ আদেশ দেয়।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী নাজমুল হাসান রাকিব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

সালিশে ডেকে কিশোরীকে বিয়ের ঘটনায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ গত ২৯ জুন কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারের সময়িক বরখাস্ত করে।

সেটি চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন শাহীন হাওলাদার। সেই রিটের প্রাথমিক শুনানির পর গত ৭ জুলাই বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের একক ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থানীয় সরকার বিভাগের গত ২৯ জুনের আদেশটি স্থগিত করে।

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে তখন আদালতের কার্যক্রম চলছিল সীমিত পরিসরে। হাইকোর্টের ওই স্থগিতাদেশের মেয়াদ ছিল একমাস অথবা নিয়মিত আদালত খোলা পর্যন্ত।

তারই ধারাবাহিকতায় রিট আবেদনটি রোববার উপস্থাপন করা হলে আদলত স্থগিতাদেশ বহাল রাখার পাশাপাশি রুল জারি করে।

কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্ত করে গত ২৯ জুন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের দেওয়া আদেশ কেন ‘আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বেআইনি’ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক ও বাউফল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আইনজীবী নাজমুল হাসান রাকিব জানান, আগের আদেশের ধারাবাহিকতায় রিট আবেদনটি উপস্থাপন করা হলে আজ রুলসহ স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত। স্থগিতাদেশ কত দিনের তা লিখিত আদেশ পেলে জানা যাবে।

এ আদেশের ফলে শাহীন হাওলাদার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনে আপাতত কোনো বাধা থাকছে না বলে জানান এই আইনজীবী।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমারজানান, স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কিনা- সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সে সিদ্ধান্ত নেবে।

সালিশে গিয়ে এক কিশোরীকে বিয়ে করার কারণে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ।

গত ২৯ জুন মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শাহীন হাওলাদার সালিশ করতে গিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীকে বিয়ে করে স্থানীয় সরকার(ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪ (৪) (ঘ) ধারার অপরাধ সংঘটিত করেছেন।

সাময়িক বরখাস্তের কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কেন তাকে চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না, তা পত্র প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তার জবাব সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ওই কিশোরী গত ২৪ জুন প্রেমের টানে এক কিশোরের সঙ্গে বাড়ি ছাড়লে তার বাবার নালিশ পেয়ে চেয়ারম্যান শাহীন সালিশ ডাকেন বলে স্থানীয়রা জানায়।

সেই সালিশে বসার পর মেয়েটিকে পছন্দ হয়ে যায় ৬০ বছর বয়সী চেয়ারম্যানের। তখন তিনি ওই কিশোরীকে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন।

এই ঘটনা তুমুল আলোচনা সৃষ্টি করায় পরদিন চেয়ারম্যানকে তালাক দিয়ে ওই কিশোরী বাড়িতে ফিরে যান। তালাকের ব্যবস্থা নিজেই করেছিলেন বলে শাহীন দাবি করেন।

এদিকে গণমাধ্যমে আসা খবর দেখে হাইকোর্ট গত ২৭ জুন এক আদেশে জেলা প্রশাসককে বলে, চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন কিনা তা তদন্ত করতে হবে।

একই সঙ্গে ওই কিশোরীকে বিয়ে করার ক্ষেত্রে ‘বাল্য বিবাহ’ ঘটেছে কি না, তা তদন্ত করতে জেলা নিবন্ধককে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এছাড়া পুরো ঘটনায় ফৌজদারী অপরাধ ঘটেছে কিনা তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে নির্দেশ দেয় আদালত। এসবের প্রমাণ মিললে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতেও বলা হয় আদেশে।

সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে তদন্ত প্রতিবেদন ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।

আর পটুয়াখালীর পুলিশ সুপারকে বলা হয়েছিল কিশোরী ও তার পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সালিশে বিয়ে করা ইউপি চেয়ারম্যান শাহীনের বরখাস্তের আদেশ স্থগিতই থাকছে

আপডেট টাইম : ০৯:৪৫:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ অগাস্ট ২০২১

সময়ের কন্ঠ রিপোর্টার।।

সালিশে গিয়ে কিশোরীকে বিয়ের ঘটনায় পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারের বরখাস্তের আদেশ স্থগিত থাকছে। সেই সঙ্গে তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশের বৈধতা নিয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রবিবার রুলসহ এ আদেশ দেয়।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী নাজমুল হাসান রাকিব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

সালিশে ডেকে কিশোরীকে বিয়ের ঘটনায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ গত ২৯ জুন কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারের সময়িক বরখাস্ত করে।

সেটি চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন শাহীন হাওলাদার। সেই রিটের প্রাথমিক শুনানির পর গত ৭ জুলাই বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের একক ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থানীয় সরকার বিভাগের গত ২৯ জুনের আদেশটি স্থগিত করে।

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে তখন আদালতের কার্যক্রম চলছিল সীমিত পরিসরে। হাইকোর্টের ওই স্থগিতাদেশের মেয়াদ ছিল একমাস অথবা নিয়মিত আদালত খোলা পর্যন্ত।

তারই ধারাবাহিকতায় রিট আবেদনটি রোববার উপস্থাপন করা হলে আদলত স্থগিতাদেশ বহাল রাখার পাশাপাশি রুল জারি করে।

কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্ত করে গত ২৯ জুন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের দেওয়া আদেশ কেন ‘আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বেআইনি’ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক ও বাউফল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আইনজীবী নাজমুল হাসান রাকিব জানান, আগের আদেশের ধারাবাহিকতায় রিট আবেদনটি উপস্থাপন করা হলে আজ রুলসহ স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত। স্থগিতাদেশ কত দিনের তা লিখিত আদেশ পেলে জানা যাবে।

এ আদেশের ফলে শাহীন হাওলাদার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনে আপাতত কোনো বাধা থাকছে না বলে জানান এই আইনজীবী।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমারজানান, স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কিনা- সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সে সিদ্ধান্ত নেবে।

সালিশে গিয়ে এক কিশোরীকে বিয়ে করার কারণে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ।

গত ২৯ জুন মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শাহীন হাওলাদার সালিশ করতে গিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীকে বিয়ে করে স্থানীয় সরকার(ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪ (৪) (ঘ) ধারার অপরাধ সংঘটিত করেছেন।

সাময়িক বরখাস্তের কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কেন তাকে চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না, তা পত্র প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তার জবাব সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ওই কিশোরী গত ২৪ জুন প্রেমের টানে এক কিশোরের সঙ্গে বাড়ি ছাড়লে তার বাবার নালিশ পেয়ে চেয়ারম্যান শাহীন সালিশ ডাকেন বলে স্থানীয়রা জানায়।

সেই সালিশে বসার পর মেয়েটিকে পছন্দ হয়ে যায় ৬০ বছর বয়সী চেয়ারম্যানের। তখন তিনি ওই কিশোরীকে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন।

এই ঘটনা তুমুল আলোচনা সৃষ্টি করায় পরদিন চেয়ারম্যানকে তালাক দিয়ে ওই কিশোরী বাড়িতে ফিরে যান। তালাকের ব্যবস্থা নিজেই করেছিলেন বলে শাহীন দাবি করেন।

এদিকে গণমাধ্যমে আসা খবর দেখে হাইকোর্ট গত ২৭ জুন এক আদেশে জেলা প্রশাসককে বলে, চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন কিনা তা তদন্ত করতে হবে।

একই সঙ্গে ওই কিশোরীকে বিয়ে করার ক্ষেত্রে ‘বাল্য বিবাহ’ ঘটেছে কি না, তা তদন্ত করতে জেলা নিবন্ধককে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এছাড়া পুরো ঘটনায় ফৌজদারী অপরাধ ঘটেছে কিনা তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে নির্দেশ দেয় আদালত। এসবের প্রমাণ মিললে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতেও বলা হয় আদেশে।

সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে তদন্ত প্রতিবেদন ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।

আর পটুয়াখালীর পুলিশ সুপারকে বলা হয়েছিল কিশোরী ও তার পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে।