অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি গরু’র রচনা।

- আপডেট টাইম : ১১:৫৬:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১
- / ৭৯১ ৫০০০.০ বার পাঠক
সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।
একদিন আই এস সি পড়ার ক্লাসে এলেন বাঙ্লার অধ্যাপক চারুচন্দ্র মুখোপাধ্যায়। অফ পিরীয়ড। এসেই বললেন রচনা লেখো। যদিও সেই ক্লাসের সবার পাঠ্য বিষয় ছিল অঙ্ক, রসায়ন ও উদ্ভিদবিদ্যা।
ছাত্রদের প্রশ্ন – “কি লিখব স্যার” ?
স্যার বললেন”গরুর রচনা লেখো” । শুনেই সবার মাথায় হাত। স্যার বলছেন কী ? এই উচু ক্লাসে, বুড়ো বয়সে গরু রচনা! কেউ কেউ মুখ টিপে হাসতেও লাগলো।
হাসলো না শুধু একটি ছাত্র । সে বললো – “স্যার, রচনা মানে গদ্য হতে হবে এমন মানে আছে কি ?”
স্যার বললেন -” সেরকম তো কথা নেই”।
খানিক বাদে ছাত্রটি হাজির করল তার লেখা । ক্লাসে বসে বাকিরা তখনও ভাবছে স্যার বুঝি তাদের সাথে ঠাট্টা তামাশা করছেন। হঠাৎ স্যার বললেন – “শোনো শোনো, কী লিখেছে তোমাদের বন্ধু…..
মানুষ তোমায় বেজায় খাটায়
টানায় তোমায় লাঙ্গল গাড়ি,
একটু যদি দোষ করেছ
অমনি পড়ে লাঠির বাড়ি।
আপন জিনিস বলতে তোমার
নেই কিছু এই বিশ্বেতে,
তোমার বাঁটের দুধটুকু তা-ও
বাছুর তোমার পায়না খেতে।
মানুষ তোমার মাংস খাবে,
অস্থি দেবে জমির সারে,
চামড়া দিয়ে পরবে জুতো বারণ কে তায় করতে পারে?
তোমার পরেই এই অত্যাচার হে মর্তের কল্পতরু।
কারণ ? নহ সিংহ কি বাঘ,
কারন তুমি নেহাৎ গরু।”
স্যার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলেন – “অনেক বড় হও বাবা”।
বড় হয়েও ছিল সেই ছেলেটা। ডাক্তার হয়েছিল। বড়ো সাহিত্যিকও…… বাংলা ছোট গল্পের মাঁপাসা ডা: বলাই চাঁদ মুখোপাধ্যায় ওরফে বনফুল ।
বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ “গরু” রচনাগুলোর মধ্যে আজো অবস্থান করছে এই রচনাটি।
============================