হাতিয়ায় ইউপি সদস্যকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা
- আপডেট টাইম : ০৬:৪৬:১০ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১০ জুন ২০২১
- / ২৭৯ ৫০০০.০ বার পাঠক
সময়ের কন্ঠ রিপোর্টার।।
নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নে রবিন্দ্র চন্দ্র দাস (৪৮) নামের এক ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে এবং কুপিয়ে হত্যা করেছে দূর্বত্তরা। পূর্ব বিরোধের জেরে এ হত্যাকান্ড হয়েছে বলে দাবি নিহতের স্বজনদের।
বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে খাসেরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদের বাড়ীর সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রবিন্দ্র চন্দ্র দাস চরঈশ্বর ৩নং ওয়ার্ডের স্বতিষ চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য (মেম্বার) ও উপজেলা আ.লীগের সদস্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি আল আমিনসহ মোটরসাইকেল যোগে চরঈশ্বর থেকে ওছখালী নিজের বাসায় ফিরছিলেন রবিন্দ্র চন্দ্র দাস। পথে তাদের মোটরসাইকেলটি চরঈশ্বর প্রধান সড়কের খাসেরহাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদের বাড়ীর সামনে আসলে একদল দুর্বৃত্ত তাদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে গতিরোধ করে। এসময় মোটরসাইকেলের পিছনে থাকা আল আমিন পিছন দিকে দৌঁড়ে পালিয়ে গেলেও হামলাকারীদের হাতে আটকা পড়ে রবিন্দ্র। হামলাকারীরা প্রথমে রবিন্দ্রকে গুলি ও পরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে এবং তার হাতের কব্জি ও রগ কেটে ফেলে যায়। পরে একদল টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রবিন্দ্রের লাশ উদ্ধার করে।
রবিন্দ্রের সাথে থাকা শ্রমিকলীগ নেতা আল আমিন অভিযোগ করে বলেন, আমরা মোটরসাইকেল নিয়ে আসার পথে আজাদ চেয়ারম্যানের বাড়ীর সামনে আসার সাথে সাথে চেয়ারম্যানের ভাতিজা সোহেল, ছেলে অমি, রহিম ডাকাত ও নাজিমসহ কয়েকজন আমাদের লক্ষ্য করে গুলি করে। এসময় আমরা মোটরসাইকেল রেখে পালানো চেষ্টা করলে তারা রবিন্দ্রকে ধরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে।
নিহতের পিতা স্বতিষ চন্দ্র দাস বলেন, রাতে বাংলা বাজার থেকে ওছখালি যাচ্ছিল রবিন্দ্র। রাতে তার মোবাইল বন্ধ পেয়ে ওছখালি বাসায় কল দিয়ে জানতে পারি সে বাসায় যায়নি। এর কিছুক্ষণ পর একজন মোবাইলে জানায় রবিন্দ্রকে কেটে ফেলছে।
চরঈশ্বর ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রাশেদ উদ্দিন জানান, আব্দুল হালিম আজাদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তার একক স্বেচ্ছাচারিতার কারণে রবিন্দ্র মেম্বারসহ আমাদের সাথে তার সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। এরপর ১১জন মেম্বার একসাথে লিখিতভাবে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা দেয়। এনিয়ে আজাদ চেয়ারম্যান আমাদের হত্যার হুমকি দেয়। এর জের ধরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন তিনি।
নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম আজাদ বলেন, আমি বর্তমানে ঢাকা রয়েছি। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে আমি, আমার পরিবারের ও দলের কোন লোকজন জড়িত নেই। একটি চক্র তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
হাতিয়া থানার ওসি আবুল খায়ের জানান, রাতে রবিন্দ্র চন্দ্র দাস ও আল আমিনসহ আরও দুইজন তিনটি মোটরসাইকেল নিয়ে ওছখালি আসার পথে এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।