ঢাকা ০৩:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
চট্টগ্রামে জনতা ব্যাংক সিবিএ নেতা আফসার আ.লীগের আমলে দাপট দেখিয়ে এখন বিএনপি নিয়োগ, বদলি, চাঁদাবাজি করে কামিয়েছেন টাকা মহারাষ্ট্রে ভূমিধস জয়ের পথে বিজেপি জোট, ঝাড়খণ্ডে ‘ইন্ডিয়া’ পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু জুলাই বিপ্লবে আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমানের ছেলে মো. বাবুকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হচ্ছে থাইল্যান্ড আজমিরীগঞ্জে  বিয়ের ছয় মাস পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা রায়পুরে দেশীয় শিল্প ও পণ্য মেলায় ভ্রাম্যমান আদালত, নগদ অর্থদণ্ড কালিয়াকৈরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের উঠান বৈঠক ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত  মোংলায় জলবায়ু ন্যায্যতার গণসংলাপে বক্তারা : সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষা দিন অভিনব কায়দায় কুমড়া শাকের আড়ালে গাঁজা পাচারকালে ডিএনসি- কুমিল্লার হাতে ১৩ কেজি গাঁজাসহ আটক ০২ নারী মঠবাড়ীয়া সাফলেজা কচুবাড়ীয়া বসত ঘর ভাঙচুর লুটপাট ও যখম এর অভিযোগ আঃ খালেক হাওলাদার গংদের বিরুদ্ধে

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন মানুষ

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৮:১৯:১১ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল ২০২১
  • / ২৬৪ ৫০০০.০ বার পাঠক

সময়ের কন্ঠ রিপোর্টার।।

গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে বাড়ি ফেরা মানুষের উপচেপড়া ভিড় তৈরি হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে চলমান লকডাউনের কারণে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় মাইক্রো, প্রাইভেটকার, সিএনজিসহ নানা মাধ্যমে পাটুরিয়া ও আরিচাঘাট হয়ে মানুষ গ্রামের বাড়ি ফিরছেন। এ সুযোগে চড়া ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে।

অবৈধভাবে দূরপাল্লার রুটে যাত্রী বহনকারী এসব পরিবহন আটকে ট্রাফিক পুলিশকে মামলা দায়ের ও জরিমানা আদায় করতেও দেখা গেছে।

আজ মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) গাবতলীতে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোর থেকে শহরে থাকা মানুষেরা গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে এসে অপেক্ষা করছেন। নানাভাবে চেষ্টা করেও দূরপাল্লার বাস না পেয়ে মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, সিএনজি, পিকআপ ও ট্রাক ভর্তি করে আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাট হয়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে অনেকে ছোট শিশু ও পরিবারসহ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।

দেখা গেছে, গাবতলী থেকে ঘাট পর্যন্ত পৌঁছে সেখান থেকে লোকাল বাসে তারা বাড়ি যাচ্ছেন। উপচেপড়া মানুষের ভিড় থাকায় গাবতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মাইক্রোবাস অথবা প্রাইভেটকার থামলেই যাত্রীরা যাবেন নাকি, যাবেন নাকি বলে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। এ সময় অতিরিক্ত ভাড়ার লোভে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে গাড়ি ভর্তি করে মানুষ নিয়ে যাচ্ছে এই পরিবহনগুলো।

মিরপুরে মাটিকাটা এলাকায় নাতির বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন ৬৫ বছরের বৃদ্ধা মিনারা বেগম। সকাল থেকে গাবতলীতে বসে আছেন খুলনায় গ্রামের বাড়িতে ফিরবেন বলে। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় নানাভাবে চেষ্টা করেও যেতে না পেরে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে করছিলেন তিনি।

এই বৃদ্ধার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তিন মাস আগে নাতির বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে লকডাউন শুরু হওয়ার আগে বাড়ি যেতে চাচ্ছেন। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় বিভিন্ন মাধ্যমে ভাড়া বেশি হওয়ায় তার পক্ষে বাড়ি যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে ব্যাগভর্তি কাপড় নিয়ে বাস টার্মিনালে অপেক্ষা করছেন। চলমান লকডাউনের মধ্যে এর আগেও দুদিন এখানে এসে ব্যর্থ হয়ে আবার নাতির বাড়িতে ফিরে গেছেন তিনি।

ছোট তিন সন্তানকে নিয়ে গাবতলী বাস টার্মিনালে অপেক্ষা করছেন আফরিুজা বেগম। মেয়ে অসুস্থ হওয়ায় ঢাকায় এসেছিলেন তাকে দেখতে। বর্তমানে তার স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়ায় জরুরিভাবে যশোরে গ্রামের বাড়ি যেতে চাচ্ছেন। ভোর থেকে গাবতলীতে এসে অপেক্ষা করলেও বাস না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন। আল্লাহর ওপর ভরসা করে জীবন বাজি রেখে তিনি গ্রামের বাড়িতে ফিরতে চান বলে জানান।

ছয় মাসের দুধের শিশু, স্ত্রীসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশ্যে গাবতলী এসেছেন ঢাকায় থাকা এক পরিবার। এই পরিবারের কর্তা হারুনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, লকডাউনে এক সপ্তাহ বাড়ি থেকে বেরোতে পারবো না, এ কারণে পরিবারসহ বাড়ি যাচ্ছি। বাড়িতে মা ও আত্মীয়-স্বজন আছে, বন্ধের দিনগুলো সবার সঙ্গে কাটাতে বাড়ি ফিরছেন বলে জানান তিনি।

দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় আরিচা ঘাট পর্যন্ত যেতে একটি প্রাইভেট কার ২ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান ইউসুফ।

লকডাউনের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে গাবতলী থেকে আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাটে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছেন উবারে প্রাইভেটকারচালক মিজান মিয়া। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, মাথাপিছু ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় যাত্রী নিয়ে আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাটে নামিয়ে দিচ্ছেন। এজন্য গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের দালালদের ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দিতে হচ্ছে। দালালদের মাধ্যমে যাত্রী তোলা হয় বলে জানান তিনি।

উবার-পাঠাও বন্ধ থাকায় হাইওয়ে রোডে মোটরসাইকেলে যাত্রী নিচ্ছেন শামসুল আলম। তিনি জানান, ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকায় যাত্রী নিয়ে ঘাটে পৌঁছে দিচ্ছেন।

গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট হাসানাত বলেন, গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে অবৈধভাবে যেসব মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারে যাত্রী নেয়া হচ্ছে, তাদের আটক করে যাত্রী নামিয়ে ৩ হাজার টাকা জরিমানা স্বরূপ মামলা দায়ের করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এখানে তিনি একা ডিউটি করায় সবাইকে আটক করা তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এই সুযোগে কেউ কেউ যাত্রী নিয়ে চলে যেতে পারছেন। তবে সকাল থেকে এ পর্যন্ত ৬০ জনকে আটক করে মামলা দায়ের করেছেন বলেও জানান তিনি।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন মানুষ

আপডেট টাইম : ০৮:১৯:১১ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল ২০২১

সময়ের কন্ঠ রিপোর্টার।।

গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে বাড়ি ফেরা মানুষের উপচেপড়া ভিড় তৈরি হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে চলমান লকডাউনের কারণে দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় মাইক্রো, প্রাইভেটকার, সিএনজিসহ নানা মাধ্যমে পাটুরিয়া ও আরিচাঘাট হয়ে মানুষ গ্রামের বাড়ি ফিরছেন। এ সুযোগে চড়া ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে।

অবৈধভাবে দূরপাল্লার রুটে যাত্রী বহনকারী এসব পরিবহন আটকে ট্রাফিক পুলিশকে মামলা দায়ের ও জরিমানা আদায় করতেও দেখা গেছে।

আজ মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) গাবতলীতে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোর থেকে শহরে থাকা মানুষেরা গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে এসে অপেক্ষা করছেন। নানাভাবে চেষ্টা করেও দূরপাল্লার বাস না পেয়ে মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, সিএনজি, পিকআপ ও ট্রাক ভর্তি করে আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাট হয়ে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে অনেকে ছোট শিশু ও পরিবারসহ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।

দেখা গেছে, গাবতলী থেকে ঘাট পর্যন্ত পৌঁছে সেখান থেকে লোকাল বাসে তারা বাড়ি যাচ্ছেন। উপচেপড়া মানুষের ভিড় থাকায় গাবতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মাইক্রোবাস অথবা প্রাইভেটকার থামলেই যাত্রীরা যাবেন নাকি, যাবেন নাকি বলে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। এ সময় অতিরিক্ত ভাড়ার লোভে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে গাড়ি ভর্তি করে মানুষ নিয়ে যাচ্ছে এই পরিবহনগুলো।

মিরপুরে মাটিকাটা এলাকায় নাতির বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন ৬৫ বছরের বৃদ্ধা মিনারা বেগম। সকাল থেকে গাবতলীতে বসে আছেন খুলনায় গ্রামের বাড়িতে ফিরবেন বলে। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় নানাভাবে চেষ্টা করেও যেতে না পেরে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে করছিলেন তিনি।

এই বৃদ্ধার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তিন মাস আগে নাতির বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে লকডাউন শুরু হওয়ার আগে বাড়ি যেতে চাচ্ছেন। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় বিভিন্ন মাধ্যমে ভাড়া বেশি হওয়ায় তার পক্ষে বাড়ি যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে ব্যাগভর্তি কাপড় নিয়ে বাস টার্মিনালে অপেক্ষা করছেন। চলমান লকডাউনের মধ্যে এর আগেও দুদিন এখানে এসে ব্যর্থ হয়ে আবার নাতির বাড়িতে ফিরে গেছেন তিনি।

ছোট তিন সন্তানকে নিয়ে গাবতলী বাস টার্মিনালে অপেক্ষা করছেন আফরিুজা বেগম। মেয়ে অসুস্থ হওয়ায় ঢাকায় এসেছিলেন তাকে দেখতে। বর্তমানে তার স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়ায় জরুরিভাবে যশোরে গ্রামের বাড়ি যেতে চাচ্ছেন। ভোর থেকে গাবতলীতে এসে অপেক্ষা করলেও বাস না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন। আল্লাহর ওপর ভরসা করে জীবন বাজি রেখে তিনি গ্রামের বাড়িতে ফিরতে চান বলে জানান।

ছয় মাসের দুধের শিশু, স্ত্রীসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশ্যে গাবতলী এসেছেন ঢাকায় থাকা এক পরিবার। এই পরিবারের কর্তা হারুনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, লকডাউনে এক সপ্তাহ বাড়ি থেকে বেরোতে পারবো না, এ কারণে পরিবারসহ বাড়ি যাচ্ছি। বাড়িতে মা ও আত্মীয়-স্বজন আছে, বন্ধের দিনগুলো সবার সঙ্গে কাটাতে বাড়ি ফিরছেন বলে জানান তিনি।

দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় আরিচা ঘাট পর্যন্ত যেতে একটি প্রাইভেট কার ২ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান ইউসুফ।

লকডাউনের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে গাবতলী থেকে আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাটে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছেন উবারে প্রাইভেটকারচালক মিজান মিয়া। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, মাথাপিছু ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় যাত্রী নিয়ে আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাটে নামিয়ে দিচ্ছেন। এজন্য গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের দালালদের ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দিতে হচ্ছে। দালালদের মাধ্যমে যাত্রী তোলা হয় বলে জানান তিনি।

উবার-পাঠাও বন্ধ থাকায় হাইওয়ে রোডে মোটরসাইকেলে যাত্রী নিচ্ছেন শামসুল আলম। তিনি জানান, ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকায় যাত্রী নিয়ে ঘাটে পৌঁছে দিচ্ছেন।

গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট হাসানাত বলেন, গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে অবৈধভাবে যেসব মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারে যাত্রী নেয়া হচ্ছে, তাদের আটক করে যাত্রী নামিয়ে ৩ হাজার টাকা জরিমানা স্বরূপ মামলা দায়ের করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এখানে তিনি একা ডিউটি করায় সবাইকে আটক করা তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এই সুযোগে কেউ কেউ যাত্রী নিয়ে চলে যেতে পারছেন। তবে সকাল থেকে এ পর্যন্ত ৬০ জনকে আটক করে মামলা দায়ের করেছেন বলেও জানান তিনি।