ঢাকা ০৭:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
সরকারি রাস্তা আওয়ামী লীগ নেতার দখলের চেষ্টা।এই বিষয়ে সময়ের কন্ঠস্বরে নিউজ প্রকাশের পর এসিল্যান্ডের নিষেধাজ্ঞা ফার্মেসী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (সমগ্র বাংলাদেশ) পাকুন্দিয়া উপজেলা শাখা কমিটির সকলকে সনদ প্রদান ও আলোচনা সভা ২৫২ বছরের ইতিহাসে চট্টগ্রামে এই প্রথম নারী ডিসি ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের পদায়ন ফরিদা খানম গাজীপুর জেলা মহানগর কাশিমপুরে স্বাধীন মত প্রকাশের জেরে থানার ওসির নেতৃত্বে একাধিক সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা আজমিরীগঞ্জ পৌর এলাকার গন্জেরহাটি গ্রামের সরকারি রাস্তা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রনব বনিকের দখলের চেষ্টা নরসিংদীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে আহত সাংবাদিকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চট্টগ্রামে জনতা ব্যাংক সিবিএ নেতা আফসার আ.লীগের আমলে দাপট দেখিয়ে এখন বিএনপি নিয়োগ, বদলি, চাঁদাবাজি করে কামিয়েছেন টাকা মহারাষ্ট্রে ভূমিধস জয়ের পথে বিজেপি জোট, ঝাড়খণ্ডে ‘ইন্ডিয়া’ পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু জুলাই বিপ্লবে আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমানের ছেলে মো. বাবুকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হচ্ছে থাইল্যান্ড

জিনজিয়াংয়ের ভয়াবহতা বোঝাতে ‘গণহত্যা’ও যথার্থ শব্দ নয় ॥ ইকোনমিস্ট

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৭:১৬ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১
  • / ৩১২ ৫০০০.০ বার পাঠক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।

গণতন্ত্র ও স্বৈরশাসনের লড়াইয়ে গণতন্ত্রকে সরল ভাষায় সত্য বলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বৈরশাসন প্রকৃত রূপ আড়াল করতে সবসময় মিথ্যা বলবে এবং আপত্তি জানাবে। গণতন্ত্রই তার নিজের মতো করে বলতে পারে। উইঘুরদের ওপর চীনের অত্যাচারকে কী বলা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এ বিষয়টা মনে রাখতে হবে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও নিজের শেষ কর্মদিবসে একে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছিলেন। যদিও জো বাইডেন চলতি সপ্তাহে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে প্রথম আলোচনায় শব্দটি ব্যবহার করেননি, তবে তার প্রশাসন বারবার করেছে এবং যুক্তরাজ্যের আইনপ্রণেতারাও বিষয়টিতে তালগোল পাকিয়েছেন। কিন্তু এটা কি ঠিক?

শুধু শব্দের অর্থ দিয়ে বোঝালে সেটি ঠিক নয়। যেভাবে ‘হত্যাকাণ্ড’ অর্থ একজনকে হত্যা করা, ‘আত্মহত্যা’ মানে নিজেকে হত্যা করা, তেমনি ‘গণহত্যা’ অর্থ একটি জাতিকে হত্যা করা। চীনে উইঘুরদের ওপর অত্যাচার প্রচণ্ড ভয়াবহ: তারা সম্ভবত ১০ লাখ মানুষকে কারাবন্দি করে রেখেছে, যাকে ভুলভাবে ‘পেশাগত প্রশিক্ষণকেন্দ্র’ উল্লেখ করা হচ্ছে। তারা উইঘুর নারীদের জোরপূর্বক বন্ধ্যা করছে। তবে তাদের হত্যা করছে না।

গণহত্যার সংজ্ঞা মূলত জাতিসংঘের একটি ঘোষণার ওপর নির্ভর করে, যাতে বলা হয়েছে, এটি করার জন্য প্রকৃতপক্ষে সরাসরি প্রাণ সংহারের প্রয়োজন নেই। কোনো জাতি বা নৃতাত্ত্বিক, জাতিগত ও ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ধ্বংস করতে চাইলে ‘জন্ম প্রতিরোধের চেষ্টা’ বা ‘গুরুতর শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি’ করার মতো ব্যবস্থাই যথেষ্ট বলে বিবেচিত হবে।

তবে এটি কত বড় পরিসরে হলে গণহত্যা ধরা হবে তা উল্লেখ করা হয়নি। উদাহরণস্বরূপ, সব নারীকে পদ্ধতিগতভাবে বন্ধ্যা করার মাধ্যমে একটি গোটা জাতি ধ্বংসের কল্পনা করা সম্ভব।

এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘গণহত্যা’ লেবেলটি শুধু বিপুল সংখ্যক মানুষ হত্যার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছে এবং এর মধ্যেও প্রায়ই তাদের দ্বিধায় ভুগতে দেখা গেছে। দেশটি রুয়ান্ডার গণহত্যাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেনি, যতক্ষণ না সেটি সমাপ্ত হয়েছে।

চীন বৈশ্বিক রীতিনীতির জন্য হুমকি হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। এগুলোর মুখোমুখি হতে অস্বীকৃতি জানানো মানে বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং গোটা গ্রহকেই বিপন্ন করে তোলা। একারণে গণতন্ত্রগুলো যখনই চীনের বিষয়ে কাজ করতে যায়, তখনই অভূতপূর্ব এবং নাজুক এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়।

চীনের নিপীড়নের নিন্দা জানিয়ে বাইডেন ঠিক কাজটাই করেছেন, তবে এ বিষয়ে তার সত্যবাদী হওয়া উচিত। দেশটি মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে। ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ ছাড়াই ‘গণহত্যা’র অভিযোগ এনে যুক্তরাষ্ট্র শব্দটির অন্য কলঙ্ক কমিয়ে দিচ্ছে। গণহত্যা কোনো সরকারকে অগ্রহণযোগ্য একটি অবস্থানে নিয়ে যাওয়া উচিত। কিন্তু, মার্কিন কর্মকর্তারা গণহত্যার ব্র্যান্ডিং করা শাসকদের সঙ্গে যদি ব্যবসা চালিয়ে যান, তাতে ভবিষ্যতের গণহত্যাকারীরা উৎসাহিত হবে। সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জিনজিয়াংয়ের ভয়াবহতা বোঝাতে ‘গণহত্যা’ও যথার্থ শব্দ নয় ॥ ইকোনমিস্ট

আপডেট টাইম : ১০:৪৭:১৬ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।

গণতন্ত্র ও স্বৈরশাসনের লড়াইয়ে গণতন্ত্রকে সরল ভাষায় সত্য বলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বৈরশাসন প্রকৃত রূপ আড়াল করতে সবসময় মিথ্যা বলবে এবং আপত্তি জানাবে। গণতন্ত্রই তার নিজের মতো করে বলতে পারে। উইঘুরদের ওপর চীনের অত্যাচারকে কী বলা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এ বিষয়টা মনে রাখতে হবে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও নিজের শেষ কর্মদিবসে একে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছিলেন। যদিও জো বাইডেন চলতি সপ্তাহে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে প্রথম আলোচনায় শব্দটি ব্যবহার করেননি, তবে তার প্রশাসন বারবার করেছে এবং যুক্তরাজ্যের আইনপ্রণেতারাও বিষয়টিতে তালগোল পাকিয়েছেন। কিন্তু এটা কি ঠিক?

শুধু শব্দের অর্থ দিয়ে বোঝালে সেটি ঠিক নয়। যেভাবে ‘হত্যাকাণ্ড’ অর্থ একজনকে হত্যা করা, ‘আত্মহত্যা’ মানে নিজেকে হত্যা করা, তেমনি ‘গণহত্যা’ অর্থ একটি জাতিকে হত্যা করা। চীনে উইঘুরদের ওপর অত্যাচার প্রচণ্ড ভয়াবহ: তারা সম্ভবত ১০ লাখ মানুষকে কারাবন্দি করে রেখেছে, যাকে ভুলভাবে ‘পেশাগত প্রশিক্ষণকেন্দ্র’ উল্লেখ করা হচ্ছে। তারা উইঘুর নারীদের জোরপূর্বক বন্ধ্যা করছে। তবে তাদের হত্যা করছে না।

গণহত্যার সংজ্ঞা মূলত জাতিসংঘের একটি ঘোষণার ওপর নির্ভর করে, যাতে বলা হয়েছে, এটি করার জন্য প্রকৃতপক্ষে সরাসরি প্রাণ সংহারের প্রয়োজন নেই। কোনো জাতি বা নৃতাত্ত্বিক, জাতিগত ও ধর্মীয় গোষ্ঠীকে ধ্বংস করতে চাইলে ‘জন্ম প্রতিরোধের চেষ্টা’ বা ‘গুরুতর শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি’ করার মতো ব্যবস্থাই যথেষ্ট বলে বিবেচিত হবে।

তবে এটি কত বড় পরিসরে হলে গণহত্যা ধরা হবে তা উল্লেখ করা হয়নি। উদাহরণস্বরূপ, সব নারীকে পদ্ধতিগতভাবে বন্ধ্যা করার মাধ্যমে একটি গোটা জাতি ধ্বংসের কল্পনা করা সম্ভব।

এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘গণহত্যা’ লেবেলটি শুধু বিপুল সংখ্যক মানুষ হত্যার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছে এবং এর মধ্যেও প্রায়ই তাদের দ্বিধায় ভুগতে দেখা গেছে। দেশটি রুয়ান্ডার গণহত্যাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেনি, যতক্ষণ না সেটি সমাপ্ত হয়েছে।

চীন বৈশ্বিক রীতিনীতির জন্য হুমকি হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। এগুলোর মুখোমুখি হতে অস্বীকৃতি জানানো মানে বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং গোটা গ্রহকেই বিপন্ন করে তোলা। একারণে গণতন্ত্রগুলো যখনই চীনের বিষয়ে কাজ করতে যায়, তখনই অভূতপূর্ব এবং নাজুক এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়।

চীনের নিপীড়নের নিন্দা জানিয়ে বাইডেন ঠিক কাজটাই করেছেন, তবে এ বিষয়ে তার সত্যবাদী হওয়া উচিত। দেশটি মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে। ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ ছাড়াই ‘গণহত্যা’র অভিযোগ এনে যুক্তরাষ্ট্র শব্দটির অন্য কলঙ্ক কমিয়ে দিচ্ছে। গণহত্যা কোনো সরকারকে অগ্রহণযোগ্য একটি অবস্থানে নিয়ে যাওয়া উচিত। কিন্তু, মার্কিন কর্মকর্তারা গণহত্যার ব্র্যান্ডিং করা শাসকদের সঙ্গে যদি ব্যবসা চালিয়ে যান, তাতে ভবিষ্যতের গণহত্যাকারীরা উৎসাহিত হবে। সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট।