ঈশ্বরদীর বিদেশফেরত রায়হান প্রশংসিত বিদেশ ফেরত বেকার যুবক রায়হান মাছের ও ফলনশীল গাছের চাষ করে কোটিপতি
- আপডেট টাইম : ০১:২৫:১০ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৩
- / ১৫৯ ৫০০০.০ বার পাঠক
ক্যাপশন (১) ॥ বিদেশ ফেরত বেকার যুবক রঅয়হানের পুকুরে এভাবেই মাছের চাষ করা হয়।
ঈশ্বরদী ॥ মাত্র বিশ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে তিন বছরের চেষ্টায় ঈশ্বরদীর দরগাপাড়া গ্রামের রায়হান প্রামানিক মৎস্যসহ নানা প্রকার সবজি ও সবজি ফলের গাছ লাগিয়ে প্রায় কোটি টাকা আয় করে স্বাভল¤বী হয়েছেন। মেসার্স হৃদি মৎস্য খামারের মালিক হয়েছেন। একই সাথে তিনি ২৫/৩০ জন বেকার শ্রমিক পরিবারের সদস্যের স্বচ্ছলভাবে সংসার চালানো পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করে দিয়ে এলাকায় ব্যাপক প্রশংসাও কুড়িয়েছেন।
জানাগেছে,ঈশ্বরদীর মুলাডুলি ইউনিয়নের দরগাপাড়া গ্রামের মৃত ইবাদত আলী প্রামানিকের ছেলে ২০০২ সালে অনেক বড় স্বপ্ন নিয়ে সৌদি আরব যান অনেক টাকা খরচ করে। সেখানে যেমন আশা নিয়ে গিয়েছিলেন তেমনটি পুরণ হয়নি। পরে অনেকটা হতাশ হয়েই সাড়ে সতেরো বছর পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। যে কয়টা টাকা নিয়ে দেশে ফিরে আসেন মাত্র কিছু দিনের মধ্যেই সে টাকা শেষ হয়ে যায় সংসার চালাতে গিয়ে । তখন হতাশা তাকে আটকে ধরে। এমন অবস্থায় তিনি ভাবতে থাকেন কি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকা যায়। এক পর্যায়ে প্রায় এক বছর পর কোন উপায়ান্ত না পেয়ে সিদ্ধান্ত নেন মৎস্য চাষ ও কৃষি আবাদের। গ্রমের নিকটস্থ বাগহাছলায় এক বিঘা অন্যের জমি লিজ নিয়ে মাছ চাষের পুকুর করে মাছ চাষ শুরু করেন। এক বছরে তিনি আশার আলো দেখতে পান মাছ চাষ করে। প্রথম বছরেই ভাল লাভের মুখ দেখেন। তখন দ্বিতীয় বছরে গিয়ে আরও একটি পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ বৃদ্ধি করেন। একই সাথে মাছ চাষের পাশাপাশি পুকুর পাড়ে পেঁপে,আম,কলা,টমেটো,লাউ,ধনিয়া,মরিচসহ সতেরো জাতের আবাদ করেন। মাছ ও ফসলেও ব্যাপক লাভের মুখ দেখেন তিনি। এরপর তিনি আর পেছনে না তাকিয়ে নানাভাবে চেষ্টা করে পর্যায়ক্রমে চল্লিশ বিঘা জমিতে চৌদ্দটি পুকুরে রুই কাতলা,পাংগাসসহ নানা জাতের মাছের চাষ এবং সবজি চাষ শুরু করেন। মাছের পুকুরে এবং সবজিসহ নানা জাতের ফলনশীল গাছের যত্ন নিতে প্রায় এক-দেড়’শ দিন মজুর পরিবারের সদস্যদের স্বচ্ছলভাবে সংসার চালানোর ব্যবস্থা করেন। একই সাথে তিনিও প্রায় কোটি টাকা লাভের মুখ দেখেন। রায়হান আলী প্রামানিকের পুকুর ও সবজি চাষের কাজে নিয়োজিত দিন মজুররা জানান, বেকার ছিলাম,রায়হানভাইয়ের উৎসাহে আজ আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে মোটামুটি ভালভাবেই সংসার চালাতে পারছি। ছেলে মেয়েদের লেখা পড়াও করাতে পারছি।
রায়হান আলী প্রামানিক সাংবাদিকদের জানান, মৎস্য ও কৃষি বিভাগের মাধ্যমে সরকারী সহায়তা পেলে আমি নিজে আগামিতে অনেক লাভবান হবো। দর্ঘি সাড়ে সতেরো বছর বিদেশে না থেকে দেশে থেকে কৃষ কাজ করলে আমি অনেক বড় কিছু করতে পারতাম। তিনি এলাকার বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করণের পাশাপাশি বিষ মুক্ত আমিষ ও ভিটামিন জাতীয় খাদ্য সরবাহ করে দেশের উপকার করতে পারব। তিনি আরও বলেন,বিদেশ ফেরত অনেক মানুষ দেশে ফিরে টাকার গরমে নানা প্রকার নেশায় আসক্ত হয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়ে। তাদের উচিত হবে ব্যবসা-বাণিজ্য করার চেষ্টা করা। সেটা না পারলে পেছনে না তাকিয়ে কৃষি কাজে ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত ঐসব ব্যক্তিদের। এটা করতে পারলে আমার বিশ্বাস পরিবার পরিজন নিয়ে তাদের পথে বসতে হবেনা।