ঢাকা ০৬:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
নাসিরনগরে দলিল জালিয়াতি করে নামজারি করতে এসে একজন গ্রেফতার রায়পুরের টিকা নিয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ৭ ছাত্রী ভৈরবে পৌর আওয়ামীলীগ কর্মী তপন গ্রেফতার রায়পুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু চট্টগ্রাম টেস্ট চরম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ দল নুরের জনসভার জন্য পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তন মিরপুরে বিক্ষোভরত গার্মেন্টসকর্মীদের সঙ্গে পুলিশ-সেনাবাহিনীর সংঘাত মসজিদ এবং মসজিদের ইমাম নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের রুখে দিতে হবে : মাওলানা রুহুল আমিন সেই পুলিশ কর্মকর্তা শহিদুলকে আনা হয়েছে ট্রাইব্যুনালে নারীদের কথা যেন শুনতে না পারেন অন্য নারীরা’, আফগানিস্তানে নতুন নিষেধাজ্ঞা

পাথরঘাটায় দরপত্র বিক্রির আগেই অর্ধ কোটি টাকার কাজ শুরু

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম : ০৭:৩২:২৮ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২
  • / ১৫২ ৫০০০.০ বার পাঠক

পাথরঘাটায় টেন্ডারের দরপত্র বিক্রির আগেই প্রায় অর্ধকোটি টাকার কাজ পছন্দের ঠিকাদারের কাছে বণ্টন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এরই মধ্যে ওই ঠিকাদাররা প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কাজ শেষও করে ফেলেছেন।

পাথরঘাটা পৌরসভার ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল (এডিবি)-এর আওতায় ৬টি প্রকল্পে দরপত্র আহ্বান করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আগামী ১৯ অক্টোবর দরপত্র (টেন্ডার) খোলার কথা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পাথরঘাটা পৌরসভার ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল (এডিবি) আওতায় ৬টি প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষে পাথরঘাটা পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী গাজী নজরুল ইসলামের স্বাক্ষরে গত ২২ সেপ্টেম্বর একটি বাংলা দৈনিক পত্রিকায় ও একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকায় ও একটি আঞ্চলিক পত্রিকায় টেন্ডার প্রকাশ করা হয়। ওই টেন্ডার বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ঠিকাদারদের কাছে দরপত্র বিক্রি করা হবে। ১৯ অক্টোবর দুপুর ১টা পর্যন্ত দরপত্র পৌরসভা গ্রহণ করা হবে এবং ওইদিন বিকাল ৩টায় দরপত্র গুলো খোলা হবে। প্রত্যেক প্রকল্পের অনুকূলে যে ঠিকাদার চুক্তি মূল্য কম দেবেন তিনি ওই কাজের ঠিকাদার নিয়োগ পাবেন।

তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই নোটিশে ১ ও ২ নম্বর প্যাকেজে পাথরঘাটা পৌরসভার খোলা মুরগী বাজার অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ ইতিমধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ শেষ হয়ে গেছে। পাথরঘাটা পৌরসভা ভবন মেরামত কাজ শেষ হয়ে গেছে। আর এদিকে সংশ্লিষ্ট ঠিাকাদার দরপত্র আহ্বানের কথা জানেন না। অনেকে লোকমুখে শুনে প্রকাশিত দরপত্রের ঠিকানায় শিডিউল ক্রয় করতে গেলে তা পাওয়া যায়নি। পৌরসভা কার্যালয়ে প্রকাশিত দরপত্রে কোনো নোটিশ টানানো হয়নি। অন্যদিকে দরপত্রে উল্লিখিত কাজ শুরু হয়েছে মাসখানেক আগেই। দরপত্রে অংশগ্রহণ ছাড়া এভাবে হঠাৎ করে কাজ শুরু করায় হতবাক হয়ে পড়েন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারেরা। আর এই ৬ প্রল্পের দরপত্র রেড কোর্টের মাধ্যমে হওয়ার কারণে মোট কত টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা জানা যায়নি।

পাথরঘাটা পৌরসভার ঠিকাদার মেসার্স জেমি এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধিকারী গোলাম কিবরিয়া পিয়ার জানান, আমি এখানকার প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার। গত বিশ দিন আগে প্রকাশিত দরপত্রের কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। জানতে পেরেছি, পৌর কর্তৃপক্ষ গোপন টেন্ডারের মাধ্যমে মেয়রের আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে কাজ ভাগ বাটোয়ারা করে নেবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার বলেন, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তারা জানতে পারেন পাথরঘাটা পৌরসভা ৬টি কাজের অনুকূলে টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যদিও পৌরসভার নোটিশ বোর্ডে এ বিজ্ঞপ্তি টানানো হয়নি। শিডিউল কিনতে গিয়ে জানতে পারি কাজগুলো আগে থেকেই পৌর মেয়র ও কাউন্সিলরদের সুবিধামতো ঠিকাদারদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এটা এক প্রকার অনিয়ম। এতে কাজের গুণগত মান খারাপ হবে। আমরা পৌর মেয়র ও কাউন্সিলরদের বিপক্ষে গিয়ে এর প্রতিবাদ করতে পারছি না।

এ বিষয় পাথরঘাটার পৌরসভার সচিব মো. জসিম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টেন্ডার সংক্রান্ত সকল কাজকর্ম সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না। এ সকল কাজকর্ম প্রকৌশলী ও পৌর মেয়র দেখাশোনা করেন। পাথরঘাটা পৌরসভা সহকারি প্রকৌশলী গাজী নজরুল ইসলাম এ বিষয় কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

পাথরঘাটার পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন বলেন, পৌরসভার নাগরিকদের কথা চিন্তা করে অনেক সময় কাউন্সিলররা কাজ করে থাকেন। নাহলে মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আর এ কারণেই পৌর নাগরিকের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে টেন্ডারের আগেই কাজ শুরু করেছেন। তিনি বলেন, কোনো ঠিকাদার যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিডিউল ক্রয় করতে চায় তাহলে আমরা শিডিউল বিক্রি করব তারা নির্বাধায় টেন্ডার ড্রপ করতে পারবে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

পাথরঘাটায় দরপত্র বিক্রির আগেই অর্ধ কোটি টাকার কাজ শুরু

আপডেট টাইম : ০৭:৩২:২৮ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২

পাথরঘাটায় টেন্ডারের দরপত্র বিক্রির আগেই প্রায় অর্ধকোটি টাকার কাজ পছন্দের ঠিকাদারের কাছে বণ্টন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এরই মধ্যে ওই ঠিকাদাররা প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কাজ শেষও করে ফেলেছেন।

পাথরঘাটা পৌরসভার ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল (এডিবি)-এর আওতায় ৬টি প্রকল্পে দরপত্র আহ্বান করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আগামী ১৯ অক্টোবর দরপত্র (টেন্ডার) খোলার কথা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পাথরঘাটা পৌরসভার ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল (এডিবি) আওতায় ৬টি প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষে পাথরঘাটা পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী গাজী নজরুল ইসলামের স্বাক্ষরে গত ২২ সেপ্টেম্বর একটি বাংলা দৈনিক পত্রিকায় ও একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকায় ও একটি আঞ্চলিক পত্রিকায় টেন্ডার প্রকাশ করা হয়। ওই টেন্ডার বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ঠিকাদারদের কাছে দরপত্র বিক্রি করা হবে। ১৯ অক্টোবর দুপুর ১টা পর্যন্ত দরপত্র পৌরসভা গ্রহণ করা হবে এবং ওইদিন বিকাল ৩টায় দরপত্র গুলো খোলা হবে। প্রত্যেক প্রকল্পের অনুকূলে যে ঠিকাদার চুক্তি মূল্য কম দেবেন তিনি ওই কাজের ঠিকাদার নিয়োগ পাবেন।

তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই নোটিশে ১ ও ২ নম্বর প্যাকেজে পাথরঘাটা পৌরসভার খোলা মুরগী বাজার অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ ইতিমধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ শেষ হয়ে গেছে। পাথরঘাটা পৌরসভা ভবন মেরামত কাজ শেষ হয়ে গেছে। আর এদিকে সংশ্লিষ্ট ঠিাকাদার দরপত্র আহ্বানের কথা জানেন না। অনেকে লোকমুখে শুনে প্রকাশিত দরপত্রের ঠিকানায় শিডিউল ক্রয় করতে গেলে তা পাওয়া যায়নি। পৌরসভা কার্যালয়ে প্রকাশিত দরপত্রে কোনো নোটিশ টানানো হয়নি। অন্যদিকে দরপত্রে উল্লিখিত কাজ শুরু হয়েছে মাসখানেক আগেই। দরপত্রে অংশগ্রহণ ছাড়া এভাবে হঠাৎ করে কাজ শুরু করায় হতবাক হয়ে পড়েন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারেরা। আর এই ৬ প্রল্পের দরপত্র রেড কোর্টের মাধ্যমে হওয়ার কারণে মোট কত টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা জানা যায়নি।

পাথরঘাটা পৌরসভার ঠিকাদার মেসার্স জেমি এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধিকারী গোলাম কিবরিয়া পিয়ার জানান, আমি এখানকার প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার। গত বিশ দিন আগে প্রকাশিত দরপত্রের কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। জানতে পেরেছি, পৌর কর্তৃপক্ষ গোপন টেন্ডারের মাধ্যমে মেয়রের আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে কাজ ভাগ বাটোয়ারা করে নেবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার বলেন, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তারা জানতে পারেন পাথরঘাটা পৌরসভা ৬টি কাজের অনুকূলে টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যদিও পৌরসভার নোটিশ বোর্ডে এ বিজ্ঞপ্তি টানানো হয়নি। শিডিউল কিনতে গিয়ে জানতে পারি কাজগুলো আগে থেকেই পৌর মেয়র ও কাউন্সিলরদের সুবিধামতো ঠিকাদারদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এটা এক প্রকার অনিয়ম। এতে কাজের গুণগত মান খারাপ হবে। আমরা পৌর মেয়র ও কাউন্সিলরদের বিপক্ষে গিয়ে এর প্রতিবাদ করতে পারছি না।

এ বিষয় পাথরঘাটার পৌরসভার সচিব মো. জসিম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টেন্ডার সংক্রান্ত সকল কাজকর্ম সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না। এ সকল কাজকর্ম প্রকৌশলী ও পৌর মেয়র দেখাশোনা করেন। পাথরঘাটা পৌরসভা সহকারি প্রকৌশলী গাজী নজরুল ইসলাম এ বিষয় কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

পাথরঘাটার পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন বলেন, পৌরসভার নাগরিকদের কথা চিন্তা করে অনেক সময় কাউন্সিলররা কাজ করে থাকেন। নাহলে মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আর এ কারণেই পৌর নাগরিকের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে টেন্ডারের আগেই কাজ শুরু করেছেন। তিনি বলেন, কোনো ঠিকাদার যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিডিউল ক্রয় করতে চায় তাহলে আমরা শিডিউল বিক্রি করব তারা নির্বাধায় টেন্ডার ড্রপ করতে পারবে।