জমে উঠেছে জেলা পরিষদ নির্বাচন” নির্বাচিত হতে প্রার্থীরা দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি”এক প্রার্থীর সরে যাওয়ার গুঞ্জন
- আপডেট টাইম : ০৩:৫৬:১৯ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২
- / ১৪৭ ৫০০০.০ বার পাঠক
শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে বরগুনা জেলা পরিষদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনকে সামনে রেখে সাধারণ আসন -২ আমতলী উপজেলার সদস্য প্রতিদ্বন্ধি সদস্য প্রার্থীরা বিজয়ী হতে উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে জনপ্রতিনিধিদের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। এক প্রতিদ্বন্ধি সদস্য প্রার্থীর নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার গুঞ্জন উঠেছে।
আগামী ১৭ অক্টোবর (সোমবার) বরগুনা জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনিত একমাত্র প্রার্থী হিসেবে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর কবির বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় বেসরকারীভাবে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। ওই জেলায় এখন শুধু সাধারণ ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
জেলা পরিষদের সাধারণ আসন- ২ (সমগ্র আমতলী উপজেলা) ওই নির্বাচনে আমতলী উপজেলা থেকে ৪ জন সদস্য পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এরা হলেন জেলা পরিষদ সদস্য মরহুম মনিরুল ইসলাম দুলাল খানের ছোট ভাই চাওড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মোঃ আহুরুজ্জামান আলমাছ খান (হাতি), সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ আবুল বাশার নয়ন মৃধা (টিউবয়েল), সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য, পৌর যুব লীগের সভাপতি, তরুন আইনজীবি অ্যাডঃ আরিফ-উল-হাসান আরিফ (তালা) ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ নাসির উদ্দিন হাওলাদার (সিলিং ফ্যান)।
নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ধীরে ধীরে নির্বাচন তত জমে উঠেছে। পোস্টার, লিফলেট, ফেন্টুন ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে আমতলী উপজেলা সদর, পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় গুলো। প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীরা প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মোটর সাইকেল শোভাযাত্রা ও গাড়ীর বহর নিয়ে পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে জনপ্রতিনিধিদের সাথে কুশল ও মতবিনিময় সভা করছেন। আবার অনেক প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী একাকী ভোটারদের সাথে দেখা করে নানা কৌশলে ভোট প্রার্থনা করছেন। নির্বাচিত হতে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
শুরুতে প্রতিদ্বন্ধি ৪ জন সাধারণ সদস্য প্রার্থীদের প্রকাশ্যে মাঠে ঘাটে প্রচার-প্রচারনা চালাতে দেখা গেলেও হঠাৎ করে ৪/৫ ধরে নাসির উদ্দিন হাওলাদার (সিলিং ফ্যান) কোথাও প্রচার- প্রচারনা করতে দেখা যাচ্ছেনা। এখন তার প্রচার- প্রচারনা শুধু পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে তিনি গোপনে নির্বাচন থেকে সরে গিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্চুক আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য জানান, সদস্য প্রার্থী নাসির উদ্দিন হাওলাদার (সিলিং ফ্যান) নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে ওই প্রতিদ্বন্ধি সাধারণ সদস্য প্রার্থী ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ নাসির উদ্দিন হাওলাদারের ব্যবহৃত মুঠোফোনে (০১৭৫৩৪৫৫৩৯৫) কল দিলে সাংবাদিক পরিচয় দিতেই সে সংযোগটি কেটে দেয়। পরে একাধিকবার কল দিলেও সে আর ফোন রিসিফ করেননি।
অপর সাধারণ সদস্য প্রার্থী আমতলী পৌর যুবগীল সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য অ্যাডঃ আরিফ- উল- হাসান আরিফ নির্বাচনে কালো টাকা দিয়ে ভোট কেনার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন। কারা ভোট কিনছেন এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি কৌশলে এরিয়ে যান।
এদিকে প্রচার- প্রচারনায় পিছিয়ে নেই সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী নারীরাও। তিনটি উপজেলা (আমতলী- তালতলী- বরগুনা সদর) নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত আসন- ১ থেকে মোট ৫ জন নারী এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। এরা হলেন আমতলী উপজেলা থেকে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহিদুল ইসলাম জুয়েল তালুকদারের স্ত্রী মোসাঃ আছমাতুন্নেছা পারুল (ফুটবল) এবং চাওড়া ইউনিয়নের সাবেক সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোসাঃ শিউলী পারভীন (দোয়াত কলম)। তালতলী উপজেলা থেকে সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোসাঃ দেলোয়ারা হামিদ (হরিন)। বরগুনা জেলা সদর থেকে কেন্দ্রীয় মহিলা যুবলীগের সদস্য ইসমত আরা খানম লিপি (টেলিফোন) ও বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরগুনা পৌসভার প্যানেল মেয়র কাউন্সিলর রইসুল ইসলাম রিপনের স্ত্রী মিসেস জেসমিন আলম (টেবিল ঘড়ি)। তারাও বিভিন্ন প্রতিশ্রæতি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করার জন্য বিভিন্ন কৌশলে প্রচার- প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং তিন উপজেলার ভোটারদের দারে দারে ঘুরছেন।।
আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত ইউপি সদস্য বশির উদ্দিন বলেন, আমরা এবার দেখে শুনে বুঝে যাকে যোগ্য মনে করবো সেই প্রার্থীকে জেলা পরিষদের সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচিত করবো।
আমতলী সদর ইউনিয়নের এক সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য মোসাঃ মুকুল বেগম জানান, এবার জেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে যারা প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন তাদের মধ্য থেকে যাদেরকে আমাদের যোগ্য মনে হবে এবং যারা নির্বাচিত হয়ে আমাদের কাছে দেয়া প্রতিশ্রæতি রক্ষা করবেন বলে আমাদের মনে বিশ্বাস স্থাপন হবে তাদেরকেই আমরা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবো।
উল্লেখ্য আমতলী উপজেলায় ১টি পৌরসভা, ৭টি ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে মোট ভোটার সংখ্যা রয়েছেন ১০৭ থাকলেও আমতলী পৌরসভার ২ ও ৮ নং ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলর মৃত্যুবরণ করায় এবং উচ্চ আদালতের আদেশে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তার পদ থেকে অপসারিত হওয়ায় বর্তমানে অত্র উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৪ জনে। ওই ১০৪ জন ভোটারই আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
ভো/এম