স্ত্রীকে মারধর স্বামীর, আসামি প্রতিবেশী!
- আপডেট টাইম : ০৫:৩৩:৩৮ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর ২০২২
- / ১৭৩ ৫০০০.০ বার পাঠক
পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রীকে মারধর করেছিলেন শাজাহান মৃধা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী চার জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
অথচ মামলার ৩ ও ৪ নম্বর আসামি এ ঘটনায় জড়িত ছিলেন না।
অভিযোগ উঠেছে, মামলার জের স্বামীর মারধর হলেও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ইউনুছ হাওলাদার ও জহিরুলকে নামে দুই প্রতিবেশীকে আসামি করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে বরগুনা সদর উপজেলার ৬ নম্বর বুড়িরচর ইউনিয়নের পুরাকাটা গ্রামে। মামলার বাদি মেহেরুন্নেছা। যে দুজনকে ‘অযথা’ তিনি আসামি করেছেন, তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে দাবি জানিয়েছে স্থানীরা।
জানা গেছে, গত বছর ১৫ আগস্ট শাজাহান মৃধা ও মেহেরুন্নেছার বিয়ে হয়। এটি শাজাহানের দ্বিতীয় বিয়ে। যৌতুক এনে দিতে তিনি মেহেরুন্নেছাকে প্রতিনিয়ত অত্যাচার করতেন। শারীরিক-মানসিকভাবে নির্যাতিত হয়ে বাবার বাড়ি থেকে স্বামীকে ৫০ হাজার টাকা এনে দেন মেহেরুন্নেছা। টাকা শেষ হয়ে যাওয়ার পর শাজাহার আবারও তাকে অত্যাচার-নির্যাতন শুরু করেন। স্ত্রীর কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুক এনে দেওয়ার দাবি করেন তিনি।
এসব বিষয়ে এলাকার চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে বিচার চাইলে তারা সালিস বসিয়ে মীমাংসা করে দেন। তবে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর সকালে নাপিতখালী এলাকায় মেহেরুন্নেছাকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন শাজাহান ও তার ছেলে রবিউল মৃধাসহ পাঁচ-ছয় জন। ভুক্তভোগী ডাক-চিৎকার শুরু করলে স্থানীয়রা ছুটে আসেন। এ সময় মারধরকারীরা পালিয়ে যান। পরে মেহেরুন্নেছাকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
সুস্থ হয়ে সোমবার (৩ অক্টোবর) ৪ জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন মেহেরুন্নেছা। এতে আসামি করা হয়, শাজাহান মৃধা, তার প্রথম পক্ষের স্ত্রীর ঘরে সন্তান রবিউল মৃধা ও প্রতিবেশী ইউনুছ হাওলার ও জহিরুল। মামলায় ইউনুছ হাওলার ও জহিরুলের বিরুদ্ধে পূর্ব শত্রুতার জের টানা হয়েছে।
বিষয়টি জানাজানি হলে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে এলাকাবাসী। মেহেরুন্নেছা হয়রানি করতে মামলা করেছেন অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদ করেন তারা। স্থানীয়দের দাবি, ইউনুছ ও জহিরুল মারধরের ঘটনায় কোনোভাবেই জড়িত নন। এমনকি তারা মেহেরুন্নেছাকে চেনেন না। প্রশাসনের কাছে তারা অনুরোধ করেন, ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে। ইউনুছ ও জহিরুলকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতেও তারা অনুরোধ করেন।
এ ব্যাপারে বগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মেহেদী হাছান বলেন, যৌতুকের ঘটনায় মামলা স্বামীর বিরুদ্ধে, অন্যদের অহেতুক হয়রানি করতে যুক্ত করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। প্রতিবেশীকে কেন জড়ানো হয়েছে বিষয়টা তদন্ত করে দেখা হবে। যদি তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকে, তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।