ঢাকা ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
মোংলায় জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র সম্প্রীতি সমাবেশ চুরি যাওয়া গার্মেন্টস পণ্য ৫,৫৪৮.৬২ কেজি সুতা উদ্ধার; সাভার থানা পুলিশের অভিযানে ৩ প্রতারক গ্রেফতার বেপরোয়া গতিতে কভার্ডভ্যান চালিয়ে ভিকটিম আদুরী খানম (২৮) ধাক্কা দিয়ে গুরুতর আহত; সাভার থানা পুলিশের অভিযানে কভার্ডভ্যান আটক ও চালক গ্রেফতার গাজীপুরে আলোচিত চিহ্নিত সন্ত্রাসী একাধিক মামলার আসামী সাবেক কাউন্সিলর আলমাস মোল্লা গ্রেফতার ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৪ ইং প্রবাসী মানব কল্যাণ ফোরাম এর উদ্যোগে বেত মোর হাই স্কুল মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয় ৯০০ বস্তা চোরাই চিনিসহ বিপুল পরিমাণ টাকা জব্দ, আটক ৪ ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের খেলা প্রায় শেষ আন্দ্রে সুশেন্টসভ পীরগঞ্জে জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত শেখ পরিবারের কারোরই রাজনীতিতে ফেরার সম্ভাবনা নেই: তাজকন্যা বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মতে, রপ্তানি আদেশের কাঁচামাল আমদানির ১০ হাজার কোটি টাকার বড় একটি অংশ আটকে আছে সংকটে পড়া চার ব্যাংকে

উৎপল কুমার দে’র বিরুদ্ধে দুদকে দুই মামলা তবুও ব্যবস্থা নেই

এ আর মোল্লা সিনিয়র নিজস্ব  প্রতিনিধি।। 
  • আপডেট টাইম : ০৯:১৯:১২ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ২০ আগস্ট ২০২২
  • / ২৯৪ ৫০০০.০ বার পাঠক

আলামত জব্দ করেছি এবং চার্জশীট প্রক্রিয়াধীন, অধিদপ্তরে তথ্য গোপন করে বহাল তবিয়্যতে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (রিজার্ভ) উৎপল কুমার দে

সরকারি কিছু দপ্তর, উপ-দপ্তরে বর্তমানে দুর্নীতি মহামারী রূপ ধারণ করেছে। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করায় দুর্নীতি দমন কমিশন চিরুনী অভিযান চালিয়ে অসংখ্য দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় এনে কাউকে সাময়িক বরখাস্ত, কাউকে স্থায়ী বরখাস্ত, এমনকি কারও কারও সাজারও ব্যবস্থা করেছেন। তবে কিছু কিছু সরকারি কর্মকর্তা অতি সুকৌশলে কাড়ি কাড়ি অর্থ ব্যয় করে এখনও রয়ে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এদের কেউ কেউ দুদকের একাধিক মামলার আসামী হওয়ার পরেও দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য গোপন করে চাকুরী বিধিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রয়েছেন বহাল তবিয়্যতে। গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (রিজার্ভ) উৎপল কুমার দে-এর বিরুদ্ধে দুদকে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দু’টি মামলা হয়েছে। একটি মামলায় শুধু উৎপল কুমার দে এর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। অন্য একটি মামলায় তার স্ত্রী গোপা দে ও উৎপল কুমার দে-কে আসামী করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ মামলা দু’টির ব্যাপারে গণপূর্ত অধিদপ্তরে নানা সমালোচনা থাকলেও এ বিষয়ে কোন তথ্য নেই বলছেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের,অতিরিক্ত পধান প্রকৌশলী (সংস্থাপন) নন্দিতা রানী সাহা যা তথ্য অধিকার আইনের একটি চিঠির উত্তরে জানা গেছে। এমতাবস্থায় অধিদপ্তরে উৎপল কুমার দে অতি সুকৌশলে তথ্য গোপন করে চাকুরীতে রয়েছেন বহাল তবিয়্যতে অনুসন্ধানে ও সরেজমিনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
দুদকের মামলা নং-২ তারিখ ০৫/০৮/২০২০ ইং এ অভিযোগ করা হয়েছে আসামী (১) গোপা দে, স্বামী- উৎপল কুমার দে, পিতা- নেপাল সেন, মাতা- নিয়তি সেন, বর্তমান ঠিকানা : ৫/এ, ৮১/৩, অতীস দীপঙ্কর সড়ক, সবুজবাগ, ঢাকা-১২১৪, স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম + পোঃ চক্রশালা, থানা- পটিয়া, জেলা- চট্টগ্রাম এবং (২) উৎপল কুমার দে, অতিরিক্ত পধান প্রকৌশলী (রিজার্ভ), গণপূর্ত অধিদপ্তর, ঢাকা, পিতা- দুলাল চন্দ্র দে, মাতা- পারুল রানী দে, বর্তমান ঠিকানা : ফ্ল্যাট নং- ৫/এ, ৮১/৩, অতীস দীপঙ্কর সড়ক, সবুজবাগ, ঢাকা-১২১৪, স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম + পোঃ- চক্রশালা, থানা- পটিয়া, জেলা- চট্টগ্রাম অসৎ উদ্দেশ্যে দুর্নীতির মাধ্যমে ৬,৬২,৬৮,৭৫৪/- (ছয় কোটি বাষট্টি লক্ষ আটষট্টি হাজার সাতশত চুয়ান্ন) টাকার জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করে তা নিজেদের ভোগ দখলে রেখে উক্ত সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময়ে রূপান্তর/স্থানান্তর/হস্তান্তর করে মানি লন্ডারিং এর মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় এবং মানি-লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারাসহ দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ঢাকার নথি নং-০০.০১.০০০০.৫০২.০১.১০১.১৯ এর অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত তথ্যাদি পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, ১নং আসামী গোপা দে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (রিজার্ভ) উৎপল কুমার দে’র স্ত্রী। গোপা দে-এর আয়কর নথিতে তার নামে পটিয়া ইলেকট্রনিক্স নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু একজন প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে উৎপল কুমার দে’র স্ত্রী গোপা দে কর্তৃক উক্ত ব্যবসা করার স্বপক্ষে বিভাগীয় কোন অনুমতি নেয়ার দালিলিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধানকালে আসামী গোপা দে’র ২০১৮-১৯ করবর্ষ পর্যন্ত আয়কর নথিতে প্রদর্শিত নীট ১,৬০,৬৯,২০৫/- টাকা আয়ের সমর্থনে বৈধ উৎসের প্রমাণ পাওয়া যায়নি বা দাখিল করতে সমর্থ হয়নি। এছাড়াও অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত তথ্য ও অন্যান্য রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, গোপা দে’র নামে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আরো ৫,০১,৯৯,৫৪৯/- টাকার অস্থাবর সম্পদ গচ্ছিত রয়েছে। কিন্তু উক্ত সম্পদের তথ্য গোপা দে’র আয়কর নথিতে প্রদর্শন না করে গোপন করা হয়েছে। অনুসন্ধানকালে ব্যাংকে গচ্ছিত উক্ত অর্থেরও বৈধ কোন উৎসের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সে হিসাবে আসামী গোপা দে’র নামে তার আয়কর নথিতে প্রদর্শিত ১,৬০,৬৯,২০৫/- এবং বিভিন্ন ব্যাংকে গচ্ছিত ৫,০১,৯৯,৫৪৯/- টাকারসহ মোট (১,৬০,৬৯,২০৫/- + ৫,০১,৯৯,৫৪৯/-) = ৬, ৬২,৬৮,৭৫৪/- (ছয় কোটি বাষট্টি লক্ষ আটষট্টি হাজার সাতশত চুয়ান্ন) টাকার সম্পদের (স্থাবর-অস্থাবর) তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়। যা তার জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ অবৈধ সম্পদ মর্মে পরিলক্ষিত হয়।
সার্বিক অনুসন্ধানে গোপা দে’র নামে বিভিন্ন ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ অর্থের লেনদেন হয়েছে মর্মে দেখা যায়। এক্ষেত্রে, প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণ ও অন্যান্য পারিপার্শ্বিক বিষয়াদি পর্যালোচনা করে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, ১নং আসামী গোপা দে ২নং আসামী স্বামী- উৎপল কুমার দে-এর প্রত্যক্ষ যোগসাজসে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ পন্থায় ৬,৬২,৬৮,৭৫৪/- (ছয় কোটি বাষট্টি লক্ষ আটষট্টি হাজার সাতশত চুয়ান্ন) টাকার জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ অবৈধ সম্পদ অর্জন পূর্বক তাদের ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় এবং উক্ত সম্পদ বিভিন্ন সময়ে রূপান্তর/স্থানান্তর/হস্তান্তরের মাধ্যমে মানি-লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারাসহ দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এছাড়া উৎপল কুমার দে’র নামে দুদকে আরও একটি জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা রয়েছে যার মামলা নং-৩ তারিখ ০৫/০৮/২০২০ ইং যা পরবর্তী সংখ্যায় বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে।
এমতাবস্থায় আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন সরকারি চাকুরী আইন ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন) এর ধারা ৪১ এর উপধারা (২) ও সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপীল) বিধিমালা ২০১৮ (জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-৪ শাখা থেকে জারীকৃত প্রজ্ঞাপন এস.আর.ও নং ১১০ আইন/২০১৮) এর বিধি ২৫ এর উপবিধি (২) এবং সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের (বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়) অফিস মেমোরেন্ডাম নং (ইডি) (রেগ-৮)/এস-১২৩/৭৮-১১৫ (৫০০) তারিখ ২১/১১/৭৮ (এস্টাবলিশমেন্ট মেনুয়্যাল ১নং ভলিউমের পৃষ্ঠা নং- ৮৯২ ও ৮৯৩) এবং বি.এস.আর ১ম খন্ডের ৭৩ বিধির ১ ও ২ নং নোট অনুসারে কোন সরকারি কর্মচজারী ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতারের পর বা আদালতে আত্মসমর্পনের পর জামিনে মুক্তি লাভ করিলেও সাময়িক বরখাস্ত হিসেবে গণ্য হইবেন। কিন্তু উৎপল কুমার দে এর ক্ষেত্রে কোনরূপ সরকারি চাকুরী বিধিমালার তোয়াক্কা না করে বরিশাল গণপূর্ত জোনের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে যা দুর্নীতি ও অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। মামলাটির ব্যাপারে দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহমেদ গাজীকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন- মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে, তবে বিভিন্ন আলামত জব্দ করেছি আশা করি  দ্রুত চার্জশীট প্রদান করতে পারবো। বিভিন্ন অভিযোগের ব্যাপারে উৎপল কুমার দে’র মোবাইলে ফোন করলে তিনি ফোন ধরেননি এমনকি এসএমএস দিয়ে পরিচয় দিয়ে ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।দৈনিক সময়ের কন্ঠ পত্রিকায় চোখ রাখুন

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

উৎপল কুমার দে’র বিরুদ্ধে দুদকে দুই মামলা তবুও ব্যবস্থা নেই

আপডেট টাইম : ০৯:১৯:১২ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ২০ আগস্ট ২০২২

আলামত জব্দ করেছি এবং চার্জশীট প্রক্রিয়াধীন, অধিদপ্তরে তথ্য গোপন করে বহাল তবিয়্যতে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (রিজার্ভ) উৎপল কুমার দে

সরকারি কিছু দপ্তর, উপ-দপ্তরে বর্তমানে দুর্নীতি মহামারী রূপ ধারণ করেছে। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করায় দুর্নীতি দমন কমিশন চিরুনী অভিযান চালিয়ে অসংখ্য দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় এনে কাউকে সাময়িক বরখাস্ত, কাউকে স্থায়ী বরখাস্ত, এমনকি কারও কারও সাজারও ব্যবস্থা করেছেন। তবে কিছু কিছু সরকারি কর্মকর্তা অতি সুকৌশলে কাড়ি কাড়ি অর্থ ব্যয় করে এখনও রয়ে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এদের কেউ কেউ দুদকের একাধিক মামলার আসামী হওয়ার পরেও দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য গোপন করে চাকুরী বিধিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রয়েছেন বহাল তবিয়্যতে। গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (রিজার্ভ) উৎপল কুমার দে-এর বিরুদ্ধে দুদকে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দু’টি মামলা হয়েছে। একটি মামলায় শুধু উৎপল কুমার দে এর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। অন্য একটি মামলায় তার স্ত্রী গোপা দে ও উৎপল কুমার দে-কে আসামী করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ মামলা দু’টির ব্যাপারে গণপূর্ত অধিদপ্তরে নানা সমালোচনা থাকলেও এ বিষয়ে কোন তথ্য নেই বলছেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের,অতিরিক্ত পধান প্রকৌশলী (সংস্থাপন) নন্দিতা রানী সাহা যা তথ্য অধিকার আইনের একটি চিঠির উত্তরে জানা গেছে। এমতাবস্থায় অধিদপ্তরে উৎপল কুমার দে অতি সুকৌশলে তথ্য গোপন করে চাকুরীতে রয়েছেন বহাল তবিয়্যতে অনুসন্ধানে ও সরেজমিনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
দুদকের মামলা নং-২ তারিখ ০৫/০৮/২০২০ ইং এ অভিযোগ করা হয়েছে আসামী (১) গোপা দে, স্বামী- উৎপল কুমার দে, পিতা- নেপাল সেন, মাতা- নিয়তি সেন, বর্তমান ঠিকানা : ৫/এ, ৮১/৩, অতীস দীপঙ্কর সড়ক, সবুজবাগ, ঢাকা-১২১৪, স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম + পোঃ চক্রশালা, থানা- পটিয়া, জেলা- চট্টগ্রাম এবং (২) উৎপল কুমার দে, অতিরিক্ত পধান প্রকৌশলী (রিজার্ভ), গণপূর্ত অধিদপ্তর, ঢাকা, পিতা- দুলাল চন্দ্র দে, মাতা- পারুল রানী দে, বর্তমান ঠিকানা : ফ্ল্যাট নং- ৫/এ, ৮১/৩, অতীস দীপঙ্কর সড়ক, সবুজবাগ, ঢাকা-১২১৪, স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম + পোঃ- চক্রশালা, থানা- পটিয়া, জেলা- চট্টগ্রাম অসৎ উদ্দেশ্যে দুর্নীতির মাধ্যমে ৬,৬২,৬৮,৭৫৪/- (ছয় কোটি বাষট্টি লক্ষ আটষট্টি হাজার সাতশত চুয়ান্ন) টাকার জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করে তা নিজেদের ভোগ দখলে রেখে উক্ত সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময়ে রূপান্তর/স্থানান্তর/হস্তান্তর করে মানি লন্ডারিং এর মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় এবং মানি-লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারাসহ দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ঢাকার নথি নং-০০.০১.০০০০.৫০২.০১.১০১.১৯ এর অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত তথ্যাদি পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, ১নং আসামী গোপা দে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (রিজার্ভ) উৎপল কুমার দে’র স্ত্রী। গোপা দে-এর আয়কর নথিতে তার নামে পটিয়া ইলেকট্রনিক্স নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু একজন প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে উৎপল কুমার দে’র স্ত্রী গোপা দে কর্তৃক উক্ত ব্যবসা করার স্বপক্ষে বিভাগীয় কোন অনুমতি নেয়ার দালিলিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধানকালে আসামী গোপা দে’র ২০১৮-১৯ করবর্ষ পর্যন্ত আয়কর নথিতে প্রদর্শিত নীট ১,৬০,৬৯,২০৫/- টাকা আয়ের সমর্থনে বৈধ উৎসের প্রমাণ পাওয়া যায়নি বা দাখিল করতে সমর্থ হয়নি। এছাড়াও অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত তথ্য ও অন্যান্য রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, গোপা দে’র নামে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আরো ৫,০১,৯৯,৫৪৯/- টাকার অস্থাবর সম্পদ গচ্ছিত রয়েছে। কিন্তু উক্ত সম্পদের তথ্য গোপা দে’র আয়কর নথিতে প্রদর্শন না করে গোপন করা হয়েছে। অনুসন্ধানকালে ব্যাংকে গচ্ছিত উক্ত অর্থেরও বৈধ কোন উৎসের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সে হিসাবে আসামী গোপা দে’র নামে তার আয়কর নথিতে প্রদর্শিত ১,৬০,৬৯,২০৫/- এবং বিভিন্ন ব্যাংকে গচ্ছিত ৫,০১,৯৯,৫৪৯/- টাকারসহ মোট (১,৬০,৬৯,২০৫/- + ৫,০১,৯৯,৫৪৯/-) = ৬, ৬২,৬৮,৭৫৪/- (ছয় কোটি বাষট্টি লক্ষ আটষট্টি হাজার সাতশত চুয়ান্ন) টাকার সম্পদের (স্থাবর-অস্থাবর) তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়। যা তার জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ অবৈধ সম্পদ মর্মে পরিলক্ষিত হয়।
সার্বিক অনুসন্ধানে গোপা দে’র নামে বিভিন্ন ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ অর্থের লেনদেন হয়েছে মর্মে দেখা যায়। এক্ষেত্রে, প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণ ও অন্যান্য পারিপার্শ্বিক বিষয়াদি পর্যালোচনা করে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, ১নং আসামী গোপা দে ২নং আসামী স্বামী- উৎপল কুমার দে-এর প্রত্যক্ষ যোগসাজসে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ পন্থায় ৬,৬২,৬৮,৭৫৪/- (ছয় কোটি বাষট্টি লক্ষ আটষট্টি হাজার সাতশত চুয়ান্ন) টাকার জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ অবৈধ সম্পদ অর্জন পূর্বক তাদের ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় এবং উক্ত সম্পদ বিভিন্ন সময়ে রূপান্তর/স্থানান্তর/হস্তান্তরের মাধ্যমে মানি-লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারাসহ দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এছাড়া উৎপল কুমার দে’র নামে দুদকে আরও একটি জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা রয়েছে যার মামলা নং-৩ তারিখ ০৫/০৮/২০২০ ইং যা পরবর্তী সংখ্যায় বিস্তারিত প্রকাশ করা হবে।
এমতাবস্থায় আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন সরকারি চাকুরী আইন ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন) এর ধারা ৪১ এর উপধারা (২) ও সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপীল) বিধিমালা ২০১৮ (জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-৪ শাখা থেকে জারীকৃত প্রজ্ঞাপন এস.আর.ও নং ১১০ আইন/২০১৮) এর বিধি ২৫ এর উপবিধি (২) এবং সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের (বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়) অফিস মেমোরেন্ডাম নং (ইডি) (রেগ-৮)/এস-১২৩/৭৮-১১৫ (৫০০) তারিখ ২১/১১/৭৮ (এস্টাবলিশমেন্ট মেনুয়্যাল ১নং ভলিউমের পৃষ্ঠা নং- ৮৯২ ও ৮৯৩) এবং বি.এস.আর ১ম খন্ডের ৭৩ বিধির ১ ও ২ নং নোট অনুসারে কোন সরকারি কর্মচজারী ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতারের পর বা আদালতে আত্মসমর্পনের পর জামিনে মুক্তি লাভ করিলেও সাময়িক বরখাস্ত হিসেবে গণ্য হইবেন। কিন্তু উৎপল কুমার দে এর ক্ষেত্রে কোনরূপ সরকারি চাকুরী বিধিমালার তোয়াক্কা না করে বরিশাল গণপূর্ত জোনের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে যা দুর্নীতি ও অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। মামলাটির ব্যাপারে দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহমেদ গাজীকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন- মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে, তবে বিভিন্ন আলামত জব্দ করেছি আশা করি  দ্রুত চার্জশীট প্রদান করতে পারবো। বিভিন্ন অভিযোগের ব্যাপারে উৎপল কুমার দে’র মোবাইলে ফোন করলে তিনি ফোন ধরেননি এমনকি এসএমএস দিয়ে পরিচয় দিয়ে ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।দৈনিক সময়ের কন্ঠ পত্রিকায় চোখ রাখুন