পাইকগাছার চাঁদখালীতে মানবাধিকার কর্মীকে নির্যাতন, হত্যার হুমকি, থানায় অভিযোগ
- আপডেট টাইম : ০৮:৩৩:১১ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ২০ মার্চ ২০২২
- / ২২৪ ৫০০০.০ বার পাঠক
শেখ সিরাজুল ইসলাম রিপোর্ট।।
পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নের চাঁদখালী বাজার এলাকায় মোঃ মশিউর রহমান নামের একজন মানবাধিকার কর্মীকে নির্যাতন ও হত্যার হুমকি দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল ১৯-মার্চ ২০২২ ইংরেজি তারিখে সকাল আনুমানিক ১১ ঘটিকায় এঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মানবাধিকারকর্মী মোঃ মশিউর রহমান বাদী হয়ে পাইকগাছা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। মোঃ মশিউর রহমান পাইকগাছা উপজেলার চককওয়ালী গ্রামের মৃত মনির উদ্দিন গাজীর ছেলে এবং ইয়াস মানবাধিকার সংস্থার ক্রাইম তদন্ত (খুলনা জেলা)। অভিযোগ সূত্রে ও মানবাধিকার কর্মী মোঃ মশিউর রহমানের বক্তব্য অনুযায়ী জানা যায়, কানুয়ার ডাঙ্গা গ্রামের সামাদ সরদারের ছেলে জিয়াউর রহমান ওরফে কমল জিয়া সহ এলাকার একটি চক্র চাঁদখালী এলাকায় পরিবেশ বিধ্বংসী অবৈধ কাঠ কয়লার চুল্লির ব্যবসা, সরকারি জায়গা জবরদখল নিয়ে অবৈধভাবে মাটি বিক্রয় সহ বিভিন্ন বেআইনি কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এসব বেআইনি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কিছুদিন যাবৎ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় নিয়মিত সংবাদ প্রকাশ হয়ে আসছে। সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে মশিউরের হাত থাকতে পারে এমনটাই ধারণা এসব অবৈধ ব্যবসায়ীদের। এমন ধারণাকে পুঁজি করে অবৈধ ব্যবসায়ীরা বেশ কিছুদিন যাবৎ মানবাধিকার কর্মী মসিউরকে হুমকি দিয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ১৯ মার্চ ২০২২ ইংরেজি তারিখ আনুমানিক সকাল ১১ ঘটিকার সময় বাড়ী হতে চাঁদখালী বাজারে আসার পথে চাঁদখালী গ্রামস্থ চাঁদখালী বাজারমুখী রাস্তার উপর কমল জিয়া ও তার দলবল মানবাধিকারকর্মী মশিউর রহমানের গতিরোধ করে এলোপাতাড়ি চড়থাপ্পর মারতে থাকে। জিয়া ও তার দলবলের বেধড়ক মারপিটে মশিউর রহমানের বুকে জখম হয়। এসময় জিয়া ও তার দলবল জোর করে মানবাধিকারকর্মী মশিউর রহমানকে চোখ বেঁধে পাশের একটি ঘরে নিয়ে হত্যার হুমকি দেয় এবং বলতে থাকে আজকে তোকে জানে মেরে ফেলবো। এসময় জিয়া ও তার দলবল মানবাধিকারকর্মী মশিউর রহমানের গলায় ঝুলানো মানবাধিকারের পরিচয় পত্রটি টেনে-হিঁচড়ে ছিনিয়ে নিয়ে ছিড়ে ফেলে এবং বারবার বলতে থাকে, কাঠ-কয়লার বিরুদ্ধে আমাদের বিরুদ্ধে কেন নিউজ করিয়েছিস তোকে আজ মেরেই ফেলবো। এসময় মানবাধিকারকর্মী মশিউর রহমান উপায়ন্তর না পেয়ে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে কৌশলে জিয়া ও তার দলের সদস্যদের ঠেলে ফেলে রাস্তার উপরে উঠে এসে চিৎকার করলে লোকজন জোগাড় হয়ে যাওয়ার ফলে জিয়া ও তার দলবল মানবাধিকারকর্মী মসিউর রহমানকে হত্যা করতে ব্যর্থ হয়। এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে অভিযুক্ত কমল জিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সঠিক নয়, আমি শুধু মানবাধিকারকর্মী মসিউর রহমানের কার্ডটি দেখতে চেয়েছিলাম। কমল জিয়া আরো বলেন, আমি আগে শিক্ষকতা করতাম পরে কৃষিতে উদ্যোক্তা হই, কৃষি প্রজেক্ট নষ্ট হয়ে গেলে আমি বাধ্য হয়ে এই অবৈধ কাঠ কয়লার চুল্লির ব্যবসায় নেমে পড়ি। তিনি আরো বলেন, অবৈধ কাঠ কয়লার চুল্লির ব্যবসাটি আমাদের এলাকার ঐতিহ্য, যুগ যুগ ধরে এখানে এ ব্যবসা চলে আসছে, এলাকায় ২০ জনের অধিক ব্যক্তি এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন, এদের মধ্যে আমি সবচেয়ে ছোট কাঠ-কয়লার চুল্লি ব্যবসায়ী। কাঠ কয়লার চুল্লির কারনে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে চুল্লি মালিক কমল জিয়া বলেন, এটি এলাকাবাসীর সয়ে গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জিয়াউর রহমান বলেন, মানবাধিকারকর্মী মশিউর রহমান থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন, অভিযোগের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।