ঢাকা ০৬:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
নবীনগরে অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও মহড়া অনুষ্ঠিত ১৯ দিনে এলো ২১ হাজার কোটি টাকার রেমিট্যান্স রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সম্মিলিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগ প্রয়োজন: প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি হারে ফোর্স নিতে জাতিসংঘকে আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাকরাইলে জাল জালিয়াতির রাজউক নকশার মাধ্যমে গড়ে তোলেন বহুতল ভবন কোস্ট গার্ডের অভিযানে ডাকাত করিম শরীফ বাহিনীর দুই সহযোগী আটকসহ জিম্মি থাকা দুই জেলে উদ্ধার ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের অভিযোগ ইউনিফর্ম ও অস্ত্রধারী আরাকান আর্মি বাংলাদেশের সার্বভৌম সীমা লঙ্ঘন করার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ : মিয়া গোলাম পরওয়ার চকলেটের লোভ দেখিয়ে কিন্ডার গার্টেনের শিশুদের মাদ্রাসায় উপস্থাপন// ঠাকুরগাঁওয়ে দুদকে ধরা ভুয়া মাদ্রাসা কান্ড পুরোনো চেহারায় ফিরবে আওয়ামী লীগ, তৈরি হচ্ছে মাস্টারপ্ল্যান

অবশেষে বৃদ্ধাশ্রমেই আশ্রয় হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল আউয়ালের

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৬:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ২৭৭ ৫০০০.০ বার পাঠক

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

তিন সন্তানের মধ্যে মেয়ে সবার বড়, নাম রেজিনা ইয়াছমিন আমেরিকা প্রবাসী। বড় ছেলে উইং কমান্ডার (অব.) ইফতেখার হাসান। ছোট ছেলে রাকিব ইফতেখার হাসান অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। জীবনে এত কিছু থাকার পরও আজ তার দু’চোখে অন্ধকার। থাকেন আগারগাঁও প্রবীণ নিবাসে।

দীর্ঘ ১৭ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন সুনামের সঙ্গে। ২০০৬ সালে অবসর নেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক (অব.) ড. এম আব্দুল আউয়াল (৭০)। অবসরের পর কিছুদিন ভালোই চলছিল তার। অধ্যাপক আব্দুল আউয়ালের সংসারে দুই ছেলে, এক মেয়ে।

আব্দুল আউয়াল জানান, শিক্ষকতার আগে ১৯৬৫-১৯৮৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ এটমিক এনার্জিতে চাকরি করেছি। এরপর শিক্ষকতা। জীবনে অনেক টাকা-পয়সা উপার্জন করেছি। ২০০৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নিয়েছি । এর পর ছেলে-মেয়েরা আমার খোঁজখবর নেওয়া বন্ধ করে দেয়।

কল্যাণপুর হাউজিং এস্টেটে নিজের ফ্ল্যাট ছিল আব্দুল আউয়ালের। এছাড়া পল্লবীতেও বেশ কিছু জমি ছিল। কিন্তু এসব বড় ছেলে কৌশলে বিক্রি করে টাকা পয়সা নিজের অ্যাকাউন্টে জমা করেছেন, আক্ষেপ করেই বলেন অধ্যাপক আউয়াল।

তিনি বলেন, ওরা আমাকে এতো কষ্ট দেয় কেন। আমাকে নিয়ে এতো ছলচাতুরি করে কেন? বলতে বলতে ডুকরে কেঁদে উঠেন অধ্যাপক। তিনি বলেন, আমি কি এই জন্য এতো কষ্ট করে ওদের মানুষ করেছিলাম?

অধ্যাপক আউয়াল বলেন, চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর কিছু দিন বড় ছেলের সঙ্গেই থাকতাম। ছেলের সংসারে থাকার সময় জানতে পারি ছেলে ও বউয়ের মধ্যে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। একদিন বাসায় থাকা অবস্থায় বউয়ের মুখে গালি শুনে বাসা থেকে নেমে আসি। আর ফিরে যাইনি। ওরাও কেউ খোঁজ নেয়নি। ছোট ছেলে অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে আসে ২০১৪ সালে। এসে মিরপুর-১ নম্বরে একটি দোকানে আমার সঙ্গে দেখা করে কথা বলে। সেখানে গেলে আমাকে জানায় তার বিয়ে ঠিক হয়েছে। আমি ওর বাবা অথচ আমাকে জানালও না যে বিয়ে করতে যাচ্ছে। বিয়ে করে আবার চলে যাবে, একথা শুনে ছেলের বউকে দেখতে চান তিনি। কিন্তু তার সাথে দেখা করা যাবে না বলে জানায় ছেলে।

এ অধ্যাপক আফসোসের সুরে বলছিলেন, অথচ এই ছেলের পড়ালেখার জন্যও পেনশনের টাকা থেকে ২৬ লাখ পাঠিয়েছি। সেই ছেলেও আমাকে কোনো দিন ফোন করে না। মাঝে মাঝে ইমেইলে চিঠি লেখে।

অতি উচ্চ শিক্ষিত হতে গিয়ে আমরা দিন দিন আরও অমানুষ হয়ে যাচ্ছি। অথচ অনেক গরিব,মূর্খ আছে যারা বাবা মাকে নিয়েই একসাথে থাকে। তাহলে তারা কি আমাদের মতো মুখোশধারী শিক্ষিতের চেয়ে ভালো নয়? তাই উচ্চ শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিকতা ও মানুষ্যত্ববোধটা ও সবার শিক্ষাগ্রহন করা উচিৎ।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

অবশেষে বৃদ্ধাশ্রমেই আশ্রয় হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল আউয়ালের

আপডেট টাইম : ১১:৩৬:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

তিন সন্তানের মধ্যে মেয়ে সবার বড়, নাম রেজিনা ইয়াছমিন আমেরিকা প্রবাসী। বড় ছেলে উইং কমান্ডার (অব.) ইফতেখার হাসান। ছোট ছেলে রাকিব ইফতেখার হাসান অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। জীবনে এত কিছু থাকার পরও আজ তার দু’চোখে অন্ধকার। থাকেন আগারগাঁও প্রবীণ নিবাসে।

দীর্ঘ ১৭ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন সুনামের সঙ্গে। ২০০৬ সালে অবসর নেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক (অব.) ড. এম আব্দুল আউয়াল (৭০)। অবসরের পর কিছুদিন ভালোই চলছিল তার। অধ্যাপক আব্দুল আউয়ালের সংসারে দুই ছেলে, এক মেয়ে।

আব্দুল আউয়াল জানান, শিক্ষকতার আগে ১৯৬৫-১৯৮৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ এটমিক এনার্জিতে চাকরি করেছি। এরপর শিক্ষকতা। জীবনে অনেক টাকা-পয়সা উপার্জন করেছি। ২০০৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নিয়েছি । এর পর ছেলে-মেয়েরা আমার খোঁজখবর নেওয়া বন্ধ করে দেয়।

কল্যাণপুর হাউজিং এস্টেটে নিজের ফ্ল্যাট ছিল আব্দুল আউয়ালের। এছাড়া পল্লবীতেও বেশ কিছু জমি ছিল। কিন্তু এসব বড় ছেলে কৌশলে বিক্রি করে টাকা পয়সা নিজের অ্যাকাউন্টে জমা করেছেন, আক্ষেপ করেই বলেন অধ্যাপক আউয়াল।

তিনি বলেন, ওরা আমাকে এতো কষ্ট দেয় কেন। আমাকে নিয়ে এতো ছলচাতুরি করে কেন? বলতে বলতে ডুকরে কেঁদে উঠেন অধ্যাপক। তিনি বলেন, আমি কি এই জন্য এতো কষ্ট করে ওদের মানুষ করেছিলাম?

অধ্যাপক আউয়াল বলেন, চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর কিছু দিন বড় ছেলের সঙ্গেই থাকতাম। ছেলের সংসারে থাকার সময় জানতে পারি ছেলে ও বউয়ের মধ্যে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। একদিন বাসায় থাকা অবস্থায় বউয়ের মুখে গালি শুনে বাসা থেকে নেমে আসি। আর ফিরে যাইনি। ওরাও কেউ খোঁজ নেয়নি। ছোট ছেলে অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে আসে ২০১৪ সালে। এসে মিরপুর-১ নম্বরে একটি দোকানে আমার সঙ্গে দেখা করে কথা বলে। সেখানে গেলে আমাকে জানায় তার বিয়ে ঠিক হয়েছে। আমি ওর বাবা অথচ আমাকে জানালও না যে বিয়ে করতে যাচ্ছে। বিয়ে করে আবার চলে যাবে, একথা শুনে ছেলের বউকে দেখতে চান তিনি। কিন্তু তার সাথে দেখা করা যাবে না বলে জানায় ছেলে।

এ অধ্যাপক আফসোসের সুরে বলছিলেন, অথচ এই ছেলের পড়ালেখার জন্যও পেনশনের টাকা থেকে ২৬ লাখ পাঠিয়েছি। সেই ছেলেও আমাকে কোনো দিন ফোন করে না। মাঝে মাঝে ইমেইলে চিঠি লেখে।

অতি উচ্চ শিক্ষিত হতে গিয়ে আমরা দিন দিন আরও অমানুষ হয়ে যাচ্ছি। অথচ অনেক গরিব,মূর্খ আছে যারা বাবা মাকে নিয়েই একসাথে থাকে। তাহলে তারা কি আমাদের মতো মুখোশধারী শিক্ষিতের চেয়ে ভালো নয়? তাই উচ্চ শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিকতা ও মানুষ্যত্ববোধটা ও সবার শিক্ষাগ্রহন করা উচিৎ।