ঢাকা ১২:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
নেতানিয়াহুর বাসভবনে বোমা হামলা ড. ইউনূসের কাছে কী আশা যুক্তরাজ্যের, জানালেন মন্ত্রী ক্যাথরিন পুলিশ সংস্কার কমিশনের অনলাইন জনমত ২০ হাজার মতামত, বেশির ভাগই ৫৪ ধারা বিলোপের পক্ষে নিজ এলাকা ও ঢাকা পাঠাগারে বিশেষ আবদানের জন্য পেলেন গুণীজন সংবধর্না “বয়লার ট্রেকনিশিয়ান” শাহাদত হোসেন নাসিরনগরে হত্যা মামলার আসামী সহ ২ জন গ্রেফতার ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষক কর্মচারী কো- অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের সাধারণ সভা ও নির্বাচন আমতলী-তালতলী সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবীতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ডায়াবেটিস রোগীদের বনাজি গাছ দাঁড়ায় রোগ নিয়ন্ত্রণ শহিদদের নামে প্রতি উপজেলায় স্টেডিয়াম: ক্রীড়া উপদেষ্টা পল্লবীতে দুই ছেলেকে গলা কেটে হত্যার পর বাবার আত্মহত্যার চেষ্টা

চীনা রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে বিএনপি ‘ক্ষুব্ধ’ ও ‘বিস্মিত’

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৫:১৮:২০ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ১৯১ ৫০০০.০ বার পাঠক

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

বাংলাদেশ সরকার ও গণতন্ত্র নিয়ে সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূতের দেওয়া একটি বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি। এই বক্তব্যে দলটি ক্ষুব্ধ ও বিস্মিত বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

শনিবার রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়।

গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ঢাকাস্থ রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির অবস্থান’ শীর্ষক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে নিযুক্ত গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের রাষ্ট্রদূত কর্তৃক সম্প্রতি সামাজিক গণমাধ্যমে প্রদত্ত ভিডিও বক্তব্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির গোচরীভূত হয়েছে। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের বর্তমান অবৈধ সরকার সম্পর্কে তার মূল্যায়ন ও মন্তব্যে গণতন্ত্রকামী দেশবাসীর মতো আমরাও ক্ষুব্ধ এবং বিস্মিত।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের প্রাণ আর ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের মাতৃভূমির স্বাধীনতার মূল চেতনা হল গণতন্ত্র, সাম্য, মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচার। জনগণের ম্যান্ডেটবিহীন ক্ষমতাসীন গণবিরোধী এই অবৈধ সরকার গোটা দেশবাসীকে এই সকল অধিকারগুলো থেকে লাগাতারভাবে যখন বঞ্চিত করে চলছে, বাংলাদেশের জনগণ যখন তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারে সোচ্চার, বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক মহল ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো যখন লাগাতারভাবে এই সরকারকে হুঁশিয়ারি বার্তা দিয়ে চলছে, ঠিক তখনই গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের পক্ষে দেওয়া এই বাস্তবতা বিবর্জিত বক্তব্য দেশের মানুষকে গভীরভাবে ক্ষুব্ধ ও আহত করেছে।’

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অবাধ নির্বাচন, গণতন্ত্র তথা জনমতকে সরকার এতটাই ভয় করে যে, জবাবদিহিতাবিহীন অস্বচ্ছ ঋণের টাকায় উন্নয়নের নামে লোক দেখানো মেগা প্রকল্পই সরকারের এখন একমাত্র শ্লোগান। যা মূলত কর্তৃত্ববাদীদের দুর্নীতির উৎস। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী জনগণই রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক। কিন্তু গুম, হত্যা, মিথ্যা মামলা আর রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের মালিক জনগণকেই আজ পরিণত করা হয়েছে অধিকারবিহীন অসহায় প্রজায়।’

বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘চীন তার নিজ দেশে কী ব্যবস্থা বহাল রাখবে তা একান্তই তার অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ ঐতিহ্যগতভাবে অবাধ নির্বাচন ও প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার চর্চার মাধ্যমে তাদের রাষ্ট্রীয় মালিকানা চর্চা করেছে ও করবে। কেননা প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার প্রয়োগই হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রাণ এবং জনগণের ক্ষমতা চর্চার একমাত্র মাধ্যম, যার মাধ্যমেই রাষ্ট্র জনগণের কাছে জবাবদিহিতায় আবদ্ধ থাকে। এটাই জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গণতন্ত্র চর্চার সার্বজনীন পন্থা।’

রিজভী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তাই চীনের প্রতি বিএনপি ও দেশবাসীর প্রত্যাশা: অবাধ নির্বাচন, মানবাধিকার তথা গণতন্ত্রের স্বার্থে ও দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের জনগণের বন্ধুত্বের স্বার্থে গণবিরোধী ও গণবিচ্ছিন্ন জবরদস্তিমূলক এই অবৈধ সরকার নয়, দেশের প্রকৃত মালিক জনগণের পাশেই তারা সবসময় দাঁড়াবেন।’

প্রসঙ্গত, ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত গণতন্ত্র শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ঢাকায় চীনা দূতাবাসের ফেসবুক পেজে শুক্রবার দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় গণতন্ত্র সম্মেলন নিয়ে লি জিমিং বলেন, সমাজতান্ত্রিক আধুনিকীকরণের সমন্বিত প্রক্রিয়ায় জনগণের গণতন্ত্রের সামগ্রিক বিকাশে চীন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশের গল্পটিও এক। দেশটি আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে। যে দেশে একটি সরকারের যখন ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে, তখন তা যদি গণতন্ত্র হিসেবে স্বীকৃত না হয়, তাহলে হয়তো গণতন্ত্রের সংজ্ঞাটি পুনর্মূল্যায়ন করার অথবা এই সংজ্ঞার পেছনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার সময় এসেছে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

চীনা রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে বিএনপি ‘ক্ষুব্ধ’ ও ‘বিস্মিত’

আপডেট টাইম : ০৫:১৮:২০ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২১

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

বাংলাদেশ সরকার ও গণতন্ত্র নিয়ে সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূতের দেওয়া একটি বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি। এই বক্তব্যে দলটি ক্ষুব্ধ ও বিস্মিত বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

শনিবার রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়।

গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ঢাকাস্থ রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির অবস্থান’ শীর্ষক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে নিযুক্ত গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের রাষ্ট্রদূত কর্তৃক সম্প্রতি সামাজিক গণমাধ্যমে প্রদত্ত ভিডিও বক্তব্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির গোচরীভূত হয়েছে। বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের বর্তমান অবৈধ সরকার সম্পর্কে তার মূল্যায়ন ও মন্তব্যে গণতন্ত্রকামী দেশবাসীর মতো আমরাও ক্ষুব্ধ এবং বিস্মিত।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের প্রাণ আর ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের মাতৃভূমির স্বাধীনতার মূল চেতনা হল গণতন্ত্র, সাম্য, মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচার। জনগণের ম্যান্ডেটবিহীন ক্ষমতাসীন গণবিরোধী এই অবৈধ সরকার গোটা দেশবাসীকে এই সকল অধিকারগুলো থেকে লাগাতারভাবে যখন বঞ্চিত করে চলছে, বাংলাদেশের জনগণ যখন তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারে সোচ্চার, বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক মহল ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো যখন লাগাতারভাবে এই সরকারকে হুঁশিয়ারি বার্তা দিয়ে চলছে, ঠিক তখনই গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের পক্ষে দেওয়া এই বাস্তবতা বিবর্জিত বক্তব্য দেশের মানুষকে গভীরভাবে ক্ষুব্ধ ও আহত করেছে।’

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অবাধ নির্বাচন, গণতন্ত্র তথা জনমতকে সরকার এতটাই ভয় করে যে, জবাবদিহিতাবিহীন অস্বচ্ছ ঋণের টাকায় উন্নয়নের নামে লোক দেখানো মেগা প্রকল্পই সরকারের এখন একমাত্র শ্লোগান। যা মূলত কর্তৃত্ববাদীদের দুর্নীতির উৎস। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী জনগণই রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক। কিন্তু গুম, হত্যা, মিথ্যা মামলা আর রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের মালিক জনগণকেই আজ পরিণত করা হয়েছে অধিকারবিহীন অসহায় প্রজায়।’

বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘চীন তার নিজ দেশে কী ব্যবস্থা বহাল রাখবে তা একান্তই তার অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ ঐতিহ্যগতভাবে অবাধ নির্বাচন ও প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার চর্চার মাধ্যমে তাদের রাষ্ট্রীয় মালিকানা চর্চা করেছে ও করবে। কেননা প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার প্রয়োগই হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রাণ এবং জনগণের ক্ষমতা চর্চার একমাত্র মাধ্যম, যার মাধ্যমেই রাষ্ট্র জনগণের কাছে জবাবদিহিতায় আবদ্ধ থাকে। এটাই জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গণতন্ত্র চর্চার সার্বজনীন পন্থা।’

রিজভী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তাই চীনের প্রতি বিএনপি ও দেশবাসীর প্রত্যাশা: অবাধ নির্বাচন, মানবাধিকার তথা গণতন্ত্রের স্বার্থে ও দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের জনগণের বন্ধুত্বের স্বার্থে গণবিরোধী ও গণবিচ্ছিন্ন জবরদস্তিমূলক এই অবৈধ সরকার নয়, দেশের প্রকৃত মালিক জনগণের পাশেই তারা সবসময় দাঁড়াবেন।’

প্রসঙ্গত, ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত গণতন্ত্র শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ঢাকায় চীনা দূতাবাসের ফেসবুক পেজে শুক্রবার দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় গণতন্ত্র সম্মেলন নিয়ে লি জিমিং বলেন, সমাজতান্ত্রিক আধুনিকীকরণের সমন্বিত প্রক্রিয়ায় জনগণের গণতন্ত্রের সামগ্রিক বিকাশে চীন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশের গল্পটিও এক। দেশটি আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করেছে। যে দেশে একটি সরকারের যখন ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে, তখন তা যদি গণতন্ত্র হিসেবে স্বীকৃত না হয়, তাহলে হয়তো গণতন্ত্রের সংজ্ঞাটি পুনর্মূল্যায়ন করার অথবা এই সংজ্ঞার পেছনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার সময় এসেছে।