ঢাকা ০৮:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
ঠাকুরগাঁওয়ে কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামীলীগের পার্টি অফিস দখল আজমিরীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্রকরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নারী পুরুষসহ ৪০ জন আহত, বাড়ি-ঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর ও লোটপাট। সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে এই প্রথমবারের মতো আজ নিজ জেলা চট্টগ্রামে আসলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস কোনাবাড়ী ফ্লাইওভার ব্রিজের মাথায় বাসের ধাক্কায় নারী শ্রমিক নিহত কর্নেল সোফিয়াকে ‘জঙ্গিদের বোন’ বলে বিতর্কের মুখে বিজেপি মন্ত্রী কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, নেই প্রধান উপদেষ্টার নাম আওয়ামী লীগসহ সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বন্ধে বিটিআরসিকে চিঠি ঢাবির ছাত্রদল নেতা হত্যার ঘটনায় উপাচার্য–প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ পাকিস্তানের আকাশ সীমায় নারীর হামলায় ভারত অধ্যাদেশ বাতিল চায় এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, ৩ দিনের কলম বিরতি

যেভাবে অনলাইনে কিডনি কেনাবেচা করত প্রতারক চক্রটি

নিজস্ব সংবাদদাতা:
  • আপডেট টাইম : ১১:০০:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর ২০২১
  • / ৪০০ ১৫০০০.০ বার পাঠক

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবৈধভাবে কিডনি কেনাবেচার সংঘবদ্ধ চক্রের অন্যতম হোতা ও সংশ্লিষ্ট ফেসবুক পেইজ অ্যাডমিন মো. শাহরিয়ার ইমরানসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

এ চক্রটি ফেসবুকে অবৈধভাবে কিডনি কেনাবেচা করতো। কিডনি বেচে তারা ১৫-২০ লাখ টাকা পেলেও কিডনি দাতাকে দিত দুই লাখ টাকা।  গরিব ও অসহায় মানুষ চিহ্নিত করে তাদের টার্গেট করতো ইমরানরা।

মঙ্গলবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।  অনলাইনে কিডনি পাচারচক্রের হোতাদের গ্রেফতারের বিস্তারিত তথ্য জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত র‌্যাব-৫, র‌্যাব-২ ও র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখার যৌথ অভিযানে জয়পুরহাট ও রাজধানীর নর্দ্দা থেকে কিডনি কেনাবেচা সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।

তারা হলেন- মো. শাহরিয়ার ইমরান আহম্মেদ (৩৬), মো. মেহেদী হাসান (২৪), মো. সাইফুল ইসলাম (২৮), মো. আব্দুল মান্নান (৪৫), ও মো. তাজুল ইসলাম ওরফে তাজু (৩৮)।

র‌্যাব বলছে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব মানুষ চিহ্নিত করে তাদের অর্থের বিনিময়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের জন্য ডোনার হতে প্রলুব্ধ করা হত। এরপর ডোনারকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাঠানো হত।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যক্তিরা জানান, তাদের চক্রের মোট সদস্য সংখ্যা ১৫-২০ জন। তারা ৩টি ভাগে বিভক্ত হয়ে কিডনি কেনাবেচা করে থাকে।  চক্রের প্রথম গ্রুপ ঢাকায় অবস্থান করে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন প্রয়োজন এমন বিত্তশালী রোগীদের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। আর চক্রের দ্বিতীয় দলটি চাহিদা অনুযায়ী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব ও অভাবী মানুষ চিহ্নিত করে এবং তাদের অর্থনৈতিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের জন্য ডোনার হতে প্রলুব্ধ করে ঢাকায় নিয়ে আসে।

অপরদিকে তৃতীয় গ্রুপটি প্রলোভনের শিকার কিডনি ডোনারদের ঢাকায় বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন রোগীর সঙ্গে ব্লাড ম্যাচিং ও অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করায়। ব্লাড ম্যাচিং ও অন্যান্য ডায়াগনস্টিক টেস্টে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের উপযুক্ততা নিশ্চিত হওয়ার পর তার পাসপোর্ট, ভিসা প্রসেসিং ও ভুয়া কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে ডোনারকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করা হয়।

চক্রের হোতা ইমরান প্রতি কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন বাবদ ৫-১০ লাখ টাকা, মান্নান ও তাজুল প্রতি কিডনি দাতা সংগ্রহ বাবদ যথাক্রমে ৫ ও ৩ লাখ টাকা নিতেন।

অপরদিকে চক্রের মূলহোতা ও অন্যতম আসামি শাহরিয়ার ইমরান ভারতে অবস্থান করে স্থানীয় দালাল ও অনলাইনের মাধ্যমে কিডনি রোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।

তিনি দুটি পেজের এডমিন। এটির নাম ‘বাংলাদেশ কিডনি ও লিভার পেশেন্ট চিকিৎসা সেবা’ এবং অপরটি ‘কিডনি লিভার চিকিৎসা সেবা’। এ পর্যন্ত তিনি কিডনি বিক্রির জন্য প্রায় শতাধিক মানুষকে ভারতে পাচার করেছেন বলে জানান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।  তার বিরুদ্ধে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনে ৬টির বেশি মামলা রয়েছে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিরা এভাবে বিপুল অর্থ অবৈধ উপায়ে হাতিয়ে নিয়েছে।  প্রতিটি কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য তারা রোগীর কাছ থেকে ১৫-২০ লাখ টাকা নিত। বিপরীতে তারা কিডনি ডোনারকে ৩-৪ লাখ টাকা দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করে অগ্রিম দুই লাখ টাকা দিত।

অভিযানে ভুক্তভোগী কিডনি দাতাদের ৪টি পাসপোর্ট, মেডিকেল চিকিৎসার জন্য পাসপোর্ট, ভিসা সম্পর্কিত বেশকিছু কাগজপত্র, ৫টি মোবাইল ও দেশি-বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

যেভাবে অনলাইনে কিডনি কেনাবেচা করত প্রতারক চক্রটি

আপডেট টাইম : ১১:০০:০৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর ২০২১

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবৈধভাবে কিডনি কেনাবেচার সংঘবদ্ধ চক্রের অন্যতম হোতা ও সংশ্লিষ্ট ফেসবুক পেইজ অ্যাডমিন মো. শাহরিয়ার ইমরানসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

এ চক্রটি ফেসবুকে অবৈধভাবে কিডনি কেনাবেচা করতো। কিডনি বেচে তারা ১৫-২০ লাখ টাকা পেলেও কিডনি দাতাকে দিত দুই লাখ টাকা।  গরিব ও অসহায় মানুষ চিহ্নিত করে তাদের টার্গেট করতো ইমরানরা।

মঙ্গলবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।  অনলাইনে কিডনি পাচারচক্রের হোতাদের গ্রেফতারের বিস্তারিত তথ্য জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত র‌্যাব-৫, র‌্যাব-২ ও র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখার যৌথ অভিযানে জয়পুরহাট ও রাজধানীর নর্দ্দা থেকে কিডনি কেনাবেচা সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।

তারা হলেন- মো. শাহরিয়ার ইমরান আহম্মেদ (৩৬), মো. মেহেদী হাসান (২৪), মো. সাইফুল ইসলাম (২৮), মো. আব্দুল মান্নান (৪৫), ও মো. তাজুল ইসলাম ওরফে তাজু (৩৮)।

র‌্যাব বলছে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব মানুষ চিহ্নিত করে তাদের অর্থের বিনিময়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের জন্য ডোনার হতে প্রলুব্ধ করা হত। এরপর ডোনারকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাঠানো হত।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যক্তিরা জানান, তাদের চক্রের মোট সদস্য সংখ্যা ১৫-২০ জন। তারা ৩টি ভাগে বিভক্ত হয়ে কিডনি কেনাবেচা করে থাকে।  চক্রের প্রথম গ্রুপ ঢাকায় অবস্থান করে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন প্রয়োজন এমন বিত্তশালী রোগীদের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। আর চক্রের দ্বিতীয় দলটি চাহিদা অনুযায়ী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব ও অভাবী মানুষ চিহ্নিত করে এবং তাদের অর্থনৈতিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের জন্য ডোনার হতে প্রলুব্ধ করে ঢাকায় নিয়ে আসে।

অপরদিকে তৃতীয় গ্রুপটি প্রলোভনের শিকার কিডনি ডোনারদের ঢাকায় বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন রোগীর সঙ্গে ব্লাড ম্যাচিং ও অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করায়। ব্লাড ম্যাচিং ও অন্যান্য ডায়াগনস্টিক টেস্টে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের উপযুক্ততা নিশ্চিত হওয়ার পর তার পাসপোর্ট, ভিসা প্রসেসিং ও ভুয়া কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে ডোনারকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করা হয়।

চক্রের হোতা ইমরান প্রতি কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন বাবদ ৫-১০ লাখ টাকা, মান্নান ও তাজুল প্রতি কিডনি দাতা সংগ্রহ বাবদ যথাক্রমে ৫ ও ৩ লাখ টাকা নিতেন।

অপরদিকে চক্রের মূলহোতা ও অন্যতম আসামি শাহরিয়ার ইমরান ভারতে অবস্থান করে স্থানীয় দালাল ও অনলাইনের মাধ্যমে কিডনি রোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।

তিনি দুটি পেজের এডমিন। এটির নাম ‘বাংলাদেশ কিডনি ও লিভার পেশেন্ট চিকিৎসা সেবা’ এবং অপরটি ‘কিডনি লিভার চিকিৎসা সেবা’। এ পর্যন্ত তিনি কিডনি বিক্রির জন্য প্রায় শতাধিক মানুষকে ভারতে পাচার করেছেন বলে জানান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।  তার বিরুদ্ধে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনে ৬টির বেশি মামলা রয়েছে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিরা এভাবে বিপুল অর্থ অবৈধ উপায়ে হাতিয়ে নিয়েছে।  প্রতিটি কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য তারা রোগীর কাছ থেকে ১৫-২০ লাখ টাকা নিত। বিপরীতে তারা কিডনি ডোনারকে ৩-৪ লাখ টাকা দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করে অগ্রিম দুই লাখ টাকা দিত।

অভিযানে ভুক্তভোগী কিডনি দাতাদের ৪টি পাসপোর্ট, মেডিকেল চিকিৎসার জন্য পাসপোর্ট, ভিসা সম্পর্কিত বেশকিছু কাগজপত্র, ৫টি মোবাইল ও দেশি-বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়।