ঢাকা ১০:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
ঈদের ঘরমুখো মানুষের ঢল, যানবাহনের সংকটে চন্দ্রা মোড়ে দুর্ভোগ চরমে ঈদের দুই দিন আগে ছুটি: ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের চাপ, হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ: আইজিপি মহাসড়কে জরুরি সেবার জন্য ‘হ্যালো অ্যাপ’ চালু: এক ক্লিকেই মিলবে হাইওয়ে পুলিশের সহায়তা এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হয়েছে: রেলওয়ে উপদেষ্টা নিবন্ধনসহ দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ফেরত পাচ্ছে জামায়াত ঈদের দিনে ৩ বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রযুক্তির পাখায় উড়ছে সম্ভাবনা: আনসার সদস্য আবুল হোসেনের উদ্ভাবনী উড়োজাহাজ সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি আইন উপদেষ্টাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি ফুলবাড়ীতে আর্ন্তজাতিক মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের মাঝে নগদ অর্থ প্রদান মোংলায় জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের সমাপনী অনুষ্ঠান

হারিয়ে যাওয়ার ১২ বছর পর বাড়ি ফিরল রিফাত

নিজস্ব সংবাদদাতা:
  • আপডেট টাইম : ১১:১২:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ জানুয়ারী ২০২১
  • / ৩৫৩ ১৫০.০০০ বার পাঠক

নাটোর জেলা প্রতিনিধি।।

ছোট্ট ছেলে-মেয়েদের নানা ধরনের শখ থাকে। ট্রেন দেখার ইচ্ছে পূরণ করতে কাউকে না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ রিফাত। বাড়ি থেকে সাড়ে ৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্টেশনে গিয়ে ট্রেনে চড়ে আর ফিরেনি রিফাত।

নিখোঁজ হওয়ার ১২ বছর পর সোমবার রাতে বাবা-মায়ের কোলে ফিরে এসেছে রিফাত। ঘটনাটি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার গালিমপুর গ্রামের। রিফাত ও তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে শখের বসে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ট্রেন দেখতে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার মালঞ্চি স্টেশনে যায় শিশু রিফাত। ওই সময় সে উপজেলার গালিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়তো। স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা অজানা একটি ট্রেনে উঠে ট্রেনের ভেতর ঘুরে ঘুরে দেখার সময় ট্রেন ছেড়ে দিলে সে হারিয়ে যায়।

হারিয়ে যাওয়ার পর প্রথম ৭ বছর রাজশাহীর কয়েকটি বাড়িতে রাখালের কাজ করেই তার সময় কাটে। লেখাপড়া শেখার অনেক ইচ্ছা প্রকাশ করলেও কেউ তাকে সে সুযোগ দেয়নি। এক সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৌঁছে যায় রিফাত। পরে এক প্রবাসীর একটি মোবাইল চুরির মিথ্যা অভিযোগে তাকে পাঠানো হয় রাজশাহী কারাগারে। সেখান থেকে তার ঠাঁই হয় রাজশাহী বায়া কিশোর সংশোধনাগারের এতিমখানায়।

প্রায় ৫ বছর এতিমখানায় অবস্থানের পর বাবা-মাকে খুঁজে পাওয়ার আশায় সেখানকার এক বড়ভাইয়ের মাধ্যমে ঢাকায় গিয়ে অংশ নেয় আর জে কিবরিয়ার জীবন গল্পের অনুষ্ঠানে। গত ২৮ডিসেম্বর ভিডিওটি প্রচার হলে দুদিনের মধ্যেই পরিবারের খোঁজ পায় রিফাত।

এক সপ্তাহের মধ্যেই সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাবা-মায়ের কোলে ফিরে এসেছে সে। দুই মেয়ে আর এক ছেলের সংসারে বড় সন্তান রিফাতকে ১২ বছর পর ফিরে পেয়ে গালিমপুরের জাহাঙ্গীর হোসেন ও রুপালী বেগমের ঘরে এখন বইছে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস। হারিয়ে যাওয়া রিফাতকে দেখতে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে এলাকাবাসীদের ভিড় জমে। ১২ বছর পর ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বসিত সহপাঠী গালিমপুর গ্রামের সজল আলী জানান, রিফাতের সঙ্গে একই ক্লাসে তিনি পড়তেন। সে সময় তিনি নিজেও ছোট ছিলেন। বন্ধুকে হারিয়ে তিনি ব্যথিত ছিলেন। সেই সহপাঠীকে ফিরে পেয়ে বেশ খুশি হয়েছেন তিনি।

মা রুপালী বেগম বলেন, হারিয়ে যাওয়া বুকের মানিককে খুঁজে পেয়ে সৃষ্টিকর্তার দরবারে শুকরিয়া জানাই।

রিফাতের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভিডিওতে তার ছেলের খবর দেখার পর স্থানীয়রা তাকে খবর দেয়। এরপর রিফাতের বর্তমান ঠিকানায় খোঁজ নিয়ে আইনি সব প্রক্রিয়া শেষে রিফাতকে বাড়িতে ফিরে এনেছেন। তবে প্রতি মাসে নাটোর সমাজসেবা অফিসে কর্মকর্তার নিকট রিফাতকে হাজির করতে হবে বলে তিনি জানান।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

হারিয়ে যাওয়ার ১২ বছর পর বাড়ি ফিরল রিফাত

আপডেট টাইম : ১১:১২:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ জানুয়ারী ২০২১

নাটোর জেলা প্রতিনিধি।।

ছোট্ট ছেলে-মেয়েদের নানা ধরনের শখ থাকে। ট্রেন দেখার ইচ্ছে পূরণ করতে কাউকে না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ রিফাত। বাড়ি থেকে সাড়ে ৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্টেশনে গিয়ে ট্রেনে চড়ে আর ফিরেনি রিফাত।

নিখোঁজ হওয়ার ১২ বছর পর সোমবার রাতে বাবা-মায়ের কোলে ফিরে এসেছে রিফাত। ঘটনাটি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার গালিমপুর গ্রামের। রিফাত ও তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে শখের বসে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ট্রেন দেখতে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার মালঞ্চি স্টেশনে যায় শিশু রিফাত। ওই সময় সে উপজেলার গালিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়তো। স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা অজানা একটি ট্রেনে উঠে ট্রেনের ভেতর ঘুরে ঘুরে দেখার সময় ট্রেন ছেড়ে দিলে সে হারিয়ে যায়।

হারিয়ে যাওয়ার পর প্রথম ৭ বছর রাজশাহীর কয়েকটি বাড়িতে রাখালের কাজ করেই তার সময় কাটে। লেখাপড়া শেখার অনেক ইচ্ছা প্রকাশ করলেও কেউ তাকে সে সুযোগ দেয়নি। এক সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৌঁছে যায় রিফাত। পরে এক প্রবাসীর একটি মোবাইল চুরির মিথ্যা অভিযোগে তাকে পাঠানো হয় রাজশাহী কারাগারে। সেখান থেকে তার ঠাঁই হয় রাজশাহী বায়া কিশোর সংশোধনাগারের এতিমখানায়।

প্রায় ৫ বছর এতিমখানায় অবস্থানের পর বাবা-মাকে খুঁজে পাওয়ার আশায় সেখানকার এক বড়ভাইয়ের মাধ্যমে ঢাকায় গিয়ে অংশ নেয় আর জে কিবরিয়ার জীবন গল্পের অনুষ্ঠানে। গত ২৮ডিসেম্বর ভিডিওটি প্রচার হলে দুদিনের মধ্যেই পরিবারের খোঁজ পায় রিফাত।

এক সপ্তাহের মধ্যেই সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাবা-মায়ের কোলে ফিরে এসেছে সে। দুই মেয়ে আর এক ছেলের সংসারে বড় সন্তান রিফাতকে ১২ বছর পর ফিরে পেয়ে গালিমপুরের জাহাঙ্গীর হোসেন ও রুপালী বেগমের ঘরে এখন বইছে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস। হারিয়ে যাওয়া রিফাতকে দেখতে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে এলাকাবাসীদের ভিড় জমে। ১২ বছর পর ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বসিত সহপাঠী গালিমপুর গ্রামের সজল আলী জানান, রিফাতের সঙ্গে একই ক্লাসে তিনি পড়তেন। সে সময় তিনি নিজেও ছোট ছিলেন। বন্ধুকে হারিয়ে তিনি ব্যথিত ছিলেন। সেই সহপাঠীকে ফিরে পেয়ে বেশ খুশি হয়েছেন তিনি।

মা রুপালী বেগম বলেন, হারিয়ে যাওয়া বুকের মানিককে খুঁজে পেয়ে সৃষ্টিকর্তার দরবারে শুকরিয়া জানাই।

রিফাতের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভিডিওতে তার ছেলের খবর দেখার পর স্থানীয়রা তাকে খবর দেয়। এরপর রিফাতের বর্তমান ঠিকানায় খোঁজ নিয়ে আইনি সব প্রক্রিয়া শেষে রিফাতকে বাড়িতে ফিরে এনেছেন। তবে প্রতি মাসে নাটোর সমাজসেবা অফিসে কর্মকর্তার নিকট রিফাতকে হাজির করতে হবে বলে তিনি জানান।