বিরামপুরে নিকাহ্ রেজিঃ কাজীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ
- আপডেট টাইম : ০৯:৪৩:১৮ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১০ আগস্ট ২০২১
- / ২৫৬ ৫০০০.০ বার পাঠক
মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা প্রতিনিধি, দিনাজপুর।।
দিনাজপুরের বিরামপুরে পাত্রপক্ষের নিকট হতে মোটা অংকের টাকা ঘুস নিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে কুমারী মেয়েকে তালাক প্রাপ্ত ও দেনমহরের টাকার পরিমান কমিয়ে পাত্র পক্ষকে কপি সরবরাহ করে পাত্রীর ঘর ভাঙ্গার উপক্রম হওয়ায় উপজেলার ৬ নং জোতবানী ইউনিয়ন নিকাহ্ রেজিস্টারী কাজী মফেজ উদ্দীন সরকারের বিরুদ্ধে ০৪ আগস্ট বুধবার বিরামপুর থানায় অভিযোগ করেছেন নিহা আক্তার মুন্নি (২০) নামে এক গৃহবধু।
মুন্নি উপজেলার জোতবানী ইউনিয়নের নিশিবাপুর গ্রামের ফারুক হোসেনের মেয়ে। সে বিরামপুর সরকারি কলেজের মানবিক “ক”শাখার ইন্টার ফাইনাল ইয়ারের শিক্ষার্থী।
থানার অভিযোগ ও বাদিনী জানান, ২০২০ ইং সালের ১২ জুন ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদীপুর ইউনিয়নের সেনোড়া গ্রামের ইউসুব আলির ছেলে মোসলেম আলী (২৭) এর সাথে মুসলিম শ্বরা মোতাবেক ৪ লক্ষ ৫ হাজার টাকা দেন মোহরে বিবাহ হয়।
বিবাহের পর থেকে স্বামী স্ত্রীতে মহামিলেই বসবাস করে আসছিলেন। গত কয়েক মাস আগে মুন্নিসহ তার স্বামী মোসলেম আলী মুন্নির বাবার বাড়ি নিশিবাপুর বেড়াতে আসে, এরই মধ্যে মোসলেম আলী নিকাহ্ রেজিঃ কাজী ১ নং বিবাদী মফেজ উদ্দিন সরকার এর সাথে গোপনে যোগাযোগ করে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে দেনমহর ৪ লক্ষ ৫ হাজারের স্থলে ১ লক্ষ ৫ হাজার ও মুন্নির বিবাহের তথ্যে কুমারী স্থানে তালাকপ্রাপ্ত লিখে মুন্নী ও তার বাবাকে না জানিয়েই গোপনে কপি সরবরাহ করেন কাজী ময়েজউদ্দিন।
এরপর থেকে মুন্নির স্বামী ও শশুরবাড়ীর লোকজন কাবিন নামায় তালাকপ্রাপ্ত লেখা দেখিয়া বিভিন্ন ভাবে শারীরিক ও মানষিক অন্যায় অত্যাচার করিতে থাকে। এ বিষয়ে মুন্নির বাবা ফারুক হোসেন জানান, সংশ্লিষ্ঠ ইউপি ওয়ার্ড সদস্য
মোস্তাক হোসেন,প্রতিবেশী কামরুজ্জামান ও আমার মেয়ে মুন্নিকে সঙ্গেনিয়ে উক্ত বিবাদী কাজী মফেজ উদ্দিন সরকারের মোকামে গিয়ে কাবিননামা নিয়ে প্রতারণার বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তিনি আমাকে ও আমার মেয়েকে বিভিন্ন হুমকি প্রদান করেন। কাজী মফেজ উদ্দিন সরকার প্রতারণার সত্যতা স্বীকার করে বলেন ” আমি তোর মেয়ের বিবাহ নিয়ে প্রতারণা করেছি, তাতে তোর কি করার আছে তুই করিস” বলে আমাদের তাড়িয়ে দেন। কাবিননামায় কুমারীর স্থানে তালাকপ্রাপ্ত উল্লেখ করায় মুন্নির স্বামী আর মুন্নিকে সংসার করবেন না বলে তার বাবার বাড়ীতে রেখে গেছেন। এখন ঘর ভাংতে বসেছে বলে দু,হাতে মূখঢেঁকে হাউমাউ করে কেঁদে ফেললেন মুন্নি। এবিষয়ে বিবাদী কাজী মফেজ উদ্দিন সরকারের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন বাদী নিহা আক্তার মুন্নি।
ঘটনার বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য মোস্তাক হোসেন ও মুন্নির প্রতিবেশী কামরুজ্জানের সাথে কথা বললে তাঁরা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে বিরামপুর থানা ওসি তদন্ত মতিয়ার রহমানের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, বুধবার দুপুরে নিহা আক্তার মুন্নি নামে এক ভুক্তভোগি থানায় এসে উপজেলার ৬ নং জোতবানী ইউনিয়ন নিকাহ্ রেজিঃ কাজী মফেজ উদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধ কাবিননামার কপি সরবরাহে তথ্য গোপন করায় প্রতারণার অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে প্রক্ষিতে শুক্রবার সকাল ১১টা ২৪ মিনিটে মোবাইল ফোনে বিবাদী কাজী মফেজ উদ্দিন সরকারের সাথে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
এলাকার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন জানান, জোতবানী ইউনিয়ন নিকাহ্ রেজিঃ কাজী মফেজ উদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধ অনেক অনিয়ম ও দৃর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। কাজীর বিরুদ্ধে বিনাইল ইউনিয়নের চাপড়া ও অচিন্তপুর এলাকার কাবিননামা প্রতারণার মামলায় হাজতবাসসহ দিনাজপুর আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। কয়েকমাস আগে উপজেলার দেউল গ্রামের মোস্তারিনা আকতার শিখা নামে এক বিবাহিত মহিলার অভিযোগে প্রেক্ষিতে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল।
এলাকার সর্বস্তরের সচেতনমহল যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকটে তদন্ত পূর্বক উক্ত প্রতারক জোতবানী ইউনিয়ন নিকাহ্ রেজিঃ কাজী মফেজ উদ্দিন সরকারের রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করে প্রতারণার অভিযোগে সত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির জোর দাবী জানিয়েছেন।।