নাটোরের বড়াইগ্রামে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার উদ্দেশ্যে অপহরণ করে ছিনতাই অতঃপর নিজ বাড়িতে আগুন
- আপডেট টাইম : ০২:৩৭:৫৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২২ জুন ২০২১
- / ২৬৭ ৫০০০.০ বার পাঠক
মোঃ মাসুদ রানা (সোহেল)
বিভাগীয় ব্যুরো চিফ।।
নাটোরের বড়াইগ্রামে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মাঝগ্রাম ইউনিয়নের ঢুলিয়া গ্রামের জামেদ আলী কে অপহরণ করে ছিনতাই অতঃপর নিজ বাড়িতে আগুন দিলো নিজেরাই।
ঢুলিয়া গ্রামে মসজিদের নামাজ পড়ানো কে কেন্দ্র করে মারামারি এবং থানায় তাহার মামলা হয়। জামেদের পরিবারের চারজন এই মামলার আসামি হয়। আসামীগনকে জাবিনের জন্য উকিলের কাছে পরামর্শ করতে জামেদ আলী নাটোর কোর্টে উকিলের কাছে যান। সেখান থেকে প্রতিপক্ষ দল জামেদ আলী কে অপহরণ করেও খান্ত না হয়ে নিজ বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে প্রতিপক্ষদের নামে মামলা করেন ।
এই বিষয়ে জামেদ আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, গ্রামে মসজিদে নামাজ পড়া কে কেন্দ্র করে মারামারি হয়েছে এবং এই বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। সেই মামলায় আমার পরিবারের চারজন আসামি হয়েছে। আমি আসামিগনের জাবিন করানোর জন্য উকিলের কাছে পরামর্শ করতে নাটোর কোর্টে উকিলের কাছে যাই । উকিলের কাছে কাজ শেষ করে নাটোর থেকে ফেরার সময় আমি একটি সিএনজিতে উঠছি, এমন সময় আমার প্রতিপক্ষ দল একই সিএনজিতে উঠে পড়ে এবং আমাকে তারা বলে তাদের কথা মত চলতে। না চললে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা। এরপর বনপাড়া এসে জোর করে আমাকে তাদের মোটরসাইকেলে ওঠায় এবং ফাঁকা মাঠে নিয়ে আমাকে কয়েকজন মারধর করে আমার কাছে জোরপূর্বক ২০হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। আমাকে তারা আরো বলে নগদে দুই লক্ষ টাকা এখন বাড়ি গিয়ে দিতে হবে । আমি জীবনের ভয়ে কোন উত্তর না করে তাদের সাথে চলে যায়, তারা আমার বাড়িতে গিয়ে আমার মেয়ের কাছে থেকে নগদ এক লক্ষ টাকা এবং প্রায় একলক্ষ টাকার গহনা নিয়ে যায়। যাবার সময় আমাকে বলে যায় তোদের বংশের সবাই আমাদের সমাজভুক্ত হয়ে থাকতে হবে যদি আমাদের সমাজ ভুক্ত হয়ে তোরা না থাকিস তাহলে এই গ্রাম থেকে তোদের তাড়িয়ে দেব এবং তোকে আমরা মেরে ফেলবো। আমি সেই ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে অন্য গ্রামে আশ্রয় নি। কারণ আমাদের গ্রামে মারামারির যে মামলা হয়েছে । সে মামলায় আসামি হয়েছি আমরা মাত্র কয়েকজন, কিন্তু প্রায় ৪০ টি পরিবারের মানুষ বাড়িছাড়া হয়ে আছে। কেউ কোন ফসল ঠিকমতো মাঠ থেকে ঘরে ওঠাতে পারছে না। এবং যেসকল মহিলারা বাড়িতে আছে কোন মহিলাদের নিরাপত্তা নেই, তাই জীবনের ভয়ে আমি পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছি পাশের গ্রামে। এমত অবস্থায় আমাদেরকে ঘায়েল করার জন্য আমাদের গ্রামের আলাউদ্দিন ছেলে আমিন হোসেন তাহার নিজ বাড়িতে নিজেই আগুন ধরিয়ে দিয়ে আমাদের নামে মামলা করেন। আমাদের নামে সম্পূর্ণ রূপে মিথ্যাভাবে মামলাটি করেন। আমি এই মামলার সুষ্ঠু তদন্ত করে তার বিচারের আকুল আবেদন জানাচ্ছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
এ বিষয়ে জামেদ আলীর মেয়ে আলেয়া খাতুন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রতিপক্ষদের কয়েকজন আমার বাবাকে ধরে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে আমার কাছে টাকার দাবি করে দুইলক্ষ, আমি তাদের সাথে অনেক কথা কাটাকাটি করার পরেও টাকা না দিয়ে বাঁচতে পারিনি। নগদ এক লক্ষ টাকা এবং এক লক্ষ টাকার গহনা নিয়ে চলে যায় তারা , যাওয়ার সময় বলে যায় তোদের গোষ্ঠীর সবাই যেন আমাদের সমাজ ভুক্ত হয়ে থাকে আর আমাদের কথা শুনে। যদি আমাদের কথার অবাধ্য হয় তোর গোষ্টির লোকজন তাহলে তোর বাবাকে মেরে ফেলবো আর তোর সম্মান এর ক্ষতি করবো। যাওয়ার সময় তারা আমার ঘরের আসবাসপত্র ও আলমারি থেকে থেকে জামা কাপড় ও ঘরে রাখা ফসলগুলো এলোপাতাড়িভাবে ছিটিয়ে দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যায়। এবং কয়েকদিন পরেই তারা নিজ বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে আমাদের নামে মামলা করে আমাদেরকে ঘায়েল করার জন্য। প্রতিপক্ষদের ভয়ে আমরা ঠিকমত বাড়িতে থাকতে পারছি না এবং আমাদের চল্লিশটি পরিবারের সকল পুরুষ বাড়িতে থাকতে পারছে না।
এ বিষয়ে প্রতিপক্ষ গ্রুপ লিডার আব্দুস সালাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা নাটোর থেকে জামেদকে সঙ্গে করে নিয়ে এসে তার বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছি, তাদের যদি কোনো ক্ষতি হয় সেই ভয়ে। আমরা তার কোনো ক্ষতি করি নাই আমরা আমাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিই নাই, কে বা কাহারা আগুন দিয়েছে সেটাও আমরা সঠিক জানিনা। এ বিষয়ে এলাকাবাসীরা 999 কল দিয়ে প্রশাসনকে জানাই। এবং সেখানে কর্তব্যরত এসআই আব্দুল জব্বার এসে সরোজমিনে তা দেখেন।
এ বিষয়ে এসআই আব্দুল জব্বার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, কে বা কাহারা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তার কোন সঠিক পাওয়া যায়নি। তবে আমির হোসেনের কোন অভিযোগ থাকলে থানায় জানাতে হবে , তখন আমরা তাহার সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করিব।
এ বিষয়ে প্রতিপক্ষদের মধ্যে আরো কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ঠিক একই কথা বলে।
এ বিষয়ে প্রতিপক্ষ আমিন হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার বাড়িতে কে কাহারা কখন আগুন ধরিয়ে দিয়েছে এটা আমরা কেউ জানিনা। তবে আমরা জাাভেদও তার সহযোগীদের সন্দেহ করেছি।
এ বিষয়ে ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল জব্বারের কাছে জানতে চাইল তিনি জানান, এখানে কে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে তার কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে ওয়ার্ড সদস্য হিসাবে আমি তাহাকে আমার পকেট থেকে নগদ দুই হাজার টাকা সাহায্য করলাম।