নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ।
- আপডেট টাইম : ০৮:০৩:২৮ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ১২ মে ২০২১
- / ২৬২ ৫০০০.০ বার পাঠক
সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।
পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদে নৌকার প্রার্থী আলহাজ্ব গিয়াসউদ্দীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন অন্য প্রার্থীরা। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলার রিটানিং অফিসার বরাবর অন্য মেয়র প্রার্থীরা একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মেয়র প্রার্থীরা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আলহাজ্ব গিয়াসউদ্দীন চৌধুরী পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়ণমূলক কাজে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। তিনি পৌরসভার চলমান ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় প্রতি কার্ডের বিপরীতে ৪৫০ টাকা করে বিতরণ কর্মসূচি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় দুঃস্থ ও অসহায় পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ এবং সরকারী ভবন উদ্বোধনসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে সরাসরি অংশ নিয়েছেন এবং প্রভাব বিস্তার করেছেন।
লিখিত অভিযোগ পত্রে স্বাক্ষর করেছেন মেয়র প্রার্থী নুর নেওয়াজ, আবু বকর সিদ্দীক, আসাদুজ্জামান আসাদ, আক্তার হোসেন নিউটন এবং যাকারিয়া ইবনে ইউসুফ। তারা দেবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় রাখতে আলহাজ্ব গিয়াসউদ্দীন চৌধুরীকে সকল ধরণের উন্নয়ণমূলক কাজ থেকে দূরে রাখতে এবং নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের কারণে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানান।
জানা গেছে, দেবীগঞ্জে সরকারের তরফ থেকে ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ) কর্মসূচির আওতায় প্রতি কার্ডের বিপরীতে ৪৫০ টাকা করে বিতরণ কর্মসূচি চলমান রয়েছে। উপজেলা হলরুমে গিয়াসউদ্দীন চৌধুরী নিজে উপস্থিত থেকে কার্ডের বিপরীতে টাকা বিতরণ করেন। বিষয়টির প্রতিবাদ করায় গত রোববার ও সোমবার গিয়াস চৌধুরীর সঙ্গে অন্যদুই মেয়র প্রার্থী নুর নেওয়াজ এবং আবু বকর সিদ্দিকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়।
এছাড়াও নৌকার মেয়র প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গিয়াসউদ্দীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ভিজিএফ ও পৌরসভার বিভিন্ন সরকারি সাহায্য তালিকায় নিজের পছন্দমত ব্যক্তির নাম ঢুকানোসহ প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ আছে। নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা-২০১৫ এর ২৩ ধারায় উল্লেখ রয়েছে, ‘কোনো প্রার্থী তার নির্বাচনী এলাকায় সরকারি উন্নয়ণমূলক কর্মসূচিতে কর্তৃত্ব করতে পারবেন না কিংবা এই সংক্রান্ত সভায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না’।
এ প্রসঙ্গে অভিযোগকারী মেয়র প্রার্থী নুর নেওয়াজ বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী কোনো প্রার্থী তার নির্বাচনী এলাকায় সরকারি উন্নয়ণমূলক কর্মসূচিতে কর্তৃত্ব করতে পারবেন না বা সভায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এমন নির্দেশনা থাকলেও গিয়াসউদ্দী চৌধুরী এসব মানছেন না। এ ব্যাপারে তার সঙ্গে আমিসহ অন্য মেয়র প্রার্থীদের একাধিকবার বাকবিতণ্ডা হলেও তিনি সরে আসেননি। ফলে আজ আমরা উপজেলার রিটানিং অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।
অভিযোগের ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকার মেয়র প্রার্থী আলহাজ¦ গিয়াসউদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘আমি শুধুমাত্র মেয়রপ্রার্থী নই, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিও। সেই হিসেবে সরকারকে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে নেতাকর্মীদের নিয়ে সহায়তাও করছি।’ আপনি একজন প্রার্থী হিসেবে এসব কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি কোথাও কতৃত্ব বা অনিয়ম করছি না।
অভিযোগের ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলার রিটানিং অফিসার প্রত্যয় হাসান বলেন, নির্বাচনতো আপাততো স্থগিত। আমি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
প্রসঙ্গত, গত ১ এপ্রিল চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম ধাপ এবং পৌরসভা নির্বাচনের ষষ্ঠ ধাপসহ সব ধরনের নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কবে নাগাদ অনুষ্ঠিত হতে পারে সে ব্যাপারেও কোনো নির্দেশনা দেয়নি কমিশন।