ঢাকা ০৫:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
ঠাকুরগাঁওয়ে গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা কুরবানি ঈদে ১০ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মজীবীরা ঝুঁকিতে ৭০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ গ্যাস সংকটে দেশের টেক্সটাইল ও গার্মেন্ট খাত ড. ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে উপদেষ্টা পরিষদের সভা কলেজের অধ্যক্ষকে মারধর করে পুলিশে দিলেন এনসিপির নেতাকর্মীরা দেশের মাটিতে পা রাখলেন খালেদা জিয়া এবার কাশ্মীরের সীমান্তে আটার মজুদ বাড়াচ্ছে পাবনায় এডভোকেট মাসুদ খন্দকারের ওপর হামলার প্রতিবাদে ভাঙ্গুড়ায় বিএনপি’র বিক্ষোভ মিছিল আজমিরীগঞ্জে নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতবিনিময় ও পরিচিত সভা অনুষ্ঠিত হবে আজমিরীগঞ্জ পুলিশের বিশেষ অভিযানে ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামী গ্রেফতার

ঝুঁকিতে ৭০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ গ্যাস সংকটে দেশের টেক্সটাইল ও গার্মেন্ট খাত

নিজস্ব সংবাদদাতা:
  • আপডেট টাইম : ০৭:১১:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
  • / ২ ১৫০০০.০ বার পাঠক

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের মূল চালিকা শক্তি টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত চরম সংকটে পড়েছে। শিল্পাঞ্চলে গ্যাসের সরবরাহ হঠাৎ কমে যাওয়ায় উৎপাদন ক্ষমতা নেমে এসেছে ৩০-৪০ শতাংশে। এতে প্রায় ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ হুমকির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ।

গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ভূলতা, মাওনা ও টঙ্গীর মতো গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চলগুলোতে গ্যাসের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ না থাকায় অনেক কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

গাজীপুরের ইসরাক স্পিনিং মিলস লিমিটেড বিগত এক সপ্তাহ ধরে অর্ধেকেরও কম উৎপাদন করছে। লিটল গ্রুপের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম বলেন, “গ্যাস না থাকায় প্রতিদিনের সুতা উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। অনেক সময় শূন্য গ্যাস চাপ নিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে হচ্ছে।”

বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) তথ্য মতে, টেক্সটাইল ও নিটিং খাতে প্রতিদিন ২ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন হলেও সরবরাহ মিলছে মাত্র ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট।

প্রাথমিক টেক্সটাইল খাতে (স্পিনিং, উইভিং, ডাইং, ফিনিশিং ও প্রিন্টিং) ২৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ রয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্প দেশের মোট রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় অংশ – বছরে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ।

বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “সরকার গ্যাসের দাম বাড়ালেও সরবরাহ বাড়েনি। দ্রুত এলএনজি আমদানি বাড়িয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না করলে বিপর্যয় অনিবার্য।”

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) জানিয়েছে, প্রতিটি ইউনিট প্রতিদিন গড়ে ২৫ লাখ টাকার লোকসান গুণছে। অ্যাসোসিয়েশনের আওতাভুক্ত প্রায় ৫০০ স্পিনিং মিলের মধ্যে অনেকেই উৎপাদন বন্ধের মুখে।

এ সংকট শুধু গ্যাস ঘাটতিই নয়। কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রেটের তারতম্য এবং সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি শুল্কের কারণে পশ্চিমা ক্রেতারা নতুন অর্ডার দিতে অনীহা দেখাচ্ছে। এতে স্থানীয় বাজারেও সুতার চাহিদা হ্রাস পেয়েছে।

টাকা-ডলারের বিনিময় হারের পতন – মাত্র দুই বছরে ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১২২ টাকায় পৌঁছানো – উদ্যোক্তাদের কার্যকরী মূলধন সংকটে ফেলেছে।

শিল্পখাতের ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এই গ্যাস সংকট দ্রুত সমাধান না হলে দেশের প্রধান রপ্তানি খাত ধ্বংসের মুখে পড়বে, লক্ষ লক্ষ শ্রমিক চাকরি হারাবে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে ভয়াবহ প্রভাব পড়বে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ঝুঁকিতে ৭০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ গ্যাস সংকটে দেশের টেক্সটাইল ও গার্মেন্ট খাত

আপডেট টাইম : ০৭:১১:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের মূল চালিকা শক্তি টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত চরম সংকটে পড়েছে। শিল্পাঞ্চলে গ্যাসের সরবরাহ হঠাৎ কমে যাওয়ায় উৎপাদন ক্ষমতা নেমে এসেছে ৩০-৪০ শতাংশে। এতে প্রায় ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ হুমকির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ।

গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ভূলতা, মাওনা ও টঙ্গীর মতো গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চলগুলোতে গ্যাসের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ না থাকায় অনেক কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

গাজীপুরের ইসরাক স্পিনিং মিলস লিমিটেড বিগত এক সপ্তাহ ধরে অর্ধেকেরও কম উৎপাদন করছে। লিটল গ্রুপের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম বলেন, “গ্যাস না থাকায় প্রতিদিনের সুতা উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। অনেক সময় শূন্য গ্যাস চাপ নিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে হচ্ছে।”

বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) তথ্য মতে, টেক্সটাইল ও নিটিং খাতে প্রতিদিন ২ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন হলেও সরবরাহ মিলছে মাত্র ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট।

প্রাথমিক টেক্সটাইল খাতে (স্পিনিং, উইভিং, ডাইং, ফিনিশিং ও প্রিন্টিং) ২৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ রয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্প দেশের মোট রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় অংশ – বছরে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ।

বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “সরকার গ্যাসের দাম বাড়ালেও সরবরাহ বাড়েনি। দ্রুত এলএনজি আমদানি বাড়িয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না করলে বিপর্যয় অনিবার্য।”

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) জানিয়েছে, প্রতিটি ইউনিট প্রতিদিন গড়ে ২৫ লাখ টাকার লোকসান গুণছে। অ্যাসোসিয়েশনের আওতাভুক্ত প্রায় ৫০০ স্পিনিং মিলের মধ্যে অনেকেই উৎপাদন বন্ধের মুখে।

এ সংকট শুধু গ্যাস ঘাটতিই নয়। কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রেটের তারতম্য এবং সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি শুল্কের কারণে পশ্চিমা ক্রেতারা নতুন অর্ডার দিতে অনীহা দেখাচ্ছে। এতে স্থানীয় বাজারেও সুতার চাহিদা হ্রাস পেয়েছে।

টাকা-ডলারের বিনিময় হারের পতন – মাত্র দুই বছরে ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১২২ টাকায় পৌঁছানো – উদ্যোক্তাদের কার্যকরী মূলধন সংকটে ফেলেছে।

শিল্পখাতের ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এই গ্যাস সংকট দ্রুত সমাধান না হলে দেশের প্রধান রপ্তানি খাত ধ্বংসের মুখে পড়বে, লক্ষ লক্ষ শ্রমিক চাকরি হারাবে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে ভয়াবহ প্রভাব পড়বে।