টাঙ্গাইলে বিপ্লব হত্যার আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে ॥ মামলার বাদি লাবু খন্দকারকে হত্যার পরিকল্পনা হাত-পা ভেঙ্গে দিয়ে লাবু খন্দকার মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে
![](https://somoyerkontha.com/wp-content/uploads/2024/10/FB_IMG_1727975776303.jpg)
- আপডেট টাইম : ০৫:০৭:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৪ ৫০০০.০ বার পাঠক
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মামলা চালানোর ঘোষনা লাবুর
ছাত্র-জনতা আন্দোলনে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় নিয়েছে। ক্ষমতা ধরে রাখতে শেখ হাসিনার পুলিশ বাহিনীর হাজার হাজার ছাত্র জনতাকে গুলি করে হত্যা করে। আর এ হত্যার সাথে জড়িত প্রকৃত আসামীদের আইনের আওতায় আনতে গিয়ে সারাদেশেই অসংখ্য মামলা দায়ের করা হয়েছে। আবার আর্থিক লোভ অথবা ভয়ভীতি বা মামলা চালানোর মত আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকার কারনে সন্তান হত্যার আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা করা যায়নি। যেমন- টাঙ্গাইলের ধনবাড়িতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ হন বিপ্লব নামের এক কিশোর। হত্যাকান্ডের দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও বিপ্লবের পরিবারের পক্ষ থেকে রহস্যজনক কারনে তার পিতা আব্দুল খালেক কোন মামলা দায়ের করেনি। বিপ্লব হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনতে মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক লাবু খন্দকার বাদি হয়ে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালী নেতাদের আসামী করা হয়। এছাড়াও আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টির টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক ও বিড়ি ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক ও তার ছেলেদের আসামী করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ রহস্যজনক কারনে বিপ্লব হত্যাকারীদের এখনো পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি। এতে করে জেলার সাধারন মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিচারের দাবিতে যে কোন সময় বিক্ষুদ্ধ ছাত্র জনতা মানববন্ধনসহ মিছিল-সমাবেশ করবে বলে আশংকা করা হয়েছে। বিপ্লব হত্যার আসামীরা বিশেষ করে মোজাম্মেল হক ও তার ছেলেরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা ব্যবসা বানিজ্য পরিচালনর করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যপারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বেশ কয়েকজন সমন্বয়ক ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা বিপ্লব হত্যার আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে যে কোন সময়ে আন্দোলনের ডাক দিতে পারে বলে ধারনা করা হচেছ।
এদিকে বিপ্লব হত্যার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করার জন্যে মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক লাবু খন্দকার মামলা করার পর শেখ হাসিনার দোসরদের রোষানলে পড়েছে। কারন প্রভাবশালী এসব আসামীরা চায়না বিপ্লব হত্যার বিচার হোক। আসামীরা মামলা থেকে রেহাই পেতে প্রথম থেকেই লাবুর বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে। কিছু ভুইফোঁড় অনলাইন ও ইউটিউবার দিয়ে মামলাটিকে ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেছে। মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে নামধারী এসব সাংবাদিক শহীদের রক্তের সাথে প্রকাশ্যে বেঈমানী করেছে। এতেও কিছু করতে না পেরে সকলে মিলে লাবুকে হত্যার নীল নকশা করে। এই ধারাবাহিকতায় কিছুদিন আগে বিপ্লবের বাবার সাথে আতাত করে লাবুকে মিথ্যা কথা বলে ধনবাড়ি ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকে অপেক্ষা করা আসামী মোজাম্মেলের নির্দেশে ও তার ছেলেরা উপস্থিত থেকে লাবুকে হত্যার উদ্দেশে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তুলে নিয়ে যায়। এরপর একটি অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে এবং লাবুর হাত-পা ভেঙ্গে ফেলে সন্ত্রাসীরা। পরে লাবুকে অর্ধমৃত অবস্থায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে জামুর্কী নামকস্থানে ফেলে রাখে। খবর পেয়ে লাবুর পরিবার তাকে উদ্ধার করে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। ভাঙ্গা দুই হাত পা নিয়ে লাবু হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই শহীদ বিপ্লবের বাবা আব্দুল খালেক পলাতক রয়েছে। সে কারনে এলাকাবাসী ধারনা করছে তার সাথে আসামীরা যোগসাজ করেই লাবুকে হত্যার জন্য পরিকল্পনা করেছিল। ছেলে হত্যার মামলা না করে উল্টো মামলার বাদিকে এভাবে হত্যার পরিকল্পনার ঘটনায় আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেছে আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও ছাত্র জনতা আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
এলাকাবাী জানায় , মানবাধিকার কর্মী লাবু খন্দকার নিঃস্বার্থ ভাবে ছাত্র হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে চেয়েছে এটাই ছিল তার অপরাধ। যার কারনে মামলার আসামীরা জোট বেঁধে লাবুকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু মানুষের দোয়া ও ভালবাসার কারনে লাবু কোন রকমে বেঁচে গেছে। কিন্তু সন্ত্রাসীরা লাবুর দুই হাত ও পা ভেঙ্গে দিয়েছে।
এ ব্যপারে লাবু খন্দকার জানান, আমি হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনার জন্যে মামলা করেছি। শহীদ বিপ্লবের বাবা রহস্যজনক কারনে ছেলে হত্যার বিচার পেতে মামলা করেনি। রাষ্ট্রের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে এবং প্রকৃত দেশপ্রেমিক হিসেবে হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লড়ে যাবো। কোন ভয়ভীতি বা আর্থিক লোভ দেখিয়ে আমাকে মামলা থেকে সরানো যাবেনা।
লাবু খন্দকার আরো বলেন, আসামীদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে ইউটিউবার আলমগীর ও আতোয়ার মিথ্যা প্রচারনা চালাচ্ছে। তারা শহীদের পক্ষ না নিয়ে আসামীরে পক্ষ নিয়েছে। এটা ঘৃন্য ও জঘন্ন অপরাধ। আমি তাদেরকে আসামী করে মামলা করবো।