পৌর-প্রসাশকের ১শত দিনের কর্ম বাস্তবায়নে , সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়। পাথরঘাটা পৌরসভার সাবেক মেয়রের দুর্নীতির বিচারের দাবী,
- আপডেট টাইম : ১১:৫১:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫
- / ২ ৫০০০.০ বার পাঠক
বরগুনার পাথরঘাটা পৌরসভার প্রশাসকের ১শ দিনের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কাজ নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় পৌরসভার মেয়রের দুর্নীতির বিচারেরর দাবী জানিয়েছেন পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপি, জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের নেতারা। মতবিনিময় সভায় পৌর প্রশাসকের কাছে পাথরঘাটা বাজারের ব্যাবসায়ীরা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হোসেন আকনের ১৫ বছরের দুর্নীতির খতিয়ান তুলে ধরলে দলীয় নেতা এই দাবী করেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার সময় পাথরঘাটা পৌরসভার সামনে স্থানীয় সুশিল সমাজ, ব্যাবসায়ী, আইনজীবি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে মতবিনিময়সভা করেন পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক রোকনুজ্জামান খান।
পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক চৌধুরী মোঃ ফারুক জানান, পৌর প্রশাসক জনগনের দাবী উপেক্ষা করতে পারেন না। ইউএনও পৌর প্রশাসকের দায়ীত্ব নেয়ার পর তার কাছে মেয়রের নানা অপকর্ম ধরা পরেছে। তার দুর্নীতি পৌরবাসির কাছে স্পষ্ট। এই অপরাধের বিচার হওয়া জরুরী।
পাথরঘাটা বাজারের ব্যাবসায়ী জিয়াউর রহমান ফাহিম জানান, মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন আ’লীগের সাবেক এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমনের সহযোগিতায় পৌরবাসীকে দোকা দিয়ে দিনের বেলায় ভোট ডাকাতি করে বার বার মেয়র নির্বাচিত হয়েছে। যারা মেয়রের বিরোধীতা করছে তাদের নামে বেশী বেশী ট্যাক্স ধরে তা জোর পূর্বক আদায় করে এবং ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে নিজে আত্মসাৎ করেছেন। পৌরসভায় বিভিন্ন সময় ঠিকাদারী কাজে যারা লটারীতে কাজ পেয়েছে সে সব ঠিকাদারদের মেয়র ভয়ভীতি দেখিয়ে নাতি এবং জামাতা দিয়ে নাম স্বর্বচ্চ কাজ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ সব ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে কয়েকবার দরখস্ত দিলেও তা কোন তদন্ত হয়নী বলে তিনি জানান।
পাথরঘাটা চরদুয়ানী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলমগীর হোসেন অভিযোগ করেন , পৌরসভার সামনে একটি পুকুরে সুন্দর্য বর্ধনে ৮০ কোটি টাকার কাজে টেন্ডার হয়েছে। সেই কাজটি মেসার্স মাহমুদা এন্টারপ্রাইজ নামে স্বত্বাধীকারি হিসাবে আমি পেলেও মেয়র আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভাগিয়ে নিয়ে নাম স্বর্বস্ব কাজ করে ৮০ ভাগ টাকা উঠিয়ে নিয়ে গেছে। এখন এই কাজের জন্য প্রসাশক আমাকে চাপ সৃষ্টি করছে। টাকার অভাবে আমি এই কাজ করতে পারছি না। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন সময় অনেক কাজ না করেও ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে পৌসভার জনগনের কোটি কোটি টাকা আত্মসাধ করেছে মেয়র সে সব প্রমান আমার কাছে আছে। আমি মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। ৫ আগষ্টের পরে মেয়রের বিরুদ্ধে কোন মামলা না থাকলেও সেই দিন (৫ আগষ্ট) থেকে তিনি আত্মগোপনে আছেন বলে আলমগীর হোসেন জানান। তিনি এই মেয়রের দুর্নীনিতি তদন্ত করে আনোয়ার হোসেন আকনের বিরুদ্ধে আইনী ব্যাবস্থা নেয়ার দাবী করেন।
পাথরঘাটা পৌর বিএনপির সদস্য সচিব এসমাইল সিকদার বলেন, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রোকনুজ্জামান খান পৌরসভার প্রশাসক হিসাবে এক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে দায়ীত্বভার গ্রহন করেন। এসময় পাথরঘাটার সকল রাজনৈতিক দল বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও সুধী সমাজের একটাই দাবী ছিল পাথরঘাটা পৌরসভার মেয়রের দুর্নীতি তালিকা প্রকাশ করার। কিন্ত একশ দিনে পৌরসভার সন্তোষজনক উন্নয়ন হলেও ইউএনও মেয়রের দুর্নীতি প্রকাশে ব্যার্থ হয়েছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে মেয়রের দুর্নীতি তালিকা প্রকাশ করা না হলে আমরা ইউএনও’র বিরুদ্ধেই কর্মসুচী ঘোষনা করবে বলে তিনি জানান।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক রোকনুজ্জামান খান জানান, পাথরঘাটা পৌরসভার মেয়রের ১৫ বছরের দুর্নীতির ফাইল অনেক ভারি আমার একার পক্ষে ১শ দিনের মধ্যে জাগানো সম্বব না অনেক জায়গায় ঘাপলা আছে। একটু সময় নিয়ে দুর্নীতির ফাইল প্রকাশ করা হবে। তবে মেয়র ১৫ বছরে যেসব কাজ দৃশ্যমান করতে পারেনী তা আমি ১শ দিনে করেছি এবং আগামী এক বছরে এই পৌরসভা একটি মডেল পৌরসভা হিসাবে জনগনকে উপহার দেবেন বলে তিনি জানান। ৫ শতাধীক পৌর নাগরীকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পৌরসভা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জসিম উদ্দিন খান। মতবিনিময় সভা শেষে পৌরসভার ১০ জন সেরা করদাতাকে ক্রষ্টসহ সনদ প্রধান করা হয়।