গ্যাস-সংকটে চট্টগ্রামে দেশি বিদেশি বিনিয়োগে স্থবিরতা মাত্র ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট হলে নতুন বিনিয়োগ বাড়বে
- আপডেট টাইম : ০৪:১৪:১৯ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫
- / ১ ৫০০০.০ বার পাঠক
ফাইল ছবি (সংগৃহীত)
চট্টগ্রামে শিল্পে গ্যাসের নতুন সংযোগ হচ্ছে না। গত এক বছরে শিল্পে চার-পাঁচটির বেশি নতুন সংযোগ হয়নি। শিল্প ছাড়া অন্যান্য খাতেও নতুন সংযোগ হচ্ছে না। মূলত গ্যাস সংকটই শিল্পে গ্যাস-সংযোগ হচ্ছে না। চট্টগ্রামে শিল্পে ১ হাজার ২০০ গ্যাস-সংযোগ রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ৩০০ শিল্পকারখানা ব্যাংক ঋণ, আর্থিক সংকটসহ নানা কারণে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। নতুন সংযোগের জন্য প্রায় ১৩০টি আবেদন জমা পড়ে রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই ডিমান্ড নোটের টাকাও জমা দিয়েছে।
চট্টগ্রামে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর। বন্দরের অবস্থানের কারণে দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারী চট্টগ্রামকে বেছে নেয়। বন্দর দিয়ে পণ্য খালাস ও রপ্তানি সহজে করা যায়। চট্টগ্রামে জায়গা না পেলে বিনিয়োগকারীরা দেশের অন্য অঞ্চলে বিনিয়োগ করেন। কিন্তু চরম গ্যাস সংকট চট্টগ্রামে বিনিয়োগ মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার শিল্পে গ্যাসের মূল্য দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে এক লাফে প্রতি ইউনিট ৩০ টাকা করেছে। এই মূল্য বৃদ্ধির কারণে রপ্তানিজাত শিল্পকারখানায় বিরূপ প্রভাব পড়ে। বর্তমানে শিল্পে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি আবার দ্বিগুণ করার প্রস্তাব নিয়ে শিল্পকারখানার মালিকরা শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। তারা শিল্পে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি না করার দাবি জানাচ্ছে।
কেজিডিসিএলর এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান বর্তমানে মহেষখালী এলএনজি টার্মিনাল থেকে দৈনিক প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে। তার থেকে চট্টগ্রামে দৈনিক ২৬০ থেকে ২৭০ মিলিয়ন গ্যাস বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে। চট্টগ্রামে দৈনিক ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বরাদ্দ দিলে নতুন পুরোনো শিল্পে প্রাণ ফিরে আসবে। কিন্তু চট্টগ্রামে গ্যাস বরাদ্দ নিয়ে চাপাচাপি হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যার কারণে গ্যাস সংকটে চট্টগ্রামে বিনিয়োগে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এলএনজি চালু হওয়ার পর থেকে চট্টগ্রামে জাতীয় গ্রিড থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এমনকি কোন কারণে মহেষখালী এলএনজি টার্মিনালে অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে চট্টগ্রামে গ্যাসের হাহাকার শুরু হয়। অথচ এলএনজি চালু হওয়ার সময় বলা হয়েছিল চট্টগ্রামের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি এলএনজি চট্টগ্রামে বাইরে সরবরাহ দেওয়া হবে।
গত ১৫ বছর যাবত নতুন দেশি বিদেশি বিনিয়োগে স্থবিরতা বিরাজ করছে। কেজিডিসিএল সূত্র জানায় বিগত সময়ে বড় ধরনের কোনো বিনিয়োগ হয়নি। একশ্রেণির শিল্পোদ্যোক্তারা বিনিয়োগে ব্যাংক ঋণের সুবিধা পেলেও অন্যান্য শিল্পোদ্যোক্তারা আশানুরূপ ব্যাংক সুবিধা পায়নি। এছাড়া চট্টগ্রামে গ্যাস-সংযোগ নিয়ে চলেছে চাপাচাপি। চাহিদা থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রামে গ্যাসের পর্যাপ্ত বরাদ্দ মিলেনি। যার কারণে শিল্পে নতুন গ্যাস-সংযোগ নামকে অয়াস্তে চালু থাকলেও সংযোগ অনুমোদন মিলেনি। অনেক শিল্পোদ্যোক্তারা শিল্পে বিনিয়োগ করেও গ্যাস-সংযোগ পায়নি।
কেজিডিসিএল সূত্র জানায়, গত কয়েক বছর যাবত্ শিল্পে নতুন সংযোগ তো দূরের কথা পুরোনো শিল্পে বর্ধিত লোড নেয়নি কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রামে কেজিডিসিএলের আওতায় প্রায় ৬ লাখ ১ হাজার সংযোগ রয়েছে। তার মধ্যে শিল্পে গ্যাস-সংযোগ রয়েছে ১ হাজার ১৬০টি, ক্যাপটিভ পাওয়ার আছে ২০৫টি, সিএনজি ফিলিং স্টেশন ৭০টি, বিদ্যুৎকেন্দ্র ছয়টি ও সার কারখানা চারটি।