ঢাকা ০৩:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
তদন্তে গিয়ে বিএনপি নেতার মারধরের শিকার পুলিশ ওসি পরিচয়ে হিন্দু পিতা পুত্রকে অপহরণ,পরে চাঁদা দাবীর অভিযোগে দিনাজপুরে ছাত্রদল নেতা আটক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন ৬০ বিজিবির অভিযানে ৫২,৮২,৯৫০/-টাকা মূল্যের বিপুল পরিমান মাদক ও বিভিন্ন প্রকার অবৈধ মালামাল জব্দ শিগগিরই রোডম্যাপ, দ্রুত নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর ৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা বিদ্যমান, সংস্কারের দাবি নির্বাচনের আগে স্থানীয় ভোট চায় না বিএনপি মাসুদ মোল্লার টিস্টল ও বেকারি তে হামলা ভাংচুরে জড়িত মোস্তাফিজুর রহমান কালু ও রেনু খানম ছাত্রশিবিরের সাবেক ও বর্তমান জনশক্তিদের নিয়ে লক্ষ্মীপুর জমায়াতের জেলা আমীর মাষ্টার রুহুল আমিন ভূঁইয়ার মতবিনিময় ও প্রীতি সমাবেশ পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন চলছে, জানালেন ট্রাম্প উত্তরায় আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ অনুসারী মাসুমের ডিগবাজি বিএনপি সেজে নিজেদের কুকর্ম আড়াল করার চেষ্টা করছে

নির্বাচনের আগে স্থানীয় ভোট চায় না বিএনপি

বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম : ০৭:৪২:০৬ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫
  • / ১ ৫০০০.০ বার পাঠক

আগের ছবি:সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় না বিএনপি। দলটি মনে করে, জনআকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে সরকারের উচিত জাতীয় নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হওয়া। এ ধরনের সরকারের অধীনে স্থানীয় নির্বাচন হওয়ার নজির নেই। কোনো চাপে নতি স্বীকার না করে এবং কোনো পক্ষের স্বার্থকে প্রাধান্য না দিয়ে সরকারের উচিত নির্বাচনমুখী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যাওয়া।

বুধবার ও বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বিএনপি এবং ১০টি অন্যান্য দলের মধ্যে লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে অংশ নেওয়া নেতারা বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আসলে ‘মূল বিষয় থেকে দৃষ্টি সরানোর চেষ্টা’।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিএনপি ও এই দলগুলো আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে যুগপৎ আন্দোলনে ছিল। সম্পর্ক জোরদার করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বিএনপি আজ ১২ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবে।

বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) এবং জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটসহ (বিএনপির সমমনা দলগুলোর একটি জোট) অন্যান্য দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে অংশ নেওয়া ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, আমরা চাই জরুরি সংস্কারের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। তিনি বলেন, সরকার যদি এটা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরা জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা আরও জোরদার করব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য একজন অংশগ্রহণকারী বলেন, জনগণ তাদের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার এবং একটি নির্বাচিত সরকার চায়।

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ জাতীয় নির্বাচন থেকে দৃষ্টি সরানোর চেষ্টার জন্য সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে আগে কোনো আলোচনা হয়নি। এখন, তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) হঠাৎ করেই আবার এই বিষয়টি তুলছে। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথা বলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।

বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার একইসঙ্গে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের এক প্রেস ব্রিফিংয়ের নির্বাচনের প্রসঙ্গ আসে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি রাজনৈতিক দলগুলোর উপর নির্ভর করে; তারা কতটা সংস্কার চায়। সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের ওপর আলোচনার সময় এটি নিয়েও আলোচনা হবে।

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পর্কেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এই বছরই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত বলে মনে করে বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলো। এ ব্যাপারে তারা একমত হয়েছে। তাদের মতে অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব বা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মতো বিষয় জাতীয় নির্বাচনকে দূরে সরিয়ে দেবে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান এই প্রতিবেদককে বলেন, তারা জাতীয় নির্বাচনের জন্য জনসমর্থন আদায়ের জন্য একটি প্রচারণা চালাবেন।

বৈঠকের নেতারা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এসব ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে জনসংযগ চালানোর কথা বলছেন তারা।

সূত্র জানায়, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রনেতারা রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকাকে খাটো করে দেখার জন্য সমালোচনা করেন বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা। ছাত্রনেতাদের কর্মকাণ্ডের (যেমন: জনসমাবেশে ব্যবহৃত ব্যক্তিগত যানবাহন) অর্থের উৎস নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নির্বাচন করার কথা ছিল, কিন্তু তারা স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে।

টুকু বলেন, তিনি যতদূর জানেন, স্বাধীনতার আগে আইয়ুব খানের শাসনামল ছাড়া কোনো অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।

এই সময়ে স্থানীয় নির্বাচন ইস্যু তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে টুকু বলেন, সরকার নির্বাচন, আইন-শৃঙ্খলা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির পরিবর্তে সংস্কারের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে, এতে জনগণের দুর্ভোগ আরও বাড়ছে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

নির্বাচনের আগে স্থানীয় ভোট চায় না বিএনপি

আপডেট টাইম : ০৭:৪২:০৬ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫

আগের ছবি:সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় না বিএনপি। দলটি মনে করে, জনআকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে সরকারের উচিত জাতীয় নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হওয়া। এ ধরনের সরকারের অধীনে স্থানীয় নির্বাচন হওয়ার নজির নেই। কোনো চাপে নতি স্বীকার না করে এবং কোনো পক্ষের স্বার্থকে প্রাধান্য না দিয়ে সরকারের উচিত নির্বাচনমুখী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যাওয়া।

বুধবার ও বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বিএনপি এবং ১০টি অন্যান্য দলের মধ্যে লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে অংশ নেওয়া নেতারা বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আসলে ‘মূল বিষয় থেকে দৃষ্টি সরানোর চেষ্টা’।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিএনপি ও এই দলগুলো আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে যুগপৎ আন্দোলনে ছিল। সম্পর্ক জোরদার করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বিএনপি আজ ১২ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবে।

বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) এবং জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটসহ (বিএনপির সমমনা দলগুলোর একটি জোট) অন্যান্য দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে অংশ নেওয়া ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, আমরা চাই জরুরি সংস্কারের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। তিনি বলেন, সরকার যদি এটা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরা জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা আরও জোরদার করব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য একজন অংশগ্রহণকারী বলেন, জনগণ তাদের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার এবং একটি নির্বাচিত সরকার চায়।

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ জাতীয় নির্বাচন থেকে দৃষ্টি সরানোর চেষ্টার জন্য সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে আগে কোনো আলোচনা হয়নি। এখন, তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) হঠাৎ করেই আবার এই বিষয়টি তুলছে। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথা বলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।

বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার একইসঙ্গে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের এক প্রেস ব্রিফিংয়ের নির্বাচনের প্রসঙ্গ আসে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি রাজনৈতিক দলগুলোর উপর নির্ভর করে; তারা কতটা সংস্কার চায়। সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের ওপর আলোচনার সময় এটি নিয়েও আলোচনা হবে।

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পর্কেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এই বছরই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত বলে মনে করে বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলো। এ ব্যাপারে তারা একমত হয়েছে। তাদের মতে অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব বা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মতো বিষয় জাতীয় নির্বাচনকে দূরে সরিয়ে দেবে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান এই প্রতিবেদককে বলেন, তারা জাতীয় নির্বাচনের জন্য জনসমর্থন আদায়ের জন্য একটি প্রচারণা চালাবেন।

বৈঠকের নেতারা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এসব ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে জনসংযগ চালানোর কথা বলছেন তারা।

সূত্র জানায়, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রনেতারা রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকাকে খাটো করে দেখার জন্য সমালোচনা করেন বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা। ছাত্রনেতাদের কর্মকাণ্ডের (যেমন: জনসমাবেশে ব্যবহৃত ব্যক্তিগত যানবাহন) অর্থের উৎস নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নির্বাচন করার কথা ছিল, কিন্তু তারা স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে।

টুকু বলেন, তিনি যতদূর জানেন, স্বাধীনতার আগে আইয়ুব খানের শাসনামল ছাড়া কোনো অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।

এই সময়ে স্থানীয় নির্বাচন ইস্যু তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে টুকু বলেন, সরকার নির্বাচন, আইন-শৃঙ্খলা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির পরিবর্তে সংস্কারের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে, এতে জনগণের দুর্ভোগ আরও বাড়ছে।