পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজুল হকের ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগেও নেই প্রতিকার
- আপডেট টাইম : ০১:৪৭:৫৭ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
- / ০ ৫০০০.০ বার পাঠক
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজুল হকের ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগেও নেই প্রতিকার। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও একাধিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেও টনক নড়েনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজুল হকের। এবার খোদ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি, বৈষম্য, স্বজনপ্রীতি ও হয়রানী’র প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয়ের সভাপতি সহ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পীরগঞ্জ ঠাকুরগাঁও বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। গত ১১-১১-২৪ ইং তারিখে অভিযোগ করেছেন ঐ বিদ্যালয়ের ২১ জন শিক্ষক। অভিযোগে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শাহজালাল সাজু, সহকারী শিক্ষক মেহের এলাহী, জাহাঙ্গীর হারুন সহ ২১ জন এমপিও ভুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা ১২ দফা দাবি অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজুল হকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির লিখিত অভিযোগ গ্রহণ পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানালেও অজ্ঞাত কারণে অভিযোগ পত্রে কোন রিসিভ কপি দেননি। তবে তদন্তকারী অফিসার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিযোগটি গ্রহণ করে নিজে স্বাক্ষর করে রিসিভ কপি দিয়েছেন। শিক্ষকরা ১২ দফার লিখিত অভিযোগের মধ্যে উল্লেখ করেন স্কুলে ২০১০-২০২৪ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত আভ্যন্তরীণ কোন আয়-ব্যয়ের হিসাব দেননি প্রধান শিক্ষক। এদিকে অনুসন্ধানী তথ্যে জানা যায় শতবর্ষী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক এমপি ইমদাদুল হক। গত ৫ আগস্ট এর পর নির্বাহী আদেশে দায়িত্ব গ্রহণ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রমিজ আলম। ক্ষমতার পালা বদলের পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা দুর্নীতিগ্রস্ত এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মফিজুল হকের (শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক উপজেলা আওয়ামীলীগ পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও) অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসূচি পালন সহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহকারী কমিশনার (ভুমি) কে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। বিষয়টি তদন্তাধীন অবস্থায় স্থানীয় সাংবাদিকরা বিভিন্ন ভাবে বিদ্যালয়ের বিতর্কিত বিষয় গুলোর তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে জৈনক একজন সাংবাদিক তথ্য অধিকার আইনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয় সভাপতি বরাবরে তথ্য চেয়ে লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয় সভাপতির দায়িত্বে নিয়োজিত থেকে অস্পষ্ট কারণে তথ্য প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করে দুর্নীতির পক্ষালম্বন করেন। অপরদিকে এই বৈষম বিরোধী ছাত্র-জনতার দাবি আপাদমস্তক দুর্নীতিতে জড়িত ওই প্রধান শিক্ষক কে সাময়িক বরখাস্ত করে স্কুলের সমুদয় আর্থিক কেলেঙ্কারির হিসাবাদি নিষ্পত্তির জোর দাবি জানান। এ বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতি মূলৎপাটন করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন সচেতন মহল। উল্লেখ্য যে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদে মফিজুল হক ২০১০ সালে যোগদান করেন। তৎসময় পূর্ব থেকে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদে নিয়োজিত উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক এমপি ইমদাদুল হক। তার ছত্র-ছায়ায় তিনি শহরে জমি ক্রয় করে পাঁচতলা ফাউন্ডেশন বাডী ও কয়েক একর আবাদি জমি ক্রয় করা সহ কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান তিনি। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করা হলেও তদন্তে কোন ব্যবস্থা-ই নেওয়া হয়নি। এতে তিনি দুর্নীতিতে বেপরোয়া হয়ে পড়েন। বর্তমান সময়ে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের পরিপেক্ষিতে সঠিক ভাবে তদন্ত করে আইনের আওতায় আনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় মহল।