ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কালীতলায় ইউপি সদস্য মফিজুল হকের জবরদখল করা একটি আস্তানায় গোপন ক্যমেরায় বখাটেদের মাদক সেবন করার সত্যতা উঠে আসে
- আপডেট টাইম : ০৯:৪৪:৫০ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৪
- / ৫ ৫০০০.০ বার পাঠক
ছবি-৪-ইউপি সদস্য মফিজুল হক
ঠাকুরগাঁওয়ে ইউপি সদস্যের অপকর্মে ফুসে উঠেছে এলাকাবাসী অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে স্মারক লিপি প্রদান
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মফিজুল হকের বিরুদ্ধে জমি জবর দখল, মাদক কারবার ও মাদকের অভয়ারন্য তৈরী সহ নানা অপকর্মের প্রতিবাদে ফুসে উঠেছে এলাকাবাসী।
এসব অন্যায়ের অভিযোগে মফিজুল মেম্বারের অপসারণের দাবীতে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছে স্থানীয়রা। রোববার দুপুরে মফিজুল হকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অপসারণ দাবীতে সালন্দর ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি গ্রামের শতাধীক ভুক্তভোগী গণস্বাক্ষর করে এই লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মফিজুল হক পেশায় দিনমজুর ছিলেন। পরে জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মজিদ আপেলের ছত্রছায়ায় এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব গড়ে তোলে এবং নিজেই হয়ে ওঠেন যুবলীগের নেতা । পরে আওয়ামীলীগের ছত্রছায়ায় সালন্দর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে মাদক কারবারীর পাশাপশি জমি জবর দখল শুরু করেন। স্থানীয়দের জমির সমস্যা দেখা দিলে মফিজুল নিজের নামে বায়নামা দলিল করে দখল নিয়ে মানুষকে হয়রানী করেন।
ওই এলাকার নুর ইসলাম, দুলাল, বদিউল ও রানা অভিযোগ করে বলেন, মফিজুল মেম্বার এলাকায় মাদক ও ভূমি দখলের রাজত্ব গড়ে তুলেছে। বিগত সরকারের আমলে একাধিক ব্যক্তির থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকার জমি জবর দখল করেছে। অসংখ্য মানুষ মফিজুল মেম্বারের কাছে হয়রানির শিকার হয়েছেন। যিনি প্রতিবাদ করেছেন, তিনিই হয়রানী ও হামলার শিকার হয়েছেন।
এছাড়াও মফিজুল হক এলাকায় দখল করা জমির উপর অবৈধ আস্তানা বানিয়ে উঠতি বয়সের মাদকাসক্ত ছেলেদের নিয়ন্ত্রণে দেয়। এরপর সেখানে মফিজুল হকের প্রভাবে দিনে রাতে হিরোইন, গাজা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরণের মাদক সেবনের নিরাপদ আস্তানায় পরিনত হয়। সম্প্রতি কালীতলা এলাকায় মফিজুল হকের জবরদখল করা একটি আস্তানায় গোপন ক্যমেরা বসিয়ে দিনের বেলায় এলাকার বখাটেদের মাদক সেবন করার সত্যতা উঠে আসে।
ওই এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ইউপি সদস্য তার ছেলের হাতে মাদক তুলে দিয়ে নষ্ট করেছে। বর্তমানে ছেলের অত্যাচারে তারা অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় যুবকদের মাদকাসক্ত হওয়ার পেছনে ইউপি সদস্য দায়ি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
দীর্ঘদিন বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের ভুমিদস্যুদের ছত্রছায়ায় এলাকায় রামরাজত্ব চালিয়ে আসলেও বর্তমানে সেই গড ফাদাররা এখন পলাতক। কিন্তু বর্তমানে ওই ইউপি সদস্য নিজের বোলপাল্টিয়ে এখনও সমান তালে মানুষের জমি জবর দখল চালিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য এলাকাবাসীর প্রশ্ন-আওয়ামীলীগের সেল্টারের বদলে এখন কে সেজেছেন মফিজুল হকের গডফাদার?
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মফিজুল হক তার বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জমি কেনা বেচা করা আমার ব্যবসা। মাদকের সাথে জড়িত ছিলাম না এখনও নেই। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।
এব্যাপারে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ইউপি সদস্য মফিজুল হকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।