ঢাকা ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী শেখ হাসিনা

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম : ০৬:২৮:৩৩ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ১৩ ৫০০০.০ বার পাঠক

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ঘটনায় সহযোগিতা করেছেন আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা।’

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কয়েক জন সাবেক সেনা কর্মকর্তা এ কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিককেও পিলখানা হত্যাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। সাবেক সেনা কর্মকর্তারা বলেন, সেনাবাহিনীর আরো অনেক কর্মকর্তাও এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল যাদের পরে পদোন্নতি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সেনা তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মতিন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। উপস্থিত ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোরশেদুল হক, কর্নেল (অব.) আবদুল হক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আমিনুল ইসলাম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সৈয়দ কামরুজ্জামান প্রমুখ।

মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মতিন বলেন, ‘শুধু অপারেশন ডাল-ভাতের জন্য বা রেশন বৃদ্ধির জন্য এই হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। এটি একটি দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা, যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে দুর্বল করে প্রতিবেশী দেশ ভারতের অঙ্গরাজ্য বানানোর উদ্দেশ্য ছিল। এই পরিকল্পনায় যুক্ত ছিল দেশের কিছু বিশ্বাসঘাতক, ছিল অপর একটি দেশের চক্রান্ত।

এই হত্যাযজ্ঞের রেশ ধরেই এসেছে ৫ মে শাপলা চত্বরের গণহত্যা, ভোটারবিহীন নির্বাচন, শিক্ষা ও বিচারব্যবস্থা ধ্বংস, দুর্নীতির মহোৎসব, গুম- খুনের অবাধ রাজত্ব। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অনেকে চাকরি হারান, অনেকে পদোন্নতি বঞ্চিত হন। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যাযজ্ঞের বিচার না করা হলে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় না আনা হলে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে পাওয়া নতুন স্বাধীনতা সার্থক হবে না।’

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টায় রাজধানীর বনানীতে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিমের বাসায় বিডিআরের ডিএডি হাবিব, ডিএডি জলিল, ল্যান্সনায়েক রেজাউল, হাবিলদার মনির, সিপাহি সেলিম, কাজল, শাহাবউদ্দিন, একরাম, আইয়ুব, মঈন, রুবেল, মাসুদ, শাহাদত ও জাকির (বেসামরিক) বৈঠক করেন।

এর আগে-পরেও বিডিআর সদস্যরা বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন। সুবেদার গোফরান মল্লিক নবীন সৈনিকদের উদ্দেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। ২০০৮ সালের ১৭-১৮ ডিসেম্বর ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের বাসাতেও হাবিলদার মনির, সিপাহি শাহাব, সিপাহি মনির বৈঠক করেন। নির্বাচনের আগের দিন সন্ধ্যায় বিডিআর দরবার সংলগ্ন মাঠে সিপাহি কাজল, সেলিম, মঈন, রেজা এবং বেসামরিক ব্যক্তি জাকিরসহ কয়েকজন বৈঠক করেন।

মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মতিন আরও জানান, সে সময়ে সেনা তদন্ত কমিটি নানারকম বাধার মুখে পড়ে এবং সংশ্লিষ্ট অনেক সংস্থা ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের’ নির্দেশনার কথা বলে সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাকে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সে সময়ে ৮০০-এর অধিক সেনা কর্মকর্তাকে তাদের প্রাপ্য না দিয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এখনো চাকরির বয়স থাকলে চাকরিতে তাদের পুনর্বহালের দাবি করেন তারা।

সাবেক সেনা কর্মকর্তারা বলেন, সরকার তখন প্রহসনমূলক বিচারের মাধ্যমে বিডিআর সদস্যদের সাজা দেয়।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী শেখ হাসিনা

আপডেট টাইম : ০৬:২৮:৩৩ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ঘটনায় সহযোগিতা করেছেন আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা।’

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কয়েক জন সাবেক সেনা কর্মকর্তা এ কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিককেও পিলখানা হত্যাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। সাবেক সেনা কর্মকর্তারা বলেন, সেনাবাহিনীর আরো অনেক কর্মকর্তাও এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল যাদের পরে পদোন্নতি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সেনা তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মতিন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। উপস্থিত ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোরশেদুল হক, কর্নেল (অব.) আবদুল হক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আমিনুল ইসলাম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সৈয়দ কামরুজ্জামান প্রমুখ।

মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মতিন বলেন, ‘শুধু অপারেশন ডাল-ভাতের জন্য বা রেশন বৃদ্ধির জন্য এই হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। এটি একটি দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা, যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে দুর্বল করে প্রতিবেশী দেশ ভারতের অঙ্গরাজ্য বানানোর উদ্দেশ্য ছিল। এই পরিকল্পনায় যুক্ত ছিল দেশের কিছু বিশ্বাসঘাতক, ছিল অপর একটি দেশের চক্রান্ত।

এই হত্যাযজ্ঞের রেশ ধরেই এসেছে ৫ মে শাপলা চত্বরের গণহত্যা, ভোটারবিহীন নির্বাচন, শিক্ষা ও বিচারব্যবস্থা ধ্বংস, দুর্নীতির মহোৎসব, গুম- খুনের অবাধ রাজত্ব। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অনেকে চাকরি হারান, অনেকে পদোন্নতি বঞ্চিত হন। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যাযজ্ঞের বিচার না করা হলে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় না আনা হলে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে পাওয়া নতুন স্বাধীনতা সার্থক হবে না।’

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টায় রাজধানীর বনানীতে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিমের বাসায় বিডিআরের ডিএডি হাবিব, ডিএডি জলিল, ল্যান্সনায়েক রেজাউল, হাবিলদার মনির, সিপাহি সেলিম, কাজল, শাহাবউদ্দিন, একরাম, আইয়ুব, মঈন, রুবেল, মাসুদ, শাহাদত ও জাকির (বেসামরিক) বৈঠক করেন।

এর আগে-পরেও বিডিআর সদস্যরা বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন। সুবেদার গোফরান মল্লিক নবীন সৈনিকদের উদ্দেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। ২০০৮ সালের ১৭-১৮ ডিসেম্বর ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের বাসাতেও হাবিলদার মনির, সিপাহি শাহাব, সিপাহি মনির বৈঠক করেন। নির্বাচনের আগের দিন সন্ধ্যায় বিডিআর দরবার সংলগ্ন মাঠে সিপাহি কাজল, সেলিম, মঈন, রেজা এবং বেসামরিক ব্যক্তি জাকিরসহ কয়েকজন বৈঠক করেন।

মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মতিন আরও জানান, সে সময়ে সেনা তদন্ত কমিটি নানারকম বাধার মুখে পড়ে এবং সংশ্লিষ্ট অনেক সংস্থা ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের’ নির্দেশনার কথা বলে সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাকে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সে সময়ে ৮০০-এর অধিক সেনা কর্মকর্তাকে তাদের প্রাপ্য না দিয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এখনো চাকরির বয়স থাকলে চাকরিতে তাদের পুনর্বহালের দাবি করেন তারা।

সাবেক সেনা কর্মকর্তারা বলেন, সরকার তখন প্রহসনমূলক বিচারের মাধ্যমে বিডিআর সদস্যদের সাজা দেয়।