আমতলীর মানবতার সেবক ইউএনও পেলেন শুদ্ধাচার পুরুষ্কার
- আপডেট টাইম : ০৫:১৮:৪২ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট ২০২৪
- / ২৭ ৫০০০.০ বার পাঠক
সততা, স্বচ্ছতা ও ভোগান্তিবিহীন সেবা দেয়ায় শুদ্ধাচার পুরুষ্কার পেলেন আমতলীর মানবতার সেবক উপজেলা নিবার্হী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম। সোমবার বিকেলে বরগুনা জেলা প্রশাসক মুহাঃ রফিকুল ইসলাম তার হাতে এ পুরুষ্কার তুলে দেন। তার এ পুরুষ্কারের খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। আমতলী উপজেলাবাসি তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
জানাগেছে, ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর মুহাম্মদ আশরাফুল আলম আমতলী উপজেলার নিবার্হী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। তার যোগদানের পরপরই আমতলী উপজেলার আইন শৃংখলা, উন্নয়নের অগ্রগতি, সামাজিক বন্ধন বদলে যেতে শুরু করে। অল্প দিনের মধ্যেই তার সততা ও দক্ষতায় কঠোর প্রশাসক হিসেবে তার সুনাম- সুখ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। উন্মুক্ত হয়ে যায় তার কার্যালয়ের মুল ফটক। সকল শ্রেনীর মানুষের আশ্রয়স্থল হয় তার কার্যালয়। তার কাছে অনায়াতে মানুষের মনের কথা খুলে বলতে দ্বিধা পেতে হয়নি। একএক করে মানুষের মনি কোঠায় স্থান করে নেন ইউএনও মুহাম্মদ আশরাফুল আলম। তার কর্মদক্ষতায় পাল্টে যায় আমতলীর দৃশ্যপট। গত ৫ আগষ্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগের পর উপজেলার গুরু দায়িত্ব এসে পরে তার কঁাধে। পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে সকল মানুষ যখন নির্বিকার তখন তিনি হয়ে ওঠেন আমতলীবাসীর কাছে আর্শ্বিবাদ। সৎ ও দৃঢ়তার সঙ্গে উপজেলার একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ছুড়ে চলেন মানবতার ফেরিওয়ালা হয়ে। সন্ত্রাসীরা তখন মাথাচার দিয়ে ওঠে তখন তিনি ঢাল হয়ে কঠোর হস্তে দমন করেন তাদের। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট, ঘরবাড়ী ভাংচুর, জমিদখল, চাঁদাবাজী, খেয়াঘাট দখল ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাসহ সকল কিছুই কঠোর হস্তে দমন করেছেন তিনি। শুধু সন্ত্রাসীদের দমন করেই খ্যান্ত হয়নি তিনি। সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে মামলা শেষে বরগুনা জেলা হাজতে নিজেই নিয়ে গেছেন। গত ৫ আগষ্ট থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত অন্তত অর্ধ শতাধিক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড তিনি কঠোর হস্তে দমন করেছেন। তার এতো কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ বরগুনা জেলা প্রশাসক মুহাঃ রফিকুল ইসলাম তাকে শুদ্ধাচার পুরুষ্কার দিয়েছেন। সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসক তার হাতে এ সম্মাননা পুরুষ্কার তুলে দেন। তার এ সম্মাননা পুরুষ্কার পাওয়ার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে তাকে হাজার হাজার মানুষ অভিনন্দন জানিয়েছেন।
হতদরিদ্র অটোরিক্সা চালক আব্দুল মজিদ মীর বলেন, মুই স্যারের ধারে একটা কাম লইয়্যা গ্যাছেলাম, স্যারো মোর কামডা হহালে হইর্যা গেছে। স্যারের মত এমন মানুষ আর নেই। আল্লায় স্যারেরে অনেক দিন বাচাইয়্যা রাহুক।
গাজীপুর বন্দরের সোহেল রানা বলেন, আমতলী উপজেলা নিবার্হী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম সৎ ও দায়িত্বশীল মানুষ। এমন ভালো প্রশাসক বিগত ২০ বছরে আমতলীতে কেউ আসেনি। তিনি আরো বলেন, আমার ভাইয়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সন্ত্রাসীরা লুটপাট ও দখল করেছে। ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তিনি সন্ত্রাসীদের হাত থেকে দখল মুক্ত করে আমার ভাইকে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
বকুলনেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজের জেষ্ঠ্য প্রভাষক মোঃ জয়নুল আবেদীন বলেন, গত ৫ আগষ্ট যখন অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে সারা দেশ। সেই সময় আমতলী উপজেলা নিবার্হী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম একাই সকল কিছু কঠোর হস্তে দমন করেছেন। আমতলীবাসীকে বুঝতেই দেয়নি দেশের ক্লান্তিলগ্ন বলতে কিছু আছে। তিনি আরো বলেন, এমন সৎ ও দায়িত্বশীল মানুষ প্রতিটি উপজেলায় থাকলে সোনার বাংলা গড়তে বেশীদিন লাগবে না।
আমতলী উপজেলা নিবার্হী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, আমি প্রজাতন্ত্রের কর্মকতার্, আমার উপরে অর্পিত সকল দায়িত্ব সততা ও নিষ্টার সঙ্গে পালন করাই আমার কাজ। আমি যদি ভালো কাজে এগিয়ে না আসি কেউ ভালো কাজের উৎসাহ পাবে না। তিনি আরো বলেন, সরকারী দায়িত্ব সৎ ও স্বচ্ছতার সঙ্গে পালন করে আসছি। ফলে কাজের স্বীকৃত সরুপ সরকার আমাকে শুদ্ধাচার পুরুষ্কার দিয়েছেন।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মুহাঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, সততা, স্বচ্ছতা, ভোগান্তিবিহীন সেবা, উন্নয়নমুলক কর্মকান্ড, ন্যায় বিচার, সঠিক সিধান্ত ও প্রশাসনিক দক্ষতার কারনে তাকে এ শুদ্ধাচার পুরুষ্কার দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, কাজের মুল্যায়ণই শুদ্ধাচার পুরুষ্কারের মানদন্ড।