ঢাকা ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
আজমিরীগঞ্জে সিএনজি স্ট্যান্ড দখল নিয় সংঘর্ষ। আহত অর্ধ শতাধিক টঙ্গীতে ডেভিল হান্ট এর অভিযানে আ.লীগের নেত্রী ও তার পাঁচ সহযোগীকে ১৭৫১ পিস ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌর শহরের উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন মদিনা প্যালেস নামের একটি ভবনের ৫ টি ফ্লাটে দুর্ধর্ষ চুরি সংগঠিত হয়েছে নান্দাইল প্রেসক্লাবের ১৭তম দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন সমাপ্ত সভাপতি এনামুল হক, সাধারণ সম্পাদক রঞ্জু দুপুরে ক্রিকেটের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মহারণ, পাকিস্তানের বাঁচা–মরার ম্যাচ পাকিস্তান-বাংলাদেশ সরাসরি বাণিজ্য পুনরায় শুরু, ১৯৭১ সালের পর প্রথম খালেদা জিয়ার খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের আবেদনের শুনানি ২ মার্চ রাজধানীর বিভা স্কুল এন্ড কলেজের বার্ষিক শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত শহরের প্রান কেন্দ্রে অবস্থিত ৪৫ বছরের পুরানো এ প্রতিষ্ঠান নাম হলো আদর্শ স্কুল এন্ড কলেজ অথচ কলেজ শাখায় একজন ছাত্র/ছাত্রীও নেই মঠবাড়িয়ায় রাতের আঁধারে বনিক সমিতির ক‌মি‌টি গঠনের প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন

৪ দিন কোথায় কী অবস্থায় ছিলেন সমন্বয়ক আসিফ

বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪৮:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪
  • / ১৮৪ ৫০০০.০ বার পাঠক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। পুরোনো ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ অভিযোগ করেছেন, শুক্রবার রাতে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা আদায়ের চেষ্টা করে আটককারীরা। সেই বিবৃতি না পেয়ে তাকে চারদিন ধরে ‘ইনজেকশন’ প্রয়োগ করে অজ্ঞান করে রাখা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন আসিফ।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকেই আসিফ মাহমুদকে সামনের সারিতে দেখা গেছে। তবে, গত চারদিন ধরে তার সঙ্গে অন্য সমন্বয়কদের কোনো যোগাযোগ ছিল না।

বিবিসি বাংলাকে আসিফ মাহমুদ বলেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ সময় তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। শাটডাউনের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার রাতে পরিস্থিতি দেখতে বের হয়েছিলেন তিনি।

আসিফ বলেন, “রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিকেতন থেকে মহানগর আবাসিক এলাকার দিকে যাওয়ার পথে হঠাৎ করে পেছন থেকে মাথায় কালো কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলে কয়েকজন। এরপর একটি মাইক্রোবাসে তোলা হয়।” সেসময় অন্তত পাঁচ-ছয়জন ছিল বলে ধারণা করছেন তিনি। এরপর কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়। চোখ বাঁধা থাকায় স্থানটি সম্পর্কে কোনো ধারণা পাননি তিনি।

আসিফ মাহমুদ অভিযোগ করেন, “আমাকে বলতে বলছিল যে, আন্দোলন স্থগিত করতেছি, সংঘর্ষ সন্ত্রাসীরা করছে।”

একটা ভিডিও বার্তা ধারণ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু, সেটা দিতে চাননি বলে জানান আসিফ। তিনি বলেন, “এরপর আমার কোমরে একটা ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল। ইনজেকশন দেওয়ার পর আমার আর কোনো কিছু জানা নেই।”

আসিফ বলেন, “চারদিনে যতবার জ্ঞান ফিরেছে, জ্ঞান ফেরার পরই আবার ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে রাখতো। ইনজেকশন দেওয়ার আগে হালকা খাবার দেওয়া হতো। ওরা আমাকে বলে যে, তোমাকে নিয়ে যেতে পারবে এমন কাউকে ফোন দাও।”

তবে রাতের বেলা আন্দোলনের অন্য সমন্বয়ক ও পরিবারের সদস্যদের ফোন দিলেও কেউ রিসিভ করেননি। তিনি বলেন, “তারপর যেখান থেকে ধরা হয়েছে সেখানেই আবার রেখে আসার কথা জানায় আটককারীরা।”

গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে তাকে মহাখালীর কাছাকাছি ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানান আসিফ। যেখানে ‘আটকে’ রাখা হয়েছিল সেখান থেকে মহাখালীতে পৌঁছুতে বুধবার সকালে আধা ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে বলে জানান তিনি।

“ছাড়া পাওয়ার পর” পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে বর্তমানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম এই সমন্বয়ক। বিবিসি বাংলাকে তিনি আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

এর আগে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, তাকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। কোনো একটি বাহিনী তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

যদিও নাহিদের এই অভিযোগের বিষয়ে বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান যে তাকে আটক বা ছেড়ে দেওয়া সম্পর্কে তারা কিছু জানেন না।

সোমবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ ও মাহিন সরকার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন তাদের চারজন সমন্বয়ক নিখোঁজ আছেন।

যে চারজন সমন্বয়কের নিখোঁজের কথা বলা হয়েছিল তারা হলেন আসিফ মাহমুদ, আব্দুল কাদের, রশিদুল ইসলাম রিফাত ও আবু বাকের মজুমদার। তাদের মধ্যে সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার ও সহ-সমন্বয়ক রিফাত রশীদের খোজ মিলেছে।

বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুরের পর থেকে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজেদের খবর জানান।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

৪ দিন কোথায় কী অবস্থায় ছিলেন সমন্বয়ক আসিফ

আপডেট টাইম : ০৫:৪৮:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। পুরোনো ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ অভিযোগ করেছেন, শুক্রবার রাতে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা আদায়ের চেষ্টা করে আটককারীরা। সেই বিবৃতি না পেয়ে তাকে চারদিন ধরে ‘ইনজেকশন’ প্রয়োগ করে অজ্ঞান করে রাখা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন আসিফ।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকেই আসিফ মাহমুদকে সামনের সারিতে দেখা গেছে। তবে, গত চারদিন ধরে তার সঙ্গে অন্য সমন্বয়কদের কোনো যোগাযোগ ছিল না।

বিবিসি বাংলাকে আসিফ মাহমুদ বলেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ সময় তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। শাটডাউনের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার রাতে পরিস্থিতি দেখতে বের হয়েছিলেন তিনি।

আসিফ বলেন, “রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিকেতন থেকে মহানগর আবাসিক এলাকার দিকে যাওয়ার পথে হঠাৎ করে পেছন থেকে মাথায় কালো কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলে কয়েকজন। এরপর একটি মাইক্রোবাসে তোলা হয়।” সেসময় অন্তত পাঁচ-ছয়জন ছিল বলে ধারণা করছেন তিনি। এরপর কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়। চোখ বাঁধা থাকায় স্থানটি সম্পর্কে কোনো ধারণা পাননি তিনি।

আসিফ মাহমুদ অভিযোগ করেন, “আমাকে বলতে বলছিল যে, আন্দোলন স্থগিত করতেছি, সংঘর্ষ সন্ত্রাসীরা করছে।”

একটা ভিডিও বার্তা ধারণ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু, সেটা দিতে চাননি বলে জানান আসিফ। তিনি বলেন, “এরপর আমার কোমরে একটা ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল। ইনজেকশন দেওয়ার পর আমার আর কোনো কিছু জানা নেই।”

আসিফ বলেন, “চারদিনে যতবার জ্ঞান ফিরেছে, জ্ঞান ফেরার পরই আবার ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে রাখতো। ইনজেকশন দেওয়ার আগে হালকা খাবার দেওয়া হতো। ওরা আমাকে বলে যে, তোমাকে নিয়ে যেতে পারবে এমন কাউকে ফোন দাও।”

তবে রাতের বেলা আন্দোলনের অন্য সমন্বয়ক ও পরিবারের সদস্যদের ফোন দিলেও কেউ রিসিভ করেননি। তিনি বলেন, “তারপর যেখান থেকে ধরা হয়েছে সেখানেই আবার রেখে আসার কথা জানায় আটককারীরা।”

গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে তাকে মহাখালীর কাছাকাছি ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানান আসিফ। যেখানে ‘আটকে’ রাখা হয়েছিল সেখান থেকে মহাখালীতে পৌঁছুতে বুধবার সকালে আধা ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে বলে জানান তিনি।

“ছাড়া পাওয়ার পর” পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে বর্তমানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম এই সমন্বয়ক। বিবিসি বাংলাকে তিনি আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

এর আগে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, তাকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। কোনো একটি বাহিনী তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

যদিও নাহিদের এই অভিযোগের বিষয়ে বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান যে তাকে আটক বা ছেড়ে দেওয়া সম্পর্কে তারা কিছু জানেন না।

সোমবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ ও মাহিন সরকার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন তাদের চারজন সমন্বয়ক নিখোঁজ আছেন।

যে চারজন সমন্বয়কের নিখোঁজের কথা বলা হয়েছিল তারা হলেন আসিফ মাহমুদ, আব্দুল কাদের, রশিদুল ইসলাম রিফাত ও আবু বাকের মজুমদার। তাদের মধ্যে সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার ও সহ-সমন্বয়ক রিফাত রশীদের খোজ মিলেছে।

বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুরের পর থেকে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজেদের খবর জানান।