ঢাকা ০৭:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
নিখোঁজ সংবাদ  ঠাকুরগাঁওয়ে নাগরিক প্লাটফর্মের ত্রৈমাসিক সভা ও জেলা কমিটি পুনর্গঠন মানুষের তৈরি মতবাদ আল্লাহর আইনের সাথে চ্যালেঞ্জ করার শামিল – ড.শফিকুল ইসলাম মাসুদ সরকারি রাস্তা আওয়ামী লীগ নেতার দখলের চেষ্টা।এই বিষয়ে সময়ের কন্ঠস্বরে নিউজ প্রকাশের পর এসিল্যান্ডের নিষেধাজ্ঞা ফার্মেসী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (সমগ্র বাংলাদেশ) পাকুন্দিয়া উপজেলা শাখা কমিটির সকলকে সনদ প্রদান ও আলোচনা সভা ২৫২ বছরের ইতিহাসে চট্টগ্রামে এই প্রথম নারী ডিসি ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের পদায়ন ফরিদা খানম গাজীপুর জেলা মহানগর কাশিমপুরে স্বাধীন মত প্রকাশের জেরে থানার ওসির নেতৃত্বে একাধিক সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা আজমিরীগঞ্জ পৌর এলাকার গন্জেরহাটি গ্রামের সরকারি রাস্তা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রনব বনিকের দখলের চেষ্টা নরসিংদীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে আহত সাংবাদিকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চট্টগ্রামে জনতা ব্যাংক সিবিএ নেতা আফসার আ.লীগের আমলে দাপট দেখিয়ে এখন বিএনপি নিয়োগ, বদলি, চাঁদাবাজি করে কামিয়েছেন টাকা

৪ দিন কোথায় কী অবস্থায় ছিলেন সমন্বয়ক আসিফ

বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪৮:৩৫ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪
  • / ১৩৫ ৫০০০.০ বার পাঠক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। পুরোনো ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ অভিযোগ করেছেন, শুক্রবার রাতে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা আদায়ের চেষ্টা করে আটককারীরা। সেই বিবৃতি না পেয়ে তাকে চারদিন ধরে ‘ইনজেকশন’ প্রয়োগ করে অজ্ঞান করে রাখা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন আসিফ।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকেই আসিফ মাহমুদকে সামনের সারিতে দেখা গেছে। তবে, গত চারদিন ধরে তার সঙ্গে অন্য সমন্বয়কদের কোনো যোগাযোগ ছিল না।

বিবিসি বাংলাকে আসিফ মাহমুদ বলেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ সময় তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। শাটডাউনের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার রাতে পরিস্থিতি দেখতে বের হয়েছিলেন তিনি।

আসিফ বলেন, “রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিকেতন থেকে মহানগর আবাসিক এলাকার দিকে যাওয়ার পথে হঠাৎ করে পেছন থেকে মাথায় কালো কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলে কয়েকজন। এরপর একটি মাইক্রোবাসে তোলা হয়।” সেসময় অন্তত পাঁচ-ছয়জন ছিল বলে ধারণা করছেন তিনি। এরপর কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়। চোখ বাঁধা থাকায় স্থানটি সম্পর্কে কোনো ধারণা পাননি তিনি।

আসিফ মাহমুদ অভিযোগ করেন, “আমাকে বলতে বলছিল যে, আন্দোলন স্থগিত করতেছি, সংঘর্ষ সন্ত্রাসীরা করছে।”

একটা ভিডিও বার্তা ধারণ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু, সেটা দিতে চাননি বলে জানান আসিফ। তিনি বলেন, “এরপর আমার কোমরে একটা ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল। ইনজেকশন দেওয়ার পর আমার আর কোনো কিছু জানা নেই।”

আসিফ বলেন, “চারদিনে যতবার জ্ঞান ফিরেছে, জ্ঞান ফেরার পরই আবার ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে রাখতো। ইনজেকশন দেওয়ার আগে হালকা খাবার দেওয়া হতো। ওরা আমাকে বলে যে, তোমাকে নিয়ে যেতে পারবে এমন কাউকে ফোন দাও।”

তবে রাতের বেলা আন্দোলনের অন্য সমন্বয়ক ও পরিবারের সদস্যদের ফোন দিলেও কেউ রিসিভ করেননি। তিনি বলেন, “তারপর যেখান থেকে ধরা হয়েছে সেখানেই আবার রেখে আসার কথা জানায় আটককারীরা।”

গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে তাকে মহাখালীর কাছাকাছি ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানান আসিফ। যেখানে ‘আটকে’ রাখা হয়েছিল সেখান থেকে মহাখালীতে পৌঁছুতে বুধবার সকালে আধা ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে বলে জানান তিনি।

“ছাড়া পাওয়ার পর” পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে বর্তমানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম এই সমন্বয়ক। বিবিসি বাংলাকে তিনি আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

এর আগে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, তাকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। কোনো একটি বাহিনী তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

যদিও নাহিদের এই অভিযোগের বিষয়ে বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান যে তাকে আটক বা ছেড়ে দেওয়া সম্পর্কে তারা কিছু জানেন না।

সোমবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ ও মাহিন সরকার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন তাদের চারজন সমন্বয়ক নিখোঁজ আছেন।

যে চারজন সমন্বয়কের নিখোঁজের কথা বলা হয়েছিল তারা হলেন আসিফ মাহমুদ, আব্দুল কাদের, রশিদুল ইসলাম রিফাত ও আবু বাকের মজুমদার। তাদের মধ্যে সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার ও সহ-সমন্বয়ক রিফাত রশীদের খোজ মিলেছে।

বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুরের পর থেকে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজেদের খবর জানান।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

৪ দিন কোথায় কী অবস্থায় ছিলেন সমন্বয়ক আসিফ

আপডেট টাইম : ০৫:৪৮:৩৫ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ। পুরোনো ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ অভিযোগ করেছেন, শুক্রবার রাতে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা আদায়ের চেষ্টা করে আটককারীরা। সেই বিবৃতি না পেয়ে তাকে চারদিন ধরে ‘ইনজেকশন’ প্রয়োগ করে অজ্ঞান করে রাখা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন আসিফ।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকেই আসিফ মাহমুদকে সামনের সারিতে দেখা গেছে। তবে, গত চারদিন ধরে তার সঙ্গে অন্য সমন্বয়কদের কোনো যোগাযোগ ছিল না।

বিবিসি বাংলাকে আসিফ মাহমুদ বলেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ সময় তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। শাটডাউনের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার রাতে পরিস্থিতি দেখতে বের হয়েছিলেন তিনি।

আসিফ বলেন, “রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিকেতন থেকে মহানগর আবাসিক এলাকার দিকে যাওয়ার পথে হঠাৎ করে পেছন থেকে মাথায় কালো কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলে কয়েকজন। এরপর একটি মাইক্রোবাসে তোলা হয়।” সেসময় অন্তত পাঁচ-ছয়জন ছিল বলে ধারণা করছেন তিনি। এরপর কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়। চোখ বাঁধা থাকায় স্থানটি সম্পর্কে কোনো ধারণা পাননি তিনি।

আসিফ মাহমুদ অভিযোগ করেন, “আমাকে বলতে বলছিল যে, আন্দোলন স্থগিত করতেছি, সংঘর্ষ সন্ত্রাসীরা করছে।”

একটা ভিডিও বার্তা ধারণ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু, সেটা দিতে চাননি বলে জানান আসিফ। তিনি বলেন, “এরপর আমার কোমরে একটা ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল। ইনজেকশন দেওয়ার পর আমার আর কোনো কিছু জানা নেই।”

আসিফ বলেন, “চারদিনে যতবার জ্ঞান ফিরেছে, জ্ঞান ফেরার পরই আবার ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে রাখতো। ইনজেকশন দেওয়ার আগে হালকা খাবার দেওয়া হতো। ওরা আমাকে বলে যে, তোমাকে নিয়ে যেতে পারবে এমন কাউকে ফোন দাও।”

তবে রাতের বেলা আন্দোলনের অন্য সমন্বয়ক ও পরিবারের সদস্যদের ফোন দিলেও কেউ রিসিভ করেননি। তিনি বলেন, “তারপর যেখান থেকে ধরা হয়েছে সেখানেই আবার রেখে আসার কথা জানায় আটককারীরা।”

গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে তাকে মহাখালীর কাছাকাছি ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানান আসিফ। যেখানে ‘আটকে’ রাখা হয়েছিল সেখান থেকে মহাখালীতে পৌঁছুতে বুধবার সকালে আধা ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে বলে জানান তিনি।

“ছাড়া পাওয়ার পর” পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে বর্তমানে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম এই সমন্বয়ক। বিবিসি বাংলাকে তিনি আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

এর আগে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, তাকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। কোনো একটি বাহিনী তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

যদিও নাহিদের এই অভিযোগের বিষয়ে বিবিসি বাংলার পক্ষ থেকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান যে তাকে আটক বা ছেড়ে দেওয়া সম্পর্কে তারা কিছু জানেন না।

সোমবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ ও মাহিন সরকার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন তাদের চারজন সমন্বয়ক নিখোঁজ আছেন।

যে চারজন সমন্বয়কের নিখোঁজের কথা বলা হয়েছিল তারা হলেন আসিফ মাহমুদ, আব্দুল কাদের, রশিদুল ইসলাম রিফাত ও আবু বাকের মজুমদার। তাদের মধ্যে সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার ও সহ-সমন্বয়ক রিফাত রশীদের খোজ মিলেছে।

বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুরের পর থেকে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজেদের খবর জানান।