মোংলা উপজেলা নির্বাচন পরবর্তি হামলায় পুজা উদযাপন কমিটির নেতাসহ ২০ জন আহত
- আপডেট টাইম : ০৫:১৫:১৪ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১০ জুন ২০২৪
- / ৮৬ ৫০০০.০ বার পাঠক
মোংলা উপজেলা নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় স্থানীয় পুজা উদযাপন কমিটির নেতাসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে পুজা উদযাপন কমিটির সাবেক সভাপতি পীযূষ কান্তি মজুমদার (৫৮)সহ ৮জনকে গুরুতর অবস্থায় উপজেলা সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে নির্বাচনোত্তর হামলার প্রতিবাদ ও নিরাপত্তার দাবিতে ‘মোংলা পূজা উদযাপন ও হিন্দু বৈদ্য খৃষ্টান ঐক্য পরিষদে’র ব্যানারে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুািষ্ঠত হয়েছে। নির্বাচনী সহিংসতা রুখতে পুলিশী টহল জোরদার করা হয়েছে।
জানা গেছে, রোববার মোংলা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে ৪ প্রার্থীর মধ্যে চিংড়ি প্রতিকের প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান পুনরায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। চেয়ারম্যান পদের আনারস প্রতীকের প্রার্থী মোঃ ইকবাল হোসেন অভিযোগ করে জানান, রাতে ভোট গগনা শেষে বেসরকারীভাবে ফল ঘোষণার পর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তার নেতা কর্মী ও সমর্থকদের উপর হামলাসহ নানা ধরনের তান্ডব চালাতে থাকে জয়ী প্রার্থীর ক্যাডার বাহিনী। রাতে বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের সানবান্ধা আবাসন এলাকায় আনারসের কর্মী বাবুলের দোকানে হামলা ও ভাংচুরসহ তাকে মারধর করা হয়। সোমবার সকাল সোয়া ৮ টার দিকে বিন্ উস্কানীতে চাঁদপাই ইউনিয়নের পাগলের মোড়ে ইকবাল হোসেনের সমর্থক মোংলা পুজা উদযাপন কমিটির সাবেক সভাপতি পীযূষ কান্তি মজুমদারের উপর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই হাবিবের নেতৃত্বে অতর্কিত হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপর চৌকদিারের মোড়ে আনারসের কর্মী ইউছুপ (২৫), সাইদুল (২২), চিলা ব্রিজের গোডা খাল এলাকায় প্রভুদান হালদারকে জয়ী প্রার্থীর ক্যাডার বাহিনীর লোকজন হামলা চালিয়ে জখম করে। এ ছাড়া পৌরসভা ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিজয়ী প্রার্থীর লোকজন আনারস প্রতীকের লোকদের উপর হামলা ও মারধর চালায়।
এদিকে পূজা উদযাপন কমিটির নেতার উপর হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে দুপুর ১টার দিকে পৌর মার্কেটের সামনে ‘মোংলা পূজা উদযাপন ও হিন্দু বৈদ্য খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ’র ব্যানারে মানব বন্ধন করে কয়েক শ’ লোক। মানব বন্ধন শেষে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ ইকবাল হোসেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী ইজারাদার, বুড়িরডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান উদয় শংকর বিশ্বাস , মিঠাখালী ইউপি চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মন্ডল, সুন্দরবন ইউপি চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারাদার, পুজা উদযাপন কমিটির নেতা অম্বরেশ রায়, বিপুল মন্ডল প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা পীযূষ মন্ডলের উপর চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের হামলার বিচারসহ আনারস প্রতীকের নেতা কর্মী ও সমর্থকদের নিরাপত্তার দাবি জানানো হয়।
নব নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার জানান, তিনি পরাজিত কোন প্রার্থীর কর্মী নেতা বা সমর্থকদের উপর হামলা ও সহিংসতার ঘটনায় জড়িত নন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ফল ঘোষণার পর মিঠাখালী ইউনিয়ন এলাকায় উল্টো পরাজিত প্রার্থী ইব্রাহিম হাওলাদারের ক্যাডার বাহিনী মহিলাসহ তার তিন কর্মীর উপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে। যারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা, শাহীন জানান, ভোট গগণার পর থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত নির্বাচনী সহিংসতার শিকার হয়ে ১৬ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৮ জন গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মোংলা থানার ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে নির্বাচন পরবর্তি সহিংসতার ৪টি পৃথক ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলার ঘটনায়জড়িত সন্দেহে ২ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অপরদিকে নির্বাচন পরবর্তি হামলা ও সহিংসতা রোধে পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় টহল জোরদার করেছে।