ঢাকা ০৭:১৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
জানাযায় প্রধান উপদেষ্টার কাতার সফরে গুরুত্ব পাবে কতটুকু নার্সিং ডিপ্লোমাকে ডিগ্রী সমমান করার দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ে অবস্থান কর্মসূচি ঠাকুরগাঁওয়ে কবরের ওপর থেকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় নারীর মরদেহ উদ্ধার ঠাকুরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক খামার তৈরি করায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী দেশে তিন স্তরে কমছে ইন্টারনেটের দাম নবীনগরে অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও মহড়া অনুষ্ঠিত ১৯ দিনে এলো ২১ হাজার কোটি টাকার রেমিট্যান্স রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সম্মিলিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগ প্রয়োজন: প্রধান উপদেষ্টা

রাণীশংকৈলে স্বর্ণ সন্ধানের নেপথ্য কথা

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁও।।
  • আপডেট টাইম : ০৬:২২:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ জুন ২০২৪
  • / ৯৪ ৫০০০.০ বার পাঠক

রাণীশংকৈল উপজেলার কাতিহার আরবিবি ইট ভাঁটিতে মাটি খুঁড়লেই মিলছে স্বর্ণ। এ নিয়ে গোটা উপজেলা জুড়ে তোলপাড় চলছে। ভাটা ম্যনাজার ও স্থানীয়রা জানান ইট ভাঁটিতে স্তুপ কৃত মাটি গুলো তিনটি ঐতিহাসিক স্থান থেকে নিয়ে আসা হয়েছে যেখানে রাজা ও জমিদাররা অবাধ বিচরন ও ধর্মীয় কর্যক্রম করতেন।
জানা গেছে, ৭ থেকে ৮ মাস যাবৎ ইটভাঁটির শ্রমিক ও এলাকার বিভিন্ন মানুষ স্বর্ণ পয়েছে। বিষয়টি এভাবেই চুপে চাপে চলতে থাকে। গত এপ্রিল মাসের ২১ তারিখ রাতে স্বর্ণ খোঁজাকে কেন্দ্র করে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরের দিন দৈনিক জনকণ্ঠ ও দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি তথ্য সংগ্রহ করে নিউজ প্রকাশ করলে, ভাঁটা মালিক স্তুপের মাটি খুড়া খুঁড়ি বন্ধ করে দেন এবং বিষয়টি গুজব বলে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু কয়েকদিন পরে এলাকার যারা স্বর্ণ পেয়েছে ও যেসব স্বর্ণকারের কাছে স্বর্ণ বিক্রি করা হয়েছে। তাদের মাধ্যমে পুরো উপজেলায় ইটভাঁটিতে স্বর্ণ পাওয়ার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে বিষয়টি ব্যাপক ভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটতে থাকে ওই ইট ভাঁটিতে। স্বর্ণ খোঁজার ও পাওয়ার বিষয়টি বিভিন্ন স্যাটালাইট টেলিভিশন সহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া গুলোতে প্রকাশিত হয়। ওই স্থানে বেশ কিছু অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে ২৫ রাতে উপজেলা‌ প্রশাসন ওই স্থানে ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ মোতায়ন করা হয়। এবং ভাটা মালিককে স্তুপ করে রাখা মটি গুলো দ্রুত অপসারণ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় চলমান রয়েছে মাটি অপসারণের কাজ কিন্তু, রঙ্গ-রগর বিষয় হলো মাটি অপসারণ করে যে সকল স্থানে রাখা হয়েছে রাতের আধাঁরে স্বর্ণের খোঁজে সেখানেও খুঁড়ো খুঁড়ি করছে কিছু মানুষ।

নানা মত বিশ্লেষণে জানা গেছে, অনেকে বলছেন ওই মাটি গুলো কাতিহার বাজারের পশ্চিম পাশে শ্যামরায় মন্দিরের সাথে থাকা একটি কালি মন্দিরের জমি থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। সেই জায়গায় রাস পূর্ণিমার রাতে প্রতিবছর মেলা হতো সেখানে রাস ঘুরানোর সময় জমিদার ও তৎকালীন ধনাঢ্য ব্যক্তিরা দেবতাকে খুশি করার জন্য স্বর্ণ মুদ্রা ও মোহর নিক্ষেপ করতেন। দেশ বিভক্তির সময় রাজা টংকনাথ স্বপরিবারে ভারতে চলে যান। ওই সময় তারা আবারও ফিরে আসবেন ভেবে মোহর ও তাদের নিকট থাকা গুপ্ত ধন মাটির নিচে পুঁতে রেখে যান। ওই মাটি ইট ভাঁটিতে কেটে এনে স্তুপ করায় ওখান থেকে এসব গুপ্তধন মিলছে। আবার কেউ বলছেন ওই স্তুপের মাটি পাশ্ববর্তী পীরগঞ্জ উপজেলার কুশারিগা গ্রামের নানাহার বিলের ৩ থেকে ৪’শ বছরের একটি পুকুর থেকে আনা হয়েছে । ওই সব মাটি থেকে এসব গুপ্তধন মিলছে। তৎকালীন সময়ে নানুহর নামে এক ধনাঢ্য ব্যক্তির বিয়ের সময় পুকুর পাড়ে থাকা মন্দিরের দেবদেবীকে খুশি করার জন্য ওই পুকুরে অনেক স্বর্ন অলংকার ছিটিয়ে দেন। তবে সরজমিনে গিয়ে পুকুর পাড়ে থাকা মন্দিরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি, একটি ঢিবিতে শতবছরের অধিক পুরোনো কিছু ইটের দেখা মিলেছে। আবার অনেকে মনে করছেন রাজোর বনকালি নামক জায়গা থেকে ইট ভাঁটিতে আনা মাটি থেকে এসব গুপ্তধন উঠে আসতে পারে। এখন জনমনে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে এটির মূল রহস্য প্রশাসনিক ভাবে উদঘাটন হবে কি না? এর সমাধান কি? বিষয়টি নিয়ে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রাণীশংকৈলে স্বর্ণ সন্ধানের নেপথ্য কথা

আপডেট টাইম : ০৬:২২:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ জুন ২০২৪

রাণীশংকৈল উপজেলার কাতিহার আরবিবি ইট ভাঁটিতে মাটি খুঁড়লেই মিলছে স্বর্ণ। এ নিয়ে গোটা উপজেলা জুড়ে তোলপাড় চলছে। ভাটা ম্যনাজার ও স্থানীয়রা জানান ইট ভাঁটিতে স্তুপ কৃত মাটি গুলো তিনটি ঐতিহাসিক স্থান থেকে নিয়ে আসা হয়েছে যেখানে রাজা ও জমিদাররা অবাধ বিচরন ও ধর্মীয় কর্যক্রম করতেন।
জানা গেছে, ৭ থেকে ৮ মাস যাবৎ ইটভাঁটির শ্রমিক ও এলাকার বিভিন্ন মানুষ স্বর্ণ পয়েছে। বিষয়টি এভাবেই চুপে চাপে চলতে থাকে। গত এপ্রিল মাসের ২১ তারিখ রাতে স্বর্ণ খোঁজাকে কেন্দ্র করে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরের দিন দৈনিক জনকণ্ঠ ও দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি তথ্য সংগ্রহ করে নিউজ প্রকাশ করলে, ভাঁটা মালিক স্তুপের মাটি খুড়া খুঁড়ি বন্ধ করে দেন এবং বিষয়টি গুজব বলে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু কয়েকদিন পরে এলাকার যারা স্বর্ণ পেয়েছে ও যেসব স্বর্ণকারের কাছে স্বর্ণ বিক্রি করা হয়েছে। তাদের মাধ্যমে পুরো উপজেলায় ইটভাঁটিতে স্বর্ণ পাওয়ার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে বিষয়টি ব্যাপক ভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটতে থাকে ওই ইট ভাঁটিতে। স্বর্ণ খোঁজার ও পাওয়ার বিষয়টি বিভিন্ন স্যাটালাইট টেলিভিশন সহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া গুলোতে প্রকাশিত হয়। ওই স্থানে বেশ কিছু অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে ২৫ রাতে উপজেলা‌ প্রশাসন ওই স্থানে ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ মোতায়ন করা হয়। এবং ভাটা মালিককে স্তুপ করে রাখা মটি গুলো দ্রুত অপসারণ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় চলমান রয়েছে মাটি অপসারণের কাজ কিন্তু, রঙ্গ-রগর বিষয় হলো মাটি অপসারণ করে যে সকল স্থানে রাখা হয়েছে রাতের আধাঁরে স্বর্ণের খোঁজে সেখানেও খুঁড়ো খুঁড়ি করছে কিছু মানুষ।

নানা মত বিশ্লেষণে জানা গেছে, অনেকে বলছেন ওই মাটি গুলো কাতিহার বাজারের পশ্চিম পাশে শ্যামরায় মন্দিরের সাথে থাকা একটি কালি মন্দিরের জমি থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। সেই জায়গায় রাস পূর্ণিমার রাতে প্রতিবছর মেলা হতো সেখানে রাস ঘুরানোর সময় জমিদার ও তৎকালীন ধনাঢ্য ব্যক্তিরা দেবতাকে খুশি করার জন্য স্বর্ণ মুদ্রা ও মোহর নিক্ষেপ করতেন। দেশ বিভক্তির সময় রাজা টংকনাথ স্বপরিবারে ভারতে চলে যান। ওই সময় তারা আবারও ফিরে আসবেন ভেবে মোহর ও তাদের নিকট থাকা গুপ্ত ধন মাটির নিচে পুঁতে রেখে যান। ওই মাটি ইট ভাঁটিতে কেটে এনে স্তুপ করায় ওখান থেকে এসব গুপ্তধন মিলছে। আবার কেউ বলছেন ওই স্তুপের মাটি পাশ্ববর্তী পীরগঞ্জ উপজেলার কুশারিগা গ্রামের নানাহার বিলের ৩ থেকে ৪’শ বছরের একটি পুকুর থেকে আনা হয়েছে । ওই সব মাটি থেকে এসব গুপ্তধন মিলছে। তৎকালীন সময়ে নানুহর নামে এক ধনাঢ্য ব্যক্তির বিয়ের সময় পুকুর পাড়ে থাকা মন্দিরের দেবদেবীকে খুশি করার জন্য ওই পুকুরে অনেক স্বর্ন অলংকার ছিটিয়ে দেন। তবে সরজমিনে গিয়ে পুকুর পাড়ে থাকা মন্দিরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি, একটি ঢিবিতে শতবছরের অধিক পুরোনো কিছু ইটের দেখা মিলেছে। আবার অনেকে মনে করছেন রাজোর বনকালি নামক জায়গা থেকে ইট ভাঁটিতে আনা মাটি থেকে এসব গুপ্তধন উঠে আসতে পারে। এখন জনমনে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে এটির মূল রহস্য প্রশাসনিক ভাবে উদঘাটন হবে কি না? এর সমাধান কি? বিষয়টি নিয়ে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা।