মহাদেবপুরে খোলা ট্রাক্টরে পুকুরের কাদামাটি পরিবহণ : নীরব প্রশাসন
- আপডেট টাইম : ০৩:০০:৩৫ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ১ মার্চ ২০২৪
- / ৭৪ ৫০০০.০ বার পাঠক
নওগাঁর মহাদেবপুরে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতায় কিছুতেই থামানো যাচ্ছেনা খোলা ট্রাক্টরে করে পুকুরের কাদামাটি পরিবহণ। প্রচলিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এখন উপজেলার সর্বত্র চলছে অবৈধ পুকুর খনন ও মজাপুকুর পুন:খনন। এসব পুকুরের কাদামাটি খোলা ট্রাক্টরে করে প্রতিদিন প্রকাশ্য দিবালোকে উপজেলা সদরের ব্যস্ত এলাকা দিয়ে অসম্ভব দ্রুতগতিতে পরিবহণ করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটভাটায়। ট্রাক্টরের কাদামাটি পাকা রাস্তার উপর পড়ে জমা হয়ে থাকছে। দ্রুতগতিতে এসব ট্রাক্টর চলার সময় পুরো উপজেলা সদর ঘনধূলার ধোঁয়ায় ছেয়ে যাচ্ছে। এতে মানুষের চলাচল অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে। উপজেলা সদর ছাড়াও প্রতিটি গ্রামীণ সড়কেরও একই অবস্থা। ট্রাক্টরে মাটি পরিবহণের ফলে গ্রামীণ রাস্তাগুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে। অন্যান্য যানবাহন চলাচল দূরুহ হচ্ছে। একটু পানি পড়লেই পাকা রাস্তা পিচ্ছিল কাদায় পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এতে যান ও মানুষ চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। শুক্রবার (১ মার্চ) বিকেলে উপজেলা সদরের ডবলওয়ে সড়কের জনাকীর্ণ মাছের মোড় দিয়ে একের পর এক মাটি ভর্তি খোলা ট্রাক্টর চলাচল করতে দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব মাটি আসছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের খাপড়া পূর্বপাড়া জেলেপাড়া থেকে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় ভ্যেকু মেশিন দিয়ে একটি পুরাতন পুকুরের বিশাল পাড়ের গাছপালা কেটে ফেলে পাড় কেটে সে মাটি ট্রাক্টরে ভরে উপজেলা সদরের উপর দিয়ে তিন কিলোমিটার দূরে একটি ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পুরো পাকা সড়কে মাটি পড়ে জমা হয়ে থাকছে। এই পুকুরের পাড় সংলগ্ন একটি গ্রামীন পাকা সড়ক রয়েছে। এই সড়ক ঘেঁষে মাটি ৩০ ফুট গভীর করে কাটা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের এক পরিপত্রে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন উপজেলায় এলজিইডির নির্মিত সড়কের পাশে পুকুর ও নালা খনন করা হচ্ছে। সড়কের ধার ঘেঁষে পুকুর, কূপ বা সেচ নালা ইত্যাদি খনন করলে সড়কের পার্শঢাল এবং আড়-ঢাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে গ্রামীণ সড়কের ধার ঘেঁষে পুকুর, সেচ নালা খনন করা দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কোনো ব্যক্তি রাস্তার ধার ঘেঁষে পুকুর বা খাল বা কূপ অথবা সেচনালা তৈরি করলে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে নিজ খরচে সুরক্ষা ঢাল নির্মাণ করবেন। কিন্তু এই উপজেলায় এই আইন মানা হচ্ছে না। এদিন দুপুরে উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নের ঈশ্বর লক্ষ্মীপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে আলমগীর হোসেন নামে এক ব্যক্তি একটি পুকুরের বিশাল পাড়ের অসংখ্য গাছপালা কেটে পাড় গভীর করে কেটে মাটি খোলা ট্রাক্টরে করে পরিবহণ করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অন্যত্র। ট্রাক্টরের মাটি রাস্তায় পড়ে জমা হয়ে থাকছে। জানতে চাইলে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রিফাত আরা জানান, তিনি ছুটিতে আছেন। এছাড়া সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তারাও ছুটিতে কর্মস্থল ত্যাগ করেছেন। তবে বিষয়গুলো খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। স্থানীয়রা অবিলম্বে আইন অমান্য করে পুকুর খনন করা বন্ধ ও পুকুরের কাদামাটি অন্যত্র পরিবহণ সম্পূর্ণ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।