নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হলো মোংলা বন্দরের ৭৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী
- আপডেট টাইম : ১২:৫৮:০৭ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ২১৮ ৫০০০.০ বার পাঠক
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হলো বাংলাদেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মোংলা বন্দরের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। পহেলা ডিসেম্বর ১৯৫০ সালে চালনা পোর্ট নামে এ বন্দর প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৮৭ সালের পোর্ট অব চালনা অথরিটি এ্যাক্ট অনুসারে প্রথমে চালনা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পরবর্তীতে মোংলা পোর্ট অথরিটি নামে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহন করার পর থেকে মোংলা বন্দর উন্নয়নের জন্য সরকার অগ্রাধিকার ও বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে এবং বন্দরের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে কাজ শুরু করে। ফলে ক্রমান্বয়ে মোংলা বন্দর গতিশীল হতে থাকে, যার কারণে প্রতি বছর বিদেশী জাহাজ, কার্গোহ্যান্ডলিং গাড়ি আমদানিতে রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে।
৭৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন উপলক্ষ্যে বন্দর সদর দপ্তর মোংলা ও খুলনাস্থ বন্দর এলাকায় আলোকসজ্জা করা হয়। রাত ১২:০১ ঘটিকায় বন্দরে অবস্থানরত দেশী, বিদেশী সকল জাহাজে একমিনিট বিরতিহীন হুইসেল বাজানো হয়। বন্দরের অগ্রগতি কামনা করে মোংলা বন্দরের সকল মসজিদে দোয়া মাহফিল করা হয়। সকাল সাড়ে ৯ টায় কবুতর ও বেলুন উড়িয়ে বন্দরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভ উদ্বোধন। এর পর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তালুকদার আব্দুল খালেক, মেয়র সিটিকর্পোরেশন, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী কেক কেটে দিবসের শুভ উদযাপন শুরু করেন। শুরুতেই অত্র বন্দরের উপর নির্মিত উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের উপর একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানের শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী। এসময় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, সাইফ পোর্ট হোল্ডিং লি. এর চেয়ারম্যান তরফদার মো: রুহুল আমিন, মোংলা বার্থ ও শিপ অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন এর সভাপতি সৈয়দ জাহিদ হোসেন ও মোংলা বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, “মোংলা বন্দরে চলমান ড্রেজিং এর ফলে সম্প্রতি ৬০ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে বন্দরের ইতিহাসে প্রথমবারের মত লাইবেরিয়ান পতাকাবাহী জাহাজ এমভি মানা সরাসরি মোংলা বন্দরে আগমন করে। এছাড়াও প্রথম বারের মতো বন্দর জেটিতে ৮.৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়েছে। ২০২২-২৩ র্অথবছরে বন্দরে ৮২৭টি বাণজ্যিকি জাহাজ আগমন করে ও ৯৯.০৫ লক্ষ মে.টন কার্গো, ২৬৫৮৩ টিইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং, ১৩ হাজার ৫৭৬ টি গাড়ি আমদানি এবং ৩০,২৪১.৬৮ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করতে সক্ষম হয়েছে। আগামী দিনে মোংলা বন্দর আরও কর্মচঞ্চল ও স্মার্ট বন্দর হিসেবে বিশ্বের বুকে সমুন্নত হবে।” এর পূর্বে ৭৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে মোংলা বন্দর হাসপাতালে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীর শুভ উদ্ভোদন করেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী। প্রধান অতিথির বন্তব্যে খুলনা সিটি সিটিকর্পোরেশন মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, “২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নেওয়ার পর মোংলা বন্দর উন্নয়নের জন্য সরকার অগ্রাধিকার ও বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে এবং বন্দরের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে কাজ শুরু করে। ফলে ক্রমান্বয়ে মোংলা বন্দর গতিশীল হতে থাকে, যার কারণে প্রতি বছর বিদেশী জাহাজ, কার্গোহ্যান্ডলিং গাড়ি আমদানিতে রেকর্ড সৃষ্টি হচ্ছে। মোংলা হবে বিশ্বমানের নিরাপদ, আধুনিক ও স্মার্ট সমুদ্রবন্দর।” বন্দরের সেরা কৃতত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ বন্দরের ০৩ (তিন) কর্মকর্তা-কর্মচারী ১. জনাব মো: শাহীনুর ইসলাম, সহ: ব্যবস্থাপক (কর্ম) ২. মো: মাসুদুল ইসলাম, গবেষণা সহকারী ৩. জনাব মো: শাহিনুল ইসলাম, পরিচ্ছন্ন কর্মী কে ক্রেস্ট ও সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বন্দর ব্যবহারকারীদের সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এবং ০২/১২/২০২২ হতে ০১/১২/২০২৩ তারিখ পর্যন্ত মবক’র পি,আর,এল ভোগরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিদায় সম্বর্ধনা প্রদান। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণপ্রবাহ এ বন্দরটি কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বর্তমানে খাদ্যশস্য, সিমেন্ট ক্লিংকার, সার, মোটর গাড়ী, মেশিনারিজ, চাল, গম, কয়লা, তেল , পাথর, ভুট্টা, তেলবীজ, এলপিজি গ্যাস আমদানি এবং সাদামাছ, চিংড়ি, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, হিমায়িত খাদ্য, কাকড়া, ক্লে টাইলস, রেশমী কাপড় ও জেনারেল কার্গো রপ্তানির মাধ্যমে দেশের চলমান অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে।