ঢাকা ০৬:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
মনোহরদীতে মডেল মসজিদের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল প্রায় ৫ লাখ টাকা ভোটের আগে বারুইপুর জেলা পুলিশের বড় সাফল্য, বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার কলেজ পড়ুয়া জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজ মাঠ প্রাঙ্গনে হাজী মো: মকবুল হোসেনের বিশাল জনসভা ফুলবাড়ীতে গবাদিপশুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ বিষয়ক সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত অধিকার ও মানবাধিকার কর্মীদের উদ্বেগ মানবাধিকার পরিস্থিতিতে অগ্রগতি নেই বাংলাদেশের হজ ভিসায় জেদ্দা, মদিনা ও মক্কার বাইরে যেতে পারবেন না হাজীরা জামালপুরে পাটের পরিবর্তে, পাট শাক চাষ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে গাজা ট্র্যাজেডি থেকে যে শিক্ষা নিতে বললেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ধানের চাল কত টাকা কিনা হবে জানালেন মন্ত্রী সুন্দরবনের অগ্নিকান্ডের দায়ভার বনবিভাগকেই নিতে হবে

জনপ্রিয় খেলা উপভোগে নানা বয়সি মানুষের উপচে পড়া ভিড় মহম্মদপুরে প্রাচীন ঐতিহ্য জনপ্রিয় লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত

মাগুরার মহম্মদপুরে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য জনপ্রিয় লাঠি খেলা উপভোগ করতে হাজারো মানুষের উপচে পড়া

ভিড়। নানা বয়সি মানুষের উপস্থিতিতে আনন্দঘন ও উৎসবমূখর পরিবেশের সৃষ্টি হয় এলাকাজুড়ে। বুধবার
(১ নভেম্বর) বিকালে আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই লাঠি খেলার জমজমাট আসর বসেছিল
উপজেলার বাবুখালি ইউনিয়নের ডুমুরশিয়া ডি.সি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে।
গাও গেরামের ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টায় ডুমুরশিয়া বাজার বণিক সমিতি এই খেলার আয়োজন করে।
শতবছরের দৃষ্টিনন্দন এই আয়োজন দেখতে হাজির হয়েছিল পার্শবর্তী শালিখা, শ্রীপুর ও মধুখালী
উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নানা বয়সের অসংখ্য দর্শক। নারী দর্শকদের উপস্থিতিও ছিলো
চোখে পড়ার মতো। বার্ষিক এই লাঠি খেলা ও গ্রামীণ মেলা বসে প্রতিবছর বাংলা মাসের ১৬ই
কার্তিক, এবছর ১০৩তম। মেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীসহ নানা ধরণের পণ্যের পসরা সাজিয়ে
বসেছে ডুমুরশিয়া বাজার ও খেলার মাঠ এলাকাজুড়ে।
আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় খেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম লাঠিখেলা। তবে কালের পরিক্রমায়
দিনদিন হারিয়ে যেতে বসে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য জনপ্রিয় এই খেলাটি। একই সঙ্গে এই খেলার সাথে
সংশ্লিষ্ট যারা তাদেরও জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। অনেকেই এ পেশা পরিবর্তন করে ঝুকে
পড়েছেন অন্য পেশায়। ছেড়ে দিয়েছেন ঐতিহ্যবাহী পুর্বপুরুষের এ পেশা। তারপরেও অনেকেই ধরে রাখার
চেষ্টা করে চলেছেন। তারই ধারাবাহিকয়তায় শত প্রতিকূলতার মাঝেও বাঙালির গ্রামীণ সংস্কৃতি এবং
ঐতিহ্যকে লালন করার চেষ্টা আর প্রচীন এই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্যে ডুমুরশিয়া বাজার বণিক
সমিতি প্রতিবছর ঐতিহ্যবাহী এই লাঠি খেলার আয়োজন করে থাকেন।
বর্ণিল সাজে লাঠি হাতে ১৩টি দল অংশ নেয় এই খেলায়। ঢাকঢোল আর বাঁশির তালে লাঠিয়ালদের লাঠির
চক্রে আনন্দে উল্লাসে মেতে উঠে আমুদে দর্শক। নানা রঙের লাঠি ও রং-বেরঙের পোশাক পরে মাঠে নামেন
লাঠিয়ালেরা। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে চলে লাঠির ব্যবহার। ত্বকে মুখে ছিল ঠেকাও লাঠি। আঘাত
লাগবেনা কিন্তু পয়েন্ট পেতে হবে এটায় খেলা। উপস্থিত দর্শকদের উচ্ছ্বাস প্রমাণ করে দেয় লাঠি খেলা
নিয়ে মানুষের আগ্রহ এখনো অটুট।
তবে লাঠি খেলার নতুন দল তৈরী করা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য লাঠি খেলার আয়োজন করা যায় না। কিন্তু যারা
লাঠি খেলেন, তাদের এই গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখার আগ্রহ আছে বলে মন্তব্য করেন আয়োজক
কমিটির সভাপতি ও ডুমুরশিয়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুর রশিদ ভুলু।
লাঠিয়াল গফুর সরদার বলেন, ছোট বেলা পূর্বপুরুষদের খেলা দেখে লাটি খেলায় আগ্রহ হয়। তারপর থেকে
এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু এখন আর এ খেলার তেমন আয়োজন করা হয় না। তবে প্রতিবছর
কার্তিক মাসের ১৬ তারিখে এখানে এসে ভালো লাগে। এতে নতুন প্রজন্মের মধ্যেও আগ্রহ সৃষ্টি হয়।
ঢাকা থেকে আগত কবি হাফিজ রহমান জানান, বর্তমান ক্রীকেট ও ফুটবলের জনপ্রিয়তায় কোণঠাসা
হয়ে পড়েছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা। আমাদের পুরোনো এই ঐতিহ্য ৬০-এর দশক থেকে
প্রচলিত ও জনপ্রিয়। এই লাঠি খেলাকে আজও গ্রাম বাংলার বুকে ধরে রাখতে স্থানীয়দের পাশাপাশি
সরকারকেও এগিয়ে আসার আহবান।

আরো খবর.......

আপলোডকারীর তথ্য

মনোহরদীতে মডেল মসজিদের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল প্রায় ৫ লাখ টাকা

জনপ্রিয় খেলা উপভোগে নানা বয়সি মানুষের উপচে পড়া ভিড় মহম্মদপুরে প্রাচীন ঐতিহ্য জনপ্রিয় লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত

আপডেট টাইম : ০৫:১১:১৩ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১ নভেম্বর ২০২৩

মাগুরার মহম্মদপুরে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য জনপ্রিয় লাঠি খেলা উপভোগ করতে হাজারো মানুষের উপচে পড়া

ভিড়। নানা বয়সি মানুষের উপস্থিতিতে আনন্দঘন ও উৎসবমূখর পরিবেশের সৃষ্টি হয় এলাকাজুড়ে। বুধবার
(১ নভেম্বর) বিকালে আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই লাঠি খেলার জমজমাট আসর বসেছিল
উপজেলার বাবুখালি ইউনিয়নের ডুমুরশিয়া ডি.সি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে।
গাও গেরামের ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টায় ডুমুরশিয়া বাজার বণিক সমিতি এই খেলার আয়োজন করে।
শতবছরের দৃষ্টিনন্দন এই আয়োজন দেখতে হাজির হয়েছিল পার্শবর্তী শালিখা, শ্রীপুর ও মধুখালী
উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নানা বয়সের অসংখ্য দর্শক। নারী দর্শকদের উপস্থিতিও ছিলো
চোখে পড়ার মতো। বার্ষিক এই লাঠি খেলা ও গ্রামীণ মেলা বসে প্রতিবছর বাংলা মাসের ১৬ই
কার্তিক, এবছর ১০৩তম। মেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীসহ নানা ধরণের পণ্যের পসরা সাজিয়ে
বসেছে ডুমুরশিয়া বাজার ও খেলার মাঠ এলাকাজুড়ে।
আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় খেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম লাঠিখেলা। তবে কালের পরিক্রমায়
দিনদিন হারিয়ে যেতে বসে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য জনপ্রিয় এই খেলাটি। একই সঙ্গে এই খেলার সাথে
সংশ্লিষ্ট যারা তাদেরও জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। অনেকেই এ পেশা পরিবর্তন করে ঝুকে
পড়েছেন অন্য পেশায়। ছেড়ে দিয়েছেন ঐতিহ্যবাহী পুর্বপুরুষের এ পেশা। তারপরেও অনেকেই ধরে রাখার
চেষ্টা করে চলেছেন। তারই ধারাবাহিকয়তায় শত প্রতিকূলতার মাঝেও বাঙালির গ্রামীণ সংস্কৃতি এবং
ঐতিহ্যকে লালন করার চেষ্টা আর প্রচীন এই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্যে ডুমুরশিয়া বাজার বণিক
সমিতি প্রতিবছর ঐতিহ্যবাহী এই লাঠি খেলার আয়োজন করে থাকেন।
বর্ণিল সাজে লাঠি হাতে ১৩টি দল অংশ নেয় এই খেলায়। ঢাকঢোল আর বাঁশির তালে লাঠিয়ালদের লাঠির
চক্রে আনন্দে উল্লাসে মেতে উঠে আমুদে দর্শক। নানা রঙের লাঠি ও রং-বেরঙের পোশাক পরে মাঠে নামেন
লাঠিয়ালেরা। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে চলে লাঠির ব্যবহার। ত্বকে মুখে ছিল ঠেকাও লাঠি। আঘাত
লাগবেনা কিন্তু পয়েন্ট পেতে হবে এটায় খেলা। উপস্থিত দর্শকদের উচ্ছ্বাস প্রমাণ করে দেয় লাঠি খেলা
নিয়ে মানুষের আগ্রহ এখনো অটুট।
তবে লাঠি খেলার নতুন দল তৈরী করা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য লাঠি খেলার আয়োজন করা যায় না। কিন্তু যারা
লাঠি খেলেন, তাদের এই গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখার আগ্রহ আছে বলে মন্তব্য করেন আয়োজক
কমিটির সভাপতি ও ডুমুরশিয়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুর রশিদ ভুলু।
লাঠিয়াল গফুর সরদার বলেন, ছোট বেলা পূর্বপুরুষদের খেলা দেখে লাটি খেলায় আগ্রহ হয়। তারপর থেকে
এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু এখন আর এ খেলার তেমন আয়োজন করা হয় না। তবে প্রতিবছর
কার্তিক মাসের ১৬ তারিখে এখানে এসে ভালো লাগে। এতে নতুন প্রজন্মের মধ্যেও আগ্রহ সৃষ্টি হয়।
ঢাকা থেকে আগত কবি হাফিজ রহমান জানান, বর্তমান ক্রীকেট ও ফুটবলের জনপ্রিয়তায় কোণঠাসা
হয়ে পড়েছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা। আমাদের পুরোনো এই ঐতিহ্য ৬০-এর দশক থেকে
প্রচলিত ও জনপ্রিয়। এই লাঠি খেলাকে আজও গ্রাম বাংলার বুকে ধরে রাখতে স্থানীয়দের পাশাপাশি
সরকারকেও এগিয়ে আসার আহবান।