ঢাকা ০৮:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
যুবদল নেতাকে পিটিয়ে আহত করেছে স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা বরগুনার, পাথরঘাটায় সাবেক ইউপি সদস্যকে হুমকি ও মারধর চার প্রদেশে দেশ ভাগ করার কথা ভাবছে সংস্কার কমিশন যুদ্ধবিরতি এখনই কার্যকর হচ্ছে না, জানালেন নেতানিয়াহু সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি লক্ষ্মীপুরের ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া সংগঠন, ইলেভেন ষ্টার ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংঘের ২০২৫ সালের নতুন কমিটি গঠন যেখানেই আইন লঙ্ঘন হবে পুলিশ তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থানিতে পিছু হটবেনা-ওসি কোতয়ালী টাঙ্গাইলে সমন্বয়ক পরিচয়ধারীদের পদ স্হগিত করলেন হাসনাত আবদুল্লাহ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে রিভিউ শুনানি রোববার পাকিস্তানের ‘জেএফ-১৭ থান্ডার’ যুদ্ধবিমানে আগ্রহ বাংলাদেশের

জনপ্রিয় খেলা উপভোগে নানা বয়সি মানুষের উপচে পড়া ভিড় মহম্মদপুরে প্রাচীন ঐতিহ্য জনপ্রিয় লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত

মোঃ শফিকুল ইসলাম, মহম্মদপুর (মাগুরা) থেকে :
  • আপডেট টাইম : ০৫:১১:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ নভেম্বর ২০২৩
  • / ২৮৭ ৫০০০.০ বার পাঠক

মাগুরার মহম্মদপুরে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য জনপ্রিয় লাঠি খেলা উপভোগ করতে হাজারো মানুষের উপচে পড়া

ভিড়। নানা বয়সি মানুষের উপস্থিতিতে আনন্দঘন ও উৎসবমূখর পরিবেশের সৃষ্টি হয় এলাকাজুড়ে। বুধবার
(১ নভেম্বর) বিকালে আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই লাঠি খেলার জমজমাট আসর বসেছিল
উপজেলার বাবুখালি ইউনিয়নের ডুমুরশিয়া ডি.সি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে।
গাও গেরামের ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টায় ডুমুরশিয়া বাজার বণিক সমিতি এই খেলার আয়োজন করে।
শতবছরের দৃষ্টিনন্দন এই আয়োজন দেখতে হাজির হয়েছিল পার্শবর্তী শালিখা, শ্রীপুর ও মধুখালী
উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নানা বয়সের অসংখ্য দর্শক। নারী দর্শকদের উপস্থিতিও ছিলো
চোখে পড়ার মতো। বার্ষিক এই লাঠি খেলা ও গ্রামীণ মেলা বসে প্রতিবছর বাংলা মাসের ১৬ই
কার্তিক, এবছর ১০৩তম। মেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীসহ নানা ধরণের পণ্যের পসরা সাজিয়ে
বসেছে ডুমুরশিয়া বাজার ও খেলার মাঠ এলাকাজুড়ে।
আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় খেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম লাঠিখেলা। তবে কালের পরিক্রমায়
দিনদিন হারিয়ে যেতে বসে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য জনপ্রিয় এই খেলাটি। একই সঙ্গে এই খেলার সাথে
সংশ্লিষ্ট যারা তাদেরও জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। অনেকেই এ পেশা পরিবর্তন করে ঝুকে
পড়েছেন অন্য পেশায়। ছেড়ে দিয়েছেন ঐতিহ্যবাহী পুর্বপুরুষের এ পেশা। তারপরেও অনেকেই ধরে রাখার
চেষ্টা করে চলেছেন। তারই ধারাবাহিকয়তায় শত প্রতিকূলতার মাঝেও বাঙালির গ্রামীণ সংস্কৃতি এবং
ঐতিহ্যকে লালন করার চেষ্টা আর প্রচীন এই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্যে ডুমুরশিয়া বাজার বণিক
সমিতি প্রতিবছর ঐতিহ্যবাহী এই লাঠি খেলার আয়োজন করে থাকেন।
বর্ণিল সাজে লাঠি হাতে ১৩টি দল অংশ নেয় এই খেলায়। ঢাকঢোল আর বাঁশির তালে লাঠিয়ালদের লাঠির
চক্রে আনন্দে উল্লাসে মেতে উঠে আমুদে দর্শক। নানা রঙের লাঠি ও রং-বেরঙের পোশাক পরে মাঠে নামেন
লাঠিয়ালেরা। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে চলে লাঠির ব্যবহার। ত্বকে মুখে ছিল ঠেকাও লাঠি। আঘাত
লাগবেনা কিন্তু পয়েন্ট পেতে হবে এটায় খেলা। উপস্থিত দর্শকদের উচ্ছ্বাস প্রমাণ করে দেয় লাঠি খেলা
নিয়ে মানুষের আগ্রহ এখনো অটুট।
তবে লাঠি খেলার নতুন দল তৈরী করা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য লাঠি খেলার আয়োজন করা যায় না। কিন্তু যারা
লাঠি খেলেন, তাদের এই গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখার আগ্রহ আছে বলে মন্তব্য করেন আয়োজক
কমিটির সভাপতি ও ডুমুরশিয়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুর রশিদ ভুলু।
লাঠিয়াল গফুর সরদার বলেন, ছোট বেলা পূর্বপুরুষদের খেলা দেখে লাটি খেলায় আগ্রহ হয়। তারপর থেকে
এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু এখন আর এ খেলার তেমন আয়োজন করা হয় না। তবে প্রতিবছর
কার্তিক মাসের ১৬ তারিখে এখানে এসে ভালো লাগে। এতে নতুন প্রজন্মের মধ্যেও আগ্রহ সৃষ্টি হয়।
ঢাকা থেকে আগত কবি হাফিজ রহমান জানান, বর্তমান ক্রীকেট ও ফুটবলের জনপ্রিয়তায় কোণঠাসা
হয়ে পড়েছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা। আমাদের পুরোনো এই ঐতিহ্য ৬০-এর দশক থেকে
প্রচলিত ও জনপ্রিয়। এই লাঠি খেলাকে আজও গ্রাম বাংলার বুকে ধরে রাখতে স্থানীয়দের পাশাপাশি
সরকারকেও এগিয়ে আসার আহবান।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় খেলা উপভোগে নানা বয়সি মানুষের উপচে পড়া ভিড় মহম্মদপুরে প্রাচীন ঐতিহ্য জনপ্রিয় লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত

আপডেট টাইম : ০৫:১১:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ নভেম্বর ২০২৩

মাগুরার মহম্মদপুরে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য জনপ্রিয় লাঠি খেলা উপভোগ করতে হাজারো মানুষের উপচে পড়া

ভিড়। নানা বয়সি মানুষের উপস্থিতিতে আনন্দঘন ও উৎসবমূখর পরিবেশের সৃষ্টি হয় এলাকাজুড়ে। বুধবার
(১ নভেম্বর) বিকালে আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই লাঠি খেলার জমজমাট আসর বসেছিল
উপজেলার বাবুখালি ইউনিয়নের ডুমুরশিয়া ডি.সি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে।
গাও গেরামের ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টায় ডুমুরশিয়া বাজার বণিক সমিতি এই খেলার আয়োজন করে।
শতবছরের দৃষ্টিনন্দন এই আয়োজন দেখতে হাজির হয়েছিল পার্শবর্তী শালিখা, শ্রীপুর ও মধুখালী
উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নানা বয়সের অসংখ্য দর্শক। নারী দর্শকদের উপস্থিতিও ছিলো
চোখে পড়ার মতো। বার্ষিক এই লাঠি খেলা ও গ্রামীণ মেলা বসে প্রতিবছর বাংলা মাসের ১৬ই
কার্তিক, এবছর ১০৩তম। মেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীসহ নানা ধরণের পণ্যের পসরা সাজিয়ে
বসেছে ডুমুরশিয়া বাজার ও খেলার মাঠ এলাকাজুড়ে।
আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী জনপ্রিয় খেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম লাঠিখেলা। তবে কালের পরিক্রমায়
দিনদিন হারিয়ে যেতে বসে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য জনপ্রিয় এই খেলাটি। একই সঙ্গে এই খেলার সাথে
সংশ্লিষ্ট যারা তাদেরও জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। অনেকেই এ পেশা পরিবর্তন করে ঝুকে
পড়েছেন অন্য পেশায়। ছেড়ে দিয়েছেন ঐতিহ্যবাহী পুর্বপুরুষের এ পেশা। তারপরেও অনেকেই ধরে রাখার
চেষ্টা করে চলেছেন। তারই ধারাবাহিকয়তায় শত প্রতিকূলতার মাঝেও বাঙালির গ্রামীণ সংস্কৃতি এবং
ঐতিহ্যকে লালন করার চেষ্টা আর প্রচীন এই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্যে ডুমুরশিয়া বাজার বণিক
সমিতি প্রতিবছর ঐতিহ্যবাহী এই লাঠি খেলার আয়োজন করে থাকেন।
বর্ণিল সাজে লাঠি হাতে ১৩টি দল অংশ নেয় এই খেলায়। ঢাকঢোল আর বাঁশির তালে লাঠিয়ালদের লাঠির
চক্রে আনন্দে উল্লাসে মেতে উঠে আমুদে দর্শক। নানা রঙের লাঠি ও রং-বেরঙের পোশাক পরে মাঠে নামেন
লাঠিয়ালেরা। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে চলে লাঠির ব্যবহার। ত্বকে মুখে ছিল ঠেকাও লাঠি। আঘাত
লাগবেনা কিন্তু পয়েন্ট পেতে হবে এটায় খেলা। উপস্থিত দর্শকদের উচ্ছ্বাস প্রমাণ করে দেয় লাঠি খেলা
নিয়ে মানুষের আগ্রহ এখনো অটুট।
তবে লাঠি খেলার নতুন দল তৈরী করা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য লাঠি খেলার আয়োজন করা যায় না। কিন্তু যারা
লাঠি খেলেন, তাদের এই গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখার আগ্রহ আছে বলে মন্তব্য করেন আয়োজক
কমিটির সভাপতি ও ডুমুরশিয়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুর রশিদ ভুলু।
লাঠিয়াল গফুর সরদার বলেন, ছোট বেলা পূর্বপুরুষদের খেলা দেখে লাটি খেলায় আগ্রহ হয়। তারপর থেকে
এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু এখন আর এ খেলার তেমন আয়োজন করা হয় না। তবে প্রতিবছর
কার্তিক মাসের ১৬ তারিখে এখানে এসে ভালো লাগে। এতে নতুন প্রজন্মের মধ্যেও আগ্রহ সৃষ্টি হয়।
ঢাকা থেকে আগত কবি হাফিজ রহমান জানান, বর্তমান ক্রীকেট ও ফুটবলের জনপ্রিয়তায় কোণঠাসা
হয়ে পড়েছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা। আমাদের পুরোনো এই ঐতিহ্য ৬০-এর দশক থেকে
প্রচলিত ও জনপ্রিয়। এই লাঠি খেলাকে আজও গ্রাম বাংলার বুকে ধরে রাখতে স্থানীয়দের পাশাপাশি
সরকারকেও এগিয়ে আসার আহবান।