ঢাকা ০৫:৪৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
তদন্তে গিয়ে বিএনপি নেতার মারধরের শিকার পুলিশ ওসি পরিচয়ে হিন্দু পিতা পুত্রকে অপহরণ,পরে চাঁদা দাবীর অভিযোগে দিনাজপুরে ছাত্রদল নেতা আটক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন ৬০ বিজিবির অভিযানে ৫২,৮২,৯৫০/-টাকা মূল্যের বিপুল পরিমান মাদক ও বিভিন্ন প্রকার অবৈধ মালামাল জব্দ শিগগিরই রোডম্যাপ, দ্রুত নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর ৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা বিদ্যমান, সংস্কারের দাবি নির্বাচনের আগে স্থানীয় ভোট চায় না বিএনপি মাসুদ মোল্লার টিস্টল ও বেকারি তে হামলা ভাংচুরে জড়িত মোস্তাফিজুর রহমান কালু ও রেনু খানম ছাত্রশিবিরের সাবেক ও বর্তমান জনশক্তিদের নিয়ে লক্ষ্মীপুর জমায়াতের জেলা আমীর মাষ্টার রুহুল আমিন ভূঁইয়ার মতবিনিময় ও প্রীতি সমাবেশ পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন চলছে, জানালেন ট্রাম্প উত্তরায় আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ অনুসারী মাসুমের ডিগবাজি বিএনপি সেজে নিজেদের কুকর্ম আড়াল করার চেষ্টা করছে

মোংলায় মিশুক-ইজিবাইকের অবৈধ পার্কিং, ভোগান্তিতে জন সাধারণ

ওমর ফারুক :
  • আপডেট টাইম : ০৫:০৩:২৫ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ১১১ ৫০০০.০ বার পাঠক

মোংলা পোর্ট পৌরসভায় এখন নয়া জঞ্জালের নাম ব্যাটারী চালিত মিশুক আর ইজিবাইক। বৈধ-অবৈধ এসব গাড়ীর এখন রাজত্ব চলছে পুরো শহর জড়ে। প্রধান প্রধান সড়কে অবৈধভাবে পার্কিং আর যানজটে পথচারীদের চরম ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়তই। কিন্তু এসব নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যাথা নেই। তবে পৌর কর্তৃপক্ষের দাবী, তাদের কথা শোনেনা এসব গাড়ীর চালকেরা।

বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) শহর ঘুরে দেখা গেছে, শেখ আব্দুল হাই সড়ক, সফিউল্লাহ সড়কের (শাপলা চত্বর), বিএলএস রোড, কবরস্থান রোড ও মাদ্রাসা রোডের প্রধান সড়কগুলো ব্যাটারী চালিত বৈধ-অবৈধ মিশুক আর ইজিবাইকে যানজটের সৃষ্টি হয়ে রয়েছে। এখানে বসবাস করা বাসিন্দাদের শহরে ঢুকতে যেখানে সময় লাগে ৫মিনিট, সেখানে লেগে যাচ্ছে ২০থেকে ২৫মিনিট। এছাড়া পৌর শহরের এসব প্রধান সড়কে দুই থেকে তিন স্তরের সারিবদ্ধ লাইন দিয়ে অবৈধভাবে পার্কিং করে রেখেছে ইজিবাই-মিশুক। এতে বিপরীত থেকে আসা ও পাশ থেকে অন্যান্য যানবাহন চলচাল করতে না পারায় অহরহ দূর্ঘটনাও ঘটছে। অথচ শহরে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ও মিশুক গাড়ী চলাচলে বিধি-নিষেধ রয়েছে। এসব বিধি-নিষেধের তোয়াক্কাই করছেন না এসব গাড়ীর চালকেরা।

বিএলএস রোডের ফুটপাতে বসা জুতা সেলাইকারী সাগর চন্দ্র দাস বলেন, রাস্তার উপরে যেভাবে মিশুক গাড়ী রেখেছে, তাতে আমাকে কেউ দেখেনা। ফলে আমার দৈনিক আয়-ইনকাম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তার পাশের ওষুধের দোকানী ফজলুর রহমান ও মিজানুর রহমান বলেন, ইজিবাইক আর মিশুক গাড়ীর চালকেরা আমাদের দোকান আটকে দিয়েছে, কিভাবে ব্যবসা করবো? এ ব্যপারে পৌরসভায় ও থানায় একাধিকবার অভিযোগ দিয়েও কাজ হয়নি।

পথচারী লোকমান হোসেন ও আলী আকবর বলেন, শহরের প্রতিটা সড়কে ইজিবাইক আর মিশুকের যন্ত্রনায় চলাফেরা করা দায় হয়ে পড়েছে। ঘন্টার পর ঘন্টা সড়কের উপর এসব গাড়ি অবৈভাবে পার্কিং করে রাখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতার ফলে এই বিশৃঙ্খলা ও ভোগন্তির সৃষ্টি হচ্ছে। তারা পদক্ষেপ নিলে আর এই সমস্যা থাকতো না।

তবে মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান পথচারী ও ব্যবসায়ীদের ক্ষতির কথা কথা স্বীকার করে বলেন, শহরে বৈধের পাশাপাশি অবৈধ ইজিবাইক ও মিশুক গাড়ী চলছে। পৌর শহরের বাইরের বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকেও যাত্রী নিয়ে এসব গাড়ী এ শহরে ঢুকছে। তারা যাত্রী নামিয়ে চলে না গিয়ে শহরের যেখানে সেখানে গাড়ূ রাখছেন। এদের জন্য পৌরসভার পিছনে নির্ধারিত জায়গা দেয়া হলেও কথা শোনেন না তারা। তিনি আরো বলেন, এ শহর যানজট মুক্ত করতে শিগগিরই কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।

মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বলেন, ভোগান্তি বা ক্ষতি হচ্ছে এমন অভিযোগ এখনও কেউ করেননি। তবে এটা দেখার দায়িত্ব পৌর কর্তৃপক্ষের। তবে তিনি নিজেই এই ভোগান্তির শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, শহরের এপার থেকে ওপার যেতে লাগে দুই মিনিট। কিন্তু সেখানে তাদের পুলিশ ভ্যান (বড় গাড়ী) নিয়ে থানা থেকে বের হয়ে শহরে যেতে ১৫ থেকে ২০মিনিট সনয় লাগে। এই হয়রানী সবাই হচ্ছেন। পৌর কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসন চাইলে আমি পুলিশ নিয়ে যে কোন সময় তাদের নিয়ে অভিযান করতে প্রস্তত আছি।

এদিকে সড়কে অবৈধ পার্কিং করে গাড়ী রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে, মিশুক চালক আলমগীর হোসেন ও ইজিবাইক চালক নাজমুল তালুকদার বলেন, শহরে তাদের নির্ধারিত কোন স্ট্যান্ড নেই। তাই তাদের সমিতির নেতারা এখানে সেখানে গাড়ী রাখতে বলেছেন, তাই রাখি।

মোংলা পোর্ট পৌরসভা ভ্যান রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এরশাদুজ্জামান সেলিম দাবী করে বলেন, সমিতি থেকে সড়কের উপর যেখানে সেখানে চালককে ইজিবাই ও মিশুক রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তাদের সমিতির আওতায় ১২’শ বৈধ ভ্যান, রিক্সা, ইজিবাইক ও মিশুক গাড়ী রয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে চলছে আরও তিন হাজার গাড়ী। পৌর কর্তৃপক্ষকে প্রতি বছর ইজিবাইক বাবদ ১৫০০, মিশুক বাবদ ১০০০ ও ভ্যান-রিক্সা বাবদ ৮০০টাকা ট্যাক্স দেয়া হয়। তারপরও সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষ তাদের নির্ধারিত স্ট্যান্ড না দেয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মোংলায় মিশুক-ইজিবাইকের অবৈধ পার্কিং, ভোগান্তিতে জন সাধারণ

আপডেট টাইম : ০৫:০৩:২৫ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মোংলা পোর্ট পৌরসভায় এখন নয়া জঞ্জালের নাম ব্যাটারী চালিত মিশুক আর ইজিবাইক। বৈধ-অবৈধ এসব গাড়ীর এখন রাজত্ব চলছে পুরো শহর জড়ে। প্রধান প্রধান সড়কে অবৈধভাবে পার্কিং আর যানজটে পথচারীদের চরম ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়তই। কিন্তু এসব নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যাথা নেই। তবে পৌর কর্তৃপক্ষের দাবী, তাদের কথা শোনেনা এসব গাড়ীর চালকেরা।

বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) শহর ঘুরে দেখা গেছে, শেখ আব্দুল হাই সড়ক, সফিউল্লাহ সড়কের (শাপলা চত্বর), বিএলএস রোড, কবরস্থান রোড ও মাদ্রাসা রোডের প্রধান সড়কগুলো ব্যাটারী চালিত বৈধ-অবৈধ মিশুক আর ইজিবাইকে যানজটের সৃষ্টি হয়ে রয়েছে। এখানে বসবাস করা বাসিন্দাদের শহরে ঢুকতে যেখানে সময় লাগে ৫মিনিট, সেখানে লেগে যাচ্ছে ২০থেকে ২৫মিনিট। এছাড়া পৌর শহরের এসব প্রধান সড়কে দুই থেকে তিন স্তরের সারিবদ্ধ লাইন দিয়ে অবৈধভাবে পার্কিং করে রেখেছে ইজিবাই-মিশুক। এতে বিপরীত থেকে আসা ও পাশ থেকে অন্যান্য যানবাহন চলচাল করতে না পারায় অহরহ দূর্ঘটনাও ঘটছে। অথচ শহরে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ও মিশুক গাড়ী চলাচলে বিধি-নিষেধ রয়েছে। এসব বিধি-নিষেধের তোয়াক্কাই করছেন না এসব গাড়ীর চালকেরা।

বিএলএস রোডের ফুটপাতে বসা জুতা সেলাইকারী সাগর চন্দ্র দাস বলেন, রাস্তার উপরে যেভাবে মিশুক গাড়ী রেখেছে, তাতে আমাকে কেউ দেখেনা। ফলে আমার দৈনিক আয়-ইনকাম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তার পাশের ওষুধের দোকানী ফজলুর রহমান ও মিজানুর রহমান বলেন, ইজিবাইক আর মিশুক গাড়ীর চালকেরা আমাদের দোকান আটকে দিয়েছে, কিভাবে ব্যবসা করবো? এ ব্যপারে পৌরসভায় ও থানায় একাধিকবার অভিযোগ দিয়েও কাজ হয়নি।

পথচারী লোকমান হোসেন ও আলী আকবর বলেন, শহরের প্রতিটা সড়কে ইজিবাইক আর মিশুকের যন্ত্রনায় চলাফেরা করা দায় হয়ে পড়েছে। ঘন্টার পর ঘন্টা সড়কের উপর এসব গাড়ি অবৈভাবে পার্কিং করে রাখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতার ফলে এই বিশৃঙ্খলা ও ভোগন্তির সৃষ্টি হচ্ছে। তারা পদক্ষেপ নিলে আর এই সমস্যা থাকতো না।

তবে মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান পথচারী ও ব্যবসায়ীদের ক্ষতির কথা কথা স্বীকার করে বলেন, শহরে বৈধের পাশাপাশি অবৈধ ইজিবাইক ও মিশুক গাড়ী চলছে। পৌর শহরের বাইরের বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকেও যাত্রী নিয়ে এসব গাড়ী এ শহরে ঢুকছে। তারা যাত্রী নামিয়ে চলে না গিয়ে শহরের যেখানে সেখানে গাড়ূ রাখছেন। এদের জন্য পৌরসভার পিছনে নির্ধারিত জায়গা দেয়া হলেও কথা শোনেন না তারা। তিনি আরো বলেন, এ শহর যানজট মুক্ত করতে শিগগিরই কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।

মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বলেন, ভোগান্তি বা ক্ষতি হচ্ছে এমন অভিযোগ এখনও কেউ করেননি। তবে এটা দেখার দায়িত্ব পৌর কর্তৃপক্ষের। তবে তিনি নিজেই এই ভোগান্তির শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, শহরের এপার থেকে ওপার যেতে লাগে দুই মিনিট। কিন্তু সেখানে তাদের পুলিশ ভ্যান (বড় গাড়ী) নিয়ে থানা থেকে বের হয়ে শহরে যেতে ১৫ থেকে ২০মিনিট সনয় লাগে। এই হয়রানী সবাই হচ্ছেন। পৌর কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসন চাইলে আমি পুলিশ নিয়ে যে কোন সময় তাদের নিয়ে অভিযান করতে প্রস্তত আছি।

এদিকে সড়কে অবৈধ পার্কিং করে গাড়ী রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে, মিশুক চালক আলমগীর হোসেন ও ইজিবাইক চালক নাজমুল তালুকদার বলেন, শহরে তাদের নির্ধারিত কোন স্ট্যান্ড নেই। তাই তাদের সমিতির নেতারা এখানে সেখানে গাড়ী রাখতে বলেছেন, তাই রাখি।

মোংলা পোর্ট পৌরসভা ভ্যান রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এরশাদুজ্জামান সেলিম দাবী করে বলেন, সমিতি থেকে সড়কের উপর যেখানে সেখানে চালককে ইজিবাই ও মিশুক রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তাদের সমিতির আওতায় ১২’শ বৈধ ভ্যান, রিক্সা, ইজিবাইক ও মিশুক গাড়ী রয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে চলছে আরও তিন হাজার গাড়ী। পৌর কর্তৃপক্ষকে প্রতি বছর ইজিবাইক বাবদ ১৫০০, মিশুক বাবদ ১০০০ ও ভ্যান-রিক্সা বাবদ ৮০০টাকা ট্যাক্স দেয়া হয়। তারপরও সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষ তাদের নির্ধারিত স্ট্যান্ড না দেয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে।