আওয়ামী লীগ বনাম বিএনপি

- আপডেট টাইম : ০২:২১:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ জুন ২০২৩
- / ২৬১ ১৫০.০০০ বার পাঠক
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের যতই উন্নয়ন করে থাকুক না কেন, বিএনপি নির্বাচনে এলে, প্রতিটি স্থানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। নির্বাচনের বিষয় যদি আমরা পর্যবেক্ষণ করতে যাই সেই জরিপে উঠে আসে, বিএনপির কর্মীরা নেতাদের উপর নয়, বিএনপি নামক দলের উপর তাদের আস্থা এবং ভালোবাসা।
তাদের নেতা কে হল আর না হলো, সেটা তাদের দেখার বিষয় নয়, বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে বিএনপির কর্মীরা খবরদারি চালাতে পারেন, প্রশাসন তাদের কথায় উঠে বশ করে, সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে নেতাদের কাছ থেকে পুরোপুরি ভাবে ফ্যাসিলিটি পেয়ে থাকেন বিএনপির কর্মীরা, যেটি আমরা বিগত পনেরো বছর যাবত আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থাকার পরেও, দলীয় কর্মী তো দূরের কথা নেতাদের কথা পর্যন্ত রাখেনা প্রশাসনে থাকা লোকজন।
আর এই কারনে স্বেচ্ছাচারী মনোভাব নিয়ে প্রশাসনে লোকজনরা যা ইচ্ছা তাই করে বেড়ান।
আর এই কারণে আওয়ামীলীগ যদি কখনো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে ছিটকে পড়ে, তবে আওয়ামীলীগের কর্মীদের ওপর তেমন কোন প্রশাসনিক চাপ আসবে না,
সবচেয়ে বড় বিপদে পড়বেন বর্তমান পদ পদবী নিয়ে থাকা এবং সুবিধা নেয়া নেতারা।
সুদে আসলে সবকিছু বের করেনেবে তারা।
যতটা উদারতা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পাওয়া যায়, বিএনপি রাজনীতিতে ততটা উদারতা নেই।
তবে হ্যাঁ বিএনপি তার কর্মীদের প্রতি উদার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসেন, যেটি আজও পর্যন্ত আওয়ামী লীগে প্রত্যক্ষ করা যায়নি।
যেভাবে হোক না কেন বিএনপির এবারকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত, নতুবা তাদের পায়ের নিচের মাটি আরো নরম হতে পারে, শেখ হাসিনাকে আমরা কখনও নতজানু মনোভাব নিয়ে সরকার পরিচালনা করতে দেখিনি, অতএব যতই লবিস্ট নিয়োগ দেওয়া হোক না কেন শেখ হাসিনাকে দমানো যাবে না।
অতএব বিকল্প পথ হচ্ছে বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া,
বিগত সময় আমরা প্রত্যক্ষ করেছি,
যে নির্বাচন গুলোকে আওয়ামীলীগ ইগনোর করেছিল, অর্থাৎ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ না করার কারণে পরবর্তীতে তাদের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছিল।
সেই থেকে আওয়ামীলীগ শিক্ষা নিয়েছিল, খালি বা ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেওয়া যাবেনা।
তাইতো ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করেছিল, আর যে নির্বাচনকে বর্জন করেছিল বিএনপি, আওয়ামী লীগ সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কারণে, বিএনপি এক সময় তাকে ছেড়া ৮৬-র বেইমান বলে আখ্যা দিয়েছিল।
দীর্ঘ ২১ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতার বাইরে ছিল,
২১ বছরে আওয়ামী লীগ যতটা না রাজনৈতিক ভুল সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে ছিল, তার চেয়ে লক্ষ গুণ বেশি ভুল সিদ্ধান্ত গুলো বিএনপি নিয়েছে।
শুধু বিরোধী দলে থাকতে নয়
সরকার গঠন করার পরেও বিএনপির অনেকগুলো সিদ্ধান্তে ভুল ছিল, প্রথম ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করাকে প্রতিষ্ঠিত রূপ দিয়েছেন, দ্বিতীয় ভুলটি হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর আত্ম স্বীকৃত খুনিদের পুরস্কৃত করেছেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র বানিয়ে,
তৃতীয় ভুলটি হচ্ছে-জিয়াউর রহমানের সেই সূত্র ধরে তার সন্তান তারেক জিয়ার একুশে আগস্টে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য- গেনেট হামলা করে, এর খেসারত দিয়ে যাচ্ছেন বর্তমানে দলটি। বিএনপি টানা কত বছর ক্ষমতার বাইরে থাকবে, এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। কারণ এই তিনটি বড় ভুলের পর, অতীত থেকে শিক্ষা না নিয়ে,
বিএনপি একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত গুলো নিয়ে যাচ্ছেন।
এত বছর যাবত বিএনপি ক্ষমতার বাইরে রয়েছে, দেশের বিভিন্ন জেলা ঘুরে বিএনপির বিভিন্ন কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায় এবং বুঝা যায় তাদের মনোবল এখনো ভাঙ্গেনি।
তাদের মনোবল ভাঙতে না পারাটা আওয়ামী লীগের জন্য একটি বিশাল পরাজয় হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।
দেশের অন্যতম প্রধান বিরোধী দল বিএনপি দেশব্যাপী বিভাগীয় সমাবেশ করছে। যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া, ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের দ্বারা কিছু খুচরা হামলার শিকার হওয়া সত্ত্বেও সমাবেশগুলোতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে।
দীর্ঘদিন পর নিষ্ক্রিয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের এই জেগে ওঠায় রাজনীতিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির নেতা-কর্মীরাও নতুন করে চাঙা হয়ে উঠছেন। নেতাদের কথায়ও বেশ একটা ‘ক্ষমতায় যাব যাব ভাব’ চলে এসেছে। যদিও বিএনপির এই জেগে ওঠায় রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনের কোনো আভাস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
কারণ, বিএনপি এখনো খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বাইরে কোনো নেতাকে উপস্থাপন করতে পারছে না। আর এটাই এই মুহূর্তে দলটির সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা।