ঢাকা ১১:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
লক্ষ্মীপুরের ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া সংগঠন, ইলেভেন ষ্টার ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংঘের ২০২৫ সালের নতুন কমিটি গঠন যেখানেই আইন লঙ্ঘন হবে পুলিশ তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থানিতে পিছু হটবেনা-ওসি কোতয়ালী টাঙ্গাইলে সমন্বয়ক পরিচয়ধারীদের পদ স্হগিত করলেন হাসনাত আবদুল্লাহ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে রিভিউ শুনানি রোববার পাকিস্তানের ‘জেএফ-১৭ থান্ডার’ যুদ্ধবিমানে আগ্রহ বাংলাদেশের পিডিবি সরকারি চাকরির আশ্বাস ১ লাখ ২২ হাজার টাকা হাতিয়ে নিলেন প্রতারক হানিফ টঙ্গী থানা মহিলা যুবলীগ সভাপতি নাসরিন এর দাপটে হচ্ছে হত্যা আর অন্যের জমি জবর দখল! নাসরিনকে গ্রেফতারের দাবি ভুক্তভোগীদের ফরজ বিধান পর্দা যেখানে নাই, সেখানে রহমত নাই -ছারছীনার পীর ছাহেব ভ্যাট ও শুল্ক কমানোর দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ে রেস্তোরা মালিক, শ্রমিকের মানববন্ধন টাঙ্গাইল সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করায় বিএনপির মহাসচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ!

হোমনায় ওয়ারিশ সনদ জটিলতায়, দুই শিশু সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার

আলাউদ্দিন মিয়া. হোমনা( কুমিল্লা) প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুন ২০২৩
  • / ৩৩৩ ৫০০০.০ বার পাঠক

কুমিল্লার হোমনায় ওয়ারিশ সনদ জটিলতার কারনে মানবেতর জীবন যাপন করছে মক্তিযোদ্ধা জালাল দেওয়ানের পরিবার।

জানাগেছে, কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার মিরশ্বিকারী গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে মুক্তিযোদ্ধা জালাল দেওয়ান একজন বাউল শিল্পী।সে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাউল গান গেয়ে বেড়াতেন। তাঁর নিজস্ব জায়গা জমি নেই। ২০০৯ সাল থেকে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে হোমনা উপজেলা সদরে ভাড়াবাসায় বসবাস করতেন। ২০১৭ সালে যাচাই বাছাইয়ে জালাল দেওয়ান মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে গেজেট ভুক্ত হয় এবং ২০২০ সাল থেকে সম্মানি ভাতা প্রাপ্ত হয়। তাঁর সনদ নম্বর-৭২৩১। মুক্তিযোদ্ধা জালাল দেওয়ান জীবিত থাকাকালীন কোর্টের মাধ্যমে ক্ষমতা প্রাপ্ত (নমনী) হিসাবে তাঁর স্ত্রী রাশিদা বেগম সম্মানী ভাতা উত্তোলন করে আসছে। এতে তার আরো সংসার আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন নাই। তাদের একমাত্র আয়ের উৎস ছিল মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা। এক ছেলে নবম শ্রেণিতে ও আরেক ছেলে শিশু শ্রেণিতে পড়ছে। তা দিয়েই তাদের সংসার চলতো।

পরবর্তীতে ২০২২ সালের ২৩এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধা জালাল দেওয়ান মৃত্যুবরণ করার পর তার দ্বিতীয় সংসারের ২ছেলে ও ১ মেয়ে জালাল দেওয়ানের ওয়ারিশ দাবী করে সম্মানি ভাতার অংশ দাবী করে ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট থেকে ওয়ারিশ সনদ গ্রহন করে তাদের নামে একাউন্ট করার জন্য সোনালী ব্যাংক হোমনা শাখায় জমাদেন। সনদ নম্বর-২০২২১৯১৫৪৫০০০০৯৪২

পরবর্তীতে মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলায় বসবাস রত মো. কাউসার আহাম্মেদ নামের এক যুবক মুক্তিযোদ্ধা জালাল দেওয়ানের ওয়ারিশ দাবী করে কাগজ পত্র সহ ইউএনও বরাবর আবেদন করলে সমাজসেবা অফিসার তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। এ জটিলতায় মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করতে পারছে না। ফলে প্রায় ১৪ মাস যাবৎ মানবেতর জীবন যাপন করছে পরিবারটি।

এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা জালাল দেওয়ানেরস্ত্রী রাশিদা আক্তার বলেন, জালাল দেওয়ানের আরেক সংসার সংসারে ২ছেলে ১ মেয়ে আছে তা জানতাম কিন্ত তারা জালাল দেওয়ানের কোন খোজ খবর নিতো না। তবু মেনে নিয়েছি। কিন্ত তাঁর তৃতীয় সংসারের কথা আমি জানি না।

খোঁজ নিয়ে জেনেছি জালাল দেওয়ানের ছেলে দাবীদার কাওসার আহম্মেদের জন্ম নিবন্ধনে পিতার নাম জালাল দেওয়ান উল্লেখ থাকলেও জাতীয় পরিচয় পত্রে( এনআইডি কার্ডে) তার পিতার নাম আবদুল করিম এবং মাতার নাম পারুল বেগম লিপিবদ্ধ আছে। এছাড়া তার মায়ের সাথে জালাল দেওয়ানের বিবাহ হয়েছিল এমন কোন প্রমানাদি(কাবিন নামা) দেখাতে পারে নাই।

এ বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ঘারমোড়া ইউনিয়নের মিরশ্বিকারি গ্রামের বাসিন্দা বাউল শিল্পী জালাল দেওয়ান ২০১৭ সালে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে গেজেট ভূক্ত হয়। শুনেছি তার দুই সংসার আছে। কিন্ত ৩য় সংসারের কথা শুনি নাই।

৮নং ঘারমোড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান মোল্লা জানান, জালাল দেওয়ানের দুই সংসারের সদস্যদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ওয়ারিশ সনদ ইস্যু করা হয়েছে। কাউসার আহম্মদের উপযুক্ত কাগজপত্র বা স্বাক্ষীপ্রমান পাওয়া যায়নি। উপযুক্ত তথ্যপ্রমান পাওয়া গেলে ওয়ারিশ সনদ দিতে কোন আপত্তি নেই।

মো. কাউসার আহাম্মদ মুঠোফোনে জানান, তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট তথ্য প্রমান জমাদিয়েছি। তদন্তে যা হয় হবে। তার এনআইডি কার্ড হয়নি ছোট বেলায় তার মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রাসেল আহম্মেদ জানান, এ বিষয়ে স্বাক্ষীপ্রমানের ভিত্তিতে তদন্ত করা হয়েছে। ইউএনও স্যার পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবেন।

ইউএনও ক্ষেমালিকা চাকমা জানান, তিনি নতুন যোগদান করেছেন। বিষয়টি তিনি দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন ।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

হোমনায় ওয়ারিশ সনদ জটিলতায়, দুই শিশু সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার

আপডেট টাইম : ১১:৩৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুন ২০২৩

কুমিল্লার হোমনায় ওয়ারিশ সনদ জটিলতার কারনে মানবেতর জীবন যাপন করছে মক্তিযোদ্ধা জালাল দেওয়ানের পরিবার।

জানাগেছে, কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার মিরশ্বিকারী গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে মুক্তিযোদ্ধা জালাল দেওয়ান একজন বাউল শিল্পী।সে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাউল গান গেয়ে বেড়াতেন। তাঁর নিজস্ব জায়গা জমি নেই। ২০০৯ সাল থেকে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে হোমনা উপজেলা সদরে ভাড়াবাসায় বসবাস করতেন। ২০১৭ সালে যাচাই বাছাইয়ে জালাল দেওয়ান মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে গেজেট ভুক্ত হয় এবং ২০২০ সাল থেকে সম্মানি ভাতা প্রাপ্ত হয়। তাঁর সনদ নম্বর-৭২৩১। মুক্তিযোদ্ধা জালাল দেওয়ান জীবিত থাকাকালীন কোর্টের মাধ্যমে ক্ষমতা প্রাপ্ত (নমনী) হিসাবে তাঁর স্ত্রী রাশিদা বেগম সম্মানী ভাতা উত্তোলন করে আসছে। এতে তার আরো সংসার আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন নাই। তাদের একমাত্র আয়ের উৎস ছিল মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা। এক ছেলে নবম শ্রেণিতে ও আরেক ছেলে শিশু শ্রেণিতে পড়ছে। তা দিয়েই তাদের সংসার চলতো।

পরবর্তীতে ২০২২ সালের ২৩এপ্রিল মুক্তিযোদ্ধা জালাল দেওয়ান মৃত্যুবরণ করার পর তার দ্বিতীয় সংসারের ২ছেলে ও ১ মেয়ে জালাল দেওয়ানের ওয়ারিশ দাবী করে সম্মানি ভাতার অংশ দাবী করে ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট থেকে ওয়ারিশ সনদ গ্রহন করে তাদের নামে একাউন্ট করার জন্য সোনালী ব্যাংক হোমনা শাখায় জমাদেন। সনদ নম্বর-২০২২১৯১৫৪৫০০০০৯৪২

পরবর্তীতে মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলায় বসবাস রত মো. কাউসার আহাম্মেদ নামের এক যুবক মুক্তিযোদ্ধা জালাল দেওয়ানের ওয়ারিশ দাবী করে কাগজ পত্র সহ ইউএনও বরাবর আবেদন করলে সমাজসেবা অফিসার তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। এ জটিলতায় মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করতে পারছে না। ফলে প্রায় ১৪ মাস যাবৎ মানবেতর জীবন যাপন করছে পরিবারটি।

এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা জালাল দেওয়ানেরস্ত্রী রাশিদা আক্তার বলেন, জালাল দেওয়ানের আরেক সংসার সংসারে ২ছেলে ১ মেয়ে আছে তা জানতাম কিন্ত তারা জালাল দেওয়ানের কোন খোজ খবর নিতো না। তবু মেনে নিয়েছি। কিন্ত তাঁর তৃতীয় সংসারের কথা আমি জানি না।

খোঁজ নিয়ে জেনেছি জালাল দেওয়ানের ছেলে দাবীদার কাওসার আহম্মেদের জন্ম নিবন্ধনে পিতার নাম জালাল দেওয়ান উল্লেখ থাকলেও জাতীয় পরিচয় পত্রে( এনআইডি কার্ডে) তার পিতার নাম আবদুল করিম এবং মাতার নাম পারুল বেগম লিপিবদ্ধ আছে। এছাড়া তার মায়ের সাথে জালাল দেওয়ানের বিবাহ হয়েছিল এমন কোন প্রমানাদি(কাবিন নামা) দেখাতে পারে নাই।

এ বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ঘারমোড়া ইউনিয়নের মিরশ্বিকারি গ্রামের বাসিন্দা বাউল শিল্পী জালাল দেওয়ান ২০১৭ সালে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে গেজেট ভূক্ত হয়। শুনেছি তার দুই সংসার আছে। কিন্ত ৩য় সংসারের কথা শুনি নাই।

৮নং ঘারমোড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান মোল্লা জানান, জালাল দেওয়ানের দুই সংসারের সদস্যদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ওয়ারিশ সনদ ইস্যু করা হয়েছে। কাউসার আহম্মদের উপযুক্ত কাগজপত্র বা স্বাক্ষীপ্রমান পাওয়া যায়নি। উপযুক্ত তথ্যপ্রমান পাওয়া গেলে ওয়ারিশ সনদ দিতে কোন আপত্তি নেই।

মো. কাউসার আহাম্মদ মুঠোফোনে জানান, তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট তথ্য প্রমান জমাদিয়েছি। তদন্তে যা হয় হবে। তার এনআইডি কার্ড হয়নি ছোট বেলায় তার মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রাসেল আহম্মেদ জানান, এ বিষয়ে স্বাক্ষীপ্রমানের ভিত্তিতে তদন্ত করা হয়েছে। ইউএনও স্যার পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবেন।

ইউএনও ক্ষেমালিকা চাকমা জানান, তিনি নতুন যোগদান করেছেন। বিষয়টি তিনি দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন ।