নবীনগরে দশ লক্ষ টাকা মাছ লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
- আপডেট টাইম : ১০:২৮:৩৩ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ৬ মে ২০২৩
- / ১৩০ ৫০০০.০ বার পাঠক
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরের দক্ষিণ কাইতলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলীর বিরুদ্ধে সরকারি পুকুর ইজারা নেয়া কাজী ফেরদৌসের পুকুরের ১০ লক্ষ টাকার মাছ লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ মে ২০২২ সালে এক অর্থ বছরের জন্য ইজারা নেয়া ১৮০/১৩৬ দাগের ৩.১৬ একর কাইতলা জমিদার বাড়ির খাস পুকুরের ইজারার মেয়াদ থাকা সত্বেও ঐ ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান রাস্তা করার নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা ছাড়া স্থানীয় তার অনুসারীদের দিয়ে মাছ, বাঁশ লুটপাট করে নিয়ে যায়। জমিদার বাড়ির পুকরটি সরকারি খাস খতিয়ানে যাওয়ার পর শওকত আলী চেয়ারম্যান তার সাঙ্গপাঙ্গ দিয়ে ১৯৯৭ সালে তৎকালীন সাংসদ এডভোকেট আবদুল লতিফের সময় জাল দলিল করে আত্মসাৎ করার পায়তারা করে।পরে ঐ সংসদ সদস্যের নির্দেশে কাজী ফেরদৌস সভাপতি হয়ে এলাকার মৎসজীবিদের নিয়ে তিতাস মৎসজীবি সমবায় সমিতি গঠন করে জাল দলিলের বিরুদ্ধে নবীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন।এতে শওকত গংরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে সাংসদ এডভোকেট আবদুল লতিফ মারা গেলে কাজী আনোয়ার নবীনগরের সংসদ সদস্য হওয়ার পর বিষয়টি সমাধান করে দিয়ে তিতাস মৎসজীবি সমিতি কে ৩ বছর মেয়াদী ইজারা দেয়।দীর্ঘদিন ধরে ইজারা নেয়া ঐ মৎসজীবি সমিতির সদস্যদের মৎস কার্ড না থাকায় ২০২২ সালের খাস কালেকশনে নিয়ে যায় সরকার। ঐ সালের ১৯ মে কাজী ফেরদৌস এক অর্থ বছরের জন্য ইজারা নিয়ে আসে সরকারের সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে ।কিন্তু ইংরেজি মাসের হিসেব মতে চলতি মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত সময় থাকা সত্বেও ৪ মে কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলী তার সাঙ্গপাঙ্গ দিয়ে পুরো পুকুরে মাছ বাঁশ লুটপাট করে নিয়ে যায়। কাজী ফেরদৌস তার লোকজন নিয়ে পুকুরে বাঁধা দিতে গেলে উল্টো হুমকি ধামকির স্বীকার হয়ে বিষয়টির প্রতিকার চাইতে উপজেলা প্রশাসন কে অবগত করে।
ইজারাদার কাজী ফেরদৌস জানান, দীর্ঘদিন ধরে শওকত আলী,জাহের আলী,নাজমুল গংরা সরকারি এই পুকুরটি জাল দলিলের মাধ্যমে নিজ নামিয়ে করে ভোগদখল করার পায়তারা করে আসছে,এদের নিকট থেকে আমি তৎকালীন এমপি এডভোকেট আবদুল লতিফ এর নির্দেশক্রমে তিতাস মৎসজীবি সমবায় সমিতি করে তা উদ্ধার করি,বিগত বছরের ইজারার ৪ লক্ষ টাকা শওকত আলী গং স্কুলের দেয়ার কথা বলে আমার নিকট থেকে নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। পূনরায় এবছর ইজারার সময় থাকা সত্বেও পুকুর পাড়ে তার অনুসারীদের দিয়ে নিজে উপস্থিত থেকে আমার ১০ লাখ টাকার মাছ ও ২২ হাজার টাকার বাঁশ নিয়ে গেছে।
এবিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া জানান,শওকত আলী চেয়ারম্যান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা ৩/৪ শত লোক নিয়ে এসে আমাদের চোখের সামনে পুকুরের মাছ, বাঁশ লুটপাট করে নিয়ে গিয়েছে,আমরা বাঁধা দিলে সে ও তার লোকজন আমাদের সাথে অশ্লীল ভাষা কথা বলে।
অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী মিন্টু মিয়া জানান, খবর পেয়ে বাজার থেকে এসে দেখি শওকত চেয়ারম্যান তার লোকদের নির্দেশ দিচ্ছে সব মাছ, বাঁশ উঠিয়ে নিয়ে যেতে।
মাছ,বাঁশ লুটপাটের ঘটনায় জড়িত নাজমুল হাসান জানান,আমরা মাছ নেইনি,তবে সাধারণ জনগণ আমাদের উপস্থিতিতে পুকুর দখলমুক্ত করতে বাঁশ উঠিয়ে নিয়ে গেছে,স্কুলের টাকা আত্মসাৎ করার বিষয়টি মিথ্যে।
লুটপাটে সহযোগিতা করা সাবেক মেম্বার জাহের আলীর বাড়িতে গিয়ে না পেয়ে মুঠোফোন ফোন করা হলে তিনি জানান,আমরা সাধারণ জনগণকে সাথে নিয়ে পুকুর ফেরদৌস কাজীর কাছ থেকে উদ্ধার করেছি বলে মুঠোফোন কেটে দিয়ে আর ফোন ধরেনি।
সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে পুকুরের মাছ,বাঁশ লুটপাট করার অভিযোগ উঠা শওকত আলী চেয়ারম্যানের বাড়ি গিয়ে না পেয়ে কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদে গেলে গণমাধ্যমে কর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে পরিষদ থেকে কেটে পরে মুঠোফোন বন্ধ করে দেয় এবং পরিষদে ঘন্টা ব্যাপী গণমাধ্যম কর্মীদের স্বাক্ষাত করার কথা বলে বসিয়ে রাখে।
এবিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার একরামুল ছিদ্দিক জানান, ফেরদৌস ও শওকত আলীর মধ্যকার বিবাদটি আইনের মধ্যে থেকে এই সপ্তাহে বসে মিটমাট করার ব্যবস্থা করা হবে,জনগণের সুবিধা ও স্কুলের যেন স্বার্থ হয় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে পুকুরের বিষয়ে। যেহেতু ফেরদৌস সাহেব দাবি করেছে তিনি ইজারা বুজে পাওয়ার সময় বিলম্বে বুজে পেয়েছে সেহেতু ইজারার বিষয়টি ফেরদৌস সাহেব কে বলেছি উনার মেয়াদের সকল কাগজ পত্র নিয়ে আসতে।